
বেলুনকে কেন্দ্র করে বাগ্যুদ্ধে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, উড়ন্ত বস্তুগুলো চীনের নজরদারি বেলুন। ভূপাতিত বেলুনগুলো থেকে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া না গেলেও চীনকে দোষারোপ জারি রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
চীনের দিকে আঙুল
যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে সম্প্রতি ওড়া বেলুন ও অজ্ঞাত বস্তু নিয়ে বিভ্রান্ত ওয়াশিংটন। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি গুলি করে ভূপাতিতও করা হয়েছে। দেশটির আকাশসীমায় এসব বেলুন বা বস্তু পাঠানোর উদ্দেশ্য কী? উড়ন্ত বস্তুগুলো কোথা থেকে এসেছে? কার নির্দেশে? যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য চাক শুমার বলেছেন, উড়ন্ত বস্তুগুলোর সবই বেলুন, অন্য কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিযোগ, উড়ন্ত বস্তুগুলো চীন থেকে এসেছে। ১২ ফেব্রুয়ারি উত্তর আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ হ্রদ লেক হিউরনের ওপর ষড়ভুজ আকৃতির একটি বেলুন উড়তে দেখা যায়। সেটিও ভূপাতিত করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বেলুন আগেরগুলোর মতোই যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় মন্টানা অঙ্গরাজ্য অতিক্রম করছিল। ওই রাজ্যে মামস্ট্রম এয়ার ফোর্স বেজ নামে একটি বিমান ঘাঁটি আছে যেখানে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা মাটির নিচে সংরক্ষিত। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের আরও দুটি জায়গায় আছে, একটি নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের মাইনট শহরে আর অন্যটি ওয়াইয়োমিং অঙ্গরাজ্যে এক বিমান ঘাঁটিতে। প্রশ্ন উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত ঘাঁটি ও ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা নজরদারি করতে চীন এত মরিয়া কেন? এর জবাবে মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, হয় চীন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রাগারে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে অথবা তাইওয়ানসহ চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন যাতে মাথা না গলায়, এজন্য গোয়েন্দা বেলুন পাঠিয়ে হুমকি দিতে চাইছে বেইজিং; আবার দুটোই হতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও উন্নত প্রযুক্তির আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থার অধিকারী চীন। এগুলোর বেশির ভাগই সলিড রকেট যেগুলো যেকোনো সময় দ্রুত ছোড়া সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র তার নিরাপত্তার জন্য ক্ষেপণাস্ত্র ও নিউক্লিয়ার সাবমেরিনের ওপর নির্ভরশীল। এই দুটির কোনোটাই ফার্স্ট স্ট্রাইক সিস্টেম নয়। অন্যদিকে চীনের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা রেললাইন বা মহাসড়কে আঘাত হানতে সক্ষম। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের অবস্থান নির্ণয় করা বা ধ্বংস করা সহজ নয়। স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সীমিতকরণের বিষয়ে রাজি হয়েছিল। চীন এসব বিষয়ে শুরু থেকেই স্বাধীন। যুক্তরাষ্ট্রের মতো তাকে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে অস্ত্র সীমিতকরণের চুক্তি করতে হয়নি। এ কারণে সে ইচ্ছেমতো তার কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়াতে পেরেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র
বেলুন সম্পর্কে মার্কিন সাংবাদিক ডেভিড ইগনেশিয়াস বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে ওয়াশিংটনে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। রিপাবলিকানদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় বেলুন প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন সরকার বলছে, রিপাবলিকান নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও অঞ্চলে একই ধরনের অনুপ্রবেশের ঘটনা কয়েকবার ঘটলেও সে সময় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অবশ্য ট্রাম্পের সময় এ ধরনের ঘটনা এবারের মতো এত দীর্ঘ সময় ধরে হয়নি বা দেশটির ভূ-খণ্ডের এত ভেতরে উড়ন্ত বস্তু ঢোকেনি।’
৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের চীন সফর করার কথা ছিল। কিন্তু ২৮ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী সময়ে কানাডার পশ্চিমাঞ্চল, আলাস্কাসহ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে বেলুন দেখা যাওয়ায় চীন সফর বাতিল করেন ব্লিঙ্কেন। ৪ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশে সাউথ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যে উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর উড়তে থাকা বেলুন প্রথম ভূপাতিত করে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী। ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে চীন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগ আনে। অন্যদিকে হোয়াইট হাউজের অভিযোগ, যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে উদ্বেগজনক উপকরণ সরবরাহ করছে চীন। ৮ ফেব্রুয়ারি চীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশটির মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে সক্ষম এমন এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে তাইওয়ান। চীনের ওই প্রতিবেশী দেশকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন মনে করছে, নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে তাকে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আকস্মিক হামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে পার্ল হারবারে হঠাৎ হামলা চালায় জাপান। এরপর ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। যুক্তরাষ্ট্র পার্ল হারবার বা টুইন টাওয়ারের পুনরাবৃত্তি চায় না। এ কারণে বেলুন নিয়ে দেশটি স্বভাবতই উদ্বিগ্ন।
সমরনীতিতে বলা আছে, কোনো দেশ যদি তার শত্রু দেশে হামলা করতে চায়, তাহলে তা শত্রু দেশকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। শত্রুকে সবসময় বিশ্বাস করাতে হবে, হামলার কোনো চিন্তাই নেই আর যখন আসলেই হামলার কোনো পরিকল্পনা বা অবস্থা নেই, তখন শত্রু যেন মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, যেকোনো সময় হামলা হতে পারে। এসব নীতি যুক্তরাষ্ট্র বেশ ভালোভাবেই জানে। এ কারণে তার অস্বস্তিও যাচ্ছে না। বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব চীন চ্যালেঞ্জ করে আসছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বিশেষ করে গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর মার্কিন আধিপত্য খর্ব করার বড় সুযোগ চীনের হাতে আসে। রাশিয়া, ইরান, সৌদি আরব, তুরস্কসহ শক্তিশালী আরও দেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জোট গড়তে চাইছে চীন। তার ওপর দেশটির নেতৃত্বে এখন যারা আছেন, তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় বেড়ে ওঠেন। তাদের পূর্বসূরিরা অবশ্য ছিলেন জাপানবিরোধী এবং মার্কিনপন্থি।
পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
বেলুন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার উত্তাপ সংশ্লিষ্ট দেশের গণ্ডি পেরিয়ে অন্য দেশেও গিয়ে পৌঁছেছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ শহরে নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন ও চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই। সেখানে ব্লিঙ্কেন চীনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমাদের সার্বভৌমত্বের কোনো ধরনের লঙ্ঘন সহ্য করা হবে না। এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ যেন আর না হয়।’ অন্যদিকে বেলুনকাণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের বানানো রাজনৈতিক প্রহসন হিসেবে অভিহিত করেন চীনা কূটনীতিক ওয়াং ই। চীনকে দমনের জন্য যা করা সম্ভব, তার সবই মার্কিন প্রশাসন করার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি। উত্তর আমেরিকার আকাশে দেখা যাওয়া বেলুনের সবগুলো চীনের বলে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করলেও তার দাবি শুরু থেকেই নাকচ করে যাচ্ছে পেইচিং। জাতীয় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে বেলুনকাণ্ডের প্রভাব কতদূর যাবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। তাদের মতে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নানা কারণে এমনিতেই অনেক নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক এই ঘটনা দেশ দুটির মধ্যে অবিশ্বাস আরও বাড়াবে। ওয়াশিংটন ও পেইচিংয়ের পক্ষে দূরত্ব কমানো কঠিন হয়ে পড়বে।
এদিকে চীনের গুপ্তচরবৃত্তির পরিধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্যান্য দেশের সরকারও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। তারা সামরিক ও প্রযুক্তির দিক থেকে শক্তিশালী দেশটির নজরদারির ক্ষমতা পুনর্মূল্যায়ন করা শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চলতি মাসে চীনের সামরিক বেলুনগুলো পাঁচটি মহাদেশের ৪০টির বেশি দেশের ওপর দিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ জাপান সম্প্রতি বলেছে, উত্তর আমেরিকায় বেলুন দেখতে পাওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদের দেশের ওপর অতীতে বিভিন্ন সময়ে যেসব অজ্ঞাত বস্তু উড়তে দেখেছিল, সেসব ঘটনা পুনরায় বিশ্লেষণ করেছে। তাদের সন্দেহ, ২০১৯ সাল থেকে জাপানের ওপর দিয়ে কমপক্ষে তিনটি গোয়েন্দা বেলুন উড়িয়েছিল চীন। এছাড়া নাম প্রকাশ না করে তাইওয়ানের একাধিক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, চীনের বেশ কয়েকটি সামরিক বেলুন দ্বীপটিতে বিভিন্ন সময়ে ওড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, চীনের শুধুমাত্র আবহাওয়া বেলুন সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল। এর বাইরে চীনের গোয়েন্দা বেলুন তাদের আকাশসীমায় দেখা যায়নি। তবে আকাশে কোনো ধরনের সন্দেহজনক সামরিক বস্তু উড়তে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে গুলি করতে তারা দ্বিধা করবে না। গোয়েন্দা বেলুন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অভিযোগ সামরিক বিশেষজ্ঞদের অনেকে সঠিক মনে করছেন। চীনের নজরদারির ক্ষমতা এতদিন যে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে, তা তারা স্বীকার করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা ড্রু টমসন বলেন, ‘চীন মনে করছে, ক্ষমতা প্রদর্শন, নজরদারি পরিচালনা ও যুক্তরাষ্ট্রকে কোণঠাসা করা এসব কর্মকাণ্ড বাড়াতে তারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে তারা যেকোনো সময় যেকোনো অভিযান পরিচালনা করে ওই কর্মকাণ্ডের ন্যায্যতা দিয়ে যাবে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের কোনো পরোয়া করছে না চীন। নিজেদের ভাবমূর্তি নিয়েও তারা খুব একটা চিন্তিত নয়।’ এদিকে বেলুন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অস্বীকার করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্টো মার্কিন প্রশাসনকে দায়ী করে বলেছে, গত বছরের শুরু থেকে চীনের আকাশসীমায় উচ্চ উচ্চতায় ১০ বারের বেশি বেলুন ওড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। অন্য দেশের আকাশসীমায় প্রবেশ করা যুক্তরাষ্ট্র স্বাভাবিক বলে মনে করে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ‘গত বছর থেকে চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন ছাড়া মার্কিন প্রশাসন আমাদের আকাশসীমায় উচ্চ উচ্চতায় একের পর এক বেলুন ওড়ায়।’ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, ‘পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নজরদারি বেলুন ওড়ানোর অভিযোগ মিথ্যা। বরং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য উচ্চ উচ্চতার নজরদারি বেলুন কর্মসূচি চীনের আছে, আমাদের নেই।’
‘গোয়েন্দা’ বেলুন?
৪ ফেব্রুয়ারি গোয়েন্দা বেলুন সন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের গুলি করার বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়েনবিন বলেন, ‘ওই বেলুন আমাদের আবহাওয়া বেলুনের একটি, যা ভুলপথে চলে গিয়েছিল। বাকি বেলুন সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। তবে আমরা বলতে চাই, অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।’বেলুন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল গ্লেন ভ্যানহার্ক বলেন, ‘উড়ন্ত বস্তু থেকে আমরা হুমকির কোনো ইঙ্গিত পাইনি। ওগুলো গ্যাসে ভরা বেলুন হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবারই প্রথম নয়। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে এ ধরনের অজ্ঞাত বস্তু তিনবার আমাদের আকাশসীমায় চলে এসেছিল।’ কবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোন অঙ্গরাজ্যে ওইসব বেলুন দেখা গিয়েছিল, এ নিয়ে বিস্তারিত তিনি কিছু বলেননি। তবে তিনি জানান, অতীতের বেলুনগুলো অল্প সময় আকাশে ছিল। এবারের মতো এক সপ্তাহ সময় ধরে ছিল না। এদিকে জেনারেল ভ্যানহার্কের বক্তব্যের সমালোচনা করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার আমলে চীনা বেলুন অনুপ্রবেশের তথ্যকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেন, ‘আমার অফিসে এসে সে সময় কেউ আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনা নজরদারি বেলুনের বিষয়ে বলেছিল, এমনটা আমার মনে পড়ছে না।’
মানুষ প্রযুক্তিকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গিয়েছে যে, তার নিজস্ব জীবিকারই বিকল্প হয়ে উঠেছে তা। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রয়েছে সবচেয়ে এগিয়ে। ২০২২ সালের শেষের দিকে ওপেনএআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) চালু করে তাদের চ্যাটবট পরিষেবা চ্যাটজিপিটি। জটিল কোডিং সমস্যা থেকে কঠিন অঙ্ক, এমনকি থিসিসের গবেষণাপত্র পর্যন্ত লিখে দিতে পারে দুর্ধর্ষ এই চ্যাটবট। আর এই দক্ষতাকেই কাজে লাগিয়ে এবার ই-কমার্স সংস্থা আমাজন বের করেছে প্রথম এআই লিখিত বই। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৩০ পাতার বইটি লিখে ফেলেছে চ্যাটজিপিটি। ছোটদের জন্য লেখা বইটির নাম ‘দ্য ওয়াইজ লিটল স্কুইরেল : আ টেল অব সেভিং অ্যান্ড ইনভেস্টিং’। শুধু লেখাই নয়, রয়েছে ছোটদের জন্য ইলাস্ট্রেশনও। চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে কাজটি করিয়েছেন ব্রেট শিকলার নামের নিউ ইয়র্কের এক ব্যবসায়ী। চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে গিয়ে হঠাৎ করেই এই পরিকল্পনা মাথায় আসে ব্রেটের। আর এই পরিষেবাটিকে নির্দেশ দিয়ে তিনি লিখে ফেলেন আস্ত একটা বই। আর পুরো বইটি নাকি লেখা হয়েছে মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। সম্প্রতি আমাজনের নিজস্ব পাবলিশিং ডিভিশনে প্রকাশ হয়েছে বইটি। এরই মধ্যে বইটি পাওয়া যাচ্ছে আমাজনে। ‘দ্য ওয়াইজ লিটল স্কুইরেল : আ টেল অব সেভিং অ্যান্ড ইনভেস্টিং’ সম্পর্কে ব্রেট জানান, এটি একটি শিক্ষামূলক বই। আমাজনে কিন্ডেল ভার্সন ছাড়াও পেপারব্যাক সংস্করণও অর্ডার করা যাবে কিন্ডেল থেকে। বইটির অনলাইন সংস্করণের দাম ২৪৭.৮৭ টাকা। তবে পেপারব্যাক সংস্করণটির জন্য গ্রাহককে দিতে হবে ৮২৮.১৬ টাকা। ইতিমধ্যেই আমাজনের কিন্ডেল স্টোরে জায়গা করে নিয়েছে চ্যাটজিপিটি লিখিত কমপক্ষে ২০০টি ই-বুক। এর মধ্যে বেশ কিছু কবিতার বইও রয়েছে। চ্যাটজিপিটি চালু হওয়ার পর থেকেই বিশেষজ্ঞেদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই পরিষেবাটি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মানুষের সৃজনশীল ভাবনাচিন্তার জগৎ ক্রমশ আরও ছোট হয়ে আসবে।
শিশুদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে রীতিমতো সাধ্যসাধনা করতে হয়। তারপর যদি সেগুলো খুব মুখরোচক কিছু না হয়, তাহলে তো হয়েছে! পুষ্টিবিদদের মতে, খেতে সুস্বাদু না হলেও এমন কিছু খাবার আছে, যেগুলো ছোট থেকে খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে পারলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যেতে পারে সেখান থেকে। এমন কোন কোন খাবার শিশুদের প্রতিদিন খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে, যেগুলো তাদের রোগপ্রতিরোধে সহায়তা করবে?
দই : মিষ্টি দই হলে খাওয়ার কথা বলতে হয় না। কিন্তু টকদই খেতে গেলেই শিশুদের মুখ বেজার হয়ে যায়। বাচ্চারা সাধারণত ওই ধরনের টক বা স্বাদহীন খাবার খেতে পছন্দ করে না। কিন্তু প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ এই খাবার শিশুদের অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। হজমে সহায়তা করে।
ডিম : বেশির ভাগ শিশু ডিম খেতে ভালোবাসে। আবার অনেকে ডিমের আঁশটে গন্ধ সহ্য করতে পারে না। বাড়ন্ত বয়সে শিশুদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং বিভিন্ন খনিজের অভাব পূরণের জন্য চিকিৎসকরা প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খাওয়াতে বলেন।
মিষ্টি আলু : তরকারিতে দিয়ে হোক বা মুখরোচক কোনো পদ, আলুর বদলে রাখার চেষ্টা করুন মিষ্টি আলু। ফাইবারসমৃদ্ধ এই আলু অন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়তা করে। পাশাপাশি আয়রনের পরিমাণও বাড়িয়ে তুলতে পারে মিষ্টি আলু।
দুধ : দুধ খেতে পছন্দ করে এমন শিশু খুঁজে পাওয়াই ভার। কিন্তু দুধের মতো পুষ্টিকর, সহজপাচ্য পানীয় আর দুটো নেই। ক্যালসিয়ামে ভরপুর দুধ, হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
আমাদের দেশে মাথায় আঘাতের প্রধান কারণ হলো সড়ক দুর্ঘটনা। এ ছাড়া উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাওয়া, খেলাধুলা, কাজ করতে গিয়ে আঘাত ইত্যাদি কারণেও মানুষ মস্তিষ্কে আঘাত পান। ট্রাফিক আইন মেনে না চলা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, হেলমেট না পরে মোটরসাইকেল চালানো সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। নিয়ম মেনে চললে মাথায় আঘাতের হার অনেকটাই কমানো সম্ভব।
কেন হয়
মাথায় আঘাত পেলে খুলির ভেতর থাকা মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মস্তিষ্কের আঘাত দুই ধরনের ফোকাল ও ডিফিউজ। মস্তিষ্কের ক্ষতি প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি হয়ে থাকে। সরাসরি মাথায় আঘাতের জন্য যে ক্ষতি হয়, তা হলো প্রাইমারি ইনজুরি। মাথায় আঘাতের পর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে পরবর্তী সময়ে মস্তিষ্ক ঝুলে নেমে আসে (হার্নিয়েশন) বা পানি জমে ফুলে যায় (ইডিমা)। এটাকে তখন সেকেন্ডারি ইনজুরি বলে।
তীব্রতা অনুসারে মস্তিষ্কে আঘাত সামান্য, মাঝারি ও মারাত্মক হতে পারে। আঘাতে মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ অংশ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তাকে ‘ডিফিউজ এক্সোনাল ইনজুরি’ বলে।
করণীয়
মাথায় আঘাত পেলে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। এমনকি বাইরে থেকে রোগীকে দেখতে স্বাভাবিক মনে হলেও তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার। রোগীকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করতে হবে। রোগী বমি করছে কিনা বা বমির ভাব রয়েছে কিনা। এটা খেয়াল রাখতে হবে। জোর করে রোগীকে কোন কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা না করা।
চিকিৎসা
রোগীর আঘাতের সম্পূর্ণ ইতিহাস জেনে, শারীরিক পরীক্ষা করে চিকিৎসক আঘাত ও ক্ষতির মাত্রা নির্ণয়ের জন্য মস্তিষ্কের সিটিস্ক্যান করতে পারেন। ঘাড়ের আঘাত দেখার জন্য সারভাইক্যাল স্পাইনের এক্স-রে করতে হবে। মাথায় আঘাতের পর রোগীর অচেতন হয়ে পড়া, বমি হওয়া, নাক দিয়ে রক্ত বা তরল আসা, কান দিয়ে রক্ত বা তরল আসা ইত্যাদি গুরুতর আঘাতের লক্ষণ। নিকটস্থ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর নিউরোসার্জারি বিভাগে সুচিকিৎসার জন্য পাঠাতে হবে। মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে বেশি রক্তক্ষরণ হলে অস্ত্রোপচার করতে হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।