লড়াকু বাংলাদেশ গড়তে চান কাবরেরা
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০
শনিবার স্পেন থেকে ঢাকায় এসেছেন হাভিয়ের কাবরেরা। চারদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর কাল সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন জাতীয় দলের নয় কোচ। দীর্ঘদিন ভারতে কাজ করার অভিজ্ঞতা পুঁজি করে বাংলাদেশে সাফল্য খুঁজে নিতে চাইছেন এই কোচ। গতকাল বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনের চুম্বক অংশগুলো তুলে ধরা হলো এখানে।
প্রশ্ন : নিজের সম্পর্কে বলুন?
হাভিয়ের কাবরেরা : ২০০৪ সাল থেকে আমি ফুটবল অ্যানালিস্ট হিসেবে পেশাদার ফুটবলে যুক্ত আছি। তখন থেকেই ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের বিভিন্ন দল ও অ্যাকাডেমির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। স্পেনের শীর্ষ ক্লাবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার আছে। ভারতে লা লিগার একটা বড় প্রজেক্টে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। স্পেনের এমন একটি প্রথম সারির ক্লাবে কাজ করেছি যাদের পৃথিবীর সেরা পাঁচটি ফুটবল অ্যাকাডেমির একটি রয়েছে। স্পেনের বয়সভিত্তিক দলগুলোতে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার আছে। আর এসব অভিজ্ঞতাই আশা করছি আমার বর্তমান কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমার ধারণা আমাদের তারুণ্য ও অভিজ্ঞদের সংমিশ্রণে দারুণ একটা দল আছে। তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।
প্রশ্ন : নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগে কী ভাবছেন?
কাবরেরা : নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য আমি পুরোপুরি সংকল্পবদ্ধ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দীর্ঘ সময় কাজের অভিজ্ঞতা আমার আছে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে আমি কাজ করেছি। ভারতে প্রায় আট বছর কাজ করেছি। যার ফলে সাফ ফুটবল সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা হয়েছে। তাছাড়া এএফসি কাপে খেলা বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেড ও বসুন্ধরা কিংস সম্পর্কেও আমার ধারণা আছে। সেভাবে ধরলে আমি এই উপমহাদেশে নতুন নই। ভারতে কাজের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কাজের ক্ষেত্রে আমার সহায়ক হবে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ জাতীয় দল অনেক দিন ধরেই সাফল্য পায় না। এটা কি বাড়তি চাপ আপনার জন্য?
কাবরেরা : আমি মনে করি এটা বড় একটা চ্যালেঞ্জ এবং আমি নিজেও চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। প্রথম থেকেই আমি চাইব এটা লড়াকু দল হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে। একই সঙ্গে চেষ্টা করব জাতীয় দলের সহায়ক একটা ফুটবল অবকাঠামো গড়ে তুলতে। সবাইকে নিয়েই আমাদের এই কাজটা করতে হবে। টেকনিক্যাল পারফরম্যান্সের উন্নয়নের পাশাপাশি স্কাউটিং, অ্যানালাইসিস, মেডিকেলের দিকেও জোর দিতে হবে যাতে আন্তর্জাতিক মানের একটা অবকাঠামো গড়ে তোলা যায়।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ সামনে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব খেলবে। সেখানে আপনার লক্ষ্য কী হবে?
কাবরেরা : শুরু থেকেই আমাদের ধাপে ধাপে এগুতে হবে। প্রথমে আমাদের লক্ষ্য থাকবে মার্চের ফিফা উইন্ডোর জন্য সেরা ফুটবলারদের খুঁজে বের করা। তার আগে ক্লাবগুলোর কোচ, কর্মকর্তা, টেকনিক্যাল স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে হবে কীভাবে তারা তাদের খেলোয়াড়দের অনুশীলন করায়। খেলোয়াড় বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে ফিফা উইন্ডোর জন্য তালিকা প্রস্তুত করার দিকে আমার গুরুত্ব থাকবে। এরপর তাদের নিয়ে ক্যাম্পে কাজ করব। চেষ্টা করব তাদের কমতিগুলো খুঁজে বের করে কাজ করতে। তারপরও আমাদের তাকাতে হবে জুনের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দিকে। তবে বলতে পারি সেখানে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল উপহার দেব।
প্রশ্ন : এ দেশের ফুটবলাররা টেকনিক্যালি ততটা উন্নত নয়। তাদের উন্নতির ক্ষেত্রে আপনার সব কৌশল কী কাজে দেবে?
কাবরেরা : আবারও বলছি, দলটিকে লড়াকু হিসেবে গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য। আমার খুবই ইতিবাচক ধারণা ফুটবলারদের নিয়ে। আমি জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা কাপ ও ফেডারেশন কাপে খেলতে দেখেছি। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের কিছু ম্যাচও আমার দেখার সুযোগ হয়েছে। তাদের মধ্যে লড়াকু মনোভাব আমি দেখেছি। ছেলেরা নিজ নিজ ক্লাবেও ভালো ট্রেনিং পাচ্ছে। তাছাড়া একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লিগও খেলবে সামনে। আমি নিশ্চিত তারা একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আবহেই প্রস্তুত হবে। ধাপে ধাপে আমাদের সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে। খেলোয়াড়দের মানসিকতায় আমি ইতিবাচক অনেক কিছুই দেখেছি। কিছু কিছু জায়গায় উন্নতি করতে পারলে তাদের ভিন্ন রূপে বদলে দেওয়া সম্ভব। আমার কাজটাও হবে সেটা। ম্যাচের প্রয়োজন অনুযায়ী ফুটবলারদের করণীয়টা বুঝিয়ে দেওয়াই হবে আমার অন্যতম দায়িত্ব।
শেয়ার করুন
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০

শনিবার স্পেন থেকে ঢাকায় এসেছেন হাভিয়ের কাবরেরা। চারদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর কাল সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন জাতীয় দলের নয় কোচ। দীর্ঘদিন ভারতে কাজ করার অভিজ্ঞতা পুঁজি করে বাংলাদেশে সাফল্য খুঁজে নিতে চাইছেন এই কোচ। গতকাল বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনের চুম্বক অংশগুলো তুলে ধরা হলো এখানে।
প্রশ্ন : নিজের সম্পর্কে বলুন?
হাভিয়ের কাবরেরা : ২০০৪ সাল থেকে আমি ফুটবল অ্যানালিস্ট হিসেবে পেশাদার ফুটবলে যুক্ত আছি। তখন থেকেই ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের বিভিন্ন দল ও অ্যাকাডেমির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। স্পেনের শীর্ষ ক্লাবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার আছে। ভারতে লা লিগার একটা বড় প্রজেক্টে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। স্পেনের এমন একটি প্রথম সারির ক্লাবে কাজ করেছি যাদের পৃথিবীর সেরা পাঁচটি ফুটবল অ্যাকাডেমির একটি রয়েছে। স্পেনের বয়সভিত্তিক দলগুলোতে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার আছে। আর এসব অভিজ্ঞতাই আশা করছি আমার বর্তমান কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমার ধারণা আমাদের তারুণ্য ও অভিজ্ঞদের সংমিশ্রণে দারুণ একটা দল আছে। তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি।
প্রশ্ন : নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগে কী ভাবছেন?
কাবরেরা : নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য আমি পুরোপুরি সংকল্পবদ্ধ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দীর্ঘ সময় কাজের অভিজ্ঞতা আমার আছে। ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে আমি কাজ করেছি। ভারতে প্রায় আট বছর কাজ করেছি। যার ফলে সাফ ফুটবল সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা হয়েছে। তাছাড়া এএফসি কাপে খেলা বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেড ও বসুন্ধরা কিংস সম্পর্কেও আমার ধারণা আছে। সেভাবে ধরলে আমি এই উপমহাদেশে নতুন নই। ভারতে কাজের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কাজের ক্ষেত্রে আমার সহায়ক হবে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ জাতীয় দল অনেক দিন ধরেই সাফল্য পায় না। এটা কি বাড়তি চাপ আপনার জন্য?
কাবরেরা : আমি মনে করি এটা বড় একটা চ্যালেঞ্জ এবং আমি নিজেও চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। প্রথম থেকেই আমি চাইব এটা লড়াকু দল হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে। একই সঙ্গে চেষ্টা করব জাতীয় দলের সহায়ক একটা ফুটবল অবকাঠামো গড়ে তুলতে। সবাইকে নিয়েই আমাদের এই কাজটা করতে হবে। টেকনিক্যাল পারফরম্যান্সের উন্নয়নের পাশাপাশি স্কাউটিং, অ্যানালাইসিস, মেডিকেলের দিকেও জোর দিতে হবে যাতে আন্তর্জাতিক মানের একটা অবকাঠামো গড়ে তোলা যায়।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ সামনে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব খেলবে। সেখানে আপনার লক্ষ্য কী হবে?
কাবরেরা : শুরু থেকেই আমাদের ধাপে ধাপে এগুতে হবে। প্রথমে আমাদের লক্ষ্য থাকবে মার্চের ফিফা উইন্ডোর জন্য সেরা ফুটবলারদের খুঁজে বের করা। তার আগে ক্লাবগুলোর কোচ, কর্মকর্তা, টেকনিক্যাল স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে হবে কীভাবে তারা তাদের খেলোয়াড়দের অনুশীলন করায়। খেলোয়াড় বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে ফিফা উইন্ডোর জন্য তালিকা প্রস্তুত করার দিকে আমার গুরুত্ব থাকবে। এরপর তাদের নিয়ে ক্যাম্পে কাজ করব। চেষ্টা করব তাদের কমতিগুলো খুঁজে বের করে কাজ করতে। তারপরও আমাদের তাকাতে হবে জুনের এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দিকে। তবে বলতে পারি সেখানে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফুটবল উপহার দেব।
প্রশ্ন : এ দেশের ফুটবলাররা টেকনিক্যালি ততটা উন্নত নয়। তাদের উন্নতির ক্ষেত্রে আপনার সব কৌশল কী কাজে দেবে?
কাবরেরা : আবারও বলছি, দলটিকে লড়াকু হিসেবে গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য। আমার খুবই ইতিবাচক ধারণা ফুটবলারদের নিয়ে। আমি জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের স্বাধীনতা কাপ ও ফেডারেশন কাপে খেলতে দেখেছি। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের কিছু ম্যাচও আমার দেখার সুযোগ হয়েছে। তাদের মধ্যে লড়াকু মনোভাব আমি দেখেছি। ছেলেরা নিজ নিজ ক্লাবেও ভালো ট্রেনিং পাচ্ছে। তাছাড়া একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লিগও খেলবে সামনে। আমি নিশ্চিত তারা একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আবহেই প্রস্তুত হবে। ধাপে ধাপে আমাদের সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে। খেলোয়াড়দের মানসিকতায় আমি ইতিবাচক অনেক কিছুই দেখেছি। কিছু কিছু জায়গায় উন্নতি করতে পারলে তাদের ভিন্ন রূপে বদলে দেওয়া সম্ভব। আমার কাজটাও হবে সেটা। ম্যাচের প্রয়োজন অনুযায়ী ফুটবলারদের করণীয়টা বুঝিয়ে দেওয়াই হবে আমার অন্যতম দায়িত্ব।