আবার ফেরার লড়াই
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
এভাবেই বারবার ছন্দ কেটে যায়। জিততে জিততে হেরে যায় দল। ছন্দপতনের পর তাই আবার শুরু হয় ফেরার লড়াই। সিলেটে প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচে উড়ে যাওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আবার ছন্দে ফেরার লড়াই শুরু করেছে বাংলাদেশ। অনুপ্রেরণা খুঁজছে নিকট অতীতে জেতা ম্যাচ থেকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পাওয়া ম্যাচ খুঁজতে বেশি দূরে অবশ্য যেতে হবে না। ফ্লোরিডায় ৫ আগস্ট ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টুয়েন্টি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজও জেতে তারা। সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হয়েছিল সেন্ট কিটসে। হেরেছিল সাকিব আল হাসানের দল। এরপর আর সিরিজে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। ফ্লোরিডায় দুটি জয়। মাঝে প্রায় চার মাস। সিলেটের হারে ফিরে এসেছে একই প্রেক্ষাপট। সিরিজ জিততে হলে জিততে হবে পরের দুটি ম্যাচ। বৃহস্পতিবার মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি। এদিন ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে সিরিজ হারতে হবে। টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবিয়ানদের হেলাভরে উড়িয়ে দেওয়ার পর এটা মেনে নেওয়া কঠিন।
এমন সংকট থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে তাই ফিরে তাকাতে হচ্ছে ফ্লোরিডার দিকে। সেই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু প্রথম ম্যাচটি জিতেছিল ৭ উইকেটে। বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ওভারে ১৪৩ রান তুলেছিল। এরপর বৃষ্টির কারণে সেন্ট কিটসে ১১ ওভারে মাত্র ৯১ রানের টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয় স্বাগতিকদের সামনে। ঝড় তুলে সেদিন ৭ উইকেটে জিতেছিল তারা। ক্যারিবিয়ানরা সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার পর ফ্লোরিডার প্রথম ম্যাচ ১২ রানে জিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সেদিন ম্যাচ জয়ে মূল ভূমিকা রেখেছিলেন তামিম ইকবাল। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৪ বলে ৭৪ রান করেছিলেন তিনি। অধিনায়ক সাকিবের ৬০ রানও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পরের ম্যাচে রান পাননি সাকিব। তবে ফ্লোরিডায় সেদিন ঝড় তুলেছিলেন লিটন দাস। ৩২ বলে ৬১ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে ১৮৪ রানে পৌঁছে দেয়। বৃষ্টি হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে টার্গেট ছিল ১৫৫ রানের। দারুণ বল করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। সুবাদে ম্যাচটা বাংলাদেশ ১৯ রানে জিতে ২-১-এ সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়। সেই দুটি টি-টুয়েন্টিসহ মোট পাঁচটি ম্যাচ হেরে সিলেটে জয় পেয়েছে উইন্ডিজ। ম্যাচ জেতার ধরনটাও ছিল দেখার মতো। সব সংস্করণে আধিপত্য হারানো ক্যারিবিয়ানরা এখনো টি-টুয়েন্টিতে কেন সমীহ করার মতো দল, চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই তা টের পেয়েছেন সাকিবরা।
সিরিজে ফিরে আসার জন্য বাংলাদেশের সমানে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী? অবশ্যই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের ঝড় থামানো। শেই হোপ দুরন্ত ফর্মে আছেন ওয়ানডে সিরিজ থেকেই। সিলেটে তার হাফসেঞ্চুরিতে ৫৫ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয় সফরকারীরা। রান পেয়েছেন নিকোলাস পুরান, কিমো পল। প্রতিভাবান শিমরন হেটমায়ারকে নামতেই হয়নি। অন্য বিগ হিটারাও ড্রেসিংরুমে বসে ছিলেন। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নিজেদের জন্য লড়াইটাও কিন্তু বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যাট হাতে অতিরিক্ত আগ্রাসী হয়ে ওঠা, বুঝে না বুঝে শট খেলার খেসারত গত ম্যাচেই দিতে হয়েছে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের। বাংলাদেশের জন্য এসবই ভয়ের কথা। একে তো ক্যারিবিয়ানদের মারকুটে রূপ, তার ওপর নিজেদের সংবরণ। এ চ্যালেঞ্জগুলোই মিরপুরে স্বাগতিকদের সিরিজে ফেরার পথে বড় বাধা হয়ে দেখা দিতে পারে।
সাকিব, তামিম, মুশফিকরা অভিজ্ঞতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে অনেক এগিয়ে। ব্যাটিং প্রজ্ঞাতেও এগিয়ে তারা। কিন্তু বিগ হিট নেওয়ার ক্ষেত্রে হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা এগিয়ে থাকবে। এটা সুযোগ হিসেবে কি নিতে পারবে স্বাগতিক বোলাররা? বিগ হিট মিস হলেই তো উইকেট পাওয়ার সুযোগ। আর সেই সুযোগ লুফে নেওয়ার মানেই ম্যাচ জয়। তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে সমতায় ফেরা। যেমন ভাবে ফ্লোরিডায় সমতায় ফিরেছিল বাংলাদেশ। সেবারও তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথমটি হেরে পিছিয়ে পড়েছিল সাকিবের দল। এবারও পিছিয়ে তারা। ফলে সমর্থকদের মনে প্রশ্ন ঘুরছে, মিরপুরে কি ফ্লোরিডার সেই জেতার গল্প ফিরিয়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ?
শেয়ার করুন
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

এভাবেই বারবার ছন্দ কেটে যায়। জিততে জিততে হেরে যায় দল। ছন্দপতনের পর তাই আবার শুরু হয় ফেরার লড়াই। সিলেটে প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচে উড়ে যাওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আবার ছন্দে ফেরার লড়াই শুরু করেছে বাংলাদেশ। অনুপ্রেরণা খুঁজছে নিকট অতীতে জেতা ম্যাচ থেকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পাওয়া ম্যাচ খুঁজতে বেশি দূরে অবশ্য যেতে হবে না। ফ্লোরিডায় ৫ আগস্ট ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টুয়েন্টি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজও জেতে তারা। সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হয়েছিল সেন্ট কিটসে। হেরেছিল সাকিব আল হাসানের দল। এরপর আর সিরিজে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। ফ্লোরিডায় দুটি জয়। মাঝে প্রায় চার মাস। সিলেটের হারে ফিরে এসেছে একই প্রেক্ষাপট। সিরিজ জিততে হলে জিততে হবে পরের দুটি ম্যাচ। বৃহস্পতিবার মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি। এদিন ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে সিরিজ হারতে হবে। টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবিয়ানদের হেলাভরে উড়িয়ে দেওয়ার পর এটা মেনে নেওয়া কঠিন।
এমন সংকট থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে তাই ফিরে তাকাতে হচ্ছে ফ্লোরিডার দিকে। সেই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিন্তু প্রথম ম্যাচটি জিতেছিল ৭ উইকেটে। বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ওভারে ১৪৩ রান তুলেছিল। এরপর বৃষ্টির কারণে সেন্ট কিটসে ১১ ওভারে মাত্র ৯১ রানের টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয় স্বাগতিকদের সামনে। ঝড় তুলে সেদিন ৭ উইকেটে জিতেছিল তারা। ক্যারিবিয়ানরা সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার পর ফ্লোরিডার প্রথম ম্যাচ ১২ রানে জিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সেদিন ম্যাচ জয়ে মূল ভূমিকা রেখেছিলেন তামিম ইকবাল। ওপেনিংয়ে নেমে ৪৪ বলে ৭৪ রান করেছিলেন তিনি। অধিনায়ক সাকিবের ৬০ রানও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পরের ম্যাচে রান পাননি সাকিব। তবে ফ্লোরিডায় সেদিন ঝড় তুলেছিলেন লিটন দাস। ৩২ বলে ৬১ রানের ইনিংস বাংলাদেশকে ১৮৪ রানে পৌঁছে দেয়। বৃষ্টি হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে টার্গেট ছিল ১৫৫ রানের। দারুণ বল করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। সুবাদে ম্যাচটা বাংলাদেশ ১৯ রানে জিতে ২-১-এ সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়। সেই দুটি টি-টুয়েন্টিসহ মোট পাঁচটি ম্যাচ হেরে সিলেটে জয় পেয়েছে উইন্ডিজ। ম্যাচ জেতার ধরনটাও ছিল দেখার মতো। সব সংস্করণে আধিপত্য হারানো ক্যারিবিয়ানরা এখনো টি-টুয়েন্টিতে কেন সমীহ করার মতো দল, চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই তা টের পেয়েছেন সাকিবরা।
সিরিজে ফিরে আসার জন্য বাংলাদেশের সমানে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী? অবশ্যই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের ঝড় থামানো। শেই হোপ দুরন্ত ফর্মে আছেন ওয়ানডে সিরিজ থেকেই। সিলেটে তার হাফসেঞ্চুরিতে ৫৫ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয় সফরকারীরা। রান পেয়েছেন নিকোলাস পুরান, কিমো পল। প্রতিভাবান শিমরন হেটমায়ারকে নামতেই হয়নি। অন্য বিগ হিটারাও ড্রেসিংরুমে বসে ছিলেন। তবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নিজেদের জন্য লড়াইটাও কিন্তু বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যাট হাতে অতিরিক্ত আগ্রাসী হয়ে ওঠা, বুঝে না বুঝে শট খেলার খেসারত গত ম্যাচেই দিতে হয়েছে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের। বাংলাদেশের জন্য এসবই ভয়ের কথা। একে তো ক্যারিবিয়ানদের মারকুটে রূপ, তার ওপর নিজেদের সংবরণ। এ চ্যালেঞ্জগুলোই মিরপুরে স্বাগতিকদের সিরিজে ফেরার পথে বড় বাধা হয়ে দেখা দিতে পারে।
সাকিব, তামিম, মুশফিকরা অভিজ্ঞতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে অনেক এগিয়ে। ব্যাটিং প্রজ্ঞাতেও এগিয়ে তারা। কিন্তু বিগ হিট নেওয়ার ক্ষেত্রে হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা এগিয়ে থাকবে। এটা সুযোগ হিসেবে কি নিতে পারবে স্বাগতিক বোলাররা? বিগ হিট মিস হলেই তো উইকেট পাওয়ার সুযোগ। আর সেই সুযোগ লুফে নেওয়ার মানেই ম্যাচ জয়। তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে সমতায় ফেরা। যেমন ভাবে ফ্লোরিডায় সমতায় ফিরেছিল বাংলাদেশ। সেবারও তিন ম্যাচের সিরিজে প্রথমটি হেরে পিছিয়ে পড়েছিল সাকিবের দল। এবারও পিছিয়ে তারা। ফলে সমর্থকদের মনে প্রশ্ন ঘুরছে, মিরপুরে কি ফ্লোরিডার সেই জেতার গল্প ফিরিয়ে আনতে পারবে বাংলাদেশ?