
৫৩/৩ স্কোরে চতুর্থ দিন সকালে যখন দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং আবার শুরু করে ইস্ট জোন, লিড মাত্র ৬৮। দ্রুত অলআউট হলে জয়ের সুযোগ পেয়ে যেত সাউথ জোন। কিন্তু জহুরুল ইসলাম অমি ও মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটে সেই বিপদে পড়েনি ইস্ট জোন। তাদের দৃঢ়তায় কক্সবাজারে বিসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচটি ড্র হয়।
২৯তম ওভারে শাহাদত হোসেন দিপুর ৩১ রানে বিদায়ে ইস্ট জোনের স্কোর দাঁড়ায় ৮৫/৪। এরপর দুই অভিজ্ঞ মিলে রানের চিন্তা বাদ দিয়ে উইকেটে টিকে থাকার লড়াইয়ে নামের। প্রথম ইনিংসে ১৪৫ করা অমি ১৩১ বলে ৬২ ও আশরাফুল ১১৩ বলে ৫০ করেন। এ দুজনের পর রুয়েল মিয়া ৬০ বলে ৬০ রান করে দলকে ভালো স্কোরে নিয়ে যান। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬০ রান করায় প্রথম ইনিংসের ১৪ রানের লিডসহ সাউথ জোনকে ২৭৬ রানের লক্ষ্য দেয় ইস্ট জোন। সাউথের দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ৪৯ বলে ৫১ ও পিনাক ঘোষ ৩১ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থেকে ৭৭ রান তোলেন। এই ড্রয়ে দু’ম্যাচে প্রথম পয়েন্ট পেল ইস্ট জোন। অন্যদিকে প্রথম রাউন্ডে জয়ী সাউথের পয়েন্ট ১০। দুই ম্যাচের দুটিতেই জয়ী ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে সেন্ট্রাল।
রাসেল ডমিঙ্গো পদত্যাগ করায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের পদ আপাতত শূন্য। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী কাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শূন্য পদ পূরণের নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কথা। তবে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে চন্দিকা হাতুরুসিংহের আলোচনা নাকি হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়ে, মার্চে তাকেই নাকি দেখা যাবে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুমে! এমন অনেক উড়ো খবরই ভাসছে বাতাসে, যদিও মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন বোর্ড কর্তারা।
পুরনো কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসাটা নতুন নয় হাতুরুসিংহের জন্য। এই লঙ্কান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য দল এবং বিগব্যাশ লিগের দল সিডনি থান্ডারসের ব্যাটিং কোচ। বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেওয়ার আগে, ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত একই ভূমিকায় কাজ করেছেন হাতুরুসিংহে। বাংলাদেশের কোচের চাকরি ছেড়ে শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ১ বছর ৮ মাস নিজের দেশের কোচের দায়িত্বে থাকার পর বরখাস্ত হন তিনি। এই নিয়ে আইনি জটিলতা লম্বা সময় চলে ক্রিকেট শ্রীলঙ্কা আর হাতুরুসিংহের মধ্যে, মেয়াদ শেষের আগেই তাকে বরখাস্ত করায় ৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন হাতুরুসিংহে। এই মামলা গড়িয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত পর্যন্ত।
তার সময়ে দেশে ওয়ানডে সিরিজে ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় বাংলাদেশ। টেস্টে হারায় ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলে কোয়ার্টার ফাইনালে আর ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। এই সাফল্যই হাতুরুসিংহেকে বসিয়েছিল শ্রীলঙ্কার কোচের চেয়ারে। স্বদেশের কোচের চাকরিতে ফেরাতে অনেক স্বাধীনতাই তাকে দিয়েছিল এসএলসি, কিন্তু শেষটা হয় তিক্ততায়।
কেমন হতে পারে দ্বিতীয় দফায় হাতুরুসিংহের বাংলাদেশ অধ্যায়? বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, এখনই এ নিয়ে বলার সময় আসেনি, ‘আসলে এভাবে বলে বলে ব্যাপারটাকে আরও ভারী করে তোলা হচ্ছে। হাতুরুসিংহে আদৌ কোচ হয়ে আসবে কি না, তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কি না এসব নিয়ে বিসিবি যদি কিছু না জানায় তাহলে মন্তব্য করা উচিত হবে না।’
প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় দল এবং বিপিএলসহ অনেক জায়গাতেই নানান ভূমিকায় কোচিং করিয়েছেন রাজিন সালেহ। সাবেক এই অধিনায়ক কিছুদিন আগেও ফিল্ডিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন জাতীয় দলে, দেশ রূপান্তরকে তিনি জানালেন, ‘যদি হাতুরুসিংহে আসে আমি সেটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখব, তার সময়ে বাংলাদেশ ভালো করেছিল এবং আগামীতেও আশা করি ভালো করবে।’
হাতুরুসিংহের বিদায়ের পর কোচ নিয়োগের জন্য গ্যারি কারস্টেনকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করে বিসিবি, তারই পরামর্শে জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় অচেনা ইংরেজ স্টিভ রোডসকে। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর বিদায় করে দেওয়া হয় রোডসকেও, তার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ ছিল তিনি খেলোয়াড়দের প্রতি যথেষ্ট কঠোর নন! ডমিঙ্গোর বিরুদ্ধেও অভিযোগগুলোর একটি হচ্ছে ডমিঙ্গো খেলোয়াড়দের ওপর কর্র্তৃত্ব দেখাতে পারেননি। ক্রিকেট কোচের কাছে কি তাহলে পারফরম্যান্সের বদলে কর্র্তৃত্বপরায়ণতাই আশা করে বিসিবি? ফাহিম মনে করেন, ব্যাপারটা অন্যের কাঁধে বন্দুক রেখে শিকার করার মতো, ‘প্রত্যেক কোচেরই নিজস্ব দর্শন আছে, নিজস্ব পন্থা আছে। কোচকে ছড়ি ঘোরাতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তবে কখনো কখনো পরিচালনায় যারা আছেন, তারা যদি ব্যর্থ হন তাহলে তারা তাদের কাজটা কোচকে দিয়ে করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।’ রাজিন সালেহ মনে করেন কর্র্তৃত্ব না হলেও আস্থার জায়গায় যাওয়াটা কোচের জন্য জরুরি, ‘ডমিঙ্গো কর্র্তৃত্ব পাননি এমনটা নয় তবে আমি বলব খেলোয়াড়দের আস্থার জায়গায় তিনি যেতে পারেননি। হাতুরুসিংহে কিন্তু খেলোয়াড়দের শ্রদ্ধা ও আস্থা দুটোই অর্জন করেছিলেন।’
আসছে বছরই ওয়ানডের বিশ্বকাপ। বাকি আছে মাত্র মাস দশেক। নতুন বছরে জাতীয় দলের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ। অর্থাৎ নতুন কোচ বিশ্বকাপের আগে দল গোছানোর জন্য সময় পাবে খুবই কম। এই পরিস্থিতিতে কেমন কোচ প্রয়োজন বাংলাদেশের? ফাহিম মনে করেন, তরুণ একটা দলের দায়িত্ব নিতে পারার মতো মানসিক প্রস্তুতি থাকাটা সবচেয়ে দরকার, ‘যেই কোচ হয়ে আসুক তাকে তরুণ একটা দলের দায়িত্ব নেওয়ার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে। এখানে কিছুটা ডেভেলপমেন্টের কাজও করতে হবে। অন্য অনেক দলের মতো জাতীয় দলে এসে তৈরি একটা কাঠামো নিয়ে কাজ করার জায়গা বাংলাদেশ নয়। এখানে খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে যেমন খানিকটা শেখাতে হবে, তেমনি তাদের মানও বাড়াতে হবে। এই মুহূর্তে অনেকদিন পর বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বেশ ভালো। দেশে ভারতকে ওয়ানডে সিরিজে হারানো, সবশেষ টেস্টে বেশ কড়া টক্কর সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে। এই সময় কোচ নির্বাচনে খুব কৌশলী হতে হবে, এমন কাউকে নিয়োগ দিতে হবে যে সহজেই গোটা দলকে একতাবদ্ধ করতে পারবে, সবার কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনতে পারবে।’ রাজিনও মনে করেন হাতুরুসিংহে যদি আসেন অতীত অভিজ্ঞতার শিক্ষা নিয়েই আসবেন, ‘হাতুরুসিংহে জানেন বাংলাদেশে কীভাবে সবকিছু চলে। উনি যদি আসেন তাহলে উনার মতো সবকিছু ঠিক করেই আসবেন।’
এদিকে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন কাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘আসলে হেড কোচ নিয়োগ কিন্তু এরকম করে হয় না যে আমি এখনই বলে দিতে পারব। যখন বিষয়টা পুরোপুরি নিশ্চিত হবে ও ডকুমেন্টেড হবে তখনই হয়তো আমরা বলতে পারব।’ সম্ভাব্য কোচের নাম প্রকাশ না করা প্রসঙ্গে নিজামউদ্দিন বলেন, ‘এর আগে কোনো নাম আমাদের দিক থেকে বলা ঠিক হবে না। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে বা হবে তাদের জন্যও বিষয়টা বিব্রতকর হবে। যেহেতু জাতীয় দলের হেড কোচ দরকার, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আনার ব্যাপারে কাজ করব।’
বাংলাদেশের জাতীয় দলে কাজ করার পাশাপাশি নতুন কোচের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে কাজ করার সুযোগ থাকবে কি না, এ ব্যাপারে নিজামউদ্দিন তুলে ধরেন বিসিবির অবস্থান, ‘আমার মনে হয় না এরকম কোনো সুযোগ থাকবে। এটাও সভাপতি স্পষ্ট করেছেন, জাতীয় দল হচ্ছে অগ্রাধিকার। এর সঙ্গে কিছু সাংঘর্ষিক হলে, ছাড় দেওয়ার সুযোগটা একটু কম। বিশেষ করে কোচিং স্টাফদের ক্ষেত্রে বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। যদি তার প্রিভিয়াস কমিটমেন্টের সঙ্গে কনফ্লিক্ট করে, নেওয়ার সুযোগ থাকবে না।’
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল প্রতিযোগিতার শিরোপা ধরে রেখেছে সিলেট বিভাগ। বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৭ গোল্ডকাপেও টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছে রংপুর বিভাগ। আর্মি স্টেডিয়ামে দুটি ফাইনাল শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ছেলেদের বিভাগে নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতায় শেষ হয়। টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলের জয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা নিশ্চিত করে সিলেট বিভাগ। তার আগে ১৯ মিনিটে সাইফুর রহমানের গোলে এগিয়ে যায় সিলেট বিভাগ। ৫২ মিনিটে স্কোরলাইন ১-১ করেন শাহাদাৎ গাজী।
সিলেটের আমিনুল ইসলাম, তুহিন, শাকিল, সাইফুর রহমান ও অধিনায়ক রনি গোল করেন। সিলেট গোলরক্ষক রাজু মিয়া বরিশালের তুহিন আরমানের শট ঠেকিয়ে দলকে শিরোপা এনে দেন। বরিশালের হয়ে গোল করেছেন খাইরুল ইসলাম, শাহাদাৎ গাজী, সালমান আহাদ সিজান ও শামীমুল ইসলাম বাবু। নারী বিভাগের ফাইনালে শীলা আক্তারের গোলে লিড নেয় রংপুর বিভাগ। শান্তি মারডির গোলে প্রথমার্ধেই স্কোরলাইন ২-০ করে রংপুর বিভাগ। খুলনার একমাত্র গোলটি করেন মানিয়া আক্তার।
‘প্রতিযোগিতার জন্য আমাদের বিশেষ প্রস্তুতি ছিল না। রংপুরের সদ্যপুষ্করণীতে আমরা বছরজুড়েই অনুশীলন করে থাকি। ধারাবাহিক প্রস্তুতি নিয়েই এ আসর খেলেছি। সাফল্যের সকল কৃতিত্ব মেয়েদের’ ম্যাচের পর বলছিলেন রংপুর বিভাগের কোচ মিলন খান।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে সিলেট বিভাগের সাইফুর রহমান টুর্নামেন্টসেরা এবং একই বিভাগের রাজু মিয়া ফাইনালের ম্যাচসেরা হন। বরিশাল বিভাগের শাহাদৎ গাজী সেরা গোলদাতা এবং একই বিভাগের রিয়াজ হন সেরা গোলকিপার। বঙ্গমাতা টুর্নামেন্টের রংপুরের কাকলি সেরা খেলোয়াড়, একই বিভাগের শান্তি মারডি ফাইনালের সেরা, নাসরিন সেরা গোলদাতা এবং শাম্মি আক্তার সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হয়েছেন।
ফুটবলের জন্য ২০২২ স্মরণীয় হয়ে থাকবে কাতার বিশ্বকাপের কারণে। শেষভাগে এসে ফুটবল দায় শোধ করেছে বিশ্বের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ শিরোপা তুলে দিয়ে। বিশ্বকাপ নিয়ে প্রায় পুরোটা সময় উন্মাতাল হয়ে ছিল বাংলাদেশও। বৈশ্বিক ফুটবলযজ্ঞে মেতে ওঠা হয়েছে ঠিক, কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবল বিশ্ব মঞ্চে এ বছরও পারেনি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। পুরুষ ফুটবলে মেলেনি কোনোই সাফল্য। বরং গত বছরের চেয়ে খারাপ কেটেছে জামাল ভুঁইয়াদের। তবে ছেলেদের ব্যর্থতা ঢেকে গেছে মেয়েদের অসামান্য অর্জনে। গত সেপ্টেম্বরে ভারত, নেপালের দম্ভচূর্ণ করে দেশকে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা এনে দিয়েছে প্রথমবারের মতো। তাই জাতিও তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে দুহাত ভরে। নেপালকে হারিয়ে শিরোপা নিয়ে দেশে ফেরার পর যে বীরোচিত অভ্যর্থনা দেওয়া হয়েছিল বীর ফুটবলারদের, সে রকমটা অতীতে হয়নি কখনই, কোনো উপলক্ষেই।
সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডুতে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ ফেভারিটের তকমা নিয়ে খেলেনি। তবে এবার যে কিছু একটা হবে, তা জুনেই বোঝা গিয়েছিল। ঘরের মাঠে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা মালয়েশিয়ার মতো র্যাংকিংয়ে অনেক ধাপ এগিয়ে থাকা দলকে হারিয়েছ ৬-০ গোলে। প্রীতি সিরিজের পরের ম্যাচটা গোলশূন্য ড্র করে বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে খেলার সাহস পায় মেয়েরা। সেই সাহস পুঁজি করে সাবিনারা শুরু করে সাফ অভিযান। এ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে ৩-০ তে উড়িয়ে শুরু। পরের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় ৬-০ গোলে। আসর ফেভারিট ভারতকে ৩-০ তে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে সেমিফাইনালে নাম লেখায় বাংলাদেশ। ফাইনালে যাওয়ার পথে ভুটানকে ৮-০ গোলে হারায় দুরন্ত বাংলাদেশ। তবে ফাইনালে তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হয়েছিল স্বাগতিক নেপাল। ১৯ সেপ্টেম্বর স্বাগতিকদের হাজারো সমর্থকের সামনে ভড়কে না গিয়ে ভয়ডরহীন ফুটবল খেলে সাবিনারা। তাতে জয়টা আসে ৩-১ গোলে। ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পায় বাংলাদেশ। এর আগের পাঁচটি আসরে শিরোপা গিয়েছে শুধুই ভারতের ঘরে। দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দল হিসেবে সেই তালিকায় নাম উঠিয়েছে বাংলাদেশ। পরের দিন দেশে ফেরা বিজয়ী দলকে বিরোচিত সংবর্ধনা দেয় সরকার, ফুটবল ফেডারেশন এবং অবশ্যই সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের পক্ষ থেকে। ছাদ খোলা বাসে করে তাদের বিমানবন্দরে আনা হয় বাফুফে ভবনে। সে সময় রাজপথে নেমেছিল হাজারো মানুষের ঢল। দূর থেকে হাত নেড়ে সাবিনাদের অভ্যর্থনা জানিয়েছে আপমর জনসাধারণ। এ ছিল অভূতপূর্ব দৃশ্য। যা অতীতে কখনই দেখা যায়নি। এরপর থেকে শুরু হয় একের পর এক সংবর্ধনা। যা চলেছে বছরের শেষ অবধি। আর সাফল্য দেশের নারী ফুটবলকে দেখাচ্ছে আরও বড় মঞ্চে ভালো খেলার স্বপ্ন। সিনিয়র পর্যায়ে এটিই ছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবলারদের প্রথম সাফল্য। এ বছর আরও দুটি বয়সভিত্তিক আন্তর্জাতিক আসরের ফাইনাল খেলার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন নারী ফুটবলাররা।
ছেলেরা ঠিক উল্টোরথের যাত্রী। সারা বছর খেলা আট ম্যাচের একটি মাত্র জয়, পাঁচ হার ও ২ ড্র বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবলের দৈন্যই ফুটিয়ে তুলছে। শুরুটা হয়েছিল মালদ্বীপের গিয়ে প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিকদের কাছে ২-০ গোলে নাস্তানাবুদ হয়ে। ২৪ মার্চ মালেতে সেই ম্যাচটা ছিল বাংলাদেশের কোচ হিসেবে আনকোরা ইংলিশ হাভিয়ের কাবরেরার প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। অতীতে কোনো জাতীয় দলে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছাড়াই কাবরেরাকে স্বদেশি জেমি ডে’র স্থলাভিষিক্ত করে বাফুফে। এই নিয়োগের যৌক্তিকতার প্রমাণ দিতে পারেননি কাবরেরা। মালে থেকে ফিরে অবশ্য সুযোগ ছিল জয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার। প্রতিপক্ষ ছিল অপেক্ষাকৃত দুর্বল মঙ্গোলিয়া। কিন্তু ম্যাচটা শেষ হয় গোলশূন্য ড্রয়ে। মূলত এই দুটি ম্যাচ ছিল এশিয়া কাপ বাছাইয়ের তৃতীয়পর্বের প্রস্তুতির মঞ্চ। নড়বড়ে প্রস্তুতি নিয়ে মালয়েশিয়ার যাওয়ার আগে অবশ্য ১ জুন ইন্দোনেশিয়া গিয়ে স্বাগতিকদের সঙ্গে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়। সেই ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে স্বাগতিকদের রুখে দেওয়ার আত্মবিশ্বাস সঙ্গী হয়েছিল বাংলাদেশের। তবে ৮, ১১ ও ১৪ জুন বাহরাইন, তুর্কমেনিস্তান ও বাহরাইনের কাছে হেরে গ্রুপের তলানি থেকে এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে খেলার স্বপ্ন ভেস্তে যায় কাবরেরার দলের। এরপর সেপ্টেম্বর কম্বোডিয়ায় প্রীতি ম্যাচে স্বাগতিকদের রাকিব হোসেনের গোলে ১-০ তে হারিয়ে আসা বাংলাদেশে নেপালে গিয়ে চরম লজ্জার মুখে পড়ে। স্বাগতিকরা বাংলাদেশকে উপহার দেয় ৩-১ গোলের হার। বছরের শুরুতে যেখানে ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ছিল ১৮৬, বছর শেষে তা দাঁড়ায় ১৯২। ক্লাব ফুটবলে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ পকেটে পুড়লেও মাঠে ফুটবলাররা নিজেদের প্রমাণ করতে পারছে না। তাই গল্পটা থেকে যাচ্ছে একই হতাশার, আক্ষেপের।
সেই আক্ষেপটা আরও বেড়ে যায়, যখন এ দেশের মানুষ বুঝিয়ে দেয় তাদের ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা। বিশ্বকাপকে নিয়ে তাদের উন্মাদনা যখন জগৎজুড়ে ব্যাপক আলোচিত, তখন নিজ উঠোনের ফুটবলে তাদের আগ্রহ নেই। কিছুটা আগ্রহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অবশ্য করে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। এ বছর টানা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে পেশাদারি ঢঙে পরিচালিত ক্লাবটি। একই সঙ্গে তারা এএফসি কাপেও আলো ছড়িয়ে এসেছে। বসুন্ধরার অগ্রযাত্রায় আবাহনী, মোহামেডানের মতো দলগুলোর পিছিয়ে পড়া অবশ্য দুঃসংবাদ। বছরের শেষভাগে সূচনা হওয়া ২০২২-২০২৩ মৌসুমের প্রথম আসর স্বাধীনতা কাপ শিরোপা জিতেছে কিংস। আর আবাহনীকে বিদায় নিতে হয়েছে ফাইনালের আগেই। মোহামেডানও রয়ে গেছে একই তিমিরে।
বিশ্বকাপের পর পিএসজির হয়ে বুধবার রাতে মাঠে নেমেই লাল কার্ড দেখেছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার। স্ত্রাসবুর্গের বিপক্ষে কিলিয়ান এমবাপ্পের শেষ মুহূর্তের গোলে পিএসজির জয় (২-১) ছাপিয়ে আলোচনায় তার এই লাল কার্ড দেখা। ডাইভ দেওয়ায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে (লাল কার্ড) মাঠ ছাড়েন নেইমার।
এই ম্যাচে লিওনেল মেসি থাকবেন না জানা ছিল। ফলে নেইমার ও এমবাপ্পেই ছিল পিএসজির মূল ভরসা। পার্ক দ্য প্রিন্সেসে ম্যাচের ১৪ মিনিটে নেইমারের ফ্রি-কিক থেকে আরেক ব্রাজিলিয়ান মার্কিনহোসের গোলে এগিয়ে যায় পিএসজি। তবে ৫১ মিনিটে ওই মার্কিনহোসের আত্মঘাতী গোলে সমতায় ফেরে স্ত্রাসবুর্গ। ক্রস ঠেকাতে গিয়ে বল নিজেরই পোস্টে ঠেলে দেন বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল টাইব্রেকারে শট মিস করা ব্রাজিলিয়ান। ম্যাচের যোগ করা সময়ের শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমবাপ্পে। ফরাসি এই ফরোয়ার্ডকেই বক্সে ফাউল করা হয়েছিল। এমবাপ্পের গোলেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে প্যারিসের দলটি।
কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ায় টুর্নামেন্টের বাকিটা সময় দর্শক হয়ে থাকতে হয়েছিল নেইমারকে। সেই দুঃখ সামলে ক্লাব ফুটবলে মনোযোগী হওয়ার কথা বলেছিলেন নেইমার। তবে এখন ক্লাব ফুটবলেও পরবর্তী লিগ ম্যাচে বসে থাকতে হবে মাঠের বাইরে। নেইমারের দুই হলুদ কার্ডের মধ্যে ব্যবধান ছিল দুই মিনিটেরও কম সময়! প্রথম কার্ড দেখেন স্ত্রাসবুর্গের আদ্রিয়েন থমাসনের মুখে হাত দিয়ে আঘাত করে। পরের মিনিটে বল নিয়ে ছোট বক্সের বাইরে ছোটার সময় স্ত্রাসবুর্গের এক ডিফেন্ডার পা বাড়িয়ে দিলে সংঘর্ষ না হলেও ফাউলের ভঙিমায় ডাইভ দেন নেইমার। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড থেকে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
আইসিসির বর্ষসেরা দুই বিভাগে নাম উঠেছে জিম্বাবুয়ে অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজার। ২০২২ ক্রিকেট বর্ষে দুর্দান্ত কাটিয়ে এই সাফল্য পেয়েছেন রাজা। বাংলাদেশ ও ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তিন সেঞ্চুরি করায় ওয়ানডে বর্ষসেরার সংক্ষিপ্ত তালিকায় আর অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে দারুণ অলরাউন্ড পারফরম করে টি-টোয়েন্টির বর্ষসেরার সংক্ষিপ্ত তালিকায় এসেছেন তিনি। ওয়ানডেতে সিকান্দার রাজার সঙ্গে নাম উঠেছে বাবর আজম, শেই হোপ ও অ্যাডাম জাম্পার। আর টি-টোয়েন্টিতে রাজার সঙ্গে সূর্যকুমার যাদব, স্যাম কারেন ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এমন অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। তাই বলে গরমের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে হবে। আর কর্মজীবীদের অফিস ও অন্যান্য কর্মস্থলে। অনেকেরই এই গরমেও কাজের প্রয়োজনে সারাদিন কেটে যায় বাইরে ঘুরে ঘুরেই। গরমকে মোকাবিলা করতে সঙ্গে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখলেই গরমের কাছে নিজেকে হার মানতে হবে না।
পানি পান
গরমের সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি ঘাম বের হয়ে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পারে পানি শূন্যতা। শরীরের মধ্যে যদি পানির পরিমাণ কমে যায় তাহলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। পানি শূন্যতা দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি ফলের জুস কিংবা কচি ডাবের পানি খেতে পারেন। দেহের ত্বককে ভালো রাখতে পানি, শরবত বা জুস পানের বিকল্প নেই। গরমে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেলে ডিহাইড্রেশন এবং পানি শূণ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার স্যালাইন
গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হতে থাকে যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। বিকেল বেলা খাবার স্যালাইন খেলে অতিরিক্ত গরমেও শরীরে সতেজতা ফিরে আসে। আবার অনেকেই স্বাদযুক্ত স্যালাইন খান যেমন, টেস্টি স্যালাইন। ভুল করেও এসব খাবেন না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো ওরস্যালাইন । তবে আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খাবার স্যালাইন খাওয়ার আগে ভালো কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়া উচিত।
রেড মিট পরিহার করুন
অতিরিক্ত গরমের সময় গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় বা অতিরিক্ত গরমের সময় গরুর মাংস খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু-ছাগলের মাংস ছেড়ে মাছ খেতে পারেন। আর অতিরিক্ত গরমে অবশ্যই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
সবুজ শাক সবজি
গরমের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। সবুজ শাক সবজিতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং খনিজ উপাদান থাকে। এতে করে অতিরিক্ত গরমেও শরীর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাছাড়াও খেতে পারেন তরমুজ যা শরীরে এনার্জি দিতে পারে।
টক জাতীয় ফল
প্রচুর গরমে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। যেমন: কামরাঙ্গা, লেবু, তেতুল, আমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি কারো এসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে তবে টক জাতীয় ফল খাওয়া হতে বিরত থাকুন। টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এতে করে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পারতে পাবেন।
টক দই
অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে টক দই খেতে পারেন। যারা করা রোদে কাজ করেন বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক উপকারী হলো টক দই। রোদের প্রচুর তাপ থেকে শরীরকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে টক দই। টক দই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
প্রতিদিন গোসল করুন
গরমের সময় প্রতিদিন এক বার করে হলেও গোসল করতে হবে। যদি পারেন তবে দিনে ২ বার গোসল করতে পারেন। গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। বাহির থেকে এসে সাথে সাথে গোসল করতে যাবেন না। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করতে যাবেন। কারণ হঠাৎ করে গরম থেকে এসে গোসল করলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
ঘরেই অবস্থান করুন
অতিরিক্ত গরমে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাহিরে যাবেন না । যদিও বিভিন্ন কারণে বাহিরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে রোদ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
শারীরিক পরিশ্রম কম করুন
গরমের সময় অনেকেই আছে অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন এমনটি করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি হয়ে থাকে।
পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা
গরমের সময় পাতলা সুতি কাপড় পরা দরকার। কারণ সাদা কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না বরং তাপের প্রতিফলন ঘটায় ও গরম কম লাগে।
পারফিউম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অতিরিক্ত গরমে ঘামের গন্ধ থেকে বেচে থাকার জন্য অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে পারফিউম ব্যবহার না করাটাই উত্তম কাজ। কারণ, পারফিউম গরম লাগা বৃদ্ধি করে দেয়।
যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে হালকা গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার করতে পাবেন। বাজারে কিছু সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠাণ্ডা লাগে। সেগুলো ব্যবহার করলে আরো ভালো হয়।
ধূমপান পরিত্যাগ করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা ধূমপান করে থাকি। ধূমপান করলে শরীরের তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। তাই প্রচন্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে। যদিও এই অভ্যাসটি সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। তাই যতটুকু পারেন ধূমপান কম করার চেষ্টা করুন।
চা কফি পরিত্যাগ করুন
চা, কফি বা অ্যালকোহল খেলে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। আর যদি অতিরিক্ত গরমে চা, কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাবে যার ফলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। তাই গরমের সময় চা কফি বা অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
শান্ত থাকুন
মন মেজাজ গরম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। রাগের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত গরমের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় আর দুই তাপমাত্রা এক সঙ্গে হলে কি অবস্থা হতে পারে একবার হলেও সেটা ভেবে দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত গরমে শান্ত থাকার জন্য মতামত দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শান্ত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।