
ক্যানসারের পাশাপাশি বাড়ছে কোলেস্টেরল আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সাধারণত বয়স বাড়ার সঙ্গে এই রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া এবং আরও বিভিন্ন কারণে রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা বাড়ে। কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না রাখলে সমস্যা। কারণ এই রোগের হাত ধরেই আরও অনেক সমস্যার জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। কাঁড়ি কাঁড়ি ওষুধ খেয়ে অনেক সময় কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো সম্ভব হয় না। তবে কয়েকটি সবজি আছে, যেগুলো পাতে রাখলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমবে।
ব্রোকলি : শরীরের খেয়াল রাখতে ব্রোকলির জুড়ি মেলা ভার। প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোÑব্রোকলি সবেতেই এগিয়ে। ফাইবার, সালফার-সমৃদ্ধ ব্রোকলিতে রয়েছে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা।
পালং শাক : পটাশিয়াম, ফাইবার, ফোলেট, ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ পালং শাক কোলেস্টেরল কমাতে দারুণ উপকার। খারাপ কোলেস্টেরল নামে পরিচিত এলডিএল। পালং শাক খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
ফুলকপি : অ্যান্থোসায়ানিনে সমৃদ্ধ উৎস হলো ফুলকপি। এই অ্যান্থোসায়ানিন খারাপ কোলেস্টরল এলডিএলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে কোলেস্টেরল যদি সহজে পিছু না ছাড়ে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই রোজের পাতে রাখুন ফুলকপি।
মুলো : ফুলকপির মতো মুলোতেও রয়েছে ভরপুর পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন। ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে অতি অবশ্যই মুলো খাওয়া জরুরি। অনেকেই মুলো খেতে চান না। কিন্তু কোলেস্টেরল থাকলে ইচ্ছা না করলেও মুলো খেতে পারেন।
গাজর : শীতকালে শরীরের যত্ন নিতে গাজরের মতো উপকারী সবজি খুব কম রয়েছে। কোলেস্টেরলের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যারা ভুগছেন, গাজর তাদের সাহায্য করতে পারে।
করোনা মহামারীর জেরে এখনো বিশ্বজুড়ে চলছে অর্থনৈতিক মন্দা। যার ফলে ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে হয়েছে বাঘা সব প্রযুক্তি সংস্থাকে, যা থেকে বাদ যায়নি গুগল, আমাজন, টুইটার, মাইক্রোসফট থেকে শুরু করে সুইগির মতো সংস্থাগুলো। শেষ তিন মাসে এক লাখেরও বেশি প্রযুক্তি কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। তবে মন্দা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত নিজের কর্মীদের সুরক্ষিত রেখেছে অ্যাপল কর্তৃপক্ষ। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কী সেই মন্ত্র যার ফলে ছাঁটাইয়ের ঝড় ঠেকিয়েছিল অ্যাপল?
অর্থসংকট কাটাতে কিছুদিন আগে নিজের বেতন কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক। এরপর থেকেই প্রায় ৫০ শতাংশ কম বেতন নেওয়া শুরু করেন তিনি। এতে সংস্থাটির বেশ কিছুটা অর্থ সঞ্চয়ও হয়। তবে অ্যাপলের ছাঁটাইয়ের পথে না হাঁটার অন্য আরও একটি কারণও রয়েছে। খুব কমসংখ্যক কর্মী নিয়েই কাজ চালানোয় ছাঁটাইয়ের প্রয়োজন কম পড়ে অ্যাপলের। করোনার সময়ে অনেক সংস্থাই চাকরি দেওয়া জারি রাখলেও ছিল নীরব অ্যাপল। ২০১৬-এর কর্মী নেয় অ্যাপল। পরে ২০২১-২২ সালে নতুন করে অল্পসংখ্যক কর্মী নেন তারা।
এদিকে গুগল ও ফেইসবুকের মতো সব জায়ান্ট প্রযুক্তি সংস্থা কর্মীদের নানা রকমের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। এমনকি অফিসে তাদের জন্য নিয়মিত মধ্যাহ্নভোজনেরও আয়োজন করে থাকে কিছু সংস্থা। তবে শুরু থেকেই এসব নিয়মের ধারে-কাছে ছিল না অ্যাপল। ফলে এসব খাতের অনেক অর্থই সংস্থার কোষাগারে জমা হয়। আবার অবসরের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া কর্মীদেরও জোরপূর্বক কাজ থেকে বসিয়ে না দিয়ে বরং তাদের দিয়েই কাজ করিয়ে থাকে অ্যাপল। এজন্য বেশ পরিমাণ অর্থও সঞ্চয় হয়।
এ বছর রেকর্ড গড়ে কমপক্ষে ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে গুগল। আমাজন বা ফেইসবুকের মতো অনেক সংস্থাই হেঁটেছে এই একই পথে। তবে চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও কর্মী ছাঁটাইয়ের চিন্তা করেনি অ্যাপল কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, অ্যাপলের মতো এই কর্মীদের ছাঁটাই না করে, তাদের পেছনে খরচ হওয়া অতিরিক্ত অর্থ সঞ্চয় করলেই বরখাস্ত হওয়া ওই বিপুলসংখ্যক কর্মীকে আজ চাকরি খোয়াতে হতো না।
হৃদরোগ তৈরির পেছনে নানা যৌক্তিক কারণের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি মাড়ি রোগের সম্পৃক্ততা পাওয়া গিয়েছে, অনেকে এমনটা বিশ্বাস করেন না, কারণ মুখের মধ্যকার সংক্রামক হার্টে যাবে কীভাবে। গবেষণা বলছে, মাড়ি বা দাঁতের গোড়ার সংক্রমণ সহজেই রক্তবাহিকার সঙ্গে মিশে শরীরের যেকোনো অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে আর হার্ট যেহেতু রক্তপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে তাই এর ঝুঁকিটাও বেশি।
করোনারি আর্টারি ডিজিজ : মাড়ি রোগ থেকে জীবাণু ও তাদের তৈরি ক্ষতিকর পদার্থ রক্তবাহিকার মধ্যে চালিত হয়। ফলে যাদের উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ধূমপায়ী, দৈহিক পরিশ্রম কম হয় তাদের রক্তনালির মধ্যকার স্থানটি চিকন করতে শুরু করে, যাকে অ্যাথেরোসেক্লরোসিস বলা হয়, ফলে হৃৎপিণ্ড পর্যাপ্ত রক্ত বা অক্সিজেন পায় না, তখন নানা জটিলতা তৈরি হয় আর চিকিৎসা না পেলে হার্ট অ্যাটাক। সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা না থাকলেও মাড়ি রোগ থাকলে অ্যানজাইনা ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দুই থেকে তিন ভাগ বেশি দেখা যায়।
হার্টের ভালভে সংক্রমণ : মাড়ির প্রদাহ থেকে ব্যাকটেরিয়া হার্টের অতি গুরুত্বপূর্ণ ভালভগুলোকে আক্রান্ত করতে পারে। গবেষণা বলে, মাড়ির ব্যাকটেরিয়াকে হার্টের ভালেভও পাওয়া গিয়েছে। যাদের কৃত্রিম ভালভ সংযোজিত বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের মুখের যত্নে কোনো অবহেলার সুযোগ নেই। আবার অন্যদিকে হার্টের ব্যথা নিচের চোয়ালে অনুভব হওয়ার অনেক ইতিহাস এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। হার্টে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে সেখান থেকে ব্যথা চোয়ালে ও দাঁতে অনুভব হতে পারে, বিশেষ করে মেয়েদের হার্টের ব্যথা বাম দিকের নিচের দাঁতে ও চোয়ালে অনুভূত হতে দেখা যায়।
সকালে নাশতা ও রাতে খাবার পর দুমিনিট ধরে দাঁতের পাঁচটি পৃষ্ঠ নিয়ম মেনে পরিষ্কার করতে হবে। দু-দাঁতের মধ্যে খাবার জমলে সাধারণ টুথব্রাশে এগুলো পরিষ্কার হয় না, টুথপিক বা কাঠির পরিবর্তে বাজারজাত ডেন্টাল ফ্লস বা ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনে মাউথ ওয়াশ ব্যবহার। ব্রাশের পর আঙুল দিয়ে আলতো করে মাড়ি মাসাজ ও জিহ্বা পরিষ্কার। চিনির তৈরি খাবারকে কমাতে হবে, চিনিকে সাদা বিষ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, মিষ্টিজাতীয় খাবার যেমন চকোলেট, আইসক্রিম, বিস্কুট, কমলপানীয়, আলুর চিপস, কেক এসবই মুখের ও শরীরের জন্য অস্বাস্থ্যকর। এ ধরনের খাবারকে কমিয়ে মৌসুমি ফরমালিনমুক্ত তাজা ফল, শাকসবজি, দুধ, টক দই, ডিম, সামুদ্রিক মাছ, ছোট মাছে উৎসাহিত হতে হবে। পর্যাপ্ত পুষ্টি মুখের স্বাস্থ্যকে উন্নত রাখে। শরীরের অন্যান্য রোগ যেমন ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিডিটি ইত্যাদিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ব্যায়াম বা দ্রুত হাঁটতে হবে। ছয় মাস অন্তর বা মুখের মধ্যে যেকোনো অস্বাভাবিকতায় অনুমোদিত বিডিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ধূমপান ও পান-জর্দামুক্ত থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন ক্ষতির কারণ হতে পারে।
তুরস্কে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৪০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে এই বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানির কারণ খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ভূমিকম্পে এত ভবন ধসে পড়া কি অবধারিত ছিল নাকি কর্র্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সেগুলো দাঁড়াতে পারল না? লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
ভূমিকম্পের তীব্রতা
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায় প্রদেশে ভেঙে পড়া হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপে এক ব্যক্তি অনেকক্ষণ ধরে কী যেন খুঁজছেন। জানতে চাওয়া হলে আরক্ত চোখে তিনি বললেন, ‘আমার ভাগ্নি রুকিয়েকে খুঁজছি।’ সারা মুখে ক্লান্তির ছাপ নিয়ে তিনি আরও বললেন, ‘আমার ভাগ্নির বয়স ২৩। সে এই হাসপাতালের নার্স। ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে প্রথম ভূমিকম্পের পর রোগীদের সরিয়ে ফেলার কাজে সহযোগিতা করতে রুকিয়ে হাসপাতালে এসেছিল। ওই সময় দ্বিতীয় ভূমিকম্প আঘাত হানে এবং হাসপাতাল ভবন ধসে পড়ে। আমার ভাগ্নি অনেককে হাসপাতাল থেকে বের করে তাদের প্রাণ বাঁচিয়েছিল কিন্তু নিজে বের হতে পারল না। ধ্বংসস্তূপের নিচে কমপক্ষে ১৬ ঘণ্টা বেঁচেছিল সে। সেখান থেকে সে তার স্বামীকে ফোন করেছিল। এখন উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, সে হয়তো আর বেঁচে নেই।’ রুকিয়ের মামাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা ওই অঞ্চলের কারোর জানা নেই। কারণ তিনি একা নন, চলতি মাসের শুরুতে তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্প রুকিয়ের মতো আরও অনেকের জীবন কেড়ে নিয়েছে। সেদিন হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে। অনেককে উদ্ধার করা গেছে, অনেককে যায়নি। শক্তিশালী দুটি ভূমিকম্পে তুরস্কে মারা গেছে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। আহত হয় লাখের ওপরে। উদ্ধারকর্মীরা একদিকে অলৌকিক ঘটনার আশায় হাল ছাড়েননি, অন্যদিকে তুরস্কের মানুষ বোঝার চেষ্টা করছেন, ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এত মানুষের প্রাণহানি কেন হলো, বিশেষ করে যেখানে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করে গেছে দেশটি? তাহলে সমস্যা কোথায় ছিল? এত বাড়ি ধসে পড়ার কারণ কী? রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্প ও পরে ৭.৬ মাত্রার দ্বিতীয় ভূমিকম্প কি আসলে এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, তাদের আঘাতে তুরস্কের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশির ভাগ ঘরবাড়ি ধুলায় মিশে গেল? নাকি বাড়িগুলো আধুনিক নির্মাণ মানদণ্ড মেনে বানানো হয়নি? কর্র্তৃপক্ষের দিক থেকে কি কোনো ধরনের অবহেলা ছিল? এমন নানা প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞ মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির ভূতাত্ত্বিক প্রকৌশলী অধ্যাপক ওকান তুসাজ বলেন, ‘৬ ফেব্রুয়ারি যে দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, সেগুলো আসলেই বেশ শক্তিশালী ছিল। পাঁচ মিলিয়ন টন টিএনটি (রাসায়নিক যৌগ ট্রাইনাইট্রোটলুইন) বিস্ফোরিত হলে যে পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়, প্রথম ভূমিকম্পটি সেই শক্তির সমান ছিল। দ্বিতীয়টি ছিল সাড়ে তিন মিলিয়ন টনের সমান। এ পরিমাণ শক্তি মোকাবিলা করা বেশির ভাগ ভবনের পক্ষে সম্ভব ছিল না।’ তুরস্কের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সিনান তারক্যান বলেন, ‘ভূমিকম্প দুটি কেবল শক্তিশালীই ছিল না, খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে তারা আঘাত হানে। প্রথম ভূমিকম্পের পর অনেক ভবনে সামান্য থেকে মাঝারি ক্ষতি হয় কিন্তু দ্বিতীয় ভূমিকম্পে সেগুলো একেবারে ধসে পড়ে। সরকারি তথ্য বলছে, ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে ছয় থেকে সাত হাজার ভবন পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ভূমিকম্প দুটি যত শক্তিশালীই হোক না কেন, ভবনগুলো যদি মানসম্মত হতো, তাহলে এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।’
উচ্চাকাক্সক্ষী প্রকল্প
ভূমিকম্প আঘাত হানার দুদিন পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছিলেন, ‘এই মাত্রার ভূমিকম্প মোকাবিলায় আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়। যে ১০টি প্রদেশে বাড়িঘর একেবারে ধসে গেছে, সেগুলো এক বছরের মধ্যে তুরস্ক সরকার পুনর্নির্মাণ করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে আমরা বিভিন্ন শহরে ভবন পুনর্নির্মাণের কাজ দক্ষতার সঙ্গে করেছি, এবারও করব।’ ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে যেসব ভবন ধসে পড়ে, সেগুলোর বেশির ভাগই নব্বই দশকে নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে দেশটির পশ্চিমে মারমারা অঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে সাড়ে ১৭ হাজার মানুষ মারা যায়। ওই ঘটনার পর তুরস্ক সরকার সিসমিক ডিজাইন কোড উন্নত করে এবং ২০০৮ সালে উচ্চাকাক্সক্ষী নগর রূপান্তর প্রকল্প হাতে নেয় যার অন্যতম লক্ষ্য ছিল উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করার মতো ভবন নির্মাণ।
২০২২ সালের নভেম্বরে তুরস্কের উত্তরে দাজচে শহরে রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই হাজারের বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময় দেশটির পরিবেশ ও নগরায়ণমন্ত্রী মুরাত কুরুম বলেছিলেন, ‘২০৩৫ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ভবন ভূমিকম্পপ্রতিরোধী করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। আমরা এরই মধ্যে ৩২ লাখ ভবন পুনর্নির্মাণ করেছি। ৮১টি প্রদেশ ও ৯৯২টি জেলায় আড়াই লাখ ভবন সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে পুনরায় নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ৬৬ লাখ আবাসিক ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অডিট করা হয়েছে। দেশের ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ এখন ভূমিকম্পপ্রতিরোধী বাড়িতে বাস করছে।’ ভূমিকম্প মোকাবিলায় তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলা হলেও ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে সে-সবের প্রতিফলন দেখা যায়নি। এ বিষয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সিনান তারক্যান বলেন, ‘কাগজে-কলমে তুরস্কের সিসমিক ডিজাইন কোড বিশ্বমানের। এটি আসলেই বেশ ভালো। তবে বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন কথা বলে।’
বিশেষজ্ঞ মত
তুরস্কের বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় তুরস্ক সরকার আর্থিক প্রণোদনার কথা বললেও নগর রূপান্তর প্রকল্পে সবার অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করেনি। ফলে যারা পুনর্নির্মাণ থেকে লাভবান হবেন, যাদের কাছে মূল্যবান প্লট ছিল যেগুলো আরও উন্নত করা সম্ভব কেবল তারাই পুরনো ভবন ভেঙে নতুন সিসমিক ডিজাইন কোড অনুযায়ী বাড়ি পুনর্নির্মাণে রাজি হন। তুরস্কের বেশির ভাগ মানুষই পুনর্নির্মাণের পেছনে অর্থ ব্যয় করতে রাজি ছিলেন না। এ কারণে মারমারা ভূমিকম্পের পর ২০ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও তুরস্কের বাড়িগুলোর বড় অংশই আধুনিক ছিল না। নিম্নমানের উপকরণ ও মান্ধাতার আমলের বাড়ি বানানোর কৌশল কাজে লাগিয়ে সেসব নির্মিত। তারক্যান বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এই পরিস্থিতি আমাকে গভীরভাবে মর্মাহত করে। আমরা যদি সবাইকে নিয়ে বসতে পারতাম, তাহলে এই ২০ বছর সময়ের মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ সব ভবন ভেঙে নতুন ভবন বানানো সম্ভব ছিল। এটা করা গেলে ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে যত ভবন ধসে পড়েছিল, তার মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ হাজার ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারতাম। অনেক জীবন বাঁচাতে পারতাম আমরা।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তুরস্ক সরকার ও স্থানীয় কর্র্তৃপক্ষের উচিত ছিল সব ভবন নিরাপদ কি না, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরও সতর্কতা অবলম্বন। তাদের উচিত ছিল সবাই সিসমিক ডিজাইন কোড মানছে কি না, সেদিকে নজর দেওয়া। অধ্যাপক ওকান তুসাজ বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে আমরা কনফারেন্সের আয়োজন করেছি, প্রতিবেদন লিখে সেগুলো স্থানীয় কর্র্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। আমরা বলেছি, শক্তিশালী ভূমিকম্প হাতায়, গাজিয়ানতেপের মতো শহরে ফের আঘাত হানবে। এটি অবধারিত। আমরা ব্যাখ্যা করে বলেছিলাম, একেবারে ফল্ট-লাইনের ওপর যদি কোনো ভবন নির্মাণ করা হয়, তা যতই আধুনিক ও শক্তিশালী হোক না কেন, উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়তে বাধ্য। আমরা বলেছিলাম, পুরো দেশের জন্য নিখুঁত ফল্ট-লাইন ম্যাপ তৈরি করা জরুরি। এও বলেছিলাম, ফল্ট-লাইনের ওপর সব ধরনের ভবন নির্মাণ নিষিদ্ধ করতে হবে। কেউই আমাদের কথা শোনেনি।’
তুরস্কে নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও যে
কর্র্তৃপক্ষের নির্দেশ মানা হয়, তা নয়। অধ্যাপক তুসাজ বলেন, ‘৬ তারিখের ভূমিকম্পে অনেক নতুন ভবনও ধসে পড়ে। এর অর্থ, ঠিকাদাররা শর্টকাটে কাজ সেরেছে। নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে খরচ কমিয়েছে। নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার আগে কর্র্তৃপক্ষও তাদের কাজ ঠিকমতো করেনি।’ সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে তুরস্কের হাতায় প্রদেশের বেশ কয়েকটি স্কুল, প্রশাসনিক ভবন ও হাসপাতাল ভেঙে পড়ে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্র্তৃপক্ষের (এএফএডি) সদর দপ্তরও ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার তারক্যান বলেন, ‘দেশের আইন অনুযায়ী, বেসরকারি ভবনের চেয়ে সরকারি ভবন অনেক বেশি শক্তিশালী করে বানানোর কথা। যখন কেউ একটি হাসপাতাল বা ডাকঘর বা যেকোনো সরকারি ভবন নির্মাণ করে, তখন তাকে বলাই হয় বেশি করে কংক্রিট ও লোহা ব্যবহার করতে। যে জমির ওপর সরকারি ভবন তৈরি করা হচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব নির্দেশ দেওয়ার কারণ যাতে ভূমিকম্প বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভবনগুলো টিকে যেতে পারে এবং দুর্যোগের সময় জনগণকে সেবা দেওয়া অব্যাহত রাখতে পারে।’ তারক্যানের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে অধ্যাপক তুসাজ বলেন, ‘ভূমিকম্পে সরকারি ভবন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা বিমানবন্দর ধসে পড়ার ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশ কঠোর আইন আছে। দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে যে দৃশ্য আজ আমরা দেখছি, তাতে স্পষ্ট, আইন বাস্তবায়নে সরকারের গাফিলতি ছিল।’
করণীয়
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে। ওই শহরের বোগাজিচি বিশ্ববিদ্যালয়ের কানদিলি অবজারভেটরি অ্যান্ড আর্থকোয়েক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে মোট বাড়ির সংখ্যা দুই কোটি। এগুলোর মধ্যে ইস্তাম্বুলে আছে ১২ লাখ। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, এসব বাড়িঘরের বেশির ভাগই উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করার মতো অবস্থায় নেই। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন পুনর্নির্মাণ টেকনিক্যালি ও লজিস্টিক্যালি কঠিন এবং ব্যয়বহুলও। তা সত্ত্বেও এটি না করে উপায় নেই বা দেরি করারও সময় নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার তারক্যান বলেন, ‘তুরস্ক সরকারকে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আইন প্রণয়ন করলেই চলবে না, বাস্তবায়নও করতে হবে। সরকারকে বাড়ির মালিকদের বাধ্য করতে হবে তারা যেন তাদের ভবনে অডিট করতে বাধা না দেয়। ভবন যদি প্রয়োজন অনুযায়ী শক্তিশালী না হয়, তাহলে সেগুলোকে শক্তিশালী করতে বাড়ির মালিকদের বাধ্য করতে হবে। দরকার হলে ওইসব ভবন পুনর্নির্মাণ করতে হবে। তারা স্বেচ্ছায় এসব করতে চাইবেন না কিন্তু তাদের যদি বোঝানো যায়, এটি মানুষের জীবন-মরণের বিষয় এবং এক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপোষ হতে পারে না, তাহলে তারা এগিয়ে আসবেন বলে মনে করি।’
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।