
প্রতিবেশীর উপকার করাটাই তো প্রতিবেশীর কর্তব্য। তাসমান সাগরের ওপারের ‘বড়’ প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়ার দারুণ একটা উপকারই করতে পারে নিউজিল্যান্ড, আজ ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়ে। ব্রিসবেনে আজ হেরে গেলেই আসর থেকে ছুটির ঘণ্টা বেজে যাবে ইংল্যান্ডের। তাতে করে নিউজিল্যান্ড তো সেমিফাইনালে যাবেই, পথের কাঁটা দূর হবে অস্ট্রেলিয়ারও। জিতলে টিকে থাকবে ইংল্যান্ডের আশা, সমীকরণে থাকবে অস্ট্রেলিয়াও।
২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। ড্যারিল মিচেলের দারুণ ব্যাটিংয়ে কিউইরা ম্যাচটা জিতে উঠেছিল ফাইনালে। এবারেও দুটো দলে কমবেশি সেই ক্রিকেটাররাই আছেন। ইংল্যান্ডের নেতৃত্বে বদল এলেও নিউজিল্যান্ডে কেন উইলিয়ামসনই অধিনায়ক। এবং এই মুহূর্তে দলের ব্যাটিং অর্ডারে সবচেয়ে ‘দুর্বল’ জায়গাটা কিউই অধিনায়কের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৩ বলে ২৩ আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩ বলে ৮ রান করেছেন শুধু। একই রকম অবস্থা ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলারেরও। আইপিএলে মনে হচ্ছিল প্রায় বলে বলে ছয় মারতে পারেন বাটলার। সেই তিনি বিশ্বকাপে এসে আফগানদের বিপক্ষে ১৮ আর আইরিশদের বিপক্ষে শূন্য।
দুটো ম্যাচ হয়ে গেছে, এখনো ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের হাফসেঞ্চুরিও নেই। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস করেছেন শতরান, প্রথম ম্যাচে ডেভন কনওয়েও গিয়েছিলেন খুব কাছাকাছি (৯২*)।
সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে এগিয়ে আছে নিউজিল্যান্ডই। ইংল্যান্ডের টি-২০ দলটা যদিও রোমাঞ্চকর সব ক্রিকেটারে ঠাসা, বিশ্বকাপে এসে ঠিক নিজেদের খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ পল কলিংউড সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেছেন, ‘ইতিহাস বলে যে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচটা না হওয়াতে যেটা হয়েছে, বোলাররা সতেজ আছে। ব্যাটসম্যানরা নেটে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এই মাঠেই আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিলাম।’
বেন স্টোকসের দলে জায়গা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কলিংউডের উত্তর, ‘চাপের মুহূর্তে যে একটা মানুষকে আমি দলে চাইব সে হলো বেন স্টোকস। সে শুধু ম্যাচ জেতানো ইনিংসই খেলে না, চাপের মুখে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে। সংকটের মুহূর্তে বেন স্টোকসকে দেখলে আশা দেখা যায়, সে শুধু ব্যাট হাতেই না বল হাতেও ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। এমন মুহূর্তের জন্য বেনকে লাগবেই।’
ব্রিসবেনের মাঠেই বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ম্যাচটি হয়েছিল। সেটি দেখেছেন কি না বা শন উইলিয়ামসের কথায় স্পিন বোলারদের সুবিধার বিষয়টি জানেন কি না এমন প্রশ্নে কলিংউডের উত্তর, ‘না দেখিনি। দেখতে হবে কন্ডিশন কেমন, আমরা আসলে আগে থেকেই কোনো কিছু ভেবে রাখতে চাই না আর এখন পর্যন্ত বল যে খুব ঘুরছে এমনটাও দেখিনি। বরং বলের মুভমেন্টে, সিম আর সুইংয়েই যা হচ্ছে দেখছি।’
নিউজিল্যান্ডের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন লকি ফার্গুসন। এই পেসার বলে দিলেন এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা পেস বোলিং কিউইদেরই, ‘টিম (সাউদি) আর ট্রেন্ট বোল্ট দুর্দান্ত বল করছে। যেখানে বল সুইং করে, সেসব জায়গায় ওদের চেয়ে ভালো কেউ আছে বলে তো মনে হয় না। অন্তত আমার কাছে। ওদের সঙ্গে খেলাটাই খুব দারুণ অভিজ্ঞতা।’
ইংল্যান্ডের ব্যাটিংটা বিশ্বকাপে এখনো জ্বলে না উঠলেও বারুদ কম নয় তাদের। লকি অবশ্য মনে করেন, ওসবে ভয় পেয়ে কাজ নেই কারণ টি-টোয়েন্টিতে সব দলেরই এরকম কিছু না কিছু আছে, ‘টি-২০ খেলার ধরনটাই এমন যে প্রতিটা দলেই শুরুতে ওরকম কিছু বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান থাকে। ইংল্যান্ডও ব্যতিক্রম নয়, নিঃসন্দেহে তারা ব্যাটিং শক্তিতে ওপরের দিকেই আছে আর ওদের ব্যাটিং লাইন-আপটাও লম্বা। ঠান্ডা মাথায় নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করাটাই আমাদের লক্ষ্য।’ জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত, এমন অবস্থায় লকির ভাবনা, ‘বড় ম্যাচ আমাদের জন্য। একটা করে ম্যাচ নিয়েই ভাবছি। কাল (আজ) জিতলেই পরের ধাপে যেতে পারব যখন যাওয়ার সময় হবে।’
ব্রিসবেনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টিও আছে। উত্তেজনার বারুদঠাসা এই ম্যাচটায় না আবার প্রকৃতি জল ঢেলে দেয়!
নিঃসঙ্গ শেরপার মতো একাই লড়লেন লরকান টাকার। আয়ারল্যান্ডের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ওয়ান ডাউনে নেমে অপরাজিত ছিলেন ৪৮ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে। কিন্তু অন্যপাশে পাননি কোনো সতীর্থকে। তাই তো অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪২ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে আইরিশদের। চার ম্যাচে দুই জয়ে অস্ট্রেলিয়া কিছুটা এগিয়ে গেল সেমিফাইনালের পথে, যদিও এখনো বাকি আছে অনেক হিসাব। এই জয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে অস্ট্রেলিয়া, সমান পয়েন্ট নিউজিল্যান্ডেরও, তবে এক ম্যাচ কম খেলে।
ব্রিসবেনে টস জিতে বোলিং নিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। শুরুতেই ডেভিড ওয়ার্নারকে মাত্র ৩ রানে ফিরিয়ে দিয়ে দলে স্বস্তি এনে দেন ব্যারি ম্যাকার্থি। ওয়ান ডাউনে নামা মিচেল মার্শ বেশ দ্রুত রান তুললেও আউট হয়ে যান অল্পতেই, ২২ বলে ২৮ রান করে। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও আভাস দিলেও পারেননি ঝড় তুলতে, ৯ বলে ১৩ রানেই শেষ তার ইনিংস। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ ইনিংস খেলা মার্কাস স্টয়নিসই ভরসা দিলেন, ২৫ বলে ৩৫ রান করে। ওদিকে একপ্রান্ত আগলে অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ খেলেছেন ৪৪ বলে ৬৩ রানের ইনিংস। আগের ম্যাচে নিজের ব্যাটিং নিয়ে নিজেই বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন অজি অধিনায়ক, কাল হাফসেঞ্চুরিতে রানখরা কাটলেও ব্যাটিং নিয়ে আত্মতৃপ্তি পাবেন কমন। হাফসেঞ্চুরি করতে লেগেছে তার ৩৮ বল। তখন পর্যন্ত ৪ বাউন্ডারির সঙ্গে ২ ছক্কা মারা ফিঞ্চ পৌঁছেছেন ৩৮ বলে, ৪ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায়। পরে ৬ বলে আরও একটি বাউন্ডারি ও ছক্কা মেরেছেন। সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই ৫ উইকেটে ১৭৯ রান করে অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ডের ম্যাকার্থি নিয়েছেন ৩ উইকেট।
১৮০ রান তাড়ায় ৩.২ ওভারের মধ্যে বালবার্নি, স্টার্লিং, টেক্টর, ক্যাম্ফার ও ডকরেলকে হারিয়ে বসে আইরিশরা। রান তখন মাত্র ২৫। এর মধ্যে দুই উইকেট নেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এরপর টাকার একপ্রান্তে একাই লড়ে গেলেও অন্যপ্রান্তে সঙ্গী বদল হয়েছে নিয়মিত। শেষ পর্যন্ত ১৮.১ ওভারে ১৩৭ রানেই অলআউট আয়ারল্যান্ড। ৯ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৪৮ বলে ৭১ রান করলেও হাসতে পারেননি টাকার। হেসেছেন অ্যারন ফিঞ্চ এই বিশ্বকাপে প্রথমবার ম্যাচসেরা হয়ে।
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দৈন্যদশার ছাপ পড়েছিল এশিয়া কাপে। সেটা উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ব্যাটিং ধসের পর ৮ উইকেটের হার। যদিও পরের ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়েই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দলটি। তারপর টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরে তারা। কিন্তু ২৭ আগস্টের সেই হারের ক্ষত কি সহজে শুকিয়েছে দাসুন শানাকাদের! সেই দৈন্যদশার ছাপ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুতে নামিবিয়ার সঙ্গেও দেখা গেছে। এরপর সেখান থেকেও ঘুরে দাঁড়িয়ে সেই রশিদ খানদের বিপক্ষে ফের নামতে যাচ্ছেন এশিয়া জয়ীরা।
ব্রিসবেনে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হবে খেলাটি। এই মাঠের অতীত পরিসংখ্যান বলছে, ব্যাটাররা এখানে বেশি কাবু হয়েছেন অফস্পিনারদের কাছে। আর সবচেয়ে বেশি খরুচে পেসাররা। বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ শুরুর আগ পর্যন্ত গ্যাবায় পেসারদের ইকোনমি ৮.৬৫। লেগ স্পিনাররা যেখানে বল করেছেন ৭.১১ ইকোনমিতে। তবে অফস্পিনারদের ইকোনমি সবচেয়ে ভালো, ৬.৬৮।
তবে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের ম্যাচে পেসার-স্পিনাররা সেই পরিসংখ্যানে গরমিল করে দিয়েছেন। গ্যাবাতে তাসকিন ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন ৪.৭৫। আর মোস্তাফিজ দিয়েছেন ৩.৭৫ রান করে। কেবল হাসান মাহমুদ ওভারপ্রতি ৯ রান দিয়ে মাঠে পেসারদের স্বাভাবিকতা বজায় রাখেন। আর টাইগার ফিঙ্গার স্পিনার সাকিব ও মোসাদ্দেক দুজনেই ওভারপ্রতি ৮.৫০ রান করে দিয়ে তালগোল পাকিয়েছেন।
টাইগাররা পরিসংখ্যানের হিসাব পাল্টে দিলেও স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আয়ারল্যান্ড ঠিকই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন কাল এখানে। গতকাল মার্ক অ্যাডায়ার ৪ ওভারে ৫৯ রান দিয়েছেন। আইরিশ লেগ স্পিনার গেরাথ ডেলেনি ওভারপ্রতি প্রায় ১০ রান করে খরচ করেছেন। বিপরীতে অফস্পিনার জর্জ ডকরেল কোনো উইকেট না পেলেও ওভারে মাত্র ৬ রান করে খরচ করেছেন।
স্পিননির্ভর আফগানিস্তানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও এমনটি থাকাটাই স্বাভাবিক। রশিদ খান কিংবা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা রান খরচ করলেও উইকেট নিয়ে দলকে ব্রেক থ্রো এনে দিতে পারেন। অন্যদিকে মুজিব-উর রহমান ও মোহাম্মদ নবীদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে চাপে থাকতে পারেন কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাঙ্কারা। অন্যদিকে হজরতউল্লাহ জাজাই ও ইব্রাহিম জাদরানরাও কাবু হতে পারেন মহেশ থিকশানাদের কাছে। চারিথ আসালঙ্কাও হয়ে উঠতে পারেন তার যোগ্য সঙ্গী। তবে অস্বাভাবিক কিছু না হলে উভয় দলের ব্যাটাররাই স্ব-মহিমায় জ্বলে উঠতে পারেন পেসারদের পেলে।
এটা তো গেল মাঠের পরিসংখ্যানের কথা। তবে সুপার টুয়েলভের পয়েন্ট টেবিলের পরিসংখ্যানের তলানিতে রয়েছে দুই দল। সেমিফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে হলে টুর্নামেন্টের সাবেক চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার কাছে ম্যাচটি তাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কাসুন রাজিথা যেমন বললেন কাল, ‘আমরা জানি এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলা। মাঠে আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। এই ম্যাচটি জিততে হবে। আমরা জানি যে, আমরা আমাদের দেশ ও দলের জন্য সেরাটা উজাড় করে দিতে নামব।’
অনেক সম্ভাবনা নিয়ে টুর্নামেন্টে আসা আফগানিস্তান দুই ম্যাচ হার, আর একটি পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট নিয়ে একেবারে নিচে। তাদের জন্য শেষ আশায় পানি ঢেলে দিতে পারে বৃষ্টি। ইংলিশ কোচ জোনাথন ট্রটের আশা ম্যাচটা হবে, ‘আশা করি আমরা ম্যাচটা খেলতে পারব। জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নেমে আমরা আরও দুই পয়েন্ট যোগ করতে পারব বলে আত্মবিশ্বাস রয়েছে আমাদের।’
চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা রবার্ট লেভানডফস্কি। যে ধারায় আগের মৌসুমগুলো খেলেছিলেন, সে ধারায় খেলতে পারলে হয়তো এবার সেঞ্চুরিও পূরণ হয়ে যেত তার। কিন্তু বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর সব গেল বদলে। খেলতে হবে কি-না ইউরোপা লিগে। তাতে আর কীভাবে সুখে থাকেন এ পোলিশ তারকা?
বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে না পারায় অসুখী হলেও প্রথম মৌসুম সহজ হবে না এমন ধারণা আগেই ছিল লেভার। লা ভ্যানগার্দিয়ার সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, ‘অবশ্যই আমি খুশি নই। বার্সেলোনার শেষ ষোলোতে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু বার্সেলোনা আসার আগে আমি আগে থেকেই জানতাম যে প্রথম মৌসুমে অবশ্যই যেমনটা হওয়ার কথা তারচেয়ে বেশি কঠিন হতে পারে।’
‘আমরা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি যা সময় নেয়, আমাদের অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে। আমি নিশ্চিত যে এই বিপত্তিগুলো আমাদের দল হিসেবে গড়ে তুলবে এবং পরের মৌসুমে সবকিছু ভিন্ন হবে। আমরা বিকশিত হচ্ছি। এখানে এসে প্রথম মৌসুমে সবকিছু ঠিকঠাক হবে এমনটা আমি আশা করিনি। আমি এমন একটি প্রক্রিয়াতে জোর দিয়েছি যার জন্য সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন’ যোগ করেন লেভানডফস্কি।
এর আগে সবশেষ ২০১০-১১ মৌসুমে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ইউরোপা লিগে খেলেছিলেন লেভানডফস্কি। সে মৌসুমে আট ম্যাচ খেলে গোল দিয়েছিলেন মাত্র একটি। এরপর গত এক যুগে খেলতে হয়নি এ লিগে। চ্যাম্পিয়নস লিগে নিয়মিত জাদুকরী ছন্দের ধারা রেখে এখন পর্যন্ত গোল করেছেন ৯১টি।
আজ ও কাল চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ সেরা-রানার্সআপ নির্ধারণের খেলা। বার্সেলোনা খেললেও সেই লড়াইয়ে নেই। গত রাউন্ডে ইন্তার মিলানের জয়ে বিদায় নিয়েছে তারা। নিজেরাও হেরেছে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে। আজ তাদের খেলা ভিক্টোরিয়া প্লাজেনের সঙ্গে।
মার্শেইয়ের মাঠে খেলবে টটেনহাম। পাঁচ ম্যাচে ৮ পয়েন্টে শীর্ষে আছে স্পার্সরা। মার্শেই ছয় পয়েন্টে চারে। গ্রুপের অপর ম্যাচ স্পোর্টিং সিপি ও আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের। স্পোর্টিং আতিথেয়তা দেবে ফ্রাঙ্কফুর্টকে। দুই দলেরই পয়েন্ট সমান ৭। দুইয়ে স্পোর্টিং, তিনে ফ্রাঙ্কফুর্ট।
টটেনহাম-মার্শেই ম্যাচে যে দল জিতবে তার শীর্ষ দুইয়ে থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত। একই ভাবে সিপি-স্পোর্টিং ম্যাচের জয়ী দলেরও শেষ ষোলো নিশ্চিত হবে। টটেনহাম ম্যাচ ড্র হলেও পরের রাউন্ডে যাবে হ্যারি কেইনের দল। কিন্তু যদি টটেনহাম হারে এবং স্পোর্টিং-ফ্রাঙ্কফুর্ট ম্যাচ ড্র হয়, তখন তিন দলেরই পয়েন্ট হবে সমান ৮। সে ক্ষেত্রেও পরের রাউন্ডে যাবে টটেনহামই। মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আছে আন্তনিও কন্তের দল। আগের দেখায় মার্শেইকে ২-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহাম।
সি গ্রুপের চার দলের অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে আগেই। আজকের ম্যাচের ফলাফল তাদের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনবে না। শীর্ষ থাকা বায়ার্ন আতিথেয়তা দেবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্তার মিলানকে। আর বার্সেলোনা খেলতে যাবে প্লাজেনের মাঠে।
এ গ্রুপের শীর্ষ দুই দল নাপোলি ও লিভারপুলের ম্যাচ আজ অ্যানফিল্ডে। দুটি দলই নিশ্চিত করেছে পরের রাউন্ড। অসাধারণ কিছু না হলে নাপোলির শীর্ষস্থান এবং লিভারপুলের দ্বিতীয় স্থানও নিশ্চিত। আজ লিভারপুল জিতলে সমান ১৫ করে পয়েন্ট হবে নাপোলি আর অলরেডদের। তবে আগের দেখায় নাপোলি লিভারপুলকে হারিয়েছে ৪-১ গোলে।
বি গ্রুপ থেকে ক্লাব ব্রুজ ও পোর্তোর পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত। আজ ব্রুজ খেলবে লেভারকুসেনের বিপক্ষে, পোর্তোর ম্যাচ আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। লেভারকুসেন যদি জেতে এবং আতলেতিকো হারে তবে ইউরোপা লিগ পজিশন থেকে ছিটকে যাবে ডিয়েগো সিমিওনের আতলেতিকো। এই গ্রুপের পয়েন্ট টেবিল এমন– ব্রুজ (১০), পোর্তো (৯), আতলেতিকো (৫) এবং লেভারকুসেন (৪)।
রবিবার পার্থে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের তোপে ধসে পড়ে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ। ব্যর্থ হন কোহলিও, আউট হয়ে যান মাত্র ১২ রানে। পরবর্তীতে সীমানার কাছে হাতে জমাতে পারেননি সহজ ক্যাচ। তার হতাশার ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের তেতো স্বাদ পেতে হয় দলকে। এর কয়েক ঘণ্টা পর কোহলি জানতে পারেন, ভারত দল যে হোটেলে উঠেছে, সেখানেই ঘটেছে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা। সেটা আবার তার রুমেই!
শুধু রুমে প্রবেশ করেই ক্ষান্ত হয়নি দুর্বৃত্তরা, পুরো রুমের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে দিয়েছে। সেটা নজর এড়ায়নি কোহলিরও। সামাজিক মাধ্যম ইন্সটাগ্রামে নিজের স্বীকৃত অ্যাকাউন্টে তা প্রকাশ করে ক্ষোভ ঝেড়েছেন ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটার। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে শঙ্কায় থাকার কথাও জানিয়েছেন তিনি। ‘আমি বুঝতে পারি যে ভক্তরা তাদের প্রিয় খেলোয়াড়দের দেখলে খুবই আনন্দিত ও উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং তাদের সঙ্গে দেখা করার জন্যও রোমাঞ্চিত থাকে। আমি সব সময়ই এটা সমর্থন করেছি। তবে এই ভিডিওটা ভয়ানক এবং এটা আমাকে আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে।’
নিজের রুমেও যদি গোপনীয়তা রক্ষা না হয়, তবে কোথায় তা পাবেন সেই প্রশ্নও রেখেছেন ভারতীয় তারকা ‘যদি আমি আমার হোটেল রুমেই ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার ব্যাপারটি না পাই, তবে আর কোথায় আমি তা আশা করতে পারি? এমন (ভালোবাসার) বাড়াবাড়ি ও গোপনীয়তার পুরোপুরি লঙ্ঘন আমার জন্য মেনে নেওয়ার মতো নয়। দয়া করে মানুষের গোপনীয়তাকে সম্মান করুন ও তাদের বিনোদনের মাধ্যম বানাবেন না।’
কোহলির পোস্টের পরপরই সেখানে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন ক্রিকেট তারকারা। তার স্ত্রী আনুশকা শর্মাও প্রকাশ করেছেন অসন্তোষ। তিনি মন্তব্য করেছেন ‘আপনার বেডরুমেও যদি এটা ঘটে, তবে সীমা থাকল কোথায়?’ অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার লিখেছেন ‘এটা অসহ্য, একেবারেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ ও হোটেলে ঘটা এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা বাদ দিলে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে দারুণ সময় কাটছে কোহলির। তিন ম্যাচে করেছেন ১৫৬ রান। তার ৫৩ বলে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংসেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারায় ভারত।
দুটি পেনাল্টি কর্নার কাজে লাগিয়ে প্রথম কোয়ার্টারেই ২-০ লিড নিয়ে নেয় ওয়ালটন ঢাকা। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই হয় আরেক গোল। এরপর ম্যাচে ফেরা বড্ড কঠিন ছিল। তারপরও শেষ দুই কোয়ার্টারে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল রূপায়ণ সিটি কুমিল্লা। তবে পিসির অনেকগুলো সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়ে ৪-৩ গোলের তেতো স্বাদ নিতে হয়েছে তাদের। ম্যাচে ৯টা পিসির সুযোগ পেয়েছিল রূপায়ণ সিটি কুমিল্লা। যার মাত্র একটি কাজে লাগাতে পারে তারা। বিপরীতে ওয়ালটন ঢাকা ছয় পিসির তিনটি কাজে লাগিয়ে ম্যাচে গড়ে দেয় ব্যবধান। যা তাদের দ্বিতীয় ম্যাচে দেয় জয়ের স্বাদ।
আগের ম্যাচে মেট্রো এক্সপ্রেস বরিশালের বিপক্ষে সাতটি পিসির সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন ওয়ালটন ঢাকার অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম। অথচ কাল প্রথম দুই প্রচেষ্টাই কাজে লাগান এই পিসি স্টেশালিস্ট। সপ্তম মিনিটে পিছিয়ে যায় রূপায়ণ সিটি কুমিল্লা। ঢাকার ভারতীয় তারকা এসভি সুনিলের পুশ, আবেদ উদ্দিন থামিয়ে দিলে নিখুঁত হিটে লক্ষ্যভেদ করেন আশরাফুল ইসলাম। প্রথম কোয়ার্টারের শেষ মুহূর্তে মালয়েশিয়ান আজরি বিন হাসানের পুশ আবেদ উদ্দিন থামানোর পর আশরাফুলের স্টিক খুঁজে নেয় পোস্ট। ২০ মিনিটে রকিবুল হাসান রকির আড়াআড়ি পাসে স্টিক ছুঁইয়ে ৩-০ করেন ঢাকার ইন্দোনেশিয়ান ফরোয়ার্ড আলফান্দি আলি সুরিয়া। এই গোলে অবশ্য অবদান আছে রূপায়ণ সিটি কুমিল্লার ডিফেন্ডারদেরও। তিন মিনিট বাদে অবশ্য ব্যবধান কমায় পিসি থেকে গোল করে। মিলন হোসেনের পুশ, সারোয়ার হোসেন থামালে অধিনায়ক সোহানুর রহমান সবুজ দলের দ্বিতীয় পিসিতে গোল করেন। পরের মিনিটেই গোলের সুযোগ ছিল। তবে ওয়ালটন ডিফেন্ডার শফিউল আলম শিশির গোললাইন থেকে রুখে দেন পুস্কর ক্ষিসা মিমোর ফ্লিক। ২৫ মিনিটে আবারও পিসির সুযোগ কাজে লাগিয়ে সুরিয়া ঢাকাকে আরও এগিয়ে নেন। সুনিলের পুশ আবেদ থামালে আশরাফুলের ড্রাগ অ্যান্ড ফ্লিকে শেষ মুহূর্তে স্টিক ছুঁইয়ে দিক পরিবর্তন করে জালে পাঠান ইন্দোনেশিয়ার ফরোয়ার্ড। ২৮ মিনিটে পিসির দুটি সুযোগ হাতছাড়া করেন সবুজ। দ্বিতীয় কোয়ার্টারের শেষ মুহূর্তে ঢাকার কিপার আবু সাঈদ নিপ্পন অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় মিলনকে গোল করতে দেননি। তৃতীয় কোয়ার্টারে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া আক্রমণ চালায় রূপায়ণ সিটি কুমিল্লা। ৩২ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে ব্যবধান ৪-২-এ নামিয়ে আনেন কোরিয়ান কিম সুং ইয়ব। ৩৯ মিনিটে কিম সুং ইয়ব দলের অষ্টম পিসি থেকে ব্যবধান ৪-৩ করেন। মিলনের পুশ প্রদীপ মোর থামালে নিখুঁত ড্রাগ অ্যান্ড ফ্লিকে গোল করেন কোরিয়ান ফরোয়ার্ড। শেষ কোয়ার্টারেও আক্রমণে এগিয়ে ছিল রূপায়ণ। তবে ডিফেন্ডার ও কিপারের কৃতিত্বে ম্যাচটা থেকে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে ওয়ালটন ঢাকা। মোনার্ক পদ্মাকে হারিয়ে হকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু করা রূপায়ণ সিটি কুমিল্লাকে দ্বিতীয় ম্যাচেই হোঁচট খেতে হলো। আগামীকাল তাদের তৃতীয় ম্যাচ মোনার্ক পদ্মার বিপক্ষে। এই ম্যাচ দিয়ে তারা চাইবে জয়ে ফিরতে।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৫ মাস যাবৎ তিনি বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে আমিনা নামে অন্যজনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার বাদশার বিরুদ্ধে।
রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলেখা বেগম নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের আ. রহিমের স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ১৫০০ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু গত তারিখে আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমিনা নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার বাদশাহ।
ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুর নিবন্ধন বইয়ের ২০২১ সালের রেজিস্ট্রারে বৃদ্ধার মৃত্যু নিবন্ধিত নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার বাদশাহ আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কিভাবে টাকা খেয়ে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার আমাকে মৃত দেখাল। আমি গরিব মানুষ। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।
মেম্বার বাদশাহ বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করব।
নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলেখা বেগম ৭ ডিসেম্বর ২০২১ এ মৃত্যু বরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে মৃত্যু সনদ যাচাই ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কাউকে মৃত দেখাতে পারবে না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এভাবেই হয়। আমরা এভাবেই করে থাকি, প্রত্যায়নপত্র দেখে প্রতিস্থাপন করে থাকি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অফিসে প্রেরিত প্রত্যায়নটির কোনো তথ্য ইউনিয়ন পরিষদের ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।
বিরতি কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা। গত মার্চে ঘরের মাঠে সবশেষ আকাশী-নীলদের দেখা গিয়েছিল তিন মাস পর আগামী জুনে তারা আসছে এশিয়া সফরে। সফরকালে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন লিওনেল মেসিরা।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। চারদিন পর ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হবেন তারা। সেই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক করে ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু নাম। এই দলে এই দলে চমক হিসেবে রয়েছে আলেজান্দ্রো গার্নাচো। যিনি বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন। তবে চোটের কারণে অভিষেকের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গার্নাচো। গত বছরের জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে জায়গা হয় তার। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ৩৫ ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট উইঙ্গার। এখন পর্যন্ত নিজে করেছেন ছয়টি গোল, করিয়েছেন আরও ছয়টি। এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি স্কালোনির। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়নি।
দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ওয়াল্টার বেতিনেজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর পর দলে ফিরেছেন লিওনার্দো বলের্দি। ফরাসি ক্লাব মার্সেইয়ের হয়ে চলতি মৌসুমে তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। তবে স্কোয়াডের মাঝ মাঠের ফুটবলারদের নিয়ে কোনো চমক নেই।
তবে এই স্কোয়াডে নেই লাউতারো মার্তিনেজের নাম। গোড়ালির চোটের কারণে এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। তবে তার জায়গায় মাঠ মাতাতে দেখা যাবে জিওভানি সিমিওনেকে।
আর্জেন্টিনার ২৭ সদস্যের দল
গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), জেরনিমো রুলি (আয়াক্স), ওয়াল্টার বেনিটেজ (পিএসভি)।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), গঞ্জালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), জার্মান পেজেল্লা (রিয়েল বেটিস), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), লিওনার্দো বলের্দি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্ডি (বেনফিকা), ফ্যাকুন্ডো মদিনা (আরসি লেন্স), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিয়ন), মার্কোস অ্যাকুনা (সেভিলা)।
মিডফিল্ডার:
লিয়ান্দ্রো পেরেদেস (জুভেন্তাস), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), গুইডো রদ্রিগেজ (রিয়েল বেটিস), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (ব্রাইটন), থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড), জিওভানি লো সেলসো (ভিলারিয়াল)।
ফরোয়ার্ড:
লুকাস ওকাম্পোস (সেভিয়া), অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্তাস), লিওনেল মেসি (পিএসজি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), জিওভানি সিমিওনে (নাপোলি), আলেজান্দ্রো গার্নাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেজ (ফিওরেন্টিনা)।
মার্চে ঘরের মাঠে দুটি প্রীতি ম্যাচের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেখা যায়নি আর্জেন্টিনাকে। তিন মাস পর আগামী মাসে তারা খেলবে আরও দুটি প্রীতি ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচের জন্য ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন লিওনেল স্কালোনি। তবে ঘোষিত সেই দলে নেই লাউতারো মার্তিনেজ।
আর্জেন্টিনার ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস ও ওলে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গোড়ালির চোটের কারণে মার্তিনেজ চিকিৎসাধীন আছেন। তাই তাকে জাতীয় দলের স্কোয়াডে রাখা হয়নি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের হয়ে গোল করেছিলেন। ফাইনালেও তাকে ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে খেলতে দেখা যেতে পারে। তারপরই তিনি মাঠের বাইরে চলে যাবেন। ঐ সময়ে তিনি বিশ্রামে থাকবেন। আর তাই কোচ স্কালোনি তাকে দলে রাখবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের অন্যতম সদস্য মার্তিনেজ। তবে পুরো টুর্নামেন্টে তিনি ব্যাথানাশক ঔষধ খেয়ে খেলছিলেন।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ও ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামে স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় চাচাতো ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে পলাশ হোসেন (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পলাশ হোসেন ওই গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত পলাশ হোসেনের চাচাতো ভাই সুমন প্রায়ই পলাশের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করত। শনিবার সন্ধ্যায় আবারো উত্ত্যক্ত করে। পলাশ বাড়িতে এলে বিষয়টি তাকে জানায় তার স্ত্রী। এ ঘটনায় পলাশ তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে বিষয়টির প্রতিবাদ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সুমন ছুরি দিয়ে পলাশকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই পলাশ মারা যায়।
মহেশপুর থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নিহত পলাশ পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন, সঙ্গে কৃষিকাজও করত।
রেফারির বাঁশি বাজার তিন মিনিটের মধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের জালে জড়ায় বল। রাফা মিরের দুর্দান্ত এক গোলে লিড পায় সেভিয়া। তবে শেষ অবধি তারা ধরে রাখতে পারেনি সে হাসি। রদ্রিগোর জোড়া গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল।
রাতে লা-লিগার ম্যাচে সেভিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। খেলার তৃতীয় মিনিটেই লিড পেয়েছিল সেভিয়া। তবে ২৯ মিনিটে রদ্রিগো সমতায় ফেরান রিয়ালকে। সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পর ফের বাড়ে আক্রমণের ধার। যার ফলে ৬৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় রিয়াল। এবারও নায়ক রদ্রিগোই। এবারেরটি অবশ্য টনি ক্রুসের সহায়তায়। পরে আর কোনো গোল না হওয়ায় ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মাদ্রিদের ক্লাবটি।
তবে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে লাল কার্ড দেখে আকুনা। হারের আগে সেভিয়ার আর্জেন্টাইন এই ডিফেন্ডারের ভুলে ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে হয় রিয়ালকে।
শুরুতে গোল হজম করলেও ৬৭ শতাংশ সময় নিজেদের দখলে বল রেখেছিল রিয়াল। ছয়বার আক্রমণে গিয়েছিল তারা, যার মধ্যে তিনটি শট ছিল গোলবার লক্ষ্য করে।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
সংলাপে রাজনৈতিক সংকট দূর হওয়ার নজির তৈরি হয়নি এখনো। তবুও নানা সময়ে সংকট নিরসনে রাজনীতিতে সংলাপ করা নিয়ে আলোচনা হয়। সংলাপের আশ্রয় নিতেও দেখা গেছে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভিন্ন মেরুতে অবস্থান থাকায় আবারও রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় আলোচনায় এসেছে ‘সংলাপ’। যদিও প্রধান দুই দলের নেতারা সংলাপে অনীহা প্রকাশ করে আসছেন। আবার আড়ালে আলাপে দুই দলের আগ্রহও দেখা গেছে।
অন্তরালের সংলাপ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার আড়ালে আলাপের মূল কারণ হলো বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বড় একটি অংশ বয়স্ক হয়ে গেছেন। তাদের অনেকের এবারের পরে নির্বাচন করার সক্ষমতা আর থাকবে না। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকতে গিয়ে সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হয়েছে। এ সময় সংসদ সদস্য হয়ে মর্যাদা নিয়ে চলতে চান তারা। বিএনপির ওই অংশের সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতাও রয়েছেন যারা নির্বাচনে যেতে চান। ফলে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী বিএনপির সেই সব নেতা আড়ালে আলাপে থাকতে রাজি আছেন। অন্যদিকে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখতে চাওয়া বিদেশি শক্তিগুলোর সরকারের ওপর চাপ থাকায় বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায় আওয়ামী লীগ। ফলে প্রকাশ্যে সংলাপের আগ্রহ না দেখিয়ে আড়ালের আলাপে আগ্রহী দলটির নেতারা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বে না। অন্যদিকে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে কোনোভাবেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যাবে না। দুই দলই নিজেদের এমন অনড় অবস্থান দেখাচ্ছে। দুই দলের পরস্পরবিরোধী অবস্থানে সৃষ্ট সংকট সমাধানে বিদেশি তৎপরতা বেশ আগে থেকেই শুরু হয়েছে। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসতে শুরু করেছে বিদেশি সেই তৎপরতায়ও গতি এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ-বিএনপি কাউকেই কাছাকাছি অবস্থানে, অর্থাৎ এক মেরুতে আনতে পারেনি এখনো। তবে বিদেশি প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা সংকট নিরসনে দুই দলকেই সংলাপে বসার জন্য বলছেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা সংলাপের মধ্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের রাস্তা ঠিক করতে দুই দলকেই তাগিদ দিয়েছেন। বিদেশিদের অবস্থান হলো আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চান তারা। সে জন্য রাস্তা তৈরি করতে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই সংলাপে অনীহা দেখিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে অনীহার কথা জানিয়েছেন। বিএনপিও প্রায় প্রতিদিনই অনীহা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখছে।
তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এর আগেও সংলাপে সমাধান আসেনি। এবারও সংলাপে সমাধান আসার সম্ভাবনা কম। যদি সংলাপের আগেই এজেন্ডা নির্ধারণ করে সংলাপে বসে, সেই সংলাপ সফল হওয়ার পথ থাকে না।
দুই দলের একাধিক সূত্র দেশ রূপান্তরকে আরও বলেন, প্রকাশ্যে সংলাপ না করে এবার আড়ালে সংলাপ হতে পারে। অনেকটা হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে-বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়ে বসতে পারেন।’ তিনি বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে দেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা সংকট নিরসনে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। ওই সব বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দুই দলেরই অবস্থান জানতে চেয়েছেন তারা। একই সঙ্গে দুই দলকে তারা এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন যে ভিন্নমত থাকলেও স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের স্বার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়া জরুরি। এ কারণে নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার আবশ্যকতা রয়েছে। এই সমঝোতার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, কিংবা উভয় পন্থায় দুই দলের মধ্যে ‘আলাপ’ হওয়া দরকার, তা সেটা সংলাপ বা আলোচনা যে নামেই করা হোক না কেন। এদিকে কূটনীতিকদের কাছে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করেছে, বিএনপি কোনো ধরনের সংলাপে আগ্রহী নয়। ২০১৪ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে বিএনপির আচরণ বিদেশিদের কাছে তুলে ধরে সংলাপে বিএনপির অনীহার কথা জানান।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা দাবি করছেন, রাজনীতিতে কোনো কিছু আদায় করতে হলে আন্দোলনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীনদের বাধ্য করতে হয়। কিন্তু সেটা বিএনপি পারছে না। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছিল। সেখানে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিএনপিকে পদত্যাগে বাধ্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিএনপি এখন সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে বলে মনে করছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। মাঠে আওয়ামী লীগের অবস্থান আছে। জনগণ সরকারের সঙ্গে আছে। আর তাদের সঙ্গে জনগণই নেই। তাই তো খালেদা জিয়াকে এখনো মুক্ত করতে পারেনি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘যেকোনো সমস্যার সমাধান সংলাপের মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব। সংলাপে বসলে হয়তো শতভাগ পাব না। তবে গিভ অ্যান্ড টেক তো কিছু হবেই। গণতন্ত্রে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই।’
তবে দলটির সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য বলেন, ‘সংলাপ চলছে। মিডিয়ায়, টক শোতে, মাঠে মঞ্চে। এক দল আরেক দলকে উদ্দেশ্য করে যে বক্তব্য দিচ্ছে, তাও এক ধরনের সংলাপ। এসব অনেকেই সংলাপ বলে টের না পেলেও মূলত এটাও সংলাপ।’
আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, সংলাপের ব্যাপারে পশ্চিমা কূটনীতিকেরা তাদের তেমন কোনো পরামর্শ দেননি। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘আমরা তাদের (কূটনীতিক) বলেছি সংলাপের উদ্যোগ আমরা নিয়ে কী করব? তাদের (বিএনপি) যদি কোনো দাবি থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলতে পারে। নির্বাচন কমিশন যদি সুপারিশ করে, সেটা অবশ্যই সরকারের কাছে আসবে। সরকার দেখবে তখন।’
সংলাপ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ভাবনা আমাদের নাই।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন এই সরকারই থাকবে এবং তাদের অধীনে নির্বাচনে হবে। নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সংকট সমাধানে কূটনীতিকদের দূতিয়ালি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও ইতিবাচক বিএনপি। সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, জাতিসংঘসহ বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থার দূতসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। ওই বৈঠকগুলোতে কেন এই সরকারের অধীনে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না তা ব্যাখ্যা করেছে দলটি। বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে যাবে না, সেটিও স্পষ্ট করেছে। একই সঙ্গে কূটনীতিকদের বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে সে বিষয়ে সংলাপের আহ্বান আসলে তাতে সাড়া দেবে বিএনপি। আর এই সংকট মোকাবিলায় কূটনীতিকদের ‘রোল প্লে’ (ভূমিকা রাখা) করার সুযোগ আছে বলে মনে করেন দলটির নেতারা। তাদের মতে, প্রকাশ্যে না হলেও পর্র্দার অন্তরালে সংলাপ হতে পারে। কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনেও গুঞ্জন রয়েছে ভেতর-ভেতর সংলাপ হচ্ছে।
সর্বশেষ ১৮ মে গুলশানের আমেরিকান ক্লাবে মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল চিফ ব্রান্ডন স্ক্যাট, পলিটিক্যাল অফিসার ম্যাথিউ বে, পলিটিক্যাল কনস্যুলার ডেনিয়েল শেরির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
জানতে চাইলে শামা ওবায়েদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকগুলোতে তারা আমাদের অবস্থান জানতে চান। আমরাও আমাদের অবস্থান তুলে ধরি। সর্বশেষ তারা জানতে চেয়েছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে আপনাদের অবস্থান কী। আমরা বলেছি, আন্দোলন চলছে, সেটা আমরা কন্টিনিউ (চালিয়ে যাব) করব। তারা অন্য পক্ষের (ক্ষমতাসীনদের) কথাও শুনছেন। এ অবস্থায় তারা কী করছে (দূতিয়ালি), নাকি অন্য কিছু হচ্ছে সেটা তাদের বিষয়। তবে আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আরেকটি গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হোক, সে ব্যাপারে তাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকুক।’
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক সংলাপের ব্যাপারে কূটনীতিকেরা কোনো বৈঠকেই আমাদের কিছু বলেনি।’
তবে বৈঠকগুলোতে থাকা দলের আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা একাধিকবার সরকারের সঙ্গে সংলাপ করেছি। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনের সংলাপে পর চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের তিন মাস পর নতুন নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে তারা প্রতারণা করেছে। তাই এজেন্ডা ছাড়া কোনো সংলাপে আমরা যাচ্ছি না। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বলেছি, আনুষ্ঠানিক সংলাপের বিষয়ে আমরা ইতিবাচক। কিন্তু সেটি হতে হবে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে।’
ওই নেতার আরও বলেন, ‘সরকার এখন বিভিন্ন চাপে আছে। আন্তর্জাতিক চাপ তো আগে থেকেই আছে। এখন নতুন করে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ বেড়েছে। এসব চাপ সামাল দিতে তারা সংলাপের নামে নানা কথা বলবে। কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনায় সরকারের মনোভাবে কিছু হলেও আঁচ করা যায়। হয়তো কয়েক দিন পর সরকার আনুষ্ঠানিক সংলাপের জন্য আমন্ত্রণও জানাতে পারে।’
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে বর্তমানে তার মাসিক বেতন প্রায় ৩৪ হাজার। বাবার আর্থিক অবস্থাও অসচ্চল। কিন্তু তার আছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, দামি জমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি। সবমিলে তিনি অন্তত ১০ কোটি টাকার মালিক। দেশের ভেতরে যাতায়াত করেন বিমানে। ইচ্ছে হলে বিদেশেও যান। মাত্র ২৬ বছরে এত স্বল্প বেতনে চাকরি করেও সম্পদের বিশাল পাহাড় গড়ে সবাইকে তাজ্জব লাগিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী মুহাম্মদ এয়াকুব। একই সঙ্গে তিনি সিবিএর সাধারণ সম্পাদক এবং গ্যাস অ্যান্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিব। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ-পদোন্নতি নিয়ে বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রমাণ হয়নি। আমি নিয়মিত আয়কর দাখিল করি। কোথাও অসামঞ্জস্য থাকলে সেটা আরও আগে ধরা পড়ত। আমি দুর্নীতিবাজ না। তবে আবার সুফিও না। সিবিএর নেতা হয়ে মসজিদের ইমাম সাহেবও হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচবার প্রত্যক্ষ ভোটে এবং তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। কিন্তু বেতন-ভাতা ভালো। এর বাইরে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা কোম্পানির লভ্যাংশ পাই। মাছ চাষের জন্য তিনটি পুকুর আছে। গরু পালন করি। দুই ভাই বিদেশে থাকে। এসব টাকা দিয়েই বাড়ি কিনেছি। যমুনা অয়েলের একজন ক্লিনারেরও তো বাড়ি আছে। আমি সিবিএর নেতা। আমার একটা বাড়ি থাকা কি অন্যায়?’
এয়াকুব বলেন, ‘আমি আমার বিরুদ্ধে লেখেন কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আজ পড়লে কাল ভুলে যাবে। হয়তো কিছু সম্মানহানি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও দেশ ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটে আজ আমি কেরানি। কমার্স কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছি। চাইলে আজ থেকে ১০ বছর আগেই কর্মকর্তা হতে পারতাম। কিন্তু সিবিএর নেতা হওয়া একটা নেশা।’
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার বেঙ্গুরা গ্রামের এয়াকুব ১৯৯৪ সালে যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অস্থায়ী পদে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি শুরু করেন। মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানের টাইপিস্ট পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়। দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রভিডেন্টফান্ড ও অন্যান্য খাতে টাকা কর্তন শেষে মাস শেষে তিনি বেতন পান ৩৩ হাজার ৯০৩ টাকা।
জানা গেছে, এত দিন ৪২ হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন এয়াকুব। সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত এলাকা লালখান বাজারে তিনটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার আয়তন প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গফুট। দুটো ইউনিটে তিনি নিজে থাকেন, অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, তিনটি ফ্ল্যাটের আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো হবে। অভিজাত ফ্ল্যাট দুটি দামি আসবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে চার হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছি।
আরও জানা গেছে, নিজস্ব ফ্ল্যাট ছাড়াও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এক্সেল রোডে এয়াকুবের ৪ কাঠা জমিতে টিনশেডের ঘর আছে। ১০টি পরিবারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এয়াকুবের জমি ও ঘরসহ বর্তমানে ওই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, ওই সম্পত্তির মালিক তিনি নন। জমিটি প্রথমে বায়না করলেও পরে আর কেনেননি।
এর বাইরে পতেঙ্গা, বেঙ্গুরাসহ বিভিন্ন স্থানে এয়াকুবের নামে-বেনামে জমি ও অন্যান্য সম্পদ থাকার তথ্য এসেছে দেশ রূপান্তরের কাছে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এয়াকুব একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। তবে দেশ রূপান্তরের কাছে তার দাবি, এই গাড়ির মালিক তার পরিচিত। কিন্তু গাড়িটি তার নয়।
অভিযোগ উঠেছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির ঠিকাদারের শ্রমিক মো. আবদুল নুর ও মো. হাসান ফয়সালের সহযোগিতায় সিবিএ নেতা এয়াকুব কোম্পানির ডিপোতে চাকরি দেওয়ার নামে ৮ জনের কাছ থেকে কুরিয়ার সার্ভিস ও বিকাশের মাধ্যমে ২০১৯ সালে কয়েক দফায় ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি। ওই টাকাও ফেরত পাননি কেউই। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপোতে কর্মরত তৎকালীন কর্মচারী তোতা মিয়ার মাধ্যমে এয়াকুবকে ওই টাকা পাঠানো হয়। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর একাধিক রসিদ দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে।
চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তোতা মিয়া ও চাকরি প্রার্থীদের নানা রকম ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এয়াকুবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই সাধারণ ডায়েরি করেন মো. তোতা মিয়া।
এয়াকুব দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। তিনি কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগকারী আমার কাছে এবং কোম্পানির দায়িত্বশীলদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তাদের অভিযোগ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিএ নেতা এয়াকুব তোতা মিয়াকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দেন। ওই সময় টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে একটা মীমাংসা করা হলেও পরে ওই টাকা ফেরত দেয়নি এয়াকুব। তবে এয়াকুবের দাবি, তিনি কাউকে চাপ প্রয়োগ করেননি। অভিযোগটি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় তোতা মিয়া তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করেন, সিবিএর কিছু নেতা নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতি করলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেন না।
এ বিষয়ে জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দীন আনচারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে, খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কোম্পানির ঢাকা কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি দুদকের এক প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, ক্যাজুয়াল ও কন্ট্রাক্টর ক্যাজুয়াল নিয়োগ, ফার্নেস অয়েল, বিটুমিনসহ বিভিন্ন খাতে এয়াকুব মাসোহারা নেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রধান তেল স্থাপনা ও দেশের সব ডিপো থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়েরও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বদলিসহ নানা রকম শাস্তি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ করেছেন একাধিক কর্মচারী।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বিভিন্ন রেকর্ডপত্র এবং সরেজমিন তথ্য পর্যালোচনা করে এয়াকুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তা প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা দরকার। তার ওই সুপারিশ আমলে নিয়ে কমিশন আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছেন।
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে বর্তমানে তার মাসিক বেতন প্রায় ৩৪ হাজার। বাবার আর্থিক অবস্থাও অসচ্চল। কিন্তু তার আছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, দামি জমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি। সবমিলে তিনি অন্তত ১০ কোটি টাকার মালিক। দেশের ভেতরে যাতায়াত করেন বিমানে। ইচ্ছে হলে বিদেশেও যান। মাত্র ২৬ বছরে এত স্বল্প বেতনে চাকরি করেও সম্পদের বিশাল পাহাড় গড়ে সবাইকে তাজ্জব লাগিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী মুহাম্মদ এয়াকুব। একই সঙ্গে তিনি সিবিএর সাধারণ সম্পাদক এবং গ্যাস অ্যান্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিব। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ-পদোন্নতি নিয়ে বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রমাণ হয়নি। আমি নিয়মিত আয়কর দাখিল করি। কোথাও অসামঞ্জস্য থাকলে সেটা আরও আগে ধরা পড়ত। আমি দুর্নীতিবাজ না। তবে আবার সুফিও না। সিবিএর নেতা হয়ে মসজিদের ইমাম সাহেবও হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচবার প্রত্যক্ষ ভোটে এবং তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। কিন্তু বেতন-ভাতা ভালো। এর বাইরে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা কোম্পানির লভ্যাংশ পাই। মাছ চাষের জন্য তিনটি পুকুর আছে। গরু পালন করি। দুই ভাই বিদেশে থাকে। এসব টাকা দিয়েই বাড়ি কিনেছি। যমুনা অয়েলের একজন ক্লিনারেরও তো বাড়ি আছে। আমি সিবিএর নেতা। আমার একটা বাড়ি থাকা কি অন্যায়?’
এয়াকুব বলেন, ‘আমি আমার বিরুদ্ধে লেখেন কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আজ পড়লে কাল ভুলে যাবে। হয়তো কিছু সম্মানহানি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও দেশ ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটে আজ আমি কেরানি। কমার্স কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছি। চাইলে আজ থেকে ১০ বছর আগেই কর্মকর্তা হতে পারতাম। কিন্তু সিবিএর নেতা হওয়া একটা নেশা।’
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার বেঙ্গুরা গ্রামের এয়াকুব ১৯৯৪ সালে যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অস্থায়ী পদে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি শুরু করেন। মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানের টাইপিস্ট পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়। দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রভিডেন্টফান্ড ও অন্যান্য খাতে টাকা কর্তন শেষে মাস শেষে তিনি বেতন পান ৩৩ হাজার ৯০৩ টাকা।
জানা গেছে, এত দিন ৪২ হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন এয়াকুব। সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত এলাকা লালখান বাজারে তিনটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার আয়তন প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গফুট। দুটো ইউনিটে তিনি নিজে থাকেন, অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, তিনটি ফ্ল্যাটের আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো হবে। অভিজাত ফ্ল্যাট দুটি দামি আসবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে চার হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছি।
আরও জানা গেছে, নিজস্ব ফ্ল্যাট ছাড়াও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এক্সেল রোডে এয়াকুবের ৪ কাঠা জমিতে টিনশেডের ঘর আছে। ১০টি পরিবারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এয়াকুবের জমি ও ঘরসহ বর্তমানে ওই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, ওই সম্পত্তির মালিক তিনি নন। জমিটি প্রথমে বায়না করলেও পরে আর কেনেননি।
এর বাইরে পতেঙ্গা, বেঙ্গুরাসহ বিভিন্ন স্থানে এয়াকুবের নামে-বেনামে জমি ও অন্যান্য সম্পদ থাকার তথ্য এসেছে দেশ রূপান্তরের কাছে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এয়াকুব একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। তবে দেশ রূপান্তরের কাছে তার দাবি, এই গাড়ির মালিক তার পরিচিত। কিন্তু গাড়িটি তার নয়।
অভিযোগ উঠেছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির ঠিকাদারের শ্রমিক মো. আবদুল নুর ও মো. হাসান ফয়সালের সহযোগিতায় সিবিএ নেতা এয়াকুব কোম্পানির ডিপোতে চাকরি দেওয়ার নামে ৮ জনের কাছ থেকে কুরিয়ার সার্ভিস ও বিকাশের মাধ্যমে ২০১৯ সালে কয়েক দফায় ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি। ওই টাকাও ফেরত পাননি কেউই। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপোতে কর্মরত তৎকালীন কর্মচারী তোতা মিয়ার মাধ্যমে এয়াকুবকে ওই টাকা পাঠানো হয়। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর একাধিক রসিদ দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে।
চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তোতা মিয়া ও চাকরি প্রার্থীদের নানা রকম ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এয়াকুবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই সাধারণ ডায়েরি করেন মো. তোতা মিয়া।
এয়াকুব দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। তিনি কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগকারী আমার কাছে এবং কোম্পানির দায়িত্বশীলদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তাদের অভিযোগ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিএ নেতা এয়াকুব তোতা মিয়াকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দেন। ওই সময় টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে একটা মীমাংসা করা হলেও পরে ওই টাকা ফেরত দেয়নি এয়াকুব। তবে এয়াকুবের দাবি, তিনি কাউকে চাপ প্রয়োগ করেননি। অভিযোগটি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় তোতা মিয়া তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করেন, সিবিএর কিছু নেতা নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতি করলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেন না।
এ বিষয়ে জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দীন আনচারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে, খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কোম্পানির ঢাকা কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি দুদকের এক প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, ক্যাজুয়াল ও কন্ট্রাক্টর ক্যাজুয়াল নিয়োগ, ফার্নেস অয়েল, বিটুমিনসহ বিভিন্ন খাতে এয়াকুব মাসোহারা নেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রধান তেল স্থাপনা ও দেশের সব ডিপো থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়েরও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বদলিসহ নানা রকম শাস্তি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ করেছেন একাধিক কর্মচারী।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বিভিন্ন রেকর্ডপত্র এবং সরেজমিন তথ্য পর্যালোচনা করে এয়াকুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তা প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা দরকার। তার ওই সুপারিশ আমলে নিয়ে কমিশন আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।