
প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। পুরুষদের প্রস্টেট গ্রন্থির ক্যানসারকেই প্রস্টেট ক্যানসার বলে। পুরুষদের মধ্যে এ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক বেশি। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়স হলে পুরুষদের মধ্যে এ ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ ক্যানসার শনাক্ত হলে এবং সঠিক চিকিৎসা করলে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
লক্ষণ : প্রস্টেট ক্যানসারের লক্ষণগুলো সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা যায় না। শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্যানসার কিছুটা হলেও বোঝা যায়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রস্টেট ক্যানসারের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। যখন লক্ষণ প্রকাশ পায়, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। এ জন্য বয়স ৫০ বছর পার হলেই প্রত্যেক পুরুষের প্রস্টেট ক্যানসারের জন্য স্ক্রিনিং করা প্রয়োজন।
তবে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে আপনি ধরে নিতে পারেন আপনার প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। যেমন: ঘনঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, রাতে প্রস্রাবের জন্য ঘুম ভেঙে যাওয়া, কখনো কখনো প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার মতো লক্ষণ । এর যেকোনো একটি প্রকাশ পেলে অবশ্যই প্রস্টেট ক্যানসার স্ক্রিনিং করতে হবে। যদিও এগুলো শুধুমাত্র প্রস্টেট ক্যানসার নয়, প্রস্টেট ক্যানসারের সঙ্গে প্রস্টেটের অন্যান্য যেসব রোগ বা বিনাইন প্রস্টেটিক এনলার্জমেন্ট, সে ক্ষেত্রে বেশি হয়।
আবার যে লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন তাহলো- মূত্রত্যাগ, দুর্বল বা ব্যাহত প্রস্রাব প্রবাহে ড্রিবলিং বা রক্তাক্ত প্রস্রাবের অসুবিধা, রক্তাক্ত বীর্য, ইরেক্টাইল সমস্যা, যেমন ইরেক্টাইল ডিসঅংশানশন বা বেদনাদায়ক বীর্যপাত, পায়ে ফোলাভাব, মলদ্বারে চাপ বা ব্যথা । দুর্বলতা বা পায়ে অসাড়তা বোধ করা, মূত্রাশয় বা অন্ত্র নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়া । অপ্রচলিত ওজন হ্রাস । অবসাদে ভোগা।
প্রতিরোধ : প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওজন যেন না হয়। শারীরিক পরিশ্রম অনুযায়ী বিশ্রাম নেওয়া। প্রতিদিনকার ডায়েটে প্রোস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধী খাবার অন্তর্ভুক্ত করা। চর্বিযুক্ত মাছ রাখা। বিশেষত সালমন মাছ যাতে ওমেগা-৩ আছে। রান্না করা টমেটো খাওয়া। লাইকোপিন ধারণ করে যা স্বাস্থ্যকর রক্ত সরবরাহের সঙ্গে ক্যানসার রোধ করে। ব্রকোলি খেতে হবে। ক্রুসিফেরাস শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে যা ক্যানসার কোষকে মেরে ফেলতে পারে এবং কোষের পরিবর্তন প্রতিরোধ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গ্রিন-টি পান করা। ব্রাজিল বাদাম, আখরোট, কফি, গাজর, ডালিমের রস এবং মটরশুঁটি প্রস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধের করে।
সচেতনতা : ধূমপান, অতিরিক্ত মদ ড্রিকংস না করা, রেডমিট, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত দুধ ও প্রচুর চর্বি, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে। কেমিক্যাল, টক্সিন, সূর্যালোক থেকে দূরে থাকাও দরকার। তবে কোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলেই দ্রুত ক্যানসার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
‘অর্গানয়েড ইন্টেলিজেন্স’ বা কৃত্রিম অঙ্গসদৃশ বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে তৈরি হবে জৈব কম্পিউটার। যুগান্তকারী এই আবিষ্কারের পথে হাঁটছেন বিজ্ঞানীরা, যা কম্পিউটার প্রযুক্তির ভবিষ্যৎকে বদলে দিতে পারে। লিখেছেন নাসরিন শওকত
একুশ শতক যেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শতক। প্রায় তিন-চার দশক আগেও এমন বুদ্ধিমত্তার বিষয়টি ভাবাই যেত না। কিন্তু আজ বলা হচ্ছে, মানুষের মস্তিষ্কের কোষের শক্তিতে চলবে কম্পিউটার। যা এত দিন শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিতেই শোনা যেত। কিন্তু একদল মার্কিন গবেষক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র তৈরির গবেষণা শুরু করেছেন। তারা এই গবেষণার নাম দিয়েছেন ‘অর্গানয়েড ইনটেলিজেন্স’ বা মানব মস্তিষ্ক থেকে সৃষ্ট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এই বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে তারা ‘বায়োকম্পিউটার’ বা ‘জৈব কম্পিউটার’ তৈরির পরিকল্পনা করেছেন, যার কাজ চলছে । গবেষকরা দাবি করেছেন, তাদের এই গবেষণা কম্পিউটার প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে। যুগান্তকারী এই কম্পিউটার তৈরির পরিকল্পনায় গত দুই দশক ধরে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। আর তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন সমাজের নীতিবিদ ও সাধারণ জনগণের প্রতিনিধিরা।
‘অর্গানয়েড ইন্টেলিজেন্স’
অর্গানয়েড হলো অঙ্গসদৃশ কোষ বা টিস্যু যা গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে তৈরি হয়। ত্রিমাত্রিক গঠনাকৃতির এই কোষগুলো সাধারণত স্টেম সেল নামের বিশেষ কোষ থেকে তৈরি করা হয়। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে গবেষণাগারগুলোতে স্টেম সেল থেকে এই কোষ তৈরির কাজ করছেন গবেষকরা। এ লক্ষ্যে তারা বিকল্প কিডনি, লাং ও অন্য সব অঙ্গের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছেন। যার ফলে তারা মানুষ বা প্রাণীর ওপর ক্ষতিকর পরীক্ষা এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষকরা বলছেন, কৃত্রিমভাবে তৈরি মস্তিষ্কের অর্গানয়েডের সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্কের মিল খুবই কম। এই অর্গানয়েড মানুষের মস্তিষ্কের কোষের মতো নয়। এই মস্তিষ্কের আকারে খুবই ছোট। দেখতে অনেকটা কলমের নিবের বিন্দুর সমান। এই কোষে থাকা নিউরন মানুষের মস্তিষ্কের মতো কাজ করতে ও বহুমাত্রিক যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা এই আবিষ্কারের ঘটনাকে ‘একটি পাত্রে সৃষ্ট বুদ্ধিমত্তা’ বলে অভিহিত করেছেন।
জন হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং বাল্টিমোরের হোয়াইটিনিং স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পরিবেশগত স্বাস্থ্য ও প্রকৌশলবিদ্যার অধ্যাপক ড. থমাস হারতং ২০১২ সাল থেকে মানুষের ত্বক থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরু করেন। এরপর সেগুলোকে বিকল্প উপায়ে ব্রেইন অর্গানয়েডের কোষে রূপান্তর করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। অধ্যাপক হারতং সহকর্মী বিজ্ঞানীদের সঙ্গে নিয়ে মস্তিষ্কের অর্গানয়েড থেকে এক ধরনের জৈবিক হার্ডওয়ার তৈরির পরিকল্পনা করছেন। তাদের ধারণা, এই নেটওয়ার্ক সুপার কম্পিউটারের চেয়েও বেশি শক্তিসাশ্রয়ী ও শক্তিশালী হবে। তাই তারা একে ‘বায়োকম্পিউটার’ বা জৈব কম্পিউটার নাম দেন, যা আলঝেইমারের মতো রোগের ওষুধ পরীক্ষায় যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটাবে। নতুন এই আবিষ্কার একদিকে মানুষের মস্তিষ্কের উপলব্ধি বা চিন্তাকে আরও তীক্ষè করে তুলতে সহায়তা করবে, অন্যদিকে মানুষের মস্তিষ্কের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য দেবে, যা ভবিষ্যতে কম্পিউটারের ধারণা পরিবর্তন করে দিতে পারে।
মানব মস্তিষ্ক বনাম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাধারণত মানুষের চিন্তা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই প্রযুক্তি মানুষের মস্তিষ্কের সব সক্ষমতাকে পুরোপুরি অনুকরণ করতে পারে না। মানুষের সঙ্গে কম্পিউটারের সুনির্দিষ্ট এই ব্যবধান থাকায়, মানুষ একটি চিত্র বা বার্তাভিত্তিক ক্যাপচা (সিএটিসিএইচএ) ব্যবহার করতে পারে। অথবা স্বয়ংক্রিয় পাবলিক টুরিং পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করা যায় যে, কম্পিউটার ও মানুষ সম্পূর্ণ আলাদা। কম্পিউটারের ভাষায় টুরিং পরীক্ষা কৃত্রিম খেলা হিসেবেও পরিচিত। ১৯৫৯ সালে ব্রিটিশ গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী অ্যালান টুরিং এই পরীক্ষা তৈরি করেন। যার মধ্য দিয়ে এটি মূল্যায়ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল যে, মানুষের মতো করেই কীভাবে মেশিন বুদ্ধিবৃত্তিক আচরণ প্রকাশ করে। কিন্তু কীভাবে একটি কম্পিউটার সত্যিকার অর্থেই মানুষের মস্তিষ্কের বিরুদ্ধে জট পাকায়?
একটি সুপার কম্পিউটার একজন মানুষের তুলনায় অনেক দ্রুত সংখ্যা গণনা করতে পারে। অন্যদিকে শক্তির বিবেচনায় মানুষের মস্তিষ্ক আরও বেশি কার্যকর। জ্ঞান অর্জন এবং জটিল ও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কম্পিউটারের চেয়েও শ্রেষ্ঠতর। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মানুষের মস্তিষ্ক কাজ করে বলেই একজন মানুষ খুব সহজেই আরেকজনের সঙ্গে কথা বলতে পারে, যা কম্পিউটার পারে না। জুনের তথ্য অনুযায়ী, ‘সুপার কম্পিউটার মিশনের কম্পিউটার ব্যবহারের সক্ষমতা একজন মানুষের মস্তিষ্ককেও ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু কম্পিউটারটি এক মিলিয়ন গুণ বেশি শক্তি ব্যবহার করেছে। গবেষক হারতং বলেছেন, ‘যদিও আধুনিক কম্পিউটারের সঙ্গে এখনো মানুষের মস্তিষ্কের তেমন সামঞ্জস্য তৈরি হয়নি, তারপরও মস্তিষ্কের তথ্য সংরক্ষণ করার আশ্চর্য ক্ষমতা রয়েছে। মানব মস্তিষ্ক আনুমানিক আড়াই হাজার (টেরাবাইট) তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে।
বায়োকম্পিউটারের সক্ষমতা
স্টেম সেলের পথপ্রদর্শক জন বি গার্ডন ও শিনিয়া ইয়ামানাকা। ২০১২ সালে এই দুই বিজ্ঞানী যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তারা মানুষের ত্বক থেকে টিস্যুর মতোই কোষগুলোকে সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হওয়ার কৌশল আবিষ্কার করার অবদান হিসেবে এই পুরষ্কার পান। যুগান্তকারী এই গবেষণাটিই হারতংয়ের মতো বিজ্ঞানীদের মস্তিষ্কের অর্গানয়েড তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করেছে। গবেষক হারতং ও তার সহকর্মীদের অর্গানয়েড বুদ্ধিমত্তার পরিকল্পনার গবেষণাসংক্রান্ত একটি নিবন্ধ বিজ্ঞান সাময়িকী ফন্টিয়ার্সে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়। যেখানে এই নিবন্ধের জ্যেষ্ঠ লেখক হারতং বলেছেন, ‘কম্পিউটারের ব্যবহার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় বিপ্লব তৈরি করেছে, যা এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছছে।’ তবে নতুন এই আবিষ্কার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির সম্ভাবনাও রয়েছে।
এই গবেষণার শুরুর দিকের কথা স্মরণ করে হারতং বলেছেন, ‘গবেষণায় যুক্ত অন্য গবেষকরা আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে, মস্তিষ্কের এই কৃত্রিম কোষগুলো চিন্তা করতে বা প্রাণ অর্জনে সক্ষম কিনা? যুগান্তকারী বায়োকম্পিউটার আবিষ্কারের প্রধান গবেষক হারতং বলেছেন, ‘এই উৎসাহ থেকেই আমরা মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে তার গবেষণার শুরু করি। কারণ আপনি চাইলেই ব্যবস্থাটিকে বিতর্কিতভাবে শুরু করতে পারেন। এমন কিছু করতে পারেন, যা মানব মস্তিষ্কের বেলায় করা অনৈতিক।’
অর্গানয়েড বুদ্ধিমত্তাকে হারতং সংজ্ঞায়িত করেছেন গবেষণাগারে তৈরি মানব মস্তিষ্কের মডেল হিসেবে, যা পুনরুৎপাদনশীল জ্ঞানভিত্তিক কাজের একটি অংশ। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে শিক্ষণ ও সংবেদনশীল প্রক্রিয়া। হারতং সম্প্রতি মস্তিষ্কের অর্গানয়েড হিসেবে যে কোষগুলোকে ব্যবহার করেছেন, সেগুলোকে অর্গানয়েড ইন্টেলিজেন্স (ওআই) হিসেবে আনুপাতিক হারে বাড়াতে হবে। প্রতিটি অর্গানয়েডের একাধিক কোষ রয়েছে, যা একটি ফল মাছির স্নায়ুতন্ত্রে খুঁজে পাওয়া যায়। একটি একক অর্গানয়েডের আকার মানব মস্তিষ্কের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লাখো ভাগের সমান। যার মানে এটি একটি কম্পিউটারের স্মৃতি সংরক্ষণাগারের প্রায় ৮০০ মেগাবাইটের সমান। তিনি আরও বলেন, ‘অর্গানয়েড অতিক্ষুদ্র। যার প্রত্যেকটিতে প্রায় ৫০ হাজার কোষ রয়েছে। অর্গানয়েড ইন্টেলিজেন্সের ক্ষেত্রে আমাদের এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ লাখে আনতে হবে।’
এ ক্ষেত্রে গবেষকদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অর্গানয়েডগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার উপায় বের করা। যাতে সেগুলোর কাছে তথ্য পাঠানো যায় এবং ওই কোষগুলো ‘কী ভাবছে’ তার সচিত্র রেকর্ডও নেওয়া যায়। এই গবেষণাটির লেখকরা মিলে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। যেখানে নতুন এই আবিষ্কারের সঙ্গে টুল হিসেবে বায়োইঞ্জিনিয়ারিং ও যন্ত্রসংক্রান্ত শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গবেষক হারতং বলেছেন, ‘আমরা একটি মস্তিষ্ক চালিত কম্পিউটারের ইন্টারফেস ডিভাইস তৈরি করেছি, যা অর্গানয়েডের জন্য এক ধরনের ইইজি (ইলেক্টেরোয়েন্সফালোগ্রাম) ক্যাপ। গত আগস্টে প্রকাশিত একটি নিবন্ধনে যা আমরা উপস্থাপন করেছি। এটি বাঁকানো যায় এমন একটি শেল, যা ঘনভাবে ক্ষুদ্র ইলেট্রিক তার দিয়ে ঢাকা। এই শেল একই সঙ্গে অর্গানয়েড থেকে সংকেত নিতেও পারে আবার ওতে সংকেত পাঠাতেও পারে।’ হারতংয়ের আশা, এমন একদিন আসবে যখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ও অর্গানয়েড ইন্টেলিজেন্সের (ওআই) মধ্যে একটি সুবিধাজনক যোগাযোগের চ্যানেল তৈরি হবে। ‘যখন এই দুই বুদ্ধিমত্তা একে অপরকে নিজেদের সক্ষমতা খুঁজে নেওয়ার সুযোগ করে দেবে।’
এদিকে গত ছয় বছরে মস্তিষ্কের কোষ তৈরির প্রক্রিয়ায় বিপ্লব ঘটেছে, যা ঐতিহ্যগত মসৃণ মনোলেয়ার প্রক্রিয়া থেকে আরও উন্নত হয়ে অঙ্গসদৃশ ত্রিমাত্রিক গঠনাকৃতির (3D) অর্গানয়েডে রূপ নিয়েছে। ২০১৬ সালে পিআই (PI) গোষ্ঠীর মানুষ প্রণোদিত প্লারিপোটেন্ট স্টেম সেল (Pamies et al., 2017) থেকে প্রথমবারের মতো উন্নত ও প্রচুর পরিমাণে মস্তিষ্ক অর্গানয়েড উৎপন্ন করেছে।
ওআই ব্যবহারের উপায়
গবেষকরা বলেছেন, অর্গানয়েড বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে প্রভাবশালী অবদান রাখতে পারে চিকিৎসাবিজ্ঞানে। স্নায়ুজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের ত্বকের নমুনা থেকেও মস্তিষ্কের অর্গানয়েডগুলো তৈরি করা যেতে পারে। এই আবিষ্কারের বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও অন্য সব বিষয় অর্গানয়েডগুলোর ওপর কী প্রভাব ফেলে তা বিজ্ঞানীদের পরীক্ষা করার সুযোগ করে দিয়েছে। এএদিকে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক লেনা স্মিরনোভা এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা সাধারণত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দাতাদের কাছ থেকে তৈরি করা মস্তিষ্কের অর্গানয়েডের সঙ্গে অটিজম থাকা দাতাদের কাছ থেকে পাওয়া মস্তিষ্কের অর্গানয়েডের তুলনা করে দেখতে চাই। লেনা গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক ও সহ-গবেষকও।
মস্তিষ্কের অর্গানয়েড ব্যবহার করে অর্গানয়েড বুদ্ধিমত্তা তৈরি এখনো প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে। কারণ এটি নিয়ে গবেষকরা দুই দশকের বেশি সময় ধরে পরীক্ষাগারে কাজ করছেন। হারতং বলেছেন, কম্পিউটারের তুলনায় অর্গানয়েড বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মস্তিষ্কের শক্তিচালিত মাউস তৈরি করতে এখনো কয়েক দশক সময় লেগে যেতে পারে। কিন্তু এরই মধ্যে এমন সম্ভাবনার প্রতিশ্রুতিশীল ফলাফলও পাওয়া গেছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের কর্টিক্যাল গবেষণাগারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ব্রেট কাগান ও তার গবেষণা দল সম্প্রতি দেখিয়েছে, মস্তিষ্কের কোষ ভিডিও গেম পং খেলতে সক্ষম। ব্রেট কাগান গবেষণাটির আরেক সহকারী লেখকও। অর্গানয়েড বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতির কথা জানিয়ে গবেষক হারতং বলেছেন ‘ব্রেট কাগান ও তার দল এখন মস্তিষ্কের অর্গানয়েডের ওপর এই পরীক্ষা চালাচ্ছেন এবং আমি বলব যে, অর্গানয়েডের সঙ্গে এই পরীক্ষাটির প্রতিলিপি করা এরই মধ্যে ওআইর মৌলিক সংজ্ঞা পূরণ করেছে। এখন ওআইর পুরো সম্ভাবনা উপলব্ধি করার জন্য শুধু এর সম্প্রদায়, সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিগুলোর উন্নয়ন করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
অর্গানয়েডের নৈতিকতা
জ্ঞান সম্পর্কিত কর্মকা-ের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের অর্গানয়েডগুলোর সক্ষমতা কেমন হবে তা নিয়ে অসংখ্য প্রশ্নের মুখে পড়েছে এই গবেষণা ও আবিষ্কার। নৈতিক উদ্বেগ থেকে ওঠা এই প্রশ্নগুলো সম্পর্কে হারতং বলেছেন, ‘ওআইর উন্নয়ন ঘটানোর ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির একটি মূল অংশ ছিল নৈতিক ও সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল একটি পদ্ধতি অনুসরণ করা। এ কারণেই একটি ‘সুনির্দিষ্ট নীতিগত’ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা এই গবেষণার প্রাথমিক পর্যায় থেকেই নীতিবিদদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সঙ্গে কাজ করছি। গবেষণাটির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানী, নীতিবিদ ও সাধারণ জনগণের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত দল ধারাবাহিকভাবে সব নৈতিক বিষয় মূল্যায়ন করবেন।
শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি পানীয় হলো দুধ। ক্যালশিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি-এর মতো যৌগে ভরপুর এই পানীয় বাচ্চাদের তো বটেই, বড়দের জন্যও সমান উপকারী। কিন্তু মেদ ঝরিয়ে ছিপছিপে হতে গিয়ে অনেকে ডায়েট থেকে দুধ একেবারে বাদ দিয়ে ফেলেন। পুষ্টিবিদদের একাংশ মনে করেন, দুধ দিয়ে তৈরি এমন কিছু পানীয় আছে, যা ভাত, রুটির বদলে খাওয়া যায়। অতএব বাড়তি ক্যালোরি নিয়ে চিন্তাও থাকে না। কীভাবে বানাবেন সেই পানীয়? দুধ দিয়ে বানানো যায়, এমন দুটি পানীয়ের হদিস রইল এখানে।
দারুচিনি গুঁড়া এবং দুধ
উপকরণ : দুধ ১ কাপ, দারুচিনির ডাল ১টি, দারুচিনি গুঁড়া এক চিমটে।
প্রণালি : একটি পাত্রে দুধ ফুটতে দিন। এর মধ্যে গোটা একটি দারুচিনির ডাল দিন। ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে ঢাকনা দিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এবার দুধ থেকে দারুচিনির ডাল তুলে নিয়ে গ্লাসে ঢেলে ফেলুন। ওপর থেকে সামান্য দারুচিনির গুঁড়া ছড়িয়ে দিন। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল মেদ ঝরাতে সক্ষম একটি পুষ্টিকর পানীয়।
ছাতুর মিল্কশেক
উপকরণ : গুড় ৩ টেবিল চামচ, ছোট এলাচ আধ চা চামচ, কাজুবাদাম ৫টি, কাঠবাদাম ৫টি, ছোলার ছাতু ১ কাপ, দুধ ৫০০ মিলি।
প্রণালি : প্রথমে ব্লেন্ডারে দুধ, ছাতু, ছোট এলাচ গুঁড়া এবং গুড় একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এরপর গ্লাসে ঢেলে ওপর থেকে ছড়িয়ে দিন কাজু এবং কাঠবাদামের কুচি।
নিজের মাইক্রোব্লগিং সাইটে রীতিমতো ‘সক্রিয়’ ইলন মাস্ক। মাঝেমধ্যেই নানা ধরনের টুইট করে থাকেন টেসলা প্রধান। কখনো নিজের সারাদিনের কাজকর্ম শেয়ার করছেন, তো কখনো কোনো মিম। এ কারণে বেশিরভাগ সময়েই নেটমাধ্যমে বেশ চর্চাতেও থাকেন ইলন।
টুইট পোস্টের সৌজন্যে আরও একবার ভাইরাল হলেন টুইটার কর্তা। এবার রেসলারের ভূমিকায় ইলনকে দেখে চমকে গেল নেটদুনিয়া। তবে এবার পোস্টটি করেছেন অন্য কোনো টুইটার ব্যবহারকারী। যেখানে বেশ বিরল এক ভূমিকায় দেখা গিয়েছে টেসলা প্রধানকে। সম্প্রতি ডোগেডিজাইনার নামে এক টুইটার ব্যবহারকারী শেয়ার করেছেন ইলনের একটি পুরনো ছবি। যেখানে কুস্তিগিরের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে টুইটারের সিইওকে। তার বিপরীতে কুস্তি লড়ছেন এক বিরাটবপু কুস্তিগির। সুমো রেসলারের সঙ্গে লড়ছেন ইলন মাস্ক, এই ক্যাপশন দিয়ে ছবিটি পোস্ট করেছেন তিনি। আর সেই ছবিটি ইলনকে ট্যাগ করতেও ভোলেননি ওই ব্যক্তি।
ছবিটিতে ইলনের পোশাক থেকে শুরু করে ভঙ্গি সবটাই পেশাদার রেসলারের মতো। আর সেই ছবি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। লাইক ও কমেন্টে ভেসে যায় টুইটার। ছবিটির নিচে কমেন্ট করেছেন খোদ ইলনও। নিজস্ব ভঙ্গিতে উত্তর দিয়েছেন, ক্রাশড ডিস্কের ফলে আট বছর ধরে যন্ত্রণা সহ্য করে চলেছেন তিনি। প্রায় পাঁচ দিন আগে পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে টুইটারে। এরই মধ্যে ১৯ হাজারেরও বেশি লাইক পড়েছে। কমেন্টের বন্যাতে ভেসেছে টুইটার। কেউ ইলনকে জিজ্ঞেস করেছেন, তিনি সত্যিই সুমো রেসলারের মতো লড়েন কিনা? কেউ বলেছেন, দেখেই কোমর টনটন করছে। কেউ কেউ আবার হতবাক হওয়ার ইমোজিতে ভরিয়েছেন টুইটার।
টুইটার কেনার পর থেকেই বেশ সমস্যায় রয়েছেন ইলন। সংস্থার খরচ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। এদিকে ওপেন এআইকে টক্কর দিতে চ্যাটজিপিটির বিকল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনাতেও রয়েছেন তিনি। সে জন্য এরই মধ্যে এআই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দল গড়ার কাজও শুরু করেছেন দিয়েছেন। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব সময় আলোচনার থাকেন তিনি। তবে এবার সম্পূর্ণ নতুন অবতারে ধরা পড়লেন ইলন।
ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়েই চলছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে, তারপরও যেন ভাগ্যটা ফেরানো যাচ্ছিল না। পরাশক্তির তকমাটা খসে যায় গেল এক যুগে। লিগ শিরোপা তাদের কাছে শুধুই মরীচিকা। সাদা-কালোদের কাছে টুর্নামেন্টের শিরোপাও দূর আকাশের তারায় রূপ নিয়েছিল। সেখান থেকে মোহামেডানকে বলতে গেলে একাই শিরোপার স্বাদ দিয়েছেন ‘ঘরের ছেলে’ সুলেমান দিয়াবাতে। মালির এই স্ট্রাইকার টানা পাঁচ মৌসুম ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন মাঝারি মানের মোহামেডানকে। তার জাদুতে গতকাল ফেডারেশন কাপের মহা-ফাইনালে আবাহনীকে হারিয়েছে সাদা-কালোরা। এই অর্জন এসেছে অনেক অপেক্ষার পর। তাই তো এই শিরোপাকে মোহামেডানের ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন দিয়াবাতেও। বিশ্বাস করেন, এই শিরোপা বদলে দেবে মোহামেডানের চিন্তাধারাকে।
টাইব্রেকারে শিরোপা জয়ের পর ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের হুল্লোড়ের মধ্যে ম্যাচসেরা, টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার নিয়ে এক কোনায় বসে দেশে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন দিয়াবাতে। সেই ফাঁকেই সাংবাদিকদের কাছে জানালেন প্রতিক্রিয়া, ‘পেনাল্টি শুটআউটের আগ পর্যন্ত ম্যাচটা ভীষণ কঠিন ছিল আমাদের জন্য। আল্লাহ আমাদের সহায়তা করেছেন এই ট্রফিটি জিততে। তাই আমি অনেক খুশি। আমার ক্যারিয়ারে কোনো ফাইনালে প্রথমবারের মতো চার গোল করলাম। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’ দিয়াবাতে বলেন, ‘৯ বছর পর আমি একা নই, সব খেলোয়াড় মিলে মোহামেডানকে একটা শিরোপা এনে দিয়েছি। বিশ্বাস ছিল ম্যাচে ফিরতে পারলে আমরাই শিরোপা জিতব, সেটাই হয়েছে। আমি এই অর্জন মালিতে থাকা আমার পরিবার, বিশেষ করে আমার মাকে উৎসর্গ করছি।’ শিরোপাটা মোহামেডানের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ আলফাজ আহমেদের জন্যও বিশেষ অর্জন। ফুটবল ক্যারিয়ারে অসংখ্য আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ খেলেছেন এবং জিতেছেন। তবে এই জয়টাকে আলাদা করে রাখছেন তিনি, ‘আজকের খেলাটা অনেক বড় অর্জন। ব্যাকফুটে থেকে ফিরে আসা, ম্যাচ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না কে জিতবে। দিয়াবাতে আসাধারণ ফুটবল খেলেছে। মুজাফ্ফারভের হাত ভেঙে দিয়েছিল, ওই অবস্থায়ও সে খেলা চালিয়ে গেছে। খেলোয়াড়দের কমিটম্যান্ট ছিল অসাধারণ। খেলোয়াড় হিসেবে আমি শিরোপা জিতেছি, এবার কোচ হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ে প্রথম শিরোপা জিতলাম। তাই শিরোপাটাকেই আমি এগিয়ে রাখব।’ প্রথমার্ধে ২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও হাল ছাড়েননি আলফাজ। শিষ্যদের শিখিয়েছেন মাথা ঠান্ডা রেখে পাল্টা জবাব দেওয়ার মন্ত্র, ‘প্রথমার্ধের খেলা শেষে শিষ্যদের বলেছি, তোমরা মাথা ঠা-া রেখে খেলো। তারা সেটাই করেছে।’
চোটে পড়ে মাঠ ছাড়া গোলকিপার সুজন সতীর্থ বিপুকে টাইব্রেকারে দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, ‘মাঠ ছাড়ার এক মিনিটের মধ্যে আবাহনী যখন গোল পরিশোধ করল, তখন ভীষণ খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল আমরা আর পারব না। তবে আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে বিপু। আমি তাই অনেক বেশি খুশি।’
বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম উম্মাহকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাদের সন্তানদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) ক্যাম্পাসে ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে।’
মুসলমানদের যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে যথাযথভাবে এই সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা এটা করতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখনই আমি ওআইসি সদস্য দেশে যাই, তাদের আমি এই অনুরোধই করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইসলামের স্বর্ণযুগে বিশ^সভ্যতা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোলসহ জ্ঞানের আরও অনেক শাখায় মুসলিম স্কলারদের ব্যাপক অবদান রয়েছে, যা আমাদের মুসলিমদের ঐতিহ্যের গৌরবময় ইতিহাস গড়েছে। সেই যুগের মুসলিম স্কলাররা সংস্কৃতি, জ্ঞান অর্জন, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশে^ আধিপত্য বিস্তার করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেই অবস্থান থেকে বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর এই পিছিয়ে থাকার কারণগুলো আমাদের বিশ্লেষণ করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান-বিজ্ঞানের অভাব এবং অন্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলোকে, বিশেষ করে তাদের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটাই এই আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত উদাহরণ। তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘মুসলিম জাতির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জোরালো প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে করে তারা এ ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারেন।’
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব দ্বারা উপস্থাপিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয়; বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও অন্যান্য খাতে।
ওআইসির মহাসচিব ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) চ্যান্সেলর হিসেন ব্রাহিম তাহার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইইউটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনিও বক্তব্য দেন।
সমাবর্তনে ২০২১ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক, মাস্টার্স, পিএইচডি এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অসামান্য ফলাফলের জন্য দুই ধরনের স্বর্ণপদক আইইউটি স্বর্ণপদক এবং ওআইসি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আইইউটির ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার অর্থায়নে আইইউটির নবনির্মিত মহিলা হলেরও উদ্বোধন করেন।।
ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য। বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক এখন ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে। বাংলাদেশে ইস্যুকৃত মোট ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ২২ লাখ কিন্তু একক (ইউনিক) গ্রাহক সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। ক্রেডিট কার্ড পুরোপুরি জামানতবিহীন পার্সোনাল ঋণ হলেও ঋণ পরিশোধের হার খুব সন্তোষজনক। গ্রাহক পর্যায়ে একটি ক্রেডিট কার্ড দিতে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বেশ কিছু অত্যাবশ্যক কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। এটিকে ঋণ হিসেবে না দেখে লাইফস্টাইল পণ্য হিসেবে দেখে এর আবশ্যকীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করা হলে ক্রেডিট কার্ড ব্যাপ্তি অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। তখন নিম্ন আয়ের মানুষরাও ক্রেডিট কার্ড নিতে পারবেন, যা ক্যাশলেস সোসাইটি গঠনের মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা দ্রুতগতিতে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে রূপান্তরিত হচ্ছে। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেনে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে যেমন পিওএস, এটিএম, সিআরএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কিউআর কোড ইত্যাদি। বিগত বছরগুলোতে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২১ সালের মার্চ মাসে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং ই-কমার্সের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা, ২০২২ সালে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। তাই বলা যায়, প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে অত্যন্ত শক্তিশালীভাবে প্রথাগত আর্থিক লেনদেনের পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা।
তুলনামূলক কম ব্যবহারকারী
আমাদের দেশে তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক কম। দেশে ইস্যুকৃত ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ৩ কোটি ১০ লাখ যেখানে ইস্যুকৃত ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যার মধ্যে যে বড় ব্যবধান, এর প্রধান এবং অন্যতম কারণ হলো ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে কাগজপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা। এছাড়া রয়েছে ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে গ্রাহকদের প্রচলিত বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা।
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে হলে আগে কার্ড ব্যবহারের ইকোসিস্টেম প্রসারিত করতে হবে। কিউ-আরকোড এবং অ্যাপসভিত্তিক লেনদেন বৃদ্ধি পেলে পুরো দেশে ক্রেডিট কার্ড তথা সামগ্রিকভাবে কার্ডের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়বে।
ব্যবহারকারী কারা
ব্যাংকগুলো চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ী উভয় শ্রেণির গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করছে, তবে এক্ষেত্রে চাকরিজীবীদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ঋণের সহজলভ্যতা এবং সুবিধাজনক পরিশোধ ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রমোশনাল অফার যেমন ইএমআই, ক্যাশব্যাক ডিসকাউন্টসহ বাই ওয়ান গেট ওয়ান, ইন্স্যুরেন্স, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, মিট অ্যান্ড গ্রিট, লাউঞ্জ সুবিধা ইত্যাদি।
ঋণ শোধের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়
ক্রেডিট কার্ড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য পণ্য হয়ে উঠেছে। এটি নিতে হলে ঋণ পরিশোধের যোগ্যতার প্রমাণের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রমাণও দাখিল করতে হয়। দেশে এখন রিটার্ন জমা দেওয়ার হার বেড়েছে। সবাই প্রতি বছর তার আয়কর রিটার্ন জমা দেয়। কিন্তু অনেকে অসাবধানতাবশত আয়কর রিটার্ন জমা দেয় না। তাছাড়া অনেকের করযোগ্য আয় না থাকায় তারাও রিটার্ন জমা দেয় না। যা ক্রেডিট ইস্যু করার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করছে বলে মনে করি।
জীবন সহজ করছে ক্রেডিট কার্ড
ক্রেডিট কার্ড আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এটির ব্যবহারও অত্যন্ত সহজ। ক্রেডিট কার্ড বিলম্বিত বিল পরিশোধের ভিত্তিতে কাজ করে, যার অর্থ আপনি এখন আপনার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করে অর্থ ব্যয় করতে পারেন এবং পরে তা সুবিধামতো সময়ে পরিশোধ করতে পারেন। ব্যবহৃত অর্থ গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে ডেবিট হয় না। এভাবে গ্রাহক প্রতিবার তার প্রয়োজনে কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, যা আমাদের জীবনযাত্রাকে অত্যন্ত সহজ ও সাবলীল করে তুলেছে। একজন গ্রাহক যদি নিয়মিত সঠিক সময়ে তার ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করেন তাহলে কখনোই সেই গ্রাহক ঋণগ্রস্ত হবেন না। ব্যাংকগুলোর শক্তিশালী মনিটরিং ও রিকভারি ব্যবস্থা থাকার কারণে এই সেক্টরের খেলাপি ঋণের হার তুলনামূলক অনেক কম।
নিরাপত্তায় প্রয়োজন সচেতনতা
ডিজিটাল পেমেন্টগুলো সাধারণত বিভিন্ন ব্যবহারিক কারণে অফলাইন পেমেন্টের চেয়ে বেশি নিরাপদ। যেমন নগদ অর্থ বহনের ঝুঁকি না থাকা, চুরি, জালিয়াতির আশঙ্কা কম থাকা। ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহকের যে ধরনের সচেতনতা প্রয়োজন
কার্ড নম্বর, কার্ডের পেছনের ৩ সংখ্যার কার্ড ভেরিফিকেশন ভ্যালু (CVV2), ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (OTP), মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ এবং নিরাপত্তা পিন কারও সঙ্গে বিনিময় না করা।
সন্দেহজনক কোনো ওয়েবসাইটে ই-কমার্স লেনদেন থেকে বিরত থাকা ও কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ থেকে বিরত থাকা।
সন্দেহজনক কোনো ই-মেইল অথবা এসএমএসে থাকা লিঙ্কে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা।
সাইবার সংক্রান্ত ঝুঁকি বিবেচনায় ডিজিটাল ডিভাইসের সব সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখা এবং নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন অতিসত্বর ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চ অথবা ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
কার্ড হারানোর পরপরই ব্যাংকের কল সেন্টারে অবহিত করা।
সাধারণত, অধিকাংশ ব্যাংকই নির্দিষ্ট লেনদেনের পরিমাণের ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ডের বার্ষিক ফি সম্পূর্ণ বা আংশিক মওকুফ করে দিয়ে থাকে, যার ফলে এটি গ্রাহকের ওপর বাড়তি কোনো চাপ সৃষ্টি করে না। ক্রেডিট কার্ড একটি লাইফস্টাইল পণ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ক্রেডিট কার্ডের সুদের হারের তুলনায় বাংলাদেশে তা অপেক্ষাকৃত অনেক কম। তবে ব্যাংকগুলো সেটেলমেন্টের দিন থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনাসুদে বিল পরিশোধের সুযোগ দিয়ে থাকে। তাই যদি কোনো গ্রাহক বুঝে সচেতনভাবে নিয়মিত বিল পরিশোধ করে তবে এটা কিন্তু গ্রাহকদের জন্য একটি চমৎকার সুযোগ।
গ্রাহকদের বিভিন্ন চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন উৎসবে নানা ধরনের অফার দিয়ে থাকে যার ফলে গ্রাহক বেশি বেশি লেনদেন করতে উদ্বুদ্ধ হয় যা ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এ যেন ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনাল! সুলেমান দিয়াবাতে যেন কিলিয়েন এমবাপ্পে। না, ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফরাসি যুবরাজ এমবাপ্পের মতো ট্র্যাজিক হিরো হতে হয়নি দিয়াবাতেকে। হয়েছেন বিজয়ী দলের গর্বিত সেনাপতি। দুই ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান ও আবাহনীর মধ্যে ফেডারেশন কাপের ফাইনালটা হয়ে উঠেছিল এক বাঁক বদলের লড়াই। যতবার আবাহনী এগিয়ে গেছে ততবারই দিয়াবাতে জ্বালিয়েছেন মোহামেডানের আশার প্রদীপ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ৩-৩। অতিরিক্ত সময়ে ৪-৪। আবাহনীর চার গোল চার জনের; কিন্তু মোহামেডানের চারটাই দিয়াবাতের। এরপর টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষার শুরুটাও মালির ফরোয়ার্ডের লক্ষ্যভেদে। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য পরীক্ষাটা ৪-২ গোলে জিতে ৯ বছর পর কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপার স্বাদ পেল মোহামেডান।
ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে এগিয়ে ছিল আবাহনীই। তাদের সামনে প্রথমার্ধে বড্ড অগোছালো মনে হয়েছে আলফাজ শিষ্যদের। মারিও লেমস তুণের সব সেরা তীরদের জড়ো করে একাদশ সাজিয়েছিলেন। যার নেতৃত্ব দেন হাফ-ফিট রাফায়েল আগুস্তো। আক্রমণভাগে তার দুপাশে ছিলেন দানিয়েল কলিনদ্রেস ও তরুণ ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। আর ঠিক ওপরে এমেকা ওগবাহ। আকাশির আক্রমণ ঠেকাতে তখন নাজেহাল সাদা-কালোরা। উপর্যুপরি আক্রমণ থেকে আবাহনীকে ১৬ মিনিটে এগিয়ে নেন ফাহিম। কলিনদ্রেসের কাছ থেকে বল পেয়ে এমেকা ওগবাহ ডিফেন্সচেড়া পাস বাড়ান। চলন্ত বলে ফাহিমের বাঁ পায়ের শট মোহামেডান কিপার সুজন হোসেনের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। মোহামেডান অসহায়ত্বের সুযোগ ৪৩ মিনিটে কাজে লাগান কোস্টারিকার বিশ্বকাপার কলিনদ্রেস। নিজেদের অর্ধ থেকে হৃদয়ের বাড়ানো বল আয়ত্তে নিয়ে মার্কার হাসান মুরাদকে কোনো সুযোগ না দিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ান এই তারকা।
বিরতি থেকে মাঠে ফিরে অন্যরকম এক মোহামেডান। আলফাজ তিনটি পরিবর্তন করে মাঠে পাঠান জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার ইমন ও আলমগীর রানাকে। তাতেই গতি পায় সাদা-কালোর আক্রমণ। ৫৬ মিনিটে ২-১ করেন দিয়াবাতে। কামরুলের ক্রস হেড করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে ডিফেন্ডার আলমগীর মোল্লা বল দিয়ে দেন দিয়াবাতের কাছে; দুর্দান্ত সাইডভলিতে বল জালে জড়ায় দিয়াবাতে। চার মিনিট পর সমতাসূচক গোল করেন তিনি। উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফরভের জোরালো ভলি আবাহনী কিপার রুখলেও বাঁদিকে জাফর পেয়ে দ্রুত ক্রস ফেলেন গোলমুখে। মার্কারদের ছাপিয়ে দারুণ হেডে সোহেলকে পরাস্ত করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন দিয়াবাতে। ৬৫ মিনিটে এমেকা ওগবাহর হেড পোস্টে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয় আবাহনীকে। পরের মিনিটে ডান দিক থেকে ফাহিমের শট সুজন কোনোমতে সেভ করলেও আলতো ট্যাপে গোল করে আবাহনীর লিড পুনরুদ্ধার করেন এমেকা (৩-২)। তবে ৮৩ মিনিটে কামরুলের কর্নারে দিয়াবাতে হ্যাটট্রিক করে মোহামেডানকে আবার ম্যাচে ফেরান।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুটি অসাধারণ সেভ করেন মোহামেডান কিপার সুজন। ৯৬ মিনিটে রহমতের কর্নার ঘুরে ফিরে রাফায়েলের কাছে এলে তাতে দারুণ শট নেন। তবে সুজন ঝাঁপিয়ে তা রুখে দেন। পরের মিনিটে কলিনদ্রেসের কর্নারে আসাদুজ্জামান বাবলুর হেড ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করে মোহামেডানকে ম্যাচে রাখেন সুজন। ১০৬ মিনিটে মোহামেডানকে পেনাল্টি উপহার দেন সোহেল। শাহরিয়ার ইমনের ঠেলে দেওয়া বল ধরতে ছুটছিলেন দিয়াবাতে। তার এক টাচে বলটা চলে যাচ্ছিল গোললাইনের বাইরে। তবে সোহেলের পা ধরে টান দিলে পড়ে যান দিয়াবাতে। পেনাল্টি থেকে সোজাসুজি শটে প্রথমবারের মতো মোহামেডানকে লিড এনে দেন দিয়াবাতে। এই ম্যাচটা সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। তবে বিধাতা যে ফাইনালের চিত্রনাট্য লিখেছেন অন্যভাবে। ম্যাচের ১১৬ মিনিটে মোহামেডানের তেকাঠীর আস্থা সুজনকে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। মাঠে এসে অপ্রস্তুত আহসান হাবিব বিপুকে পরের মিনিটেই গোল হজম করতে হয়। রয়্যালের কাছ থেকে আড়াআড়ি পাস পেয়ে বক্সের অনেক বাইরে থেকে ডানপায়ের জোরালো শটে গোল করেন এই ডিফেন্ডার। তাতে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টিতে।
ভাগ্য পরীক্ষায় অবশ্য বিপু মোহামেডানের বিজয়ের নায়ক হয়ে ওঠেন বিপু। শুরুতেই ঠেকিয়ে দেন রাফায়েলের শট। অন্যদিকে দিয়াবাতে, আলমগীর কবির রানা, রজার দুরাতে টানা ৩ গোল করেন। আবাহনীর হয়ে এমেকা ও ইউসেফ গোল করলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-২। এরপর মোহামেডানের শাহরিয়ার ইমনের শট সোহেল ঠেকিয়ে দিলে আবাহনীর ফেরার আশা জাগে। তবে বিপু কলিনদ্রেসের শট রুখে দিলে উত্তাল হয়ে ওঠে মোহামেডান গ্যালারি। আর কামরুল হাসান ঠিকঠাক লক্ষ্যভেদ করে অনেক চাওয়ার শিরোপা নিশ্চিত করেন মোহামেডানের।
অভিনেত্রী দর্শনা বণিক আবারও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করবেন। যদিও কলকাতার বেশ কিছু ছবিতে পর পর কাজ করেছেন দর্শনা। তবুও শাকিব খানের সঙ্গে দর্শনার নতুন কাজকে ঘিরে শুরু হয়েছিল নানা রকমের জল্পনা। ওপার বাংলার একের পর এক সিনেমায় সই করে চলেছেন দর্শনা। কিছু দিন আগে অভিনেতা আজাদ আদরের সঙ্গে একটি ছবিতে স্বাক্ষর করেছেন নায়িকা। এরপর আবার শাকিবের সঙ্গে জুটি বাঁধতে চলেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি ‘দিদি নম্বর ১’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেই অনুষ্ঠানেই বাংলাদেশের কাজের পরিবেশ, শাকিবের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন দর্শনা। ইদানীং কি টালিগঞ্জের থেকে ওপার বাংলায় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন তিনি? দর্শনার স্পষ্ট জবাব, ‘এখানেও অনেক কাজ করছি। টালিগঞ্জের কাজের জন্যই তো বাইরে বিভিন্ন কাজের সুযোগ আসছে। দুই বাংলাই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশে শাকিবের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে অনেক অভিনেতারই। সেখানে পদ্মা পাড়ের প্রথম ছবিতেই নায়ক হিসেবে পেয়েছেন তাকে। শাকিব প্রসঙ্গে দর্শনা বলেন, ‘খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। শাকিব ওখানে এক বিশাল নাম। তবে সেটে তেমনটা কখনো মনে হয়নি।’ তবে নতুন কাজের প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে নারাজ অভিনেত্রী। এই মুহূর্তে কলকাতাতেই রয়েছেন। খুব শিগগিরই বাংলাদেশে আসছেন এমনটাই আভাস দিলেন এই নায়িকা।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।