
এক দিনের মধ্যেই থ্রেডস (Threads) অ্যাপটি ১০ মিলিয়ন বা এক কোটিরও বেশি ডাউনলোড করার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। এই অ্যাপটি যেহেতু এক্কেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তাই তাতে একাধিক ত্রুটিও ইতিমধ্যে ধরা পড়েছে।
থ্রেডস অ্যাপে এখন সব থেকে বড় ত্রুটি হলো, গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট ডেটা ডিলিট করা। থ্রেডস অ্যাপে আপনার অ্যাকাউন্ট ডিলিট করতে গেলে আপনাকে ইনস্টা অ্যাকাউন্টও মুছে ফেলতে হবে। খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে আপনার থ্রেডস অ্যাকাউন্টের সব ডেটা ডিলিট করতে আপনাকে প্রকৃতপক্ষে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটা ডিলিট করতে হবে। এটাই এই মুহূর্তের সব থেকে বড় বিপত্তি। সব থেকে সমস্যার বিষয়টাই হলো গ্রাহকের নিরাপত্তা। প্রাইভেসি সচেতন গ্রাহকদের কাছে যা বড়ই চিন্তার বিষয়। নতুন অ্যাপটির ঋঅছ পেজে লেখা হচ্ছে, ‘পৃথক পোস্ট আপনি সবসময়ই মুছে ফেলতে পারেন। তবে আপনার থ্রেড প্রোফাইল এবং ডেটা মুছে ফেলতে আপনাকে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটাই মুছতে হবে।’
লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রভাব হ্রাস পাওয়ায় লাভবান হয়েছে চীন। দেশটি এখন লাতিন আমেরিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। গত ২০ বছরে চীন ও লাতিন আমেরিকার বাণিজ্য ২১.৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। চীনা ব্যাংকগুলোও বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে লাতিন আমেরিকাকে। লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
চীনের অগ্রযাত্রা
একটা সময় ছিল যখন লাতিন আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি নির্ভর করত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে তার সম্পর্কের ওপর। ইতিহাসের পাতায় এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। তবে সময় এখন পাল্টেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পাশাপাশি চীনও গত কয়েক দশকে লাতিন আমেরিকায় গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে স্নায়ুযুদ্ধের পর ওই মহাদেশ নিয়ে বেশ আগ্রহী চীন। গত শতকের নব্বই দশকের শেষের দিক পর্যন্ত লাতিন আমেরিকার সঙ্গে এশিয়ার সম্পর্ক তেমন একটা মজবুত ছিল না। তবে ব্যতিক্রম জাপান। এশিয়ার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে লাতিনের সম্পর্ক ওই সময় সেভাবে গড়ে না উঠলেও জাপানের সঙ্গে তারা ঘনিষ্ঠ ছিল। শক্তিশালী ছিল তাদের কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক। বিশেষ করে ব্রাজিল, মেক্সিকো, পেরুসহ লাতিনের বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে জাপান সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করে। পরবর্তী সময় জাপানের পাশাপাশি এশিয়ার অন্য দেশ যেমন ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভিয়েতনামসহ আসিয়ানভুক্ত কয়েকটি দেশ লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করে। সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও লাতিন আমেরিকার মধ্যে মিত্রতার সম্পর্ক গড়ে উঠলেও গত দুই দশকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে চীন। ২০০০ সালের পর থেকে লাতিন আমেরিকার সঙ্গে চীনের রাজনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি দেশটির ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা’ কৌশল বা পারস্পরিক লাভের লক্ষ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নির্মাণ। অন্য দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা ও কারোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা এই দুই নীতি চীন মেনে চলে বলে বিশ্বকে সময়-সুযোগ পেলেই অবহিত করে। পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে তার এই ন্যারেটিভ কতটা সত্য, তা ভিন্ন আলোচনা। ভেনেজুয়েলার হুগো চেভেজ, ব্রাজিলের লুলা দ্য সিলভা, বলিভিয়ার ইভো মোরালেস বা ইকুয়েডরের রাফায়েল কোরেয়া এখন নয়া লাতিনের বাম নেতা। তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ চায়, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের মতো চীন যেন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলায়। এখন পর্যন্ত চীন এই অবস্থান ধরে রেখেছে। কেবল লাতিন আমেরিকা নয়, মধ্যপ্রাচ্যেও চীন ওই দুই নীতি মেনে চলছে, যা উভয় পক্ষের জন্য স্বস্তিদায়ক।
লাতিন আমেরিকায় চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতিতে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো। মার্কিন নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে সামরিক কর্মকর্তারা মনে করেন, ভূরাজনৈতিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চীন লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে মনোনিবেশ করেছে। এর মধ্য দিয়ে এশিয়ার শক্তিশালী দেশটি তাইওয়ানকে আরও বিচ্ছিন্ন করবে, কিউবা ও ভেনেজুয়েলার কর্র্তৃত্ববাদী শাসনকে সমর্থন জুগিয়ে যাবে। লাতিন আমেরিকায় চীনের অগ্রযাত্রা দেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাম্প্রতিক সময়ে মহাদেশটির সঙ্গে আরও বড় পরিসরে অর্থনৈতিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন। অবশ্য তার এই উদ্যোগকে যথেষ্ট মনে করছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, লাতিন আমেরিকায় দীর্ঘদিনের প্রভাব ধরে রাখতে ও চীনকে ঠেকাতে মার্কিন প্রশাসনকে সহযোগিতার পরিসর আরও বাড়াতে হবে। বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে পূর্বসূরিদের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর পদক্ষেপ নেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওইসব দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোতে তহবিল সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার ঘটনা ভুক্তভোগী দেশগুলোকে চীনের প্রতি আকৃষ্ট করে। এ ছাড়া লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুতের উদ্যোগ থেকেও সরে আসেন ট্রাম্প। লাতিন আমেরিকায় পশ্চিমাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতাকে কাজে লাগাচ্ছে চীন। চলতি বছরের এপ্রিলে চীন সফর করেছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে শি বলেন, ‘চীন ও ব্রাজিল কৌশলগত অংশীদার এবং তাদের স্বার্থও অভিন্ন। ব্রাজিলের সঙ্গে বন্ধুত্বকে বরাবরই অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে চীন।’
ইতিহাস
লাতিন আমেরিকার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে। সে সময় স্পেন থেকে মেক্সিকো হয়ে এশিয়ায় পণ্য আদান-প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথের নাম ছিল ম্যানিলা গ্যালিয়ন ট্রেড রুট। ওই সমুদ্রপথ দিয়ে পোর্সেলিন, সিল্ক ও মসলা চীন ও মেক্সিকো আমদানি-রপ্তানি করত। ১৮৪০ সালের মধ্যে হাজার হাজার চীনাকে শ্রমিক হিসেবে লাতিন আমেরিকায় পাঠানো হয়। তাদের একটা অংশ কিউবা ও পেরুতে কুলির কাজ করতেন। তবে বেশির ভাগই আখক্ষেত ও রুপার খনিতে কাজ করতেন। পরের শতাব্দীতে লাতিন আমেরিকার সঙ্গে চীনের সম্পর্কের ভিত্তি ছিল অভিবাসন, কারণ ওই সময় চীন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। লাতিন আমেরিকার বেশির ভাগ দেশই মাও সে তুংয়ের কমিউনিস্ট সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তবে ২০০১ সালের ১১ ডিসেম্বর চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যোগ দেওয়ার পরই চীন ও লাতিন আমেরিকার মধ্যে সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিকশিত হয়। ব্রাজিল, কিউবা, প্যারাগুয়ে, পেরু ও ভেনেজুয়েলায় আজ প্রচুর চীনা বাস করছেন। সেই উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে শ্রমিক হিসেবে মহাদেশটিতে তাদের বসবাস শুরু হয়। পরবর্তী সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সেখানে তারা যান।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক
গত দুই দশকে চীন লাতিন আমেরিকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়। এই ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়ে চীনের সঙ্গে লাতিন আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে জোরদার হয়। ২০০১ সালে লাতিন আমেরিকা ও চীনের মধ্যে ১৪.৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। ২০২০ সালে এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৩১৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ ২০০১ সালের ১১ ডিসেম্বরে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) চীন যোগ দেওয়ার পর লাতিন আমেরিকার সঙ্গে তার বাণিজ্য ২১.৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। ওই দুই দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও লাতিন আমেরিকার বাণিজ্য ৩৬৪.৩ বিলিয়ন ডলার থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ৭৫৮.২ বিলিয়ন ডলার হয়। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও মহাদেশটির বাণিজ্য দ্বিগুণ (৯৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ১৯৭.৪ বিলিয়ন ডলার) বৃদ্ধি পায়। চীনের সঙ্গে ২০ বছরে লাতিন আমেরিকার বাণিজ্য ২১.৫ গুণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ আমেরিকায় দেশটির বিশাল বাজার তাকে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত করে। একই সঙ্গে লাতিন আমেরিকায় চীন তার আর্থিক কর্মকাণ্ডেরও প্রসার ঘটায়। ২০০৫ সালের পর চীনের প্রধান দুটি পলিসি ব্যাংক চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও চায়না এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক লাতিন ও ক্যারিবীয় দেশগুলোকে ১৪১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ দেয়। এই পরিমাণ ঋণ বিশ্বব্যাংক, ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা লাতিন আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক প্রদত্ত ঋণের থেকেও বেশি। ১৪১ বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রায় ৯৩ শতাংশ যায় আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইকুয়েডর ও ভেনেজুয়েলায়। ঋণের অর্থের বড় অংশ জ¦ালানি (৬৯ শতাংশ) ও অবকাঠামো (১৯ শতাংশ) প্রকল্পে ব্যয় করা হয়।
কূটনৈতিক অগ্রগতি
লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপরও জোর দেয় চীন। ওই অঞ্চলের বেশির ভাগ দেশের সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন মজবুত হচ্ছে। লাতিনের যেসব দেশের সঙ্গে তাইওয়ানের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল, তারা এখন চীনের দিকে ঝুঁকছে। বেলজিয়ামভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ব্রুগেলের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অ্যালিসিয়া গার্সিয়া-হেরেরো বলেন, ‘লাতিন আমেরিকায় চীনের অগ্রযাত্রা অপ্রতিরোধ্য বলে মনে হচ্ছে। এর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন কৃতিত্বের দাবিদার। অর্থনৈতিক ব্লক দুটি লাতিন আমেরিকায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। এ কারণে তারা লাতিন আমেরিকায় প্রভাব হারাচ্ছে।’ যুক্তরাষ্ট্র নানা ধরনের আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সুবিধা স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন জনগণকে আকৃষ্ট করছে না। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে, বলিভিয়া, চিলিসহ লাতিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোর সঙ্গে দুই দশকের বেশি সময় ধরে আলোচনার পরও চুক্তি করতে না পারায় বেকায়দায় আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। লাতিন ওই দেশগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুতে তেমন একটা উৎসাহ পাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান চীনকে গত দুই দশকে লাতিন আমেরিকায় প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
রাজনৈতিক স্বার্থ
বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও সহায়তার ওপর ভিত্তি করে উন্নয়নের এক কাঠামো নির্ধারণ করেছে চীন সরকার, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা’। এই উন্নয়ন কাঠামোর মধ্য দিয়ে লাতিন আমেরিকায় চীন তার প্রভাব বাড়াচ্ছে। শিক্ষাবিষয়ক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার পাশাপাশি সফট পাওয়ারের (বল প্রয়োগের চেয়ে মানিয়ে চলার ক্ষমতা) ওপর চীনের মনোযোগ লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাইরে তাকে বিকল্প অংশীদার হিসেবে হাজির করতে সহযোগিতা করেছে। ২০০১ সালে চীনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াং জেমিন ১৩ দিনের সফরে লাতিন আমেরিকায় যান। ওই সময় তার সঙ্গে লাতিন নেতাদের বেশ কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। চীনা প্রেসিডেন্ট জেমিনের ওই সফরকে লাতিন আমেরিকার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক উন্নয়নের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৩ সালে শি জিনপিং চীনের ক্ষমতায় বসার পর এখন পর্যন্ত ১১ বার লাতিন আমেরিকা সফর করেন। মহাদেশটির বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের পাশাপাশি কূটনৈতিক মিত্রদের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তিও করে চীন। চীনের সঙ্গে যেসব দেশ কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি করেছে, তাদের মধ্যে আছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, ইকুয়েডর, মেক্সিকো, পেরু ও ভেনেজুয়েলা।
তাইওয়ান ইস্যুও চীন-লাতিন আমেরিকা নৈকট্যের আরেকটি বড় কারণ। তাইওয়ানের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়, এমন দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায় না চীন। এটা সে পরিষ্কার করেই জানিয়েছে, কোনো রাখ-ঢাক রাখেনি। তাইওয়ানের প্রতি লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলোর সমর্থন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমেছে। লাতিন আমেরিকার মাত্র সাতটি দেশ বর্তমানে তাইওয়ানের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দিচ্ছে। চলতি বছরের মার্চে হন্ডুরাস তাইওয়ান সরকারের কাছ থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার অর্থসহায়তা চেয়েছিল, যদিও হন্ডুরাস অর্থসহায়তা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। ওই ঘটনার পর তাইওয়ানের প্রতি সমর্থন সরিয়ে নিয়ে চীনের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে হন্ডুরাস সরকার। হন্ডুরাসের পর ডমিনিকান রিপাবলিক ও নিকারাগুয়াও চীনের দিকে সরে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইতিসহ অন্য ক্যারিবীয় দেশগুলো তাইওয়ানকে বাদ দিয়ে চীনকে সমর্থন করার চাপে আছে এবং এই চাপ ক্রমে বাড়ছে।
কয়েকটি বিপদচিহ্ন যথাসময়ে বুঝতে পারলে গর্ভকালীন অনেক মাকে (Pregnant women) মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা যায়। শুধুমাত্র কিছু সচেতনতার অভাব অনেক মাতৃমৃত্যুর করুণ কারণ। আসুন, ৮-৪-৪-৪-৪-৮ পয়েন্টগুলো মনে রেখে আমরা প্রতিরোধযোগ্য অকাল মৃত্যুগুলো ঠেকিয়ে দিই।
আট : গর্ভবতী (Pregnant) মায়েদের ৮টি প্রধান বিপদচিহ্ন
১. গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে বা প্রসবের পরে শরীরে পানি আসা। ২. গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে বা প্রসবের পরে ব্লাডপ্রেসার বেড়ে যাওয়া। (নিয়মিত প্রেশার চেক করাটা জরুরি।) ৩. খুব বেশি মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা। ৪. খিঁচুনি হওয়া। ৫. গর্ভাবস্থায় রক্তস্রাব তা যত সামান্যই হোক। ৬. প্রসবের সময় বা পরে বেশি রক্তপাত। গর্ভফুল (Placenta) না পড়া। ৭. দীর্ঘস্থায়ী প্রসব ব্যথা (ব্যথা ১২ ঘণ্টার বেশি থাকা) ৮. ভীষণ জ্বর : গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর ৩ দিনের বেশি জ্বর বা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব।
চার : গর্ভকালীন বাহ্যিক কোনো সমস্যা থাকুক আর না থাকুক কমপক্ষে চার বার চেকআপ
১ম চেকআপ : যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।
২য় চেকআপ : গর্ভধারণের ৬ মাসের সময় (সঙ্গে টিটেনাসের টিকা)।
৩য় চেকআপ : গর্ভধারণের ৮ মাসের সময়।
৪র্থ চেকআপ : গর্ভধারণের ৯ মাসের সময়।
(প্রতিবার চেকআপের সময় বাচ্চার অবস্থা দেখা ছাড়াও মায়ের রক্তচাপ, প্রস্রাব, রক্তশূন্যতা, রক্তের সুগার দেখতে হয়)।
চার : দিনে অন্তত চার বার সুষম খাবার খেতে হবে
চার : চারটি ‘দেরি’ মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণ
১. বিপদচিহ্ন বুঝতে দেরি। ২. সিদ্ধান্ত নিতে দেরি। ৩. জরুরি মুহূর্তে যানবাহন পেতে দেরি (গ্রামীণ পরিবেশে)। ৪. সেবাকেন্দ্রে সেবা পেতে দেরি।
চার : প্রসবের পর চারবার চেকআপ
১ম চেক-আপ : প্রসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
২য় চেকআপ : প্রসবের ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে।
৩য় চেকআপ : প্রসবের ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে।
৪র্থ চেকআপ : প্রসবের ৪২ দিনের মাথায়।
আট : নবজাতকের (০ থেকে ২৮ দিন) আটটি বিপদচিহ্ন
১. দ্রুত শ্বাস নেওয়া বা বুকের খাঁচা দেবে যাওয়া। ২. খিঁচুনি। ৩. জ্বর বা শরীর ঠান্ডা হওয়া। ৪. মায়ের দুধ টানতে না পারা বা না চোষা। ৫. নেতিয়ে পড়া। ৬. নাভিতে ইনফেকশন (নাভি পেকে যাওয়া)। ৭. জন্মের সময় ওজন ২ কেজির (২০০০ গ্রাম) কম। ৮. জন্মের পরপর কান্না না করা বা বিলম্বে কান্না করা।
অনেকের বাড়িতেই কমবেশি পাস্তা রান্না হয়। রান্নার আগে পাস্তা সেদ্ধ করার পর সাধারণত তার পানিটা ছেঁকে ফেলে দিই। কিন্তু এই পানি ফেলে না দিয়ে যদি রেখে দেন, তাহলে ঘরোয়া নানা কাজে ব্যবহার করতে পারি।
ঘরের গাছে পানি দেওয়ার পরিবর্তে পাস্তা সেদ্ধ পানি দিন। সারের কাজ হবে। এ ছাড়াও এই পানি খনিজ ও ভিটামিনসমৃদ্ধ, যা গাছপালা এবং ফুলের বৃদ্ধি বাড়ায়। তাই পাস্তা সেদ্ধ পানি ফেলে না দিয়ে ঘরের বাগানের গাছপালায় দিন।
পিৎজার ময়দা মাখার সময়ে যদি পাস্তা সেদ্ধ করা পানিটি ব্যবহার করেন, তাহলে পিৎজার ব্রেডটি নরম ও তুলতুলে হবে। ভাত রান্নার জন্য সাধারণ পানির পরিবর্তে পাস্তা সেদ্ধ করা পানি ব্যবহার করুন। এতে ভাত আরও সুস্বাদু হবে।
যদি পাস্তা সস ব্যবহার করে শেষের দিকে বেশি ঘন হয়ে যায়, তাহলে তাতে একটু পাস্তা সেদ্ধ পানি মেশান। এতে সস পাতলা হবে।
সারা দিনের ব্যস্ততা, দৌড়-ঝাঁপের কারণে দিনের শেষে পায়ে ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। পাস্তা সেদ্ধ পানি হালকা গরম থাকা অবস্থায় পাত্রে ঢেলে তার মধ্যে পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে পায়ের ব্যথা কমবে।
রান্নার সময়ে মসলা ভালো করে না কষালে তরকারি ভালো স্বাদ হয় না। অনেক সময় মসলা একটু বেশি শুকিয়ে গিয়ে কড়াইয়ে লেগে যায়। তখন আমরা সামান্য পানি দিয়ে ঠিক করে নিই। এই পানিটা না দিয়ে যদি পাস্তা সেদ্ধ করা পানি ব্যবহার করা হয় তাহলে তরকারি অনেক বেশি সুস্বাদু হবে।
আগামী চেস গিল্ড স্কুল দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আইয়ান রহমান ও মনন রেজা নীড়। একক ইভেন্টের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে আইয়ান ও ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নীড়। ৭ রাউন্ডের খেলায় আইয়ান ও নীড় দুজনই পেয়েছে সাড়ে ছয় পয়েন্ট করে।
বিটজ দলগত বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এলিগেন্ট চেস একাডেমি। এই দলে খেলেছে জারিফ হক আফনান, তাসরিক সায়হান, সিয়াম চৌধুরী ও নীলাভা চৌধুরী। আজ শনিবার দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে শেষ হয়েছে এই প্রতিযোগিতা।
আগামী চেস গিল্ডের আয়োজনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয় ‘আমরা ৯২’ আগামী চেস গিল্ড স্কুল রেটিং টুর্নামেন্ট। সুইস লিগ পদ্ধতিতে হয়েছে খেলা। একক ও দলগত দুই বিভাগে অংশ নেয় ১৪৫ জন দাবাড়ু। টুর্নামেন্টে বিজয়ীরা ট্রফি, মেডেল ও সার্টিফিকেটের পাশাপাশি পেয়েছে ৭০ হাজার টাকা।
টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার, আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম।
টানা ৬ ম্যাচ জিতে লা লিগার শীর্ষে উঠে এসেছিল জিরোনা। আগের রাতে সেভিয়াকে হারানো বার্সেলোনা সেই জিরোনাকে পেছনে ফেলে। আর রিয়াল মাদ্রিদ এবার উড়তে থাকা জিরোনাকে হারিয়ে লা লিগার কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধার করেছে।
শনিবার মন্তিলিভি স্টেডিয়ামে জিরোনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল। রিয়ালের হয়ে গোল তিনটি করেছেন জোসেলু, অঁরেলিয়ে চুয়ামেনি ও জুড বেলিংহাম।
আট ম্যাচের সাতটিতে জিতে রিয়ালের পয়েন্ট এখন ২১। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা। আর টানা ছয় জয়ের পর রিয়ালের কাছে হেরে যাওয়া জিরোনা ১৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে।
সপ্তাহ খানেক আগেই আতলেতিকো মাদ্রিদে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরেছিল রিয়াল। এবার জিরোনায় গিয়ে
প্রথমার্ধেই ২ গোলে এগিয়ে যায় আনচেলোত্তির শিষ্যরা। এর মধ্যে ১৭ মিনিটে বেলিংহামের ক্রস থেকে বল জালে পাঠান জোসেলু। আর ২২ মিনিটে টনি ক্রুসের কর্নার থেকে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন চুয়ামেনি।
রিয়াল ব্যবধান ৩-০ করে ৭১ মিনিটে। জোসেলুর শট জিরোনা গোলরক্ষক প্রতিহত করলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। নাগালে বল পেয়ে দারুণভাবে বল জালে পাঠান বেলিংহাম। এটি রিয়ালের হয়ে ৭ ম্যাচে তার অষ্টম গোল।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
লাক্সারিয়াস জীবন পাওয়ার জন্য এখন মানুষ দিনরাত শুধুই কাজ করে চলেছেন। যার মধ্যে অফিস ডেস্কে বসে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেয়ারে বসে ল্যাপটপের সামনে তাকিয়ে থাকা রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক।
শুধু তাই নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। যারা অফিসে ডেস্কে কাজ করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সারাদিন যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের অন্যতম অভিযোগও এটি। তারা বলে থাকেন, চেয়ারে বসে কাজ করে মোটা হয়ে যাচ্ছি! তবে এই অজুহাতকে একেবারে সত্য বলার সুযোগ নেই। কারণ ডেস্কে বসে কাজ করেও স্লিম ও ফিট থাকা সম্ভব। এজন্য মেনে চলুন পাঁচটি টিপস।
হাঁটুনফিট ও কর্মক্ষম থাকতে নিয়মিত হাঁটুন। দিনের পর দিন দীর্ঘ সময় বসে থাকলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এমনকি কাজের ফাঁকেও ১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে হেঁটে আসতে পারেন।
সোজা হয়ে বসুনচেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন। মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে অনেক চাপ পড়ে, সেই সঙ্গে চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের পাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টের ওপর। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় মনিটরটি চোখের সমান স্তরে রাখুন। মাউস ব্যবহার করার সময় শুধু আপনার কব্জি নয় পুরো হাত ব্যবহার করুন।
চাপ এড়িয়ে চলুনএটা খুব কঠিন কাজ, চাপমুক্ত থাকা। বিশেষ করে যখন চারপাশ থেকে নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। তবে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখুন, নিজেকে মোটিভেট করুন। কোনও চাপই বেশি দিন থাকে না, এগুলো নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে মনোযোগ বাড়ান। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে অনলাইনে কিছু যোগা শিখে অভ্যাস করুন।
চোখের যত্নকম্পিউটারে কাজ করার সময় স্ক্রিনে একটানা ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাকিয়ে থাকবেন না। নিয়মিত চোখের পাতা ফেলুন। স্ক্রিনে পর্যাপ্ত আলো রাখুন, যেন চোখের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
হাড়ের যত্ন বসে থাকার ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে। এজন্য নজর দিতে হবে প্রতিদিনের খাবারে স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ডিম, দুধ, দই ও বাদাম রাখুন।