
বাড়তি ওজন চিন্তায় ফেলেছে? তাই দুধ-চিনি দিয়ে চায়ের পরিবর্তে লেবু চা-ই দিনের শুরুতে ভরসা? ভাবছেন এই অভ্যাসেই দ্রুত ঝরবে মেদ? অনেকেই আবার কাজের ফাঁকে চনমনে হতে একাধিকবার লেবু চায়ে চুমুক দেন। এই অভ্যাস কিন্তু মোটেই ভালো নয়। অতিরিক্ত মাত্রায় লেবু চা খেলে শরীরে একাধিক রোগ বাসা বাঁধে। জেনে নিন এর থেকে শরীরের ঠিক কী কী ক্ষতি হতে পারে।
দাঁতের ক্ষয় : বারবার লেবু চায়ে চুমুক দিলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ের লক্ষণ দেখা যায়। তাই দাঁতের ক্ষয় রুখতে অত্যধিক মাত্রায় লেবু চা না খাওয়াই ভালো। লেবু চা খাওয়ার পর অবশ্যই ভালো করে কুলকুচি করে নিতে ভুলবেন না, নইলে দাঁতের বারোটা বাজতে বেশি সময় লাগবে না।
অম্বলের সমস্যা : ঘন ঘন লেবু চা খেলে অন্ত্রের পিএইচের মাত্রায় পরিবর্তন আসে। এর থেকে অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়। বুক জ্বালাও অনুভব করতে পারেন। এমনকি বমিও হতে পারে। গ্যাস, পেটব্যথা, ডায়ারিয়া, গ্যাস্ট্রিক-আলসারের সমস্যাও দেখা যায়।
শরীরে পানির ঘাটতি : শীতে ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। লেবু চা বেশি মাত্রায় খেলে তা মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। যে কারণে শরীরে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
গর্ভপাতের ঝুঁকি : অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য লেবু চা একেবারেই নিরাপদ নয়। এতে ক্যাফিন থাকে। এই অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যাফিন শরীরে গেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে।
অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি : অতিরিক্ত লেবু চা খেলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এতে অস্টিওপরোসিসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই লেবু চায়ের মাত্রার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা ভীষণ জরুরি।
ক্ষমতায় থাকাকালে উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে মুহিকাকে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট বলা হতো। বলা হবেই বা না কেন? প্রেসিডেন্টদের যে পরিমাণ অর্থবিত্ত থাকে সেসবের কিছুই ছিল না তার। ব্যতিক্রমী এই প্রেসিডেন্টকে নিয়ে লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
উরুগুয়ের রাষ্ট্রপ্রধান
খামারবাড়ির বাইরে টাঙানো রশিতে জামা-কাপড় শুকোচ্ছে। উঠানের একদিকে একটি কুয়া বহুদিন ধরে আছে। সেখান থেকে পানি তুলে রান্নাবান্না, কাপড় ধোয়াসহ যাবতীয় কাজকর্মে ব্যবহার করা হয়। ছোট্ট উঠানটি আগাছাভর্তি। অনেকদিন সেগুলোতে কেউ হাত না দেওয়ায় ইচ্ছেমতো বড় হওয়ার স্বাধীনতা উপভোগ করছে আগাছাগুলো। বাড়ির বাইরে পুলিশের দুজন কর্মকর্তা সর্বক্ষণই থাকেন। আর থাকে একটি তিনপেয়ে কুকুর, যার নাম ম্যানুয়েলা। এটিই উরুগুয়ের একসময়ের প্রেসিডেন্ট হোসে মুহিকার বাসস্থান। তার জীবনযাপন যে বিশ্বের সাবেক প্রেসিডেন্টদের থেকে একেবারে আলাদা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দামি বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়ে আরাম-আয়াসে জীবনের বাকিটা সময় কাটিয়ে দিতে যে মুহিকা পারতেন না, তা নয়; কিন্তু তিনি তা করেননি। প্রাচুর্যের মধ্যে না থেকে রাজধানী মোন্তেভিদেও থেকে দূরে স্ত্রীর খামারবাড়িতে থাকছেন তিনি। স্ত্রীকে নিয়ে ফুলের চাষ করেন মুহিকা। প্রশ্ন উঠতে পারে, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব শেষের পর কেন এমন জীবনধারা বেছে নিয়েছেন মুহিকা। আসলে মুহিকা যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন থেকেই ওই বাড়িতে থাকছেন তিনি, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে তার থাকা হয়নি।
হোসে মুহিকা উরুগুয়ের ৪০তম প্রেসিডেন্ট। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল এই পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে তার জীবনধারা কেবল দেশের নয়, দেশের বাইরের মানুষকে বিস্মিত করে। তিনিই ছিলেন সে সময় বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট। ক্ষমতায় থাকাকালে উরুগুয়ে রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১২ হাজার ডলার করে বেতন পেতেন মুহিকা। বেতনের ৯০ শতাংশই দরিদ্র মানুষ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দান করে দিতেন তিনি। জমানোর মতো অর্থ তার হাতে থাকত না আর। এছাড়া বিলাসবহুল জীবনযাপন তাকে কখনোই টানেনি। এসব কারণে উরুগুয়ে রাষ্ট্রের দেওয়া প্রেসিডেন্ট ভবনে না থেকে রাজধানী শহরের বাইরে খুব সাধারণ এক খামারবাড়িতে থাকতে শুরু করেন তিনি এবং এখনো সেখানেই আছেন। মুহিকার সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে মান্ধাতার আমলের একটি ফক্সওয়াগন। সেটি চালিয়ে তিনি দূর-দূরান্তে যান। আর আশপাশে যেতে তিনি ব্যবহার করেন তার ৬০ বছরের পুরনো একটি সাইকেল। বাগানে পুরনো এক চেয়ারে বসে মুহিকা বলেন, ‘জীবনের বেশির ভাগ সময় এভাবেই কাটিয়েছি আমি। যা আছে, তাই দিয়ে সুখে থাকতে জানি।’
উরুগুয়েতে প্রতি বছর সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক। ২০১০ সালে হোসে মুহিকার সম্পদের বিবরণীতে দেখা যায়, তার কাছে মাত্র ১ হাজার ৮০০ ডলার আছে। ওই দামেই ১৯৮৭ সালে ভক্সওয়াগনটি কিনেছিলেন তিনি। ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে স্ত্রীর সম্পদের অর্ধেকসহ (স্ত্রীর মালিকানাধীন জমি, ট্রাক্টর ও একটি বাড়ি) নিজের সম্পদের বিবরণী জমা দেন মুহিকা। এর পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১৫ হাজার ডলার। ওই সম্পদ ছিল উরুগুয়ের তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট দানিলো এসতোরির ঘোষিত সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ এবং মুহিকার পূর্বসূরি সাবেক প্রেসিডেন্ট তাবারে ভাসকেজের ঘোষিত সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ। মুহিকা একবার বলেছিলেন, ‘আমাকে বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট বলা হলেও আমি নিজেকে দরিদ্র মনে করি না। দরিদ্র তারাই যারা ব্যয়বহুল জীবনযাপনের জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উদয়াস্ত খাটেন। তাদের চাওয়ার কোনো শেষ নেই। কঠোর পরিশ্রম করে একবার যদি কেউ বিলাসবহুল জীবনযাপন শুরু করেন, তাহলে তাকে এই জীবনধারা বজায় রাখার জন্য সারাটা জীবন দাসের মতো খেটে যেতে হয়। এর থেকে মুক্তি নেই। আর কেউ যদি মনে করেন, অল্পতেই সন্তুষ্ট থাকা যায়, তাহলে তাকে আর অর্থের পেছনে ছুটতে হয় না। নিজের জন্য তখন তার অনেক সময় থাকে। সে সময়ই স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া যায়। অনেকে মনে করতে পারেন, আমি পাগলাটে বুড়ো মানুষদের মতো কথা বলছি। হতে পারে। তবে আমি জীবনকে এভাবেই দেখি।’
টেকসই উন্নয়ন নিয়ে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো শহরে ২০১২ সালের জুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে পুঁজিবাদের কট্টর সমালোচক ও উরুগুয়ের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহিকা বলেন, ‘গোটা দুপুর আমরা টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলাপ করেছি। এর মাধ্যমে কীভাবে জনগণকে দারিদ্র্য থেকে বের করা যায়, সে নিয়েও কথা হয়েছে। আমরা কি আসলেই এসব নিয়ে ভাবছি? আমরা কি উন্নয়নের মডেল চাই? ধনী দেশগুলো কি এভাবেই তাদের ভোগবাদী সংস্কৃতিচর্চা করে যাবে? রাস্তাঘাটে এত গাড়ি থাকলে কী হবে এই পৃথিবীর? কী পরিমাণ অক্সিজেন সেক্ষেত্রে অবশিষ্ট থাকবে? এই পৃথিবী নামক গ্রহের কি এত সম্পদ আছে যে সাত বা আট বিলিয়ন মানুষ তা অনায়াসে ভোগ করতে পারবে? ধনী দেশগুলোর অতিমাত্রায় ভোগের কারণে বর্জ্য সৃষ্টিও হয় বেশি। তাদের এই ভোগবাদিতা পৃথিবীর ক্ষতি বৈ উপকার করছে না।’
শৈশব ও গেরিলা জীবন
১৯৩৫ সালের ২০ মে মোন্তেভিদেও শহরে জন্মগ্রহণ করেন মুহিকা। তার বাবা দিমেত্রিয়ো মুহিকা ছিলেন ক্ষুদ্র চাষি। মুহিকার বয়স যখন পাঁচ, সে সময় তার বাবা দেউলিয়া হয়ে যান। ছোটবেলা থেকে অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে বড় হন তিনি। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে কিউবা বিপ্লবে অনুপ্রাণিত হয়ে উরুগুয়ের একদল শহুরে তরুণ তুপামারো নামে এক গেরিলা দল গঠন করে। কোন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তুপামারো গঠিত হয়েছিল, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। ঊনবিংশ শতাব্দীর পুরো সময়জুড়ে লাতিন আমেরিকার অন্যতম উদীয়মান দেশ ছিল উরুগুয়ে। ওই শতাব্দীর শুরুর দিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন হোসে পাবলো তোরকুয়াতো। তিনি উরুগুয়ের জনগণের জীবনযাত্রার মান এত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন যে ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সঙ্গে অনায়াসে দেশটির তুলনা করা যেত। এর অন্যতম প্রধান কারণ তোরকুয়াতোর জটিল সমাজকল্যাণ ব্যবস্থা প্রবর্তন। এছাড়া কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি করে ব্যাপক মুনাফা করে দেশটি। সে সময় উরুগুয়েকে ‘দুই আমেরিকার সুইজারল্যান্ড’ বলা হতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ ও এশিয়ায় খাদ্যের দাম কমে যায়। ফলে উরুগুয়ে থেকে মহাদেশগুলোতে খাদ্যপণ্য রপ্তানি হ্রাস পায়। এর প্রভাব পড়ে দেশটির বিভিন্ন খাতে। শ্রমিকদের মজুরি কমে যায়, সেবা খাতে ভর্তুকি হ্রাস পায় এবং জনগণের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। ওই সময়ই উরুগুয়ের ছাত্র ও পেশাজীবীরা মিলে তুপামারো গঠন করেন। তারা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শ্রমিক সংগঠনের সদস্য ও গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। মার্কসবাদী-লেনিনবাদী আদর্শের তুপামারোর সদস্য ছিলেন মুহিকা। ১৯৬৯ সালে রাজধানী মোন্তেভিদেওর কাছে ছোট শহর পানদো দখল করে তুপামারোর ছয় সদস্যের একটি দল। সেই ছয়জনের মধ্যে মুহিকাও ছিলেন। পরের বছর ১৯৭০ সালে মোন্তেভিদেওর এক পানশালায় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি বাধা দেন। একপর্যায়ে তার গায়ে গুলি লাগে। তিনি দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে আঘাত করলে তাকে ছয়বার গুলি করা হয়। গুলিবিদ্ধ মুহিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে এক চিকিৎসক তার প্রাণ বাঁচান। পরে তুপামারোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ওই চিকিৎসক তাদের গেরিলা দলের গোপন সদস্য ছিলেন। এ কারণে সেবার তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন নয়তো বাঁচতেন না। ওই সময় উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন হোর্হে পাচেকো আরেকো। তার নির্দেশে চারবার গ্রেপ্তার হন মুহিকা। সত্তরের দশকের শুরুতে তুপামারোর শতাধিক যোদ্ধা কারাবন্দি ছিলেন। এদের মধ্যে মুহিকাসহ একশোর বেশি গেরিলা যোদ্ধা ১৯৭১ সালে পুন্তা কারেতাস কারাগারে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়ে যান। পালানোর এক মাসের কম সময়ের মধ্যে মুহিকা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। পরের বছর ১৯৭২ সালের এপ্রিলে আবার তিনি একই কারাগার থেকে পালাতে সক্ষম হন। ওইবারও তার সঙ্গে তুপামারোর ডজনখানেক সদস্য ছিলেন। সেবার তাদের পালাবার পরিকল্পনা বেশ অভিনব ছিল। প্রথমবার তুপামারোর সদস্যরা পুন্তা কারেতাস কারাগারের ভেতর থেকে সুড়ঙ্গ খনন করেন যার মুখ ছিল জেলখানার পার্শ্ববর্তী এক বাড়ির বৈঠকখানা। পরের বার কারাগারটির বাইরে থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়। সেই সুড়ঙ্গ দিয়ে চাকা লাগানো কাঠের তক্তা দিয়ে জেলখানা থেকে বের হয়ে যান মুহিকাসহ বাকিরা। অবশ্য কয়েকদিন পর তিনি ফের ধরা পড়েন। ওই ঘটনার মাসকয়েক পর ১৯৭৩ সালে উরুগুয়েতে সামরিক অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের পর অন্য বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হলেও মুহিকাসহ তুপামারোর নয় সদস্যকে সামরিক হেফাজতে রাখা হয়। সেখানে তারা অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে বন্দি ছিলেন। উরুগুয়ের সামরিক বাহিনী মুহিকাকে এক, দুই বছর নয়, টানা ১৩ বছর আটকে রেখেছিল। ওই সময় মানসিক সমস্যাসহ আরও নানা অসুখে আক্রান্ত হন তিনি। সেনাবাহিনী তাকে যে কক্ষে রেখেছিল, সেখানে তিনি ছাড়াও তুপামারোর আরও দুই সদস্য থাকতেন। এরা হলেন এলিউতেরিও ফারনান্দেজ উইদোব্রো ও মাউরিসিও রোসেনকফ। কক্ষে ওই দুই সদস্য নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করলেও সেসব আলাপে মুহিকা থাকতেন না কারণ মানসিক সমস্যার কারণে বেশির ভাগ সময় চুপচাপ থাকতেন তিনি।
ক্ষমতায় মুহিকা
১৯৮৫ সালে উরুগুয়েতে গণতন্ত্র ফিরে আসে। সাধারণ ক্ষমা আইনে মুক্তি পান মুহিকা। কেবল তিনি একা নন, ১৯৬২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত দেশটিতে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতার ঘটনায় অভিযুক্ত সবাই সাধারণ ক্ষমার আওতায় আসেন। চার বছর পর ১৯৮৯ সালে উরুগুয়ের বামপন্থিরা রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম মুভমেন্ট অব পপুলার পার্টিসিপেশন (এমপিপি)। এতে যোগ দেন মুহিকাসহ তুপামারোর অনেকে। এটি দেশটির বামপন্থি জোট ব্রড ফ্রন্টের অংশ ছিল। ১৯৯৯ সালে উরুগুয়ের নির্বাচনে সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন মুহিকা। ওই সময় মুভমেন্ট অব পপুলার পার্টিসিপেশন বা এমপিপির জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পায়, তাদের ভোটও বাড়ে এবং এতে মুহিকার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। ২০০৪ সালের মধ্যে এমপিপি উরুগুয়ের রাজনৈতিক জোট ব্রড ফ্রন্টের সবচেয়ে বড় দলে পরিণত হয়। ওই বছরের নির্বাচনে মুহিকা ফের উরুগুয়ের সিনেটে নির্বাচিত হন এবং তিন লাখের বেশি ভোট পায় এমপিপি। ২০০৫ সালে উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বামপন্থি নেতা তাবারে ভাসকেজ নির্বাচিত হওয়ার পেছনে এমপিপির নেতৃত্বাধীন ব্রড ফ্রন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। উরুগুয়ের পরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুহিকা জয়ী হয়ে ক্ষমতায় বসেন। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেন মুহিকা। এগুলোর মধ্যে গর্ভপাত বৈধকরণ, সমকামী বিয়ে বৈধকরণ উল্লেখযোগ্য। উরুগুয়েই বিশ্বের প্রথম দেশ যেখানে মানুষ বিনোদনের জন্য গাঁজা খেতে পারে। ২০১৩ সালে এই সংক্রান্ত আইন করেছিলেন মুহিকা।
আন্তর্জাতিক প্রাসঙ্গিকতা
মুহিকা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে সার্বিয়ার বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এমির কুস্তুরিৎসা তাকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে হাত দেন। ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট দৈর্ঘ্যরে ওই প্রামাণ্যচিত্রের নাম এল পেপে : এ সুপ্রিম লাইফ। ২০১৮ সালে এটি মুক্তি পায়। পরিচালক কুস্তুরিৎসা মুহিকাকে ‘রাজনীতির শেষ নায়ক’ হিসেবে দেখেন। এল পেপে : এ সুপ্রিম লাইফে মুহিকা গেরিলা যোদ্ধা থাকাকালে তার অভিজ্ঞতা, এক দশকের বেশি সময় দীর্ঘ কারাজীবন ও জীবনের শিক্ষা নিয়ে কথা বলেন। এ ছাড়া ২০১৪ সালে ইতালীয় লেখক ফ্র্যাঙ্ক ইয়োডিচে মুহিকার জীবন নিয়ে ব্রেভে দিয়ালোগো সুলা ফেলিচিতা নামে বই লেখেন। বইটির ১০ হাজার কপি ছাপা হয়েছিল এবং সেগুলো স্কুলশিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে ডেডলাইন। ঠিক এ সময় বেঁকে বসল কম্পিউটার বা ল্যাপটপ। হঠাৎ করেই স্লো হয়ে গেল ব্রাউজার। এমন সমস্যার মুখোমুখি বোধহয় আমরা সবাই কমবেশি হয়ে থাকি। এমন সমস্যায় বেশির ভাগ সময়ই আমরা চট করে রিস্টার্ট করার বিকল্প বেছে নিই। কিন্তু তাতেও কি মেটে সমস্যা? তবে রিস্টার্ট করা ছাড়াও কিন্তু বিকল্প রয়েছে, যা ব্রাউজার স্লো হওয়ার মতো সমস্যা থেকে দিতে পারে স্থায়ী সমাধান। ব্রাউজার থেকে কীভাবে মুছে দেবেন এসব অপ্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ। আলাদা আলাদা ব্রাউজারের ক্ষেত্রে রয়েছে আলাদা আলাদা নিয়ম। আসুন এড়ড়মষব ঈযৎড়সব ও গড়ুরষষধ ঋরৎবভড়ী জনপ্রিয় এই দুটি ব্রাউজারের নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার গুগল ক্রম (এড়ড়মষব ঈযৎড়সব)। সেখানে পধপযব ক্লিয়ার করার কাজটা কিন্তু বেশ সহজ। গুগল ক্রম ব্রাউজার খুলেই ওপরে ডানদিকে তিনটি ডট দেখতে পাবেন, সেখানে ক্লিক করলেই খুলে যাবে একটি মেন্যু। সেখানে গিয়ে মোর টুলস-এ ক্লিক করে চলে যান ক্লিয়ার ব্রাজিং ডাটা অপশনে। সেখানে গিয়ে ব্রাউজিং হিস্ট্রি, ডাউনলোড হিস্ট্রি, কুকিজ অ্যান্ড আদার সাইট ডাটা - সব কটি বক্সে টিক দিন। তারপর ক্লিয়ার ডাটা অপশনে ক্লিক করুন। তবে তার আগে অল টাইম অপশনে ক্লিক করতে ভুলবেন না।
এদিকে মজিলা ফায়ারফক্স (গড়ুরষষধ ঋরৎবভড়ী) ব্রাউজারেও বেশ সহজ পধপযব ক্লিয়ারের ব্যাপারটি। ফায়ার ফক্সে ঢুকে ওপরে ডান দিকে হামবার্গার মেন্যুতে ক্লিক করুন। এরপর বাঁ-দিকের প্যানেল থেকে সিলেক্ট করুন প্রাইভেসি অ্যান্ড সিকিউরিটি। এ অপশনটি স্ক্রল করে কিছুটা নিচে আসার পরেই কুকিজ অ্যান্ড সাইট ডাটা অপশনটি দেখতে পাবেন। সেখানে ডিলিট কুকিজ অ্যান্ড সাইট ডাটা হোয়েন ফায়ারফক্স ইজ ক্লোজড লেখা চেক বক্সে ক্লিক করুন। সেখানে থেকে ক্লিয়ার ডাটা অপশনে ক্লিক করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে আপনার ব্রাউজারের সব অপ্রয়োজনীয় ডেটা। আর এই পধপযব ক্লিয়ারের ব্যাপারটি নিয়মিত মনে রেখে করতে পারলেই আপনার ব্রাউজার ছুটবে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই।
প্রত্যেক মানুষই কোনো না কোনো সময় তার জীবনে কোমরে ব্যথাজনিত রোগে ভোগেন। উঠতে, বসতে, এমনকি ঘুমোতে গেলেও ব্যথা থেকেই যায়। দীর্ঘসময় বসে একটানা কাজ করলে এ ব্যথা হতে পারে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে শীতকালে বয়স্ক মানুষের ব্যথার পরিমাণ বেড়ে যায় কারণ তখন মানুষের চলাফেরা অনেকাংশে কম হয় শীতের কারণে। কোমরে ব্যথার আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো
কারণ
লাম্বার স্পনডাইলোসিস : কোমরে পাঁচটি হাড় আছে। এই হাড়গুলো যদি বয়সের কারণে বা বংশগত কারণে ক্ষয় হয়ে যায়, তখন তাকে লাম্বার স্পনডাইলোসিস বলে।
পিএল আইডি : কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ পিএল আইডি। ৩০ থেকে ৪০ বছর যাদের বয়স তাদের এ সমস্যাটি হতে পারে। মানুষের হাড়ের মধ্যে ফাঁকা জায়গা থাকে। এই ফাঁকা জায়গাটি পূরণ থাকে তালের শাঁসের মতো ডিস্ক বা চাকতি দিয়ে। এই চাকতি যদি কোনো কারণে বের হয়ে যায়, তখন স্নায়ুর ওপরে চাপ পরে। যার ফলে কোমরে ব্যথা তৈরি হয়।
নন স্পেসিফিক লো ব্যাক পেইন : অনির্দিষ্ট কারণে হাড়, মাংসপেশি, স্নায়ু তিনটি উপাদানের সামঞ্জস্য নষ্ট হলে এই ব্যথা হয়। এই সমস্যাটি তরুণ বয়সে বেশি হয়ে থাকে।
অন্যান্য কারণ : এছাড়া বিভিন্ন কারণে কোমরে ব্যথা হয়। মেরুদন্ডের টিউমার ও ইনফেকশন হলে কোমরে ব্যথা হয়। মাংসপেশি শক্ত হয়ে গেলে বা মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়লে কোমরে ব্যথা হয়। শরীরের ওজন বেড়ে গেলে কোমরে ব্যথা হয়। একটানা হাঁটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা কোলে কিছু বহন করলে কোমরে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
লক্ষণ
কোমর ব্যথার লক্ষণ, যা কোমরের পেছন দিয়ে উরুর পেছন দিয়ে, কাফ মাসলের পেছন দিয়ে পায়ের বুড়ো আঙুল বা ছোট আঙুলে চলে আসে। এছাড়াও কিছু সাধারণ উপসর্গ আছে, যেমন আপনার দীর্ঘ সময়ের জন্য বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে ব্যথা আরও খারাপ হওয়া। অনেক সময় ব্যথা পা এবং হাঁটুতে ছড়িয়ে পড়ে। উঠতে ও বসতে পিঠে সারাক্ষণ ব্যথা হওয়া।
চিকিৎসা
সেঁক দিন : কোমরের যে জায়গায় ব্যথা হয় সেখানে সেঁক দিলে যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায় তবে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে কোন সেঁক দেবেন এ ব্যাপারে পরামর্শ মেনে গরম অথবা ঠা-া সেঁক দিলে বেশি উপকৃত হবেন।
ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খাদ্য : প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ, ঘি, পনির, ফল, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি খাবেন।
এছাড়া একই স্থানে বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না। মাঝে মাঝে জায়গা ছেড়ে একটু হাঁটুন। ফোনে কথা বলার সময় হেঁটে হেঁটে কথা বলুন। দিনে যত বেশি হাঁটবেন, তত দীর্ঘদিন শরীরের অবস্থা ভালো থাকবে। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকবেন।
এছাড়া একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের অধীনে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিলে কোমর ব্যাথা থেকে উপশম মিলবে খুব তাড়াতাড়ি। আবার কিছু কিছু কন্ডিশনে সার্জারি প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কিছু ব্যায়াম এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে কোমর ব্যথা থেকে উপশম পাবেন খুব সহজেই।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৫ মাস যাবৎ তিনি বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে আমিনা নামে অন্যজনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার বাদশার বিরুদ্ধে।
রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলেখা বেগম নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের আ. রহিমের স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ১৫০০ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু গত তারিখে আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমিনা নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার বাদশাহ।
ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুর নিবন্ধন বইয়ের ২০২১ সালের রেজিস্ট্রারে বৃদ্ধার মৃত্যু নিবন্ধিত নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার বাদশাহ আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কিভাবে টাকা খেয়ে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার আমাকে মৃত দেখাল। আমি গরিব মানুষ। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।
মেম্বার বাদশাহ বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করব।
নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলেখা বেগম ৭ ডিসেম্বর ২০২১ এ মৃত্যু বরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে মৃত্যু সনদ যাচাই ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কাউকে মৃত দেখাতে পারবে না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এভাবেই হয়। আমরা এভাবেই করে থাকি, প্রত্যায়নপত্র দেখে প্রতিস্থাপন করে থাকি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অফিসে প্রেরিত প্রত্যায়নটির কোনো তথ্য ইউনিয়ন পরিষদের ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে আজ রোববার ঢাকা ছাড়া সব মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি করবে বিএনপি। আজকের পদযাত্রা কর্মসূচির মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপী সরকারবিরোধী কর্মসূচির প্রথম ধাপ শেষ হচ্ছে দলটির।
এর আগে, গত ২৩ মে দেশের ১১টি মহানগরে ‘পদযাত্রা’ করে বিএনপি। ঢাকার বাইরে মহানগরগুলোতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফাসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ দাবিতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে আজ রোববার (২৮ মে) পদযাত্রা করবে ৬ দলীয় জোট (দল ও সংগঠন) গণতন্ত্র মঞ্চ। এদিন বেলা ১১টায় রাজধানীর মালিবাগ থেকে এই পদযাত্রা শুরু হবে, যা শেষ হবে বাড্ডায়।
গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোববার ১১টায় রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট থেকে বাড্ডা পর্যন্ত গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা উত্তরের পদযাত্রা শুরু হবে। অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। মালিবাগ রেলগেটে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পদযাত্রা শেষ হবে।
পদযাত্রায় অংশ নেবেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীসহ গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব শান্তির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন এবং মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উৎসব আমাদের বিদেশস্থ সকল মিশনে উদযাপন করছি। জুলিও কুরি পদক ছিল জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান।
তিনি বলেন, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন বঙ্গবন্ধু মেনে নিতে পারেননি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাংলার নিপীড়িত, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর “সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরীতা নয়”- এই বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘে এক নম্বর শান্তিরক্ষী দেশের মর্যাদা পেয়েছে। দেশে দেশে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ চালু করেছে।
‘বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে আমাদের অঙ্গীকার হবে বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে কাজ করে যাওয়া। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অর্জিত হবে’।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে।
অপারেশন ছাড়াই সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় আব্দুল মোতালেব হোসেন (৩৫) নামের এক মানসিক রোগীর পেট থেকে ১৫টি কলম বের করেছেন চিকিৎসক।
এ কাজ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম.মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক। তাদের এই সাফল্যে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে নেট দুনিয়ায়।
এ বিষয়ে আব্দুল মোতালেবের মা লাইলী খাতুন বলেন, তার ছেলে মোতালেব খুব ভাল ছাত্র ছিল। ২টি লেটার মার্ক নিয়ে এসএসসি পাস করে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। এরপর খারাপ সঙ্গদোষে সে আস্তে আস্তে মাদকাসক্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এরপর থেকে পথে ঘাটে ঘুরে বেড়ানোর সময় কুড়িয়ে পাওয়া কলমগুলি খাদ্য মনে করে খেয়ে ফেলে। বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। গত এক বছর ধরে তার শরীরে জ্বর ও পেটে ব্যথা শুরু হয়। অনেক চিকিৎসার পরও তা ভালো হচ্ছিল না। অবশেষে গত ১৬ মে তাকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। এখানে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তার অসুখের কারণ ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসকরা তার পেটের ভিতর থেকে বিনা অপারেশনে কলমগুলো বের করে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, মোতালেব হোসেন প্রথমে পেটে ব্যথা নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করেও পেটে কি সমস্যা সেটা শনাক্ত করতে পারছিলেন না। ফলে রোগীটিকে আমার কাছে রেফার্ড করেন। এন্ডোস্কপির মাধ্যমে পরীক্ষা করে তার পেটের ভেতর ১৫টি কলম দেখে প্রথমে চমকে যাই। এটা কীভাবে সম্ভব। পরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমেই অপারেশন ছাড়াই আমরা কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নেই। তিনি আরও বলেন, কাজটি আমাদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কলমগুলো একে একে পাকস্থলীতে সেট হয়ে গিয়েছিল। কলমগুলো বের করতে আমাদের প্রথমে মাথায় চিন্তা ছিল যেন, কলমগুলোর কারণে কোনোভাবেই শ্বাসনালিতে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ না হয়ে যায়। এছাড়াও রক্তক্ষরণের একটা চিন্তাও মাথায় ছিল। অতঃপর প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আমরা কলমগুলো বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হই।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এন্ডোস্কপি করা ব্যক্তি মানসিক অসুস্থ হওয়ায় তার কলম খাওয়ার অভ্যাস ছিল। এভাবে খেতে খেতে সে অনেক কলম খেয়ে ফেলে। কলমগুলো তার পেটের মধ্যে জমা হয়েছিল। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তার পেটের ভিতর ১৫টি কলম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এবং অপারেশন ছাড়াই এন্ডোস্কপির মাধ্যমে তার পেটের ভেতর থেকে একে একে ১৫টি আস্ত কলম বের করে আনি। বর্তমানে রোগীটি সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং সুস্থ আছেন।
তিনি আরও বলেন, এন্ডোস্কপির মাধ্যমে মানুষের পেট থেকে কলম বের করার মতো ঘটনা বাংলাদেশে এটাই প্রথম। তাও আবার একটি-দু‘টি নয় ১৫টি কলম। এর আগে ঢাকা মেডিকেলে এক ব্যক্তির পেট থেকে এন্ডোসকপির মাধ্যমে একটি মোবাইল বের করেছেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এমন সাফল্য এটাই প্রথম। আমরা অত্যাধুনিক ভিডিও এন্ডোস্কপি মেশিনের মাধ্যমে এবং আমাদের দক্ষ ডাক্তার দ্বারা অপারেশন ছাড়াই শুধু এন্ডোস্কপির মাধ্যমে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের পেট থেকে ১৫টি কলম বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি। শুধু এটাই নয়, আমরা বিনা অপারেশনে পেটের পাথর, কিডনিতে পাথর থেকে শুরু করে অনেক কিছুই অপারেশন ছাড়াই সেগুলো অপসারণের কাজ করে যাচ্ছি।
বিরতি কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা। গত মার্চে ঘরের মাঠে সবশেষ আকাশী-নীলদের দেখা গিয়েছিল তিন মাস পর আগামী জুনে তারা আসছে এশিয়া সফরে। সফরকালে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন লিওনেল মেসিরা।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। চারদিন পর ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হবেন তারা। সেই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক করে ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু নাম। এই দলে এই দলে চমক হিসেবে রয়েছে আলেজান্দ্রো গার্নাচো। যিনি বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন। তবে চোটের কারণে অভিষেকের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গার্নাচো। গত বছরের জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে জায়গা হয় তার। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ৩৫ ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট উইঙ্গার। এখন পর্যন্ত নিজে করেছেন ছয়টি গোল, করিয়েছেন আরও ছয়টি। এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি স্কালোনির। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়নি।
দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ওয়াল্টার বেতিনেজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর পর দলে ফিরেছেন লিওনার্দো বলের্দি। ফরাসি ক্লাব মার্সেইয়ের হয়ে চলতি মৌসুমে তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। তবে স্কোয়াডের মাঝ মাঠের ফুটবলারদের নিয়ে কোনো চমক নেই।
তবে এই স্কোয়াডে নেই লাউতারো মার্তিনেজের নাম। গোড়ালির চোটের কারণে এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। তবে তার জায়গায় মাঠ মাতাতে দেখা যাবে জিওভানি সিমিওনেকে।
আর্জেন্টিনার ২৭ সদস্যের দল
গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), জেরনিমো রুলি (আয়াক্স), ওয়াল্টার বেনিটেজ (পিএসভি)।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), গঞ্জালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), জার্মান পেজেল্লা (রিয়েল বেটিস), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), লিওনার্দো বলের্দি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্ডি (বেনফিকা), ফ্যাকুন্ডো মদিনা (আরসি লেন্স), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিয়ন), মার্কোস অ্যাকুনা (সেভিলা)।
মিডফিল্ডার:
লিয়ান্দ্রো পেরেদেস (জুভেন্তাস), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), গুইডো রদ্রিগেজ (রিয়েল বেটিস), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (ব্রাইটন), থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড), জিওভানি লো সেলসো (ভিলারিয়াল)।
ফরোয়ার্ড:
লুকাস ওকাম্পোস (সেভিয়া), অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্তাস), লিওনেল মেসি (পিএসজি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), জিওভানি সিমিওনে (নাপোলি), আলেজান্দ্রো গার্নাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেজ (ফিওরেন্টিনা)।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫০টি কেন্দ্রের প্রাথমিক ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৯ ভোট এবং টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৪১৩ ভোট।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
গাজীপুর সিটিতে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের মধ্যে। দুজনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অপরদিকে ভোটের পরিবেশ ভালো বলে জানান আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনূর ইসলাম রনি।
কোটা পদ্ধতি তুলে দেওয়ার পরও বিসিএস পরীক্ষায় নারীদের চাকরি পাওয়ার হার প্রায় একই রয়েছে। ১০ শতাংশ কোটা থাকা অবস্থায় তারা যে পরিমাণ চাকরি পাচ্ছিলেন, কোটা তুলে দেওয়ার পরও প্রায় একই হারে চাকরি পাচ্ছেন। সাধারণ ক্যাডার বা কারিগরি ক্যাডারে পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারগুলোতে এগিয়ে গিয়ে বিসিএসে মোট চাকরি পাওয়ার হারে প্রায় একই অবস্থান ধরে রেখেছেন নারীরা।
অথচ কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় বলা হয়েছিল, কোটা তুলে দিলে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণের গ্রাফ নিম্নমুখী হবে। আসলে তা হয়নি। কোটা তুলে দেওয়ার পরও তারা প্রায় সমানতালে এগিয়ে চলছেন।
৪০তম বিসিএস দিয়ে চাকরিতে ঢুকে বর্তমানে ঢাকা বিভাগে কর্মরত একজন নারী কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, যে বয়সে ছেলেরা চাকরির জন্য প্রতিযোগিতা করে সেই বয়সে অধিকাংশ নারীকেই বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করতে হয়। সংসার করে, সন্তান লালনপালন করে নারীরা ভালো প্রস্তুতি নিতে পারে না। ফলে অনেক মেধাবী নারী প্রতিযোগিতায় উতরে যেতে পারেন না। অনেক নারী পারিবারিক কারণে বিয়ের পর চাকরির আবেদনই করেন না। বিয়ের পর পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা আসে। এসব কাটিয়ে উঠে চাকরিতে প্রবেশ করা কঠিন। আর বিসিএসের চাকরি মানেই বদলিযোগ্য। সংসার-সন্তান রেখে বদলিকৃত পদে যোগ দেওয়া কঠিন বিষয়। সবকিছু মিলিয়ে নারীদের জন্য এ চাকরি সহজ নয়। একজন পুরুষ বেকার নারী বিয়ে করে, কিন্তু একজন নারী বেকার পুরুষ বিয়ে করে না। এ বিষয়টাও ছেলেদের প্রস্তুত হতে সাহায্য করে। এ বাস্তবতা থেকেও পুরুষ প্রতিযোগী বেশি হয়। অন্যদিকে যোগ্য হলেও অনেক নারী প্রতিযোগিতাই করে না।
একজন নারী ইউএনও বলেন, পরীক্ষার হলে বা মৌখিক পরীক্ষার সময় অনেক নারীকে দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে সঙ্গে আনতে হয়। এগুলোও অনেক সময় নারীকে চাকরির ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে। ঘরে ঘরে বাধা পায় নারীর অগ্রযাত্রার নানা চেষ্টা। নগর-জীবনে নারীর অস্তিত্ব অনেকটা স্বচ্ছন্দের। কিন্তু নগরসভ্যতার বাইরে বিশাল বিস্তৃত গ্রামীণ জনজীবনে পুরুষতন্ত্রের নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বেষ্টনী এখনো নারীকে ধরাশায়ী করে রাখে। হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর পথ হাঁটছে নারী-পুরুষ। তবু তাদের মধ্যে ভারসাম্য নেই।
কোটা না থাকার পরও নারীরা তাদের অবস্থান কীভাবে ধরে রাখলেন জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। প্রাথমিকের পর মাধ্যমিকেও মেয়েরা অনেক এগিয়েছে। উচ্চশিক্ষায়ও মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছে। সবকিছু মিলে বিসিএসে এর প্রতিফল ঘটেছে। যে পরিমাণ মেয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে, সেই তুলনায় চাকরিতে প্রবেশের হার বেশি। উচ্চশিক্ষায় যায় হয়তো ৮০ ভাগ ছেলে। আর মেয়েদের মধ্যে উচ্চশিক্ষায় যাওয়ার হার ৩০ বা ৩৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে ২৬ বা ২৭ শতাংশ মেয়ে বিসিএস দিয়ে চাকরি পাচ্ছে। এদিক দিয়ে চিন্তা করলে মেয়েরা অনেক ভালো করছে।’
এক প্রশ্নের জবাব ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘মেয়েদের কাছে শিক্ষা এখনো অপরচুনিটি (সুযোগ) আর ছেলেদের কাছে অধিকার। মেয়েরা যখন এ সুযোগটা পায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা কাজে লাগাতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পরিবারের ছেলেসন্তানের জন্য যে বিনিয়োগ, মেয়েসন্তানের জন্য এখনো তার চেয়ে অনেক কম। এখনো মনে করা হয় মেয়ে তো অন্যের ঘরে চলে যাবে। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে, পরিবারের দায়িত্ব উচ্চশিক্ষিত ছেলের তুলনায় উচ্চশিক্ষিত মেয়ে অনেক বেশি বহন করে। এসব প্রতিবন্ধকতা হাজার বছরে তৈরি হয়েছে। এগুলো দূর হতে আরও সময় লাগবে।’
অন্যান্য কোটার মতো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ছিল। নারীরা যোগ্যতা অনুযায়ী মেধা কোটায়ও নিয়োগ পেতেন। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ১৫ শতাংশ নারী কোটা রয়েছে এখনো। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাভিত্তিক জেলা কোটার পাশাপাশি ৬০ শতাংশ নারী কোটা সংরক্ষিত রেখে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে নারীরা সরকারি চাকরিতে পুরুষ প্রার্থীর সঙ্গে মেধা কোটায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিয়োগ লাভের পাশাপাশি সংরক্ষিত কোটায়ও নিয়োগ লাভের সুবিধা পেয়ে থাকেন।
শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ছাত্রীর হার বাড়ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এক দশকের বেশি সময় ধরে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর হার বেশি। কলেজ পর্যায়ে ছাত্র ও ছাত্রীর হার প্রায় সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর হার ৩৬ শতাংশের বেশি।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার। ৪০তম সাধারণ বিসিএস হচ্ছে কোটামুক্ত প্রথম বিসিএস। ধাপে ধাপে বাছাই করে গত বছর ৩০ মার্চ এই বিসিএসের চূড়ান্ত সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রায় ১৩ মাস পর গত মাসে সেই সুপারিশের বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে পিএসসি। সেখানে বলা হয়েছে, ৪০তম বিসিএসে মোট ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন। যা কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসে ২৬ দশমিক ৯১ ও ৩৭তমে ২৪ দশমিক ৬০ শতাংশ ছিল। গত ১ নভেম্বর এ বিসিএসের কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
পিএসসির একজন সাবেক চেয়ারম্যান বলেছেন, কোটামুক্ত একটি সাধারণ বিসিএসে ২৬ দশমিক ০৩ শতাংশ নারী চূড়ান্তভাবে সুপারিশ পেয়েছেন এটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নারীদের শক্ত সক্ষমতা প্রকাশ করে। কারণ এর আগে কোটাযুক্ত ৩৮তম বিসিএসের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। অর্থাৎ কোটা তুলে দেওয়ার পরও নারীরা ১ শতাংশও পিছিয়ে পড়েননি। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, প্রত্যেক বিসিএসে নারীদের আবেদনের হার অর্থাৎ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের হার পুরুষের তুলনায় কম অর্থাৎ গড় হার কম। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতেও নারী প্রার্থীদের পুরুষের তুলনায় অনেক কম চোখে পড়ে। এমনকি কোনো কোনো কক্ষে নারী প্রার্থী থাকেই না। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ধাপগুলো অতিক্রম করার ক্ষেত্রে নারীদের অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরিমাণ বেশি থাকে। ৪০তম বিসিএসে যোগ্য আবেদনকারী নারী ছিলেন ৩৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১৯ দশমিক ১৯ শতাংশ নারী প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র। যোগ্য আবেদনকারী পুরুষ ছিলেন ৬১ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ পুরুষের হার ৮০ দশমিক ৮১ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের সাধারণ ক্যাডারে ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৪ দশমিক ১৪ ও ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
৪০তম বিসিএসের কারিগরি ক্যাডারে ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। এই হার ৩৮ ও ৩৭তম বিসিএসে ছিল যথাক্রমে ২৯ দশমিক ৫৩ ও ২৫ দশমিক ২ শতাংশ।
সাধারণ এবং কারিগরি ক্যাডারে নারীরা পিছিয়ে পড়লেও শিক্ষার মতো পেশাগত ক্যাডারে এগিয়েছেন। ৪০তম বিসিএসে ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ নারী সুপারিশ পেয়েছেন। যা ৩৮তমে ২৬ দশমিক ৩০ এবং ৩৭তমে ২৫ দশমিক ২ শতাংশ ছিল।
পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে নেওয়া ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারেও নারীরা পিছিয়েছেন। জেলা কোটাও না থাকায় নাটোর, ভোলা, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে প্রশাসন ক্যাডারে কেউ সুপারিশ পাননি।
গত বছর প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকরিজীবীদের তথ্যসংক্রান্ত ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস’ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সিভিল প্রশাসনের ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারীর মধ্যে ২৬ শতাংশ নারী। সরকারি দপ্তরের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কাজ করেন সবচেয়ে কমসংখ্যক নারী। মন্ত্রণালয়ের মোট জনবলের ১৯, অধিদপ্তরের ৩১, বিভাগীয় কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারের কার্যালয়ের ১২ এবং আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ১২ শতাংশ কর্মী নারী।