চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলবেন মিরাজরা
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০
সাদমান ইসলাম, আবু জায়েদ, ইবাদত হোসেন, সাইফ হাসান এবং অধিনায়ক মুমিনুল হক। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলার জন্য গতকাল দেশ ছেড়েছেন। আগামীকাল নাগপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এরপর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। ভারতের বিপক্ষে ১৪ নভেম্বর ইন্দোরে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্ট ২২ নভেম্বর ইডেনে। ঐতিহাসিক দিবা-রাত্রির টেস্ট দিয়েই শুরু হবে সিরিজ।
টেস্টে বর্তমান সময়ের সেরা দল ভারত। ঘরের মাঠে অনেক দিন ধরেই তারা অজেয়। সম্প্রতি তিন টেস্টের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বিরাট কোহলির দল। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শুরুতে তারা উইন্ডিজকেও হোয়াইটওয়াশ করেছিল। এই মুহূর্তে ব্যাটিং-বোলিং উভয় বিভাগেই বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটাররা ভারতীয় দলে। রোহিত শর্মা ওপেনার হিসেবে টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জোড়া সেঞ্চুরি করেন। রাঁচিতে সিরিজের শেষ টেস্টে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তুখোড় ফর্মে ব্যাটিং করেছেন নবাগত মায়াঙ্ক আগারওয়ালও। সঙ্গে বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারা এবং আজিঙ্কা রাহানেরা তো আছেনই। ভারতের পেস আক্রমণও ক্ষুরধার। বাংলাদেশের বিপক্ষে যদিও জাসপ্রিত বুমরাহ খেলতে পারবেন না। কিন্তু তাতে মুমিনুল হকদের স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই। উমেশ যাদব, মোহাম্মদ শামি এবং ইশান্ত শর্মা দারুণ বোলিং করছেন। তাই আসন্ন সিরিজ যে কঠিন হবে তা বুঝতে মোটেই কষ্ট হচ্ছে না মেহেদী হাসান মিরাজের। তবে প্রতিপক্ষ শক্তিশালী বলে তিনি খেলার আগেই হার মেনে নিতে রাজি নন। বরং লড়াই করার চ্যালেঞ্জ নিতে চান মিরাজ। ভারত সফরে রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চ্যালেঞ্জ নেওয়া। মানসিকভাবে ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে। ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলা আমাদের জন্য সহজ হবে না, অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে হবে।’ ভালো করার ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী মিরাজ, ‘যেভাবে আমাদের প্রস্তুতি চলছে, তাতে আমরা ভালো কিছুই করতে পারব। আমরা এখন আত্মবিশ্বাসী। আমাদের শুরুটা ভালো হয়েছে ভারতের মাটিতে। সবাই যার যার জায়গা থেকে সেরাটা দিতে পারলে ভালো কিছু করতে পারব।’ দেশে নিজের প্রস্তুতি নিয়েও সন্তুষ্ট বাংলাদেশ দলের অফস্পিনার, ‘আমি গত এক সপ্তাহ খুব ভালো অনুশীলন করেছি। শারীরিক ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। জিম, রানিং, ব্যাটিং, বোলিং সব করেছি। বিশেষ করে আমার যেসব জায়গায় দুর্বলতা আছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করেছি। নিজের প্রস্তুতিতে আমি সন্তুষ্ট। ভারতে যাওয়ার আগে এ রকম একটা প্রস্তুতি দরকার ছিল। আমার নিজের জন্য অনেক ভালো হবে যদি এটা (অনুশীলনের মতো সাফল্য) মাঠে করে দেখাতে পারি। যেটুকু প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটা শতভাগ করতে পারলে আমার জন্য অনেক ভালো হবে।’ তবে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের কথা মাথায় রেখে মিরাজ বলেছেন, ‘ওদের ২০ উইকেট নেওয়া আমাদের বোলারদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’ সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি যে চাপ বাড়াবে তাও মনে করেন মিরাজ, ‘আমরা জানি সাকিব ভাই দলে থাকলে আমরা এগিয়ে থাকি। কিন্তু তিনি খেলবেন না। অবশ্যই স্পিনারদের জন্য একটা বাড়তি চাপ থাকবে। আমি, তাইজুল (ইসলাম) ভাই, নাঈম (হাসান) যারাই আছি, একটা বাড়তি চাপ থাকবে। এরপরও আমার মনে হয় আমরা যদি ভালো লাইন-লেংথে বল করতে পারি, তাহলে ওদের ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে পারব। ওরা সবাই দারুণ ব্যাটসম্যান। স্পিনারদের চাপ নিতে হবে। মানসিকভাবে আমরা কতটা শক্ত, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
এক বছর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয়েছে সাদমান ইসলামের। গতকাল ভারত সফরে রওনা হওয়ার আগে তিনি বলেছেন, ‘ভারত অনেক শক্তিশালী দল। কিন্তু সেরকম বাড়তি কোনো চাপ নিয়ে যাচ্ছি না। ওদের বোলারদের নিয়ে অত চিন্তা নেই। আমরা ভালো ভালো অনেক দলের বিপক্ষেই খেলেছি। আমরা যেমন খেলি তেমনই খেলব।’ তিনিও মনে করেন সাকিবের অনুপস্থিতি স্পিনারদের ওপর চাপ বাড়াবে, ‘সাকিব ভাইয়ের না থাকা দলের জন্য বড় চাপ। কিন্তু আমাদের মিরাজ আছে, তাইজুল ভাই আছেন, নাঈম আছেÑ ইনশাল্লাহ কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’ দেশ ছাড়ার আগে সাইফ হাসান ভালো খেলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘আত্মবিশ্বাস আছে। সুযোগ যদি পাই দেশের হয়ে ভালো কিছু করতে চাই। চেষ্টা করব ফর্মটা টেনে নেওয়ার। সুযোগ পেলে ম্যাচ ধরে ধরে ভালো খেলার চেষ্টা করব। আমরা যদি সর্বোচ্চ ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি তাহলে ইতিবাচক ফল পাওয়া সম্ভব।’ ভারতের বোলিং দেখেও ভয় পাচ্ছেন না তিনি, ‘ওদের দিকে তাকিয়ে লাভ নেই। বলের দিকে তাকিয়ে খেলতে হবে।’ সেই খেলাটা কেমন হয় তা বোঝা যাবে ইন্দোরের প্রথম টেস্টেই।
শেয়ার করুন
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০

সাদমান ইসলাম, আবু জায়েদ, ইবাদত হোসেন, সাইফ হাসান এবং অধিনায়ক মুমিনুল হক। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলার জন্য গতকাল দেশ ছেড়েছেন। আগামীকাল নাগপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এরপর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। ভারতের বিপক্ষে ১৪ নভেম্বর ইন্দোরে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টেস্ট ২২ নভেম্বর ইডেনে। ঐতিহাসিক দিবা-রাত্রির টেস্ট দিয়েই শুরু হবে সিরিজ।
টেস্টে বর্তমান সময়ের সেরা দল ভারত। ঘরের মাঠে অনেক দিন ধরেই তারা অজেয়। সম্প্রতি তিন টেস্টের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বিরাট কোহলির দল। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শুরুতে তারা উইন্ডিজকেও হোয়াইটওয়াশ করেছিল। এই মুহূর্তে ব্যাটিং-বোলিং উভয় বিভাগেই বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটাররা ভারতীয় দলে। রোহিত শর্মা ওপেনার হিসেবে টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জোড়া সেঞ্চুরি করেন। রাঁচিতে সিরিজের শেষ টেস্টে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তুখোড় ফর্মে ব্যাটিং করেছেন নবাগত মায়াঙ্ক আগারওয়ালও। সঙ্গে বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারা এবং আজিঙ্কা রাহানেরা তো আছেনই। ভারতের পেস আক্রমণও ক্ষুরধার। বাংলাদেশের বিপক্ষে যদিও জাসপ্রিত বুমরাহ খেলতে পারবেন না। কিন্তু তাতে মুমিনুল হকদের স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই। উমেশ যাদব, মোহাম্মদ শামি এবং ইশান্ত শর্মা দারুণ বোলিং করছেন। তাই আসন্ন সিরিজ যে কঠিন হবে তা বুঝতে মোটেই কষ্ট হচ্ছে না মেহেদী হাসান মিরাজের। তবে প্রতিপক্ষ শক্তিশালী বলে তিনি খেলার আগেই হার মেনে নিতে রাজি নন। বরং লড়াই করার চ্যালেঞ্জ নিতে চান মিরাজ। ভারত সফরে রওনা হওয়ার আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চ্যালেঞ্জ নেওয়া। মানসিকভাবে ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে। ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলা আমাদের জন্য সহজ হবে না, অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে হবে।’ ভালো করার ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী মিরাজ, ‘যেভাবে আমাদের প্রস্তুতি চলছে, তাতে আমরা ভালো কিছুই করতে পারব। আমরা এখন আত্মবিশ্বাসী। আমাদের শুরুটা ভালো হয়েছে ভারতের মাটিতে। সবাই যার যার জায়গা থেকে সেরাটা দিতে পারলে ভালো কিছু করতে পারব।’ দেশে নিজের প্রস্তুতি নিয়েও সন্তুষ্ট বাংলাদেশ দলের অফস্পিনার, ‘আমি গত এক সপ্তাহ খুব ভালো অনুশীলন করেছি। শারীরিক ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। জিম, রানিং, ব্যাটিং, বোলিং সব করেছি। বিশেষ করে আমার যেসব জায়গায় দুর্বলতা আছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করেছি। নিজের প্রস্তুতিতে আমি সন্তুষ্ট। ভারতে যাওয়ার আগে এ রকম একটা প্রস্তুতি দরকার ছিল। আমার নিজের জন্য অনেক ভালো হবে যদি এটা (অনুশীলনের মতো সাফল্য) মাঠে করে দেখাতে পারি। যেটুকু প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটা শতভাগ করতে পারলে আমার জন্য অনেক ভালো হবে।’ তবে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের কথা মাথায় রেখে মিরাজ বলেছেন, ‘ওদের ২০ উইকেট নেওয়া আমাদের বোলারদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’ সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি যে চাপ বাড়াবে তাও মনে করেন মিরাজ, ‘আমরা জানি সাকিব ভাই দলে থাকলে আমরা এগিয়ে থাকি। কিন্তু তিনি খেলবেন না। অবশ্যই স্পিনারদের জন্য একটা বাড়তি চাপ থাকবে। আমি, তাইজুল (ইসলাম) ভাই, নাঈম (হাসান) যারাই আছি, একটা বাড়তি চাপ থাকবে। এরপরও আমার মনে হয় আমরা যদি ভালো লাইন-লেংথে বল করতে পারি, তাহলে ওদের ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে পারব। ওরা সবাই দারুণ ব্যাটসম্যান। স্পিনারদের চাপ নিতে হবে। মানসিকভাবে আমরা কতটা শক্ত, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
এক বছর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয়েছে সাদমান ইসলামের। গতকাল ভারত সফরে রওনা হওয়ার আগে তিনি বলেছেন, ‘ভারত অনেক শক্তিশালী দল। কিন্তু সেরকম বাড়তি কোনো চাপ নিয়ে যাচ্ছি না। ওদের বোলারদের নিয়ে অত চিন্তা নেই। আমরা ভালো ভালো অনেক দলের বিপক্ষেই খেলেছি। আমরা যেমন খেলি তেমনই খেলব।’ তিনিও মনে করেন সাকিবের অনুপস্থিতি স্পিনারদের ওপর চাপ বাড়াবে, ‘সাকিব ভাইয়ের না থাকা দলের জন্য বড় চাপ। কিন্তু আমাদের মিরাজ আছে, তাইজুল ভাই আছেন, নাঈম আছেÑ ইনশাল্লাহ কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’ দেশ ছাড়ার আগে সাইফ হাসান ভালো খেলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘আত্মবিশ্বাস আছে। সুযোগ যদি পাই দেশের হয়ে ভালো কিছু করতে চাই। চেষ্টা করব ফর্মটা টেনে নেওয়ার। সুযোগ পেলে ম্যাচ ধরে ধরে ভালো খেলার চেষ্টা করব। আমরা যদি সর্বোচ্চ ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি তাহলে ইতিবাচক ফল পাওয়া সম্ভব।’ ভারতের বোলিং দেখেও ভয় পাচ্ছেন না তিনি, ‘ওদের দিকে তাকিয়ে লাভ নেই। বলের দিকে তাকিয়ে খেলতে হবে।’ সেই খেলাটা কেমন হয় তা বোঝা যাবে ইন্দোরের প্রথম টেস্টেই।