ইমরুল রাঙালেন শেষ দিন
৩ ম্যাচ ড্র, বরিশালের জয়
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০
ইমরুল কায়েসের আলো ছড়ানো ডাবল সেঞ্চুরি দিয়ে শেষ হলো জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ড। খুলনার এই ওপেনার গতকাল খেলেছেন ২০২ রানের দারুণ এক ইনিংস। অবশ্য রংপুর বিভাগের সঙ্গে প্রথম স্তরের ম্যাচটি ড্র হয়েছে ইমরুলদের।
চার ম্যাচের আরও দুটি- (প্রথম স্তরের) ফতুল্লায় ঢাকা-রাজশাহী এবং মিরপুরে ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম হয়েছে নি®প্রাণ ড্র। একটি মাত্র ম্যাচে জয়-পরাজয় নিষ্পত্তি হয়েছে। রাজশাহীতে বরিশাল বিভাগ দুর্ধর্ষ খেলে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছে সিলেট বিভাগকে।
জাতীয় দলের পারফরমারদের মধ্যে যারা খেলেছেন প্রথম রাউন্ডে তাদের মধ্যে মেট্রোর মাহমুদউল্লাহ উজ্জ্বল। দুই ইনিংসে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। দুবার আউট করেছেন তামিম ইকবালকে। তামিম করেছেন যথাক্রমে ৩০ ও ৪৬। রাজশাহীর মুশফিকুর রহিমের দুই ইনিংস ৭৫ ও ২১। তবে মুমিনুল হক, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেনদের রান মুখ বড় করে বলার মতো না। দুই পেসার রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলামও প্রথম রাউন্ড সেভাবে রাঙাতে পারেননি।
প্রথম রাউন্ডের চতুর্থ ও শেষ দিনটা আক্ষরিক অর্থেই ইমরুলের। মাঝে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর যখন ফেরার সুযোগ এসেছিল তখন শিশু সন্তানের গুরুতর অসুস্থতার জন্য খেলা হয়নি। মাত্র কদিন আগে ঘরের দায়িত্ব সেরে মাঠে ফিরেছেন। আর ফিরেই পেলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। প্রথমটি ২০৪, করেছিলেন ২০১৪ সালে, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ বা বিসিএলে।
ইমরুলদের ম্যাচের প্রথম দিনে খেলা হয়নি। দ্বিতীয় দিনে বেশ হলো। এরপর রংপুরকে ২২৭ রানে অল আউট করে খুলনা তৃতীয় দিন শেষ করে ৩ উইকেটে ১৯২ রানে। ইমরুল ২৯ ও সৌম্য ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। সেই ইনিংস শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৪৫৪ রানে নিয়ে ঘোষণা করেন অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক। ম্যাচের সেরা ইমরুল অপরাজিত ২০২ রানের ইনিংসটা খেলেছেন ৩১৯ বলে। ১৯টি চার ও ৬টি ছক্কার মার সেখানে। সৌম্য করেন ৩৬। পরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মাঝে ১৮তম ফার্স্টক্লাস সেঞ্চুরি করলেন ইমরুল। আর শেষে নবম উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়লেন মূলত বোলার রুবেলের (৪৪ বলে ২) সঙ্গে। ইমরুলের ডাবলের পর ইনিংস ঘোষণা করেন আব্দুর রাজ্জাক। দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ৩৩ রানে শেষ করে রংপুর।
মিরপুরে ম্যাচ তেমন জমেনি। তবে লড়াই হয়েছে মাহমুদউল্লাহ-তামিমের মধ্যে। চট্টগ্রামের ২৯০-এর পর মেট্রো করে ৩৫৪। দ্বিতীয় ইনিংসে চট্টগ্রাম ৫ উইকেটে ২২৭ রানে পৌঁছানোর পর খেলা শেষ। তামিম চমৎকার শুরু করেও শেষে ধরে রাখতে পারেননি। ১১২ বলে করেছেন ৪৬। দুটি ফিফটি তাদের ইনিংসে। তামিমের ওপেনিং পার্টনার পিনাক ঘোষ (৫৭) ও তাসামুল হকের (৫৩)। তামিমের মতো অধিনায়ক মুমিনুল এবারও মাহমুদউল্লাহর শিকার। আগে করেছিলেন ১১। এবার প্রথম বলেই আউট।
সিলেট-বরিশাল দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচটা শুরু হয়েছিল সবার শেষে। বৃষ্টির কারণে ৫ সেশন ভেসে গিয়েছিল। প্রথম রাউন্ডের চার ম্যাচের মধ্যে এই খেলার ফলই হলো সবার আগে। গতকাল শেষ সেশনের আগে বরিশাল তুলে নেয় ইনিংস ও ১৩ রানের জয়। ৯.৫ পয়েন্ট পেয়েছে তারা।
প্রথম ইনিংসে কামরুল ইসলাম রাব্বির তোপে সিলেট গুটিয়ে যায় মাত্র ৮৬ রানে। বরিশাল ৮ উইকেটে ২৩১ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। ১৪৫ রানে পিছিয়ে থাকা সিলেট শেষ দিন শুরু করেছিল ২ উইকেটে ২৭ রানে। এবার পেসার নয়, স্পিনাররা সর্বনাশ করেছে তাদের। আর তাতে ১৩২ রানেই গুটিয়ে যায় অলোক কাপালির সিলেট। বাঁহাতি দুই স্পিনার তানভির ও মনির নেন যথাক্রমে ৪ ও ৩ উইকেট। ২ উইকেট নেন অফ স্পিনার নুরুজ্জামান। তবে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট শিকারি রাব্বি হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
ঢাকা-রাজশাহীর ম্যাচে ফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষে তা হয়নি। ঢাকার ২৪০ ও ২৫৪ রানের ইনিংস। রাজশাহীর ১৯৭ ও ৫ উইকেটে ১০৬ এর। ২৯৮ ছিল টার্গেট। রাজশাহীর জন্য হাতে সময় ছিল না। মুশফিক এবার ৬০ বল খেলে করেছেন ২১। প্রথম ইনিংসের ৪ উইকেটের সঙ্গে বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল এবার ৫ উইকেট নিয়েছেন ১০৫ রান খরচায়।
পয়েন্ট টেবিলটা এখন এমন: প্রথম স্তরে খুলনা ৪.০১, ঢাকা ৩.৫, রাজশাহী ৩.৫, রংপুর ২.৫। দ্বিতীয় স্তরে বরিশাল ৯.৫, চট্টগ্রাম ৩, মেট্রো ২.৯৯, সিলেট ১।
শেয়ার করুন
৩ ম্যাচ ড্র, বরিশালের জয়
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০

ইমরুল কায়েসের আলো ছড়ানো ডাবল সেঞ্চুরি দিয়ে শেষ হলো জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ড। খুলনার এই ওপেনার গতকাল খেলেছেন ২০২ রানের দারুণ এক ইনিংস। অবশ্য রংপুর বিভাগের সঙ্গে প্রথম স্তরের ম্যাচটি ড্র হয়েছে ইমরুলদের।
চার ম্যাচের আরও দুটি- (প্রথম স্তরের) ফতুল্লায় ঢাকা-রাজশাহী এবং মিরপুরে ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম হয়েছে নি®প্রাণ ড্র। একটি মাত্র ম্যাচে জয়-পরাজয় নিষ্পত্তি হয়েছে। রাজশাহীতে বরিশাল বিভাগ দুর্ধর্ষ খেলে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছে সিলেট বিভাগকে।
জাতীয় দলের পারফরমারদের মধ্যে যারা খেলেছেন প্রথম রাউন্ডে তাদের মধ্যে মেট্রোর মাহমুদউল্লাহ উজ্জ্বল। দুই ইনিংসে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। দুবার আউট করেছেন তামিম ইকবালকে। তামিম করেছেন যথাক্রমে ৩০ ও ৪৬। রাজশাহীর মুশফিকুর রহিমের দুই ইনিংস ৭৫ ও ২১। তবে মুমিনুল হক, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেনদের রান মুখ বড় করে বলার মতো না। দুই পেসার রুবেল হোসেন ও শফিউল ইসলামও প্রথম রাউন্ড সেভাবে রাঙাতে পারেননি।
প্রথম রাউন্ডের চতুর্থ ও শেষ দিনটা আক্ষরিক অর্থেই ইমরুলের। মাঝে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর যখন ফেরার সুযোগ এসেছিল তখন শিশু সন্তানের গুরুতর অসুস্থতার জন্য খেলা হয়নি। মাত্র কদিন আগে ঘরের দায়িত্ব সেরে মাঠে ফিরেছেন। আর ফিরেই পেলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। প্রথমটি ২০৪, করেছিলেন ২০১৪ সালে, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ বা বিসিএলে।
ইমরুলদের ম্যাচের প্রথম দিনে খেলা হয়নি। দ্বিতীয় দিনে বেশ হলো। এরপর রংপুরকে ২২৭ রানে অল আউট করে খুলনা তৃতীয় দিন শেষ করে ৩ উইকেটে ১৯২ রানে। ইমরুল ২৯ ও সৌম্য ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। সেই ইনিংস শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৪৫৪ রানে নিয়ে ঘোষণা করেন অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক। ম্যাচের সেরা ইমরুল অপরাজিত ২০২ রানের ইনিংসটা খেলেছেন ৩১৯ বলে। ১৯টি চার ও ৬টি ছক্কার মার সেখানে। সৌম্য করেন ৩৬। পরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মাঝে ১৮তম ফার্স্টক্লাস সেঞ্চুরি করলেন ইমরুল। আর শেষে নবম উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়লেন মূলত বোলার রুবেলের (৪৪ বলে ২) সঙ্গে। ইমরুলের ডাবলের পর ইনিংস ঘোষণা করেন আব্দুর রাজ্জাক। দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ৩৩ রানে শেষ করে রংপুর।
মিরপুরে ম্যাচ তেমন জমেনি। তবে লড়াই হয়েছে মাহমুদউল্লাহ-তামিমের মধ্যে। চট্টগ্রামের ২৯০-এর পর মেট্রো করে ৩৫৪। দ্বিতীয় ইনিংসে চট্টগ্রাম ৫ উইকেটে ২২৭ রানে পৌঁছানোর পর খেলা শেষ। তামিম চমৎকার শুরু করেও শেষে ধরে রাখতে পারেননি। ১১২ বলে করেছেন ৪৬। দুটি ফিফটি তাদের ইনিংসে। তামিমের ওপেনিং পার্টনার পিনাক ঘোষ (৫৭) ও তাসামুল হকের (৫৩)। তামিমের মতো অধিনায়ক মুমিনুল এবারও মাহমুদউল্লাহর শিকার। আগে করেছিলেন ১১। এবার প্রথম বলেই আউট।
সিলেট-বরিশাল দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচটা শুরু হয়েছিল সবার শেষে। বৃষ্টির কারণে ৫ সেশন ভেসে গিয়েছিল। প্রথম রাউন্ডের চার ম্যাচের মধ্যে এই খেলার ফলই হলো সবার আগে। গতকাল শেষ সেশনের আগে বরিশাল তুলে নেয় ইনিংস ও ১৩ রানের জয়। ৯.৫ পয়েন্ট পেয়েছে তারা।
প্রথম ইনিংসে কামরুল ইসলাম রাব্বির তোপে সিলেট গুটিয়ে যায় মাত্র ৮৬ রানে। বরিশাল ৮ উইকেটে ২৩১ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। ১৪৫ রানে পিছিয়ে থাকা সিলেট শেষ দিন শুরু করেছিল ২ উইকেটে ২৭ রানে। এবার পেসার নয়, স্পিনাররা সর্বনাশ করেছে তাদের। আর তাতে ১৩২ রানেই গুটিয়ে যায় অলোক কাপালির সিলেট। বাঁহাতি দুই স্পিনার তানভির ও মনির নেন যথাক্রমে ৪ ও ৩ উইকেট। ২ উইকেট নেন অফ স্পিনার নুরুজ্জামান। তবে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট শিকারি রাব্বি হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
ঢাকা-রাজশাহীর ম্যাচে ফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষে তা হয়নি। ঢাকার ২৪০ ও ২৫৪ রানের ইনিংস। রাজশাহীর ১৯৭ ও ৫ উইকেটে ১০৬ এর। ২৯৮ ছিল টার্গেট। রাজশাহীর জন্য হাতে সময় ছিল না। মুশফিক এবার ৬০ বল খেলে করেছেন ২১। প্রথম ইনিংসের ৪ উইকেটের সঙ্গে বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল এবার ৫ উইকেট নিয়েছেন ১০৫ রান খরচায়।
পয়েন্ট টেবিলটা এখন এমন: প্রথম স্তরে খুলনা ৪.০১, ঢাকা ৩.৫, রাজশাহী ৩.৫, রংপুর ২.৫। দ্বিতীয় স্তরে বরিশাল ৯.৫, চট্টগ্রাম ৩, মেট্রো ২.৯৯, সিলেট ১।