ছয় গোলের রোমাঞ্চ জয় আবাহনীর
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০
রোমাঞ্চকর এক ফুটবল ম্যাচের সাক্ষী হয়ে থাকল কুমিল্লার ভাষাসৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল দেশের দুই জনপ্রিয় দল আবাহনী ও মোহামেডান। প্রথমার্ধেই হয়েছে ছয় গোল। দ্বিতীয়ার্ধে গোল ছাড়া সবই হয়েছে। এমন জমজমাট লড়াই শেষে শেষ হাসি আবাহনীর। ম্যাচটা তারা জিতেছে ৪-২ গোলে। দীর্ঘ বিরতির সুযোগে চোট কাটিয়ে অসাধারণ রূপে আবির্ভূত আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ডরিয়েলটন গোমেজ করেছেন জোড়া গোল। দানিয়েল কলিনদ্রেস ও বদলি মিডফিল্ডার ইমন বাবু করেছেন বাকি দুই গোল। প্রথমার্ধে দুই গোল শোধ দেওয়া মোহামেডান বাকিটা সময় চেষ্টা করেও আর গোল না পাওয়ায় আবাহনী পেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট।
এই জয়ে শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে ব্যবধানটা আগের মতোই ছয় পয়েন্টে নামিয়ে এনেছে আবাহনী। আকাশি-হলুদের সংগ্রহ এখন ৩৫। চিরশত্রুদের হারিয়ে শিরোপার রোমাঞ্চটা টিকিয়ে রেখেছে আবাহনী।
আক্রমণাত্মক মেজাজে ম্যাচের শুরু করেই ফল পায় আবাহনী। বাঁ দিক দিয়ে বারবার আক্রমণ সাজিয়েছেন কলিনদ্রেস। সামনে ডরিয়েলটনকে রেখে ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল আগুস্তো ছিলেন সপ্রতিভ। ফলে শুরুর আট মিনিটেই তিনটি কর্নার আদায় করে নেয় আবাহনী। যার তৃতীয়টি থেকে কলিনদ্রেস করেন অসাধারণ ‘অলিম্পিক গোল’। তার বাতাসে বাঁক খাওয়ানো কর্নার সরাসরি আঁচড়ে পড়ে দূরের পোস্টে। পরের মিনিটেই আবাহনী শিবিরকে আনন্দে ভাসান ডরিয়েলটন। নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের লম্বা থ্রু আয়ত্বে নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দুই মার্কারকে ফাঁকি দিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে দূরের পোস্টে বল জড়ান ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ১৩ মিনিটেই ৩-০ হতে পারত। রাকিব হোসেনের কাটব্যাকে ডরিয়েলটনের জোরালো শট শেষ মুহূর্তে গোলকিপার সুজনের গ্লাভস ছুঁয়ে পোস্ট কাঁপিয়ে ফিরে আসে। ২ গোলের ধাক্কা সামলে মোহামেডান অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় অতি দ্রুত। ১৮ মিনিটে আলমগীর মোল্লার ক্রসে মালির ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে অনেকটা লাফিয়ে উঠে চিপ করে ব্যবধান কমান। ৩৯ মিনিটে পেশির পুরনো চোট মাথাচাড়া দেওয়ায় মাঠ ছাড়তে হয় রাফায়েল আগুস্তোকে। তার জায়গায় নেমে তিন মিনিটেই ব্যবধান বাড়ান ইমন বাবু। বক্সের বাঁদিক থেকে কলিনদ্রেসের জোরালো শট সুজন রুখে দিলেও ফিরতি বল আলতো টোকায় জালে জড়ান এই মিডফিল্ডার। ফের ধাক্কায়ও দমেনি মোহামেডান। যোগ করা সময়ের শুরুর দিকে ফের ব্যবধান কমান শাহরিয়ার ইমন। ডান দিক দিয়ে আড়াআড়ি বক্সে ঢুকে সুশান্ত ত্রিপুরা ও ইরানি ডিফেন্ডার মিলাদ শেখকে ঝটকায় ফেলে দিয়ে শহীদুল আলম সোহেলকে বোকা বানান তরুণ এই উইঙ্গার। তবে বিরতিতে যাওয়ার আগেই ৪-২ করেন ডরিয়েলটন। বাঁ দিক থেকে কলিনদ্রেসের কর্নারে সøাইডিং হেডে ম্যাচে দ্বিতীয় ও লিগে নবম গোলের দেখা পান চোট কাটিয়ে ছন্দে ফেরা ডরিয়েলটন।
দ্বিতীয়ার্ধে যেহেতু আর গোল হয়নি, ম্যাচের গল্পের শেষটা চাইলে এখানেই টেনে দিতে পারেন। তবে সেটা করা যায়নি দু’দলের আক্রমণাত্মক ফুটবলের কারণে। বিরতির পর মোহামেডানের নয়া কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বাধ্য হয়েই গোলকিপার সুজনকে বদলে নামান আহসান হাবিব বিপুকে। এই কিপারের দৃঢ়তায় আবাহনী পারেনি গোলসংখ্যা বাড়াতে। ৫৯ ও ৬০ মিনিটে কলিনদ্রেস ও সোহেল রানার দুটি ভালো প্রচেষ্টা রুখে দেন বিপু। এরপর ম্যাচে ছিল গতি। তবে দু’দলের কেউই অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে সুবিধা করতে পারেননি। তবে ৮০ মিনিটে আলমগীর মোল্লাকে রাফ ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আবাহনীর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রেজাউল করিম। সুযোগটা কাজে লাগাতে মোহামেডান হামলে পড়ে আবাহনীর রক্ষণে। নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে শাহেদ হোসেনের শট জালে জড়ালেও অফসাইডে বাতিল হলে ব্যবধান কমাতে পারেনি মোহামেডান। ফলে প্রথমপর্বের মতো ফিরতি দেখায়ও ২২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা মোহামেডানের সঙ্গী হয়েছে হারের হতাশা।
রাজশাহীতে লিগের অন্য ম্যাচে পুলিশ এফসি ৩-২ গোলে হারায় উত্তর বারিধারাকে। পুলিশের আফগান ফরোয়ার্ড আমিরুদ্দিন শারিফি জোড়া গোল করেন। দানিলো কুইপাপা করেন এক গোল। বারিধারার শেষ দিকে দুই গোল শোধ দেন ইউসুফ মরি ও ইভেজেনি কোচনেভ।
শেয়ার করুন
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০

রোমাঞ্চকর এক ফুটবল ম্যাচের সাক্ষী হয়ে থাকল কুমিল্লার ভাষাসৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল দেশের দুই জনপ্রিয় দল আবাহনী ও মোহামেডান। প্রথমার্ধেই হয়েছে ছয় গোল। দ্বিতীয়ার্ধে গোল ছাড়া সবই হয়েছে। এমন জমজমাট লড়াই শেষে শেষ হাসি আবাহনীর। ম্যাচটা তারা জিতেছে ৪-২ গোলে। দীর্ঘ বিরতির সুযোগে চোট কাটিয়ে অসাধারণ রূপে আবির্ভূত আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ডরিয়েলটন গোমেজ করেছেন জোড়া গোল। দানিয়েল কলিনদ্রেস ও বদলি মিডফিল্ডার ইমন বাবু করেছেন বাকি দুই গোল। প্রথমার্ধে দুই গোল শোধ দেওয়া মোহামেডান বাকিটা সময় চেষ্টা করেও আর গোল না পাওয়ায় আবাহনী পেয়েছে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট।
এই জয়ে শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে ব্যবধানটা আগের মতোই ছয় পয়েন্টে নামিয়ে এনেছে আবাহনী। আকাশি-হলুদের সংগ্রহ এখন ৩৫। চিরশত্রুদের হারিয়ে শিরোপার রোমাঞ্চটা টিকিয়ে রেখেছে আবাহনী।
আক্রমণাত্মক মেজাজে ম্যাচের শুরু করেই ফল পায় আবাহনী। বাঁ দিক দিয়ে বারবার আক্রমণ সাজিয়েছেন কলিনদ্রেস। সামনে ডরিয়েলটনকে রেখে ব্রাজিলিয়ান রাফায়েল আগুস্তো ছিলেন সপ্রতিভ। ফলে শুরুর আট মিনিটেই তিনটি কর্নার আদায় করে নেয় আবাহনী। যার তৃতীয়টি থেকে কলিনদ্রেস করেন অসাধারণ ‘অলিম্পিক গোল’। তার বাতাসে বাঁক খাওয়ানো কর্নার সরাসরি আঁচড়ে পড়ে দূরের পোস্টে। পরের মিনিটেই আবাহনী শিবিরকে আনন্দে ভাসান ডরিয়েলটন। নিজেদের অর্ধ থেকে সতীর্থের লম্বা থ্রু আয়ত্বে নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দুই মার্কারকে ফাঁকি দিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে দূরের পোস্টে বল জড়ান ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ১৩ মিনিটেই ৩-০ হতে পারত। রাকিব হোসেনের কাটব্যাকে ডরিয়েলটনের জোরালো শট শেষ মুহূর্তে গোলকিপার সুজনের গ্লাভস ছুঁয়ে পোস্ট কাঁপিয়ে ফিরে আসে। ২ গোলের ধাক্কা সামলে মোহামেডান অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় অতি দ্রুত। ১৮ মিনিটে আলমগীর মোল্লার ক্রসে মালির ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে অনেকটা লাফিয়ে উঠে চিপ করে ব্যবধান কমান। ৩৯ মিনিটে পেশির পুরনো চোট মাথাচাড়া দেওয়ায় মাঠ ছাড়তে হয় রাফায়েল আগুস্তোকে। তার জায়গায় নেমে তিন মিনিটেই ব্যবধান বাড়ান ইমন বাবু। বক্সের বাঁদিক থেকে কলিনদ্রেসের জোরালো শট সুজন রুখে দিলেও ফিরতি বল আলতো টোকায় জালে জড়ান এই মিডফিল্ডার। ফের ধাক্কায়ও দমেনি মোহামেডান। যোগ করা সময়ের শুরুর দিকে ফের ব্যবধান কমান শাহরিয়ার ইমন। ডান দিক দিয়ে আড়াআড়ি বক্সে ঢুকে সুশান্ত ত্রিপুরা ও ইরানি ডিফেন্ডার মিলাদ শেখকে ঝটকায় ফেলে দিয়ে শহীদুল আলম সোহেলকে বোকা বানান তরুণ এই উইঙ্গার। তবে বিরতিতে যাওয়ার আগেই ৪-২ করেন ডরিয়েলটন। বাঁ দিক থেকে কলিনদ্রেসের কর্নারে সøাইডিং হেডে ম্যাচে দ্বিতীয় ও লিগে নবম গোলের দেখা পান চোট কাটিয়ে ছন্দে ফেরা ডরিয়েলটন।
দ্বিতীয়ার্ধে যেহেতু আর গোল হয়নি, ম্যাচের গল্পের শেষটা চাইলে এখানেই টেনে দিতে পারেন। তবে সেটা করা যায়নি দু’দলের আক্রমণাত্মক ফুটবলের কারণে। বিরতির পর মোহামেডানের নয়া কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বাধ্য হয়েই গোলকিপার সুজনকে বদলে নামান আহসান হাবিব বিপুকে। এই কিপারের দৃঢ়তায় আবাহনী পারেনি গোলসংখ্যা বাড়াতে। ৫৯ ও ৬০ মিনিটে কলিনদ্রেস ও সোহেল রানার দুটি ভালো প্রচেষ্টা রুখে দেন বিপু। এরপর ম্যাচে ছিল গতি। তবে দু’দলের কেউই অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে সুবিধা করতে পারেননি। তবে ৮০ মিনিটে আলমগীর মোল্লাকে রাফ ট্যাকল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আবাহনীর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রেজাউল করিম। সুযোগটা কাজে লাগাতে মোহামেডান হামলে পড়ে আবাহনীর রক্ষণে। নির্ধারিত সময়ের শেষ মুহূর্তে শাহেদ হোসেনের শট জালে জড়ালেও অফসাইডে বাতিল হলে ব্যবধান কমাতে পারেনি মোহামেডান। ফলে প্রথমপর্বের মতো ফিরতি দেখায়ও ২২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা মোহামেডানের সঙ্গী হয়েছে হারের হতাশা।
রাজশাহীতে লিগের অন্য ম্যাচে পুলিশ এফসি ৩-২ গোলে হারায় উত্তর বারিধারাকে। পুলিশের আফগান ফরোয়ার্ড আমিরুদ্দিন শারিফি জোড়া গোল করেন। দানিলো কুইপাপা করেন এক গোল। বারিধারার শেষ দিকে দুই গোল শোধ দেন ইউসুফ মরি ও ইভেজেনি কোচনেভ।