পরিচর্যা পাবে তো তারা?
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০
মাত্রই শেষ হওয়া ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ জুনিয়র ব্যাডমিন্টন সিরিজের পাঁচটি ইভেন্টের তিনটিতেই স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশ। পুরো আসরে অর্জন ৩ স্বর্ণ, ৪ রৌপ্য এবং ৫টি ব্রোঞ্জপদক। এমন অর্জনের পরও উচ্ছ্বাসের সুযোগ কই এই ছেলেমেয়েদের? ভবিষ্যতে চোখ রাখলে যে শুধুই অন্ধকার। তারা জানে না তাদের জন্য সামনে কী অপেক্ষা করছে। আবার কবে খেলার সুযোগ হবে, নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগটাও মিলবে কি না এমন অনেক প্রশ্ন ভিড় করেছে তাদের মনে।
বাংলাদেশ জুনিয়র দলের শাটলার আল-আমিন প্রতিবেশী দেশের উদাহরণ দিয়ে নিজেদের পিছিয়ে পড়াটাই সামনে টেনে আনলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর শাটলারদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তারা বছরজুড়েই অনুশীলন এবং বিভিন্ন দেশে খেলার সুযোগ পান। ব্যাডমিন্টন এশিয়া কনফেডারেশনের নানা কর্মসূচি বছরজুড়ে হয় সেসব দেশে। ফলে নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কার মতো দেশেও শাটলাররা এই সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু আমরা সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এর কারণ ফেডারেশন কর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।’
জুনিয়র দলের কোচ এনায়েতউল্লাহ খান উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার কিছু দেখছেন না। ‘সাফল্য এসেছে এটা দেশের ব্যাডমিন্টনের জন্য ভালো দিক। জুনিয়রদের এই সাফল্য সিনিয়র পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে সার্বিক কর্মকা-ে গতি আনতে হবে। প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা সাজানো। এরজন্য ফেডারেশনকেই উদ্যোগী হতে হবে। বিভিন্ন দেশের ব্যাডমিন্টন উন্নয়নে এশিয়ান ব্যাডমিন্টন সংস্থা এবং বিশ^ সংস্থার বড় অবদান থাকে। তারা নানারকম কর্মসূচি পালন করার পাশাপাশি বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলতেও নানা সহায়তা দেয়। যেটা এ দেশে শুরু হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে এসব কার্যক্রমে শাটলারদের সম্পৃক্ত করা কঠিন।’
জুনিয়র আসর শুরুর এক দিন আগেই শেষ হয়েছে সিনিয়রদের টুর্নামেন্ট। যেখানে প্রাপ্তি বলতে কেবল মেয়েদের ডাবলসে সেমিফাইনাল খেলা। এতেই বোঝা যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ভালো করলেও সিনিয়র পর্যায়ে যোজন যোজন পিছিয়ে বাংলাদেশের শাটলাররা।
সিনিয়র দলের কোচ ওহিদুজ্জামান রাজু জুনিয়রদের সাফল্যের পেছনের কারণ খোঁজার চেষ্টা করলেন এভাবে, ‘জুনিয়ররা ভালো করছে এর জন্য তারা বাহবা পেতেই পারে। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে বাংলাদেশ ভালো করেছে যেসব ইভেন্টে সেসব ইভেন্টে শক্ত প্রতিপক্ষ ছিল না। মেয়েদের সিঙ্গেলসে পারেনি কারণ এই ইভেন্টে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগী ছিল। অর্থাৎ ভারত থেকেও আমরা
পিছিয়ে আছি অনেকটা।’ রাজু মনে করেন, সঠিক পরিচর্যায় এই জুনিয়ররাই ভবিষ্যতে দেশকে কিছু দিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বাহার অবশ্য ভূরি ভূরি পরিকল্পনার কথা শোনালেন গতকাল, ‘আমাদের তো এদের নিয়ে অনেক পরিকল্পনা আছে। জাতীয় দলের মালয়েশিয়ান কোচ (অরবিন্দ ভার্মা) এদের থেকে সেরাদের বেছে নেবেন। এরপর দ্রুতই শুরু হবে ট্রেনিং ক্যাম্প। আমাদের ইচ্ছে যতদিন সম্ভব এই বিদেশি কোচকে ধরে রাখা, তার অধীনে ছেলেরা নিজেদের উন্নতির সুযোগ পাবে।’
বিদেশে খেলতে পাঠানোর বিষয় জানতে চাইলে আশ্বাস দিলেন বাহার, ‘আর্থিক অনটন আমাদের বড় সমস্যা। তারপরও আমাদের ইচ্ছে আছে আগামী বছর এদের যত বেশি সম্ভব আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলানোর। তাছাড়া আমরা খুব করে চেষ্টা করছি ব্যাডমিন্টনকে বিকেএসপিতে অন্তর্ভুক্ত করার। সেটা করতে পারলে প্রতিভার ঘাটতি অনেকটা কেটে যাবে আমার বিশ্বাস।’
শেয়ার করুন
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০

মাত্রই শেষ হওয়া ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ জুনিয়র ব্যাডমিন্টন সিরিজের পাঁচটি ইভেন্টের তিনটিতেই স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশ। পুরো আসরে অর্জন ৩ স্বর্ণ, ৪ রৌপ্য এবং ৫টি ব্রোঞ্জপদক। এমন অর্জনের পরও উচ্ছ্বাসের সুযোগ কই এই ছেলেমেয়েদের? ভবিষ্যতে চোখ রাখলে যে শুধুই অন্ধকার। তারা জানে না তাদের জন্য সামনে কী অপেক্ষা করছে। আবার কবে খেলার সুযোগ হবে, নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগটাও মিলবে কি না এমন অনেক প্রশ্ন ভিড় করেছে তাদের মনে।
বাংলাদেশ জুনিয়র দলের শাটলার আল-আমিন প্রতিবেশী দেশের উদাহরণ দিয়ে নিজেদের পিছিয়ে পড়াটাই সামনে টেনে আনলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর শাটলারদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তারা বছরজুড়েই অনুশীলন এবং বিভিন্ন দেশে খেলার সুযোগ পান। ব্যাডমিন্টন এশিয়া কনফেডারেশনের নানা কর্মসূচি বছরজুড়ে হয় সেসব দেশে। ফলে নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কার মতো দেশেও শাটলাররা এই সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু আমরা সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এর কারণ ফেডারেশন কর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।’
জুনিয়র দলের কোচ এনায়েতউল্লাহ খান উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার কিছু দেখছেন না। ‘সাফল্য এসেছে এটা দেশের ব্যাডমিন্টনের জন্য ভালো দিক। জুনিয়রদের এই সাফল্য সিনিয়র পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে সার্বিক কর্মকা-ে গতি আনতে হবে। প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা সাজানো। এরজন্য ফেডারেশনকেই উদ্যোগী হতে হবে। বিভিন্ন দেশের ব্যাডমিন্টন উন্নয়নে এশিয়ান ব্যাডমিন্টন সংস্থা এবং বিশ^ সংস্থার বড় অবদান থাকে। তারা নানারকম কর্মসূচি পালন করার পাশাপাশি বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলতেও নানা সহায়তা দেয়। যেটা এ দেশে শুরু হয়নি। ব্যক্তিগতভাবে এসব কার্যক্রমে শাটলারদের সম্পৃক্ত করা কঠিন।’
জুনিয়র আসর শুরুর এক দিন আগেই শেষ হয়েছে সিনিয়রদের টুর্নামেন্ট। যেখানে প্রাপ্তি বলতে কেবল মেয়েদের ডাবলসে সেমিফাইনাল খেলা। এতেই বোঝা যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ভালো করলেও সিনিয়র পর্যায়ে যোজন যোজন পিছিয়ে বাংলাদেশের শাটলাররা।
সিনিয়র দলের কোচ ওহিদুজ্জামান রাজু জুনিয়রদের সাফল্যের পেছনের কারণ খোঁজার চেষ্টা করলেন এভাবে, ‘জুনিয়ররা ভালো করছে এর জন্য তারা বাহবা পেতেই পারে। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে বাংলাদেশ ভালো করেছে যেসব ইভেন্টে সেসব ইভেন্টে শক্ত প্রতিপক্ষ ছিল না। মেয়েদের সিঙ্গেলসে পারেনি কারণ এই ইভেন্টে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগী ছিল। অর্থাৎ ভারত থেকেও আমরা
পিছিয়ে আছি অনেকটা।’ রাজু মনে করেন, সঠিক পরিচর্যায় এই জুনিয়ররাই ভবিষ্যতে দেশকে কিছু দিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বাহার অবশ্য ভূরি ভূরি পরিকল্পনার কথা শোনালেন গতকাল, ‘আমাদের তো এদের নিয়ে অনেক পরিকল্পনা আছে। জাতীয় দলের মালয়েশিয়ান কোচ (অরবিন্দ ভার্মা) এদের থেকে সেরাদের বেছে নেবেন। এরপর দ্রুতই শুরু হবে ট্রেনিং ক্যাম্প। আমাদের ইচ্ছে যতদিন সম্ভব এই বিদেশি কোচকে ধরে রাখা, তার অধীনে ছেলেরা নিজেদের উন্নতির সুযোগ পাবে।’
বিদেশে খেলতে পাঠানোর বিষয় জানতে চাইলে আশ্বাস দিলেন বাহার, ‘আর্থিক অনটন আমাদের বড় সমস্যা। তারপরও আমাদের ইচ্ছে আছে আগামী বছর এদের যত বেশি সম্ভব আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলানোর। তাছাড়া আমরা খুব করে চেষ্টা করছি ব্যাডমিন্টনকে বিকেএসপিতে অন্তর্ভুক্ত করার। সেটা করতে পারলে প্রতিভার ঘাটতি অনেকটা কেটে যাবে আমার বিশ্বাস।’