ফুটবল ঈশ্বরকে স্মরণ
ক্রীড়া ডেস্ক | ২৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০
নানা আনুষ্ঠানিকতা, আচার, অভিব্যক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ২৫ নভেম্বর পালন করা হলো ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকী।
সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে ম্যারাডোনা নাকি পেলে? তা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিতর্ক চিরকালীন। ২০০০ সালে ফিফা বিশ শতকের সেরা ফুটবলার হিসেবে ঘোষণা করেছিল ম্যারাডোনা ও পেলের নাম। পেলে নির্বাচিত হয়েছিলের বিশেষজ্ঞ জুরির ভোটে তো ম্যারাডোনা সাধারণ মানুষের ভোটে এগিয়ে ছিলেন। তবে ম্যারাডোনা ও পেলের সম্পর্ক যে বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল তা বহুবারই দেখা গেছে। ম্যারাডোনার মৃত্যুর এক বছর হওয়ার দিন পেলে তার ইন্সটাগ্রামে লেখেন ‘ডিয়েগোকে ছাড়া এক বছর, সারা জীবনের বন্ধু।’
বুয়েনস আয়ার্সে গ্যারিনের একটি গির্জায় ম্যারাডোনার পরিবারের সদস্য, তার সতীর্থ, বন্ধুরা একটি গণপ্রার্থনায় যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালের ঝাঁকড়া চুলের ম্যারাডোনার একটি প্রতিকৃতিও ছিল। ম্যারাডোনার বন্ধু, যাজক আদ্রিয়ান গুদেস এ সময় বলেন ‘আমরা এখানে মৃত্যু (বার্ষিকী) পালন করতে আসিনি, আমরা জীবনকে উদযাপন করতে এসেছি, যে জীবন ডিয়েগো আমাদের দিয়ে গেছেন।’ ম্যারাডোনার মেয়ে ডালমা ইন্সটাগ্রামে লেখেন ‘বিশ্ব এক বছর ধরে আরও বেশি ভীতিকর পরিস্থিতিতে আছে, কারণ তুমি এখানে নেই।’
আর্জেন্টাইন ফুটবল লিগ তার মৃত্যুবার্ষিকীর আগেই শ্রদ্ধা জানিয়েছে ম্যারাডোনাকে। তাকে নিয়ে ভিডিওচিত্র উন্মুক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার আর্জেন্টিনার লিগে ম্যাচ শুরুর আগে খেলোয়াড়রা ‘১০’ আকৃতিতে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান ফুটবল ঈশ্বরের প্রতি। এ সময় মাঠে থাকা দর্শকরা ম্যারাডোনা ম্যারাডোনা বলে আওয়াজ তোলেন।
বুয়েনস আয়ার্সের লানুসে ম্যারাডোনার বাড়ির সামনে ফুল ও বার্তা দিয়ে ভরে গিয়েছিল। একটি চিরকুটে লেখা ছিল ‘তুমি আমাদের স্বর্গ দিয়েছো।’ আর্জেন্টিনা থেকে ১৬ হাজার কিলোমিটার দূরে ভারতের কলকাতা। সেখানে ম্যারাডোনার ভাস্কর্যে ফুল দেওয়া হয়। ২০১২ সালে ভারত সফরের সময় ম্যারাডোনা সাউদার্ন কেরালার একটি হোটেলে ছিলেন। কিছু সমর্থক সেখানে জড়ো হয়ে ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেন।
মন্টিভিডিওতে এক স্মরণসভায় যোগ দেন ম্যারাডোনার ’৮৬-র বিশ্বকাপ সাফল্যের সঙ্গীরা। তাদের মধ্যে ছিলেন গোলকিপার নোরি পাম্পিদো, অস্কার রুগেরি, রিকার্দো জিউস্তি, সের্জিও বাতিস্তা ও হোর্হে বুরুচাগা।
ইতালির নাপোলি ক্লাবকে প্রথম সারির কাতারে এনেছিলেন ম্যারাডোনা। নাপোলি শহরবাসী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ‘ফুটবল ঈশ্বরকে’। নাপোলির স্টেডিয়ামের বাইরে আগেই স্থাপন করা হয়েছে ম্যারাডোনার ভাস্কর্য। স্টেডিয়ামের নাম বদলে ম্যারাডোনার নামে করা হয়েছে তার মৃত্যুর পরই। আর নাপোলির ১০ নম্বর জার্সি তুলে রাখা হয়েছিল ম্যারাডোনা জীবিত থাকতেই। নাপোলি ফুটবল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আউরেলিও ডি ললেন্তিস জানিয়েছেন, রবিবার স্টেডিয়ামের ভেতরে ম্যারাডোনার আরও একটি ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য উন্মোচন করা হবে। যাতে খেলোয়াড়রা ফুটবলের এই মহান ঈশ্বরের হাত ও পা স্পর্শ করতে পারেন।
শেয়ার করুন
ক্রীড়া ডেস্ক | ২৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০

নানা আনুষ্ঠানিকতা, আচার, অভিব্যক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ২৫ নভেম্বর পালন করা হলো ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকী।
সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে ম্যারাডোনা নাকি পেলে? তা নিয়ে মানুষের মধ্যে বিতর্ক চিরকালীন। ২০০০ সালে ফিফা বিশ শতকের সেরা ফুটবলার হিসেবে ঘোষণা করেছিল ম্যারাডোনা ও পেলের নাম। পেলে নির্বাচিত হয়েছিলের বিশেষজ্ঞ জুরির ভোটে তো ম্যারাডোনা সাধারণ মানুষের ভোটে এগিয়ে ছিলেন। তবে ম্যারাডোনা ও পেলের সম্পর্ক যে বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল তা বহুবারই দেখা গেছে। ম্যারাডোনার মৃত্যুর এক বছর হওয়ার দিন পেলে তার ইন্সটাগ্রামে লেখেন ‘ডিয়েগোকে ছাড়া এক বছর, সারা জীবনের বন্ধু।’
বুয়েনস আয়ার্সে গ্যারিনের একটি গির্জায় ম্যারাডোনার পরিবারের সদস্য, তার সতীর্থ, বন্ধুরা একটি গণপ্রার্থনায় যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালের ঝাঁকড়া চুলের ম্যারাডোনার একটি প্রতিকৃতিও ছিল। ম্যারাডোনার বন্ধু, যাজক আদ্রিয়ান গুদেস এ সময় বলেন ‘আমরা এখানে মৃত্যু (বার্ষিকী) পালন করতে আসিনি, আমরা জীবনকে উদযাপন করতে এসেছি, যে জীবন ডিয়েগো আমাদের দিয়ে গেছেন।’ ম্যারাডোনার মেয়ে ডালমা ইন্সটাগ্রামে লেখেন ‘বিশ্ব এক বছর ধরে আরও বেশি ভীতিকর পরিস্থিতিতে আছে, কারণ তুমি এখানে নেই।’
আর্জেন্টাইন ফুটবল লিগ তার মৃত্যুবার্ষিকীর আগেই শ্রদ্ধা জানিয়েছে ম্যারাডোনাকে। তাকে নিয়ে ভিডিওচিত্র উন্মুক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার আর্জেন্টিনার লিগে ম্যাচ শুরুর আগে খেলোয়াড়রা ‘১০’ আকৃতিতে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান ফুটবল ঈশ্বরের প্রতি। এ সময় মাঠে থাকা দর্শকরা ম্যারাডোনা ম্যারাডোনা বলে আওয়াজ তোলেন।
বুয়েনস আয়ার্সের লানুসে ম্যারাডোনার বাড়ির সামনে ফুল ও বার্তা দিয়ে ভরে গিয়েছিল। একটি চিরকুটে লেখা ছিল ‘তুমি আমাদের স্বর্গ দিয়েছো।’ আর্জেন্টিনা থেকে ১৬ হাজার কিলোমিটার দূরে ভারতের কলকাতা। সেখানে ম্যারাডোনার ভাস্কর্যে ফুল দেওয়া হয়। ২০১২ সালে ভারত সফরের সময় ম্যারাডোনা সাউদার্ন কেরালার একটি হোটেলে ছিলেন। কিছু সমর্থক সেখানে জড়ো হয়ে ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেন।
মন্টিভিডিওতে এক স্মরণসভায় যোগ দেন ম্যারাডোনার ’৮৬-র বিশ্বকাপ সাফল্যের সঙ্গীরা। তাদের মধ্যে ছিলেন গোলকিপার নোরি পাম্পিদো, অস্কার রুগেরি, রিকার্দো জিউস্তি, সের্জিও বাতিস্তা ও হোর্হে বুরুচাগা।
ইতালির নাপোলি ক্লাবকে প্রথম সারির কাতারে এনেছিলেন ম্যারাডোনা। নাপোলি শহরবাসী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ‘ফুটবল ঈশ্বরকে’। নাপোলির স্টেডিয়ামের বাইরে আগেই স্থাপন করা হয়েছে ম্যারাডোনার ভাস্কর্য। স্টেডিয়ামের নাম বদলে ম্যারাডোনার নামে করা হয়েছে তার মৃত্যুর পরই। আর নাপোলির ১০ নম্বর জার্সি তুলে রাখা হয়েছিল ম্যারাডোনা জীবিত থাকতেই। নাপোলি ফুটবল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আউরেলিও ডি ললেন্তিস জানিয়েছেন, রবিবার স্টেডিয়ামের ভেতরে ম্যারাডোনার আরও একটি ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য উন্মোচন করা হবে। যাতে খেলোয়াড়রা ফুটবলের এই মহান ঈশ্বরের হাত ও পা স্পর্শ করতে পারেন।