‘গুড বয়’ হবেন সাব্বির
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০
সাব্বির রহমানের ‘ব্যাড বয়’ ইমেজ। এখন শাস্তি ভোগ করছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ। ক্যারিয়ারকে চোখ রাঙায়
উচ্ছৃঙ্খলতা। বারবার ভুলের পুনরাবৃত্তি করে শাস্তি-জরিমানার রেকর্ড করে বসা ড্যাশিং ব্যাটসম্যান নতুন বছরে বদলে যেতে চান। ‘ব্যাড বয়’ থেকে ‘গুড বয়’ হবেন সাব্বির। এটাই তার ২০১৯-এর প্রতিজ্ঞা। নিজেরই কাছে।
‘কাল রাতে (৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮) প্রতিজ্ঞা করেছি। ২০১৮ আমার অনেক খারাপ কেটেছে। ভুলে গেছি। আজ (গতকাল) নতুন বছরের প্রথম দিন। সামনে তাকিয়ে আছি এখন।’ শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে ছয় মাস
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে থাকা সাব্বির দুপুরে মিরপুরে বলছিলেন।
২০১৯ বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন কি না তা এখন সংশয়ে। অথচ ২০১৪ সালে অভিষেকের পর মারকুটে ও চোখজুড়ানো ব্যাটিংয়ের জন্য ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ‘স্টারডম’ বড় মারাত্মক জিনিস। জাতীয় দলের তিন সংস্করণেই জায়গা করে নিয়ে স্বপ্নের দিন কাটাচ্ছিলেন। এরপর দ্রুতই বিতর্কের পর বিতর্ক জন্ম দিয়ে খ্যাতি থেকে কুখ্যাতিতে।
২০১৬ বিপিএলের সময় হোটেলরুমে নারী অতিথি সঙ্গ উপভোগ করার দায়ে তাকে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বিসিবি। ২০১৭-এর ডিসেম্বরে মাঠে এক কিশোরকে পিটিয়ে ২০ লাখ টাকা জরিমানার সঙ্গে শাস্তি ঘরোয়া ক্রিকেটে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা। তাও ছিলেন জাতীয় দলে। সেটাও হারালেন ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে এক সমর্থককে অকথ্য গালিগালাজ করে। গত সেপ্টেম্বরে ছয় মাসের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা। ক্রিকেটারের সবচেয়ে বড় শাস্তি। মাথার ওপর ঝুলছে ভবিষ্যতেও আবার কেলেঙ্কারি ঘটালে সর্বোচ্চ শাস্তির খড়্গ।
এর বাইরেও কিছু ঘটিয়েছেন। কিন্তু গতকাল সিলেট সিক্সার্সের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রস্তুতি শুরুর সময় ‘প্রতিজ্ঞা’র কথা একরকম ঘোষণাই করলেন ২৭ বছরের সুপারস্টার। আর বিপিএলকে মে-জুলাই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের জন্য করেছেন পাখির চোখ। ‘জাতীয় দল সবার জন্য খোলা আছে। বিপিএল আমার জন্য অনেক বড় মঞ্চ। আমার জীবনের অনেক বড় টুর্নামেন্ট।’ বিশ্বকাপ দূরে আছে বলে ভাবছেন শুধু বিপিএল নিয়ে বললেও বারবার বিশ্ব আসর আসে। ‘হ্যাঁ, আমি যদি বিপিএলে ভালো পারফর্ম করি সুযোগ থাকবে আমার। চেষ্টা করব বিপিএলে ভালো কিছু করার। তারপর বিশ্বকাপে সুযোগ।’
সাব্বিরের সময়টা কঠিন ছিল। এখনো আছে। ‘খুব কঠিন, মানসিকভাবে।’ স্বীকার করে বলছেন, ‘প্রায় পাঁচ মাস হয়ে গেছে। আর এক মাস বাকি। দেখি এবার বিপিএলটায় কী হয়।’ ওসবের প্রভাবেই কি এনসিএল, বিসিএলের পারফরম্যান্সে ভাটার টান? স্বীকার করেন না। ‘আপনি চাইলেই ১০০ মারবেন এর কোনো গ্যারান্টি নাই।’
কিন্তু শৃঙ্খলায় না ফিরলে যে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার হুমকি! ‘হুম, আসলেই ভাই।’ সবচেয়ে বড় বিপদটা বুঝতে পারেন কি না এমন প্রশ্নে সাব্বিরের সবুজ চোখে অজানা কিছু খেলা করে। ‘অনেক বড় হুমকি।’ যেসব প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন সেসব শুনতে বিরক্তই লাগে বোঝা যায়। তারপরও জবাব দিতে হয় বলে দিয়ে ফিরে যান সাব্বির। বাতাসে ভাসতে ভাসতে তার সঙ্গে হাঁটে, ছোটে, দৌড়ায় ২০১৯ সালের পণ। ‘ব্যাড বয়’ থেকে ‘গুড বয়’ হয়ে ওঠার প্রতিজ্ঞা।
শেয়ার করুন
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০

সাব্বির রহমানের ‘ব্যাড বয়’ ইমেজ। এখন শাস্তি ভোগ করছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ। ক্যারিয়ারকে চোখ রাঙায়
উচ্ছৃঙ্খলতা। বারবার ভুলের পুনরাবৃত্তি করে শাস্তি-জরিমানার রেকর্ড করে বসা ড্যাশিং ব্যাটসম্যান নতুন বছরে বদলে যেতে চান। ‘ব্যাড বয়’ থেকে ‘গুড বয়’ হবেন সাব্বির। এটাই তার ২০১৯-এর প্রতিজ্ঞা। নিজেরই কাছে।
‘কাল রাতে (৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮) প্রতিজ্ঞা করেছি। ২০১৮ আমার অনেক খারাপ কেটেছে। ভুলে গেছি। আজ (গতকাল) নতুন বছরের প্রথম দিন। সামনে তাকিয়ে আছি এখন।’ শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে ছয় মাস
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে থাকা সাব্বির দুপুরে মিরপুরে বলছিলেন।
২০১৯ বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন কি না তা এখন সংশয়ে। অথচ ২০১৪ সালে অভিষেকের পর মারকুটে ও চোখজুড়ানো ব্যাটিংয়ের জন্য ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ‘স্টারডম’ বড় মারাত্মক জিনিস। জাতীয় দলের তিন সংস্করণেই জায়গা করে নিয়ে স্বপ্নের দিন কাটাচ্ছিলেন। এরপর দ্রুতই বিতর্কের পর বিতর্ক জন্ম দিয়ে খ্যাতি থেকে কুখ্যাতিতে।
২০১৬ বিপিএলের সময় হোটেলরুমে নারী অতিথি সঙ্গ উপভোগ করার দায়ে তাকে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বিসিবি। ২০১৭-এর ডিসেম্বরে মাঠে এক কিশোরকে পিটিয়ে ২০ লাখ টাকা জরিমানার সঙ্গে শাস্তি ঘরোয়া ক্রিকেটে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা। তাও ছিলেন জাতীয় দলে। সেটাও হারালেন ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে এক সমর্থককে অকথ্য গালিগালাজ করে। গত সেপ্টেম্বরে ছয় মাসের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা। ক্রিকেটারের সবচেয়ে বড় শাস্তি। মাথার ওপর ঝুলছে ভবিষ্যতেও আবার কেলেঙ্কারি ঘটালে সর্বোচ্চ শাস্তির খড়্গ।
এর বাইরেও কিছু ঘটিয়েছেন। কিন্তু গতকাল সিলেট সিক্সার্সের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রস্তুতি শুরুর সময় ‘প্রতিজ্ঞা’র কথা একরকম ঘোষণাই করলেন ২৭ বছরের সুপারস্টার। আর বিপিএলকে মে-জুলাই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের জন্য করেছেন পাখির চোখ। ‘জাতীয় দল সবার জন্য খোলা আছে। বিপিএল আমার জন্য অনেক বড় মঞ্চ। আমার জীবনের অনেক বড় টুর্নামেন্ট।’ বিশ্বকাপ দূরে আছে বলে ভাবছেন শুধু বিপিএল নিয়ে বললেও বারবার বিশ্ব আসর আসে। ‘হ্যাঁ, আমি যদি বিপিএলে ভালো পারফর্ম করি সুযোগ থাকবে আমার। চেষ্টা করব বিপিএলে ভালো কিছু করার। তারপর বিশ্বকাপে সুযোগ।’
সাব্বিরের সময়টা কঠিন ছিল। এখনো আছে। ‘খুব কঠিন, মানসিকভাবে।’ স্বীকার করে বলছেন, ‘প্রায় পাঁচ মাস হয়ে গেছে। আর এক মাস বাকি। দেখি এবার বিপিএলটায় কী হয়।’ ওসবের প্রভাবেই কি এনসিএল, বিসিএলের পারফরম্যান্সে ভাটার টান? স্বীকার করেন না। ‘আপনি চাইলেই ১০০ মারবেন এর কোনো গ্যারান্টি নাই।’
কিন্তু শৃঙ্খলায় না ফিরলে যে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার হুমকি! ‘হুম, আসলেই ভাই।’ সবচেয়ে বড় বিপদটা বুঝতে পারেন কি না এমন প্রশ্নে সাব্বিরের সবুজ চোখে অজানা কিছু খেলা করে। ‘অনেক বড় হুমকি।’ যেসব প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন সেসব শুনতে বিরক্তই লাগে বোঝা যায়। তারপরও জবাব দিতে হয় বলে দিয়ে ফিরে যান সাব্বির। বাতাসে ভাসতে ভাসতে তার সঙ্গে হাঁটে, ছোটে, দৌড়ায় ২০১৯ সালের পণ। ‘ব্যাড বয়’ থেকে ‘গুড বয়’ হয়ে ওঠার প্রতিজ্ঞা।