
বিশ্বকাপ জয়ের মাসপূর্তি হলো আর্জেন্টিনার গতকাল ১৮ জানুয়ারি। লিওনেল মেসির এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না কী অর্জনই না করেছেন তারা। বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি মনে করে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন বিশ্বজয়ী অধিনায়ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালে আর্জেন্টিনার গোল এবং ম্যাচের শেষ দিকে এমি মার্তিনেজের দুর্দান্ত সেভের ভিডিও আপ করে ক্যাপশনে মেসি লিখেছেন, ‘জীবনের সবচেয়ে সুন্দরতম মাসগুলোর একটি পার করলাম। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। চ্যাম্পিয়ন হওয়াতেই সবকিছু সুন্দর লাগছে। তবে এর আগেও কী দারুণ একটি মাসই না কাটিয়েছি। কত চমৎকার স্মৃতি জমা হয়েছে। সতীর্থদের সঙ্গে কাটানো দিনগুলো, একসঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো, কথা বলা, অনুশীলন সবই মিস করছি।’ মেসি আরও যোগ করেন, ‘স্রষ্টাকে ধন্যবাদ। আমি বলেছিলাম, জানতাম তিনি আমাকে ট্রফিটা দেবেন। তবে অর্জনের পরের সময়টা কেমন হবে, সেটা আমি কল্পনা করতে পারিনি। আমি ভুল ছিলাম না। কারণ, জয়োৎসবে মানুষের এত উন্মাদনা আমি কখনোই কল্পনা করিনি।’ পোস্টের একেবারে শেষ লাইনে মেসি লিখেন, ‘এক মাস পেরিয়ে গেছে, আমরা ... বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!’
‘গাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই।’ এদেশের ফুটবল রেফারি, ম্যাচ কমিশনারদের দশা হয়েছে তাই। দিনের পর দিন দায়িত্ব পালন করে যাবেন। তাদের সম্মানীর হিসাবও নিয়ম করে লেখা হবে কেতাবে। তবে সেই সম্মানী মিলবে না সময় মতো। বাড়তে থাকবে বকেয়ার অঙ্ক। উল্টো রেফারিংয়ের মান নিয়ে তাদের নিয়মিতই শুনতে হবে কটুকথা। গত মৌসুমের ম্যাচ পরিচালনা বাবদ রেফারি, ম্যাচ কমিশনাররা প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি সম্মানী পাবেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে। সেটা দেওয়ার নাম নেই। উল্টো বাফুফে নিয়েছে মাথা ভারী প্রশাসন গড়ে তোলার উদ্যোগ। এ মাসে তারা চড়া বেতনে ভারতীয় গৌতম কৌরকে নিয়োগ দিয়েছে বিদেশি রেফারিং কনসালটেন্ট হিসেবে। গতকাল সিদ্ধান্ত হয়েছে আরও ২০ জন ম্যাচ কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার। অতীতে ম্যাচ কমিশনার ও রেফারি অ্যাসেসরের দায়িত্ব পালন করতে হতো একজন ব্যক্তিকে। বাফুফে গতকাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই দুটি কাজের জন্য তারা দুজনকে নিয়োগ দেবে। আর তাতে বাড়বে ম্যাচপিছু খরচা। সেই খরচা অবশ্য নিয়মিত না করেও বাফুফে কর্তারা থাকতে পারেন বহাল তবিয়তে!
ম্যাচ কমিশনার ও রেফারি অ্যাসেসরের কাজ সম্পূর্ণ আলাদা। ম্যাচ কমিশনারের প্রশাসনিক দায়িত্ব। আর রেফারি অ্যাসেসর মাঠের রেফারিদের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করেন। এতদিন এই কাজটা করতে হতো একজন ব্যক্তিকে। তাই জ্যেষ্ঠ ও সাবেক রেফারিদেরই দেখা যেত এই দ্বৈত দায়িত্বে। এভাবেই চলে আসছিল দীর্ঘকাল। এই সংস্কৃতি ভাঙতে অবশেষে উদ্যোগী হয়েছে বাফুফে। রেফারিংয়ের সঙ্গে কখনই জড়িত নন, তবে ফুটবলের ধারণা আছেÑ এমন ব্যক্তিদের তারা নিয়োগ দিতে চাইছে ম্যাচ কমিশনার হিসেবে। পেশাদার লিগ কমিটির অধীনস্ত ওয়ার্কিং উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও বাফুফের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক কাল সভা শেষে বলেন, ‘ম্যাচ কমিশনারকে আমরা রেফারির বাইরে থেকে নেব। যে কখনো রেফারির সঙ্গে জড়িত ছিল না। এছাড়া রেফারি অ্যাসেসরও থাকবে।’
এখানেই চলে আসছে খরচের ব্যপারটা। বর্তমানে একটি ম্যাচ পরিচালনায় কাজ করেন পাঁচজন অফিশিয়ালÑ একজন ম্যাচ কমিশনার-রেফারি অ্যাসেসর এবং চারজন রেফারি (ফিল্ড রেফারি, দুজন সহকারী রেফারি, চতুর্থ রেফারি)। মাঠ সমস্যায় এ মৌসুমের বেশিরভাগ ম্যাচ ঢাকার বাইরে হওয়ায় অফিশিয়ালদের সম্মানী ম্যাচপিছু অনেক বেড়েছে। একজন ফিল্ড রেফারির ঢাকার বাইরে একটি ম্যাচ পরিচালনার জন্য থাকা, খাওয়া ও যাতায়াতসহ প্রাপ্য ১১ হাজার ৪শ টাকা। সহকারীদের প্রাপ্য জনপ্রতি ১১ হাজার ২শ টাকা। চতুর্থ রেফারির ১০ হাজার ৯শ টাকা। আর ম্যাচ কমিশনারের প্রাপ্য ১০ হাজার ৮শ টাকা। নতুন সিদ্ধান্তে ম্যাচ কমিশনার ও রেফারি অ্যাসেসরের দায়িত্ব আলাদা করা হলে নিদেনপক্ষে ব্যয় বাড়বে ম্যাচপিছু ১০ হাজার ৮শ টাকা। চলতি মৌসুমে বিপিএল, বিসিএল পরিচালনা করা রেফারি, ম্যাচ কমিশনারদের সম্মানী দেওয়া দূরে থাক, গত মৌসুমের প্রায় কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে বাফুফে। চলতি মৌসুমেরটা বাদ দিন, গত মৌসুমের বকেয়া টাকাটা কবে পাবেন, তাও তাদের অজানা।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘রেফারিরা যে কিছুই পান না তা নয়। আমাদেরও অভাবের সংসার। নানাভাবে সব কিছু ম্যানেজ করতে হয়। রেফারিরা নিজ খরচায় ম্যাচ পরিচালনা করেন ঠিক। তবে আমরা কিন্তু এক সঙ্গে বড় অঙ্কের সম্মানী পরিশোধ করি মাঝে মধ্যে।’ দীর্ঘ ৩৫ বছর রেফারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত তৈয়ব হাসান সামসুজ্জামান বাফুফের এই সিদ্ধান্ত অবশ্য ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন, ‘এটা বাস্তবায়িত হলে ভালোই হবে। একজন ব্যক্তির দুটি দায়িত্ব পালন করতে হবে না। তবে এর আগে আমি মনে করি দেশের রেফারিং সেক্টরে পেশাদারিত্ব আনা খুব জরুরি। আমরা খেলাটার প্রতি ভালোবাসার টানে রেফারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। এখন ম্যাচ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করি। যদি এর সম্মানীটা রেফারিরা সময় মতো পেতেন, তাহলে সবার কাজের আগ্রহ বাড়ত। একটা পেশাদারিত্বও চলে আসত।’
বিপিএল থেকে পাইওনিয়ার লিগ। সারা বছর শত শত ম্যাচ পরিচালনায় যুক্ত আছেন প্রায় ২০০ রেফারি। ম্যাচ কমিশনার-রেফারি অ্যাসেসরের কাজটি সক্রিয়ভাবে করেন ৩০ জন। ঢাকায় হোক, কিংবা ঢাকার বাইরেÑ ম্যাচ পরিচালনা করতে তাদের খরচা করতে হয় গাঁটের পয়সা। সেই টাকার বিল তারা নিয়ম করেই জমা দেন বাফুফেতে। তবে সেটা কবে মিলবে তা জানেন না। গত মৌসুমে রেফারিরা একজোট হয়ে বকেয়ার দাবিতে ম্যাচ বয়কটও করেছিলেন। তাতে তাদের সম্মানীর অঙ্কটা বেড়েছে। অতীতের কিছু বকেয়াও মিলেছে। তবে বড় একটা অঙ্ক বাকিই রয়ে গেছে। রেফারিংকে তাই পেশা হিসেবেও নেওয়ার সুযোগ নেই এ দেশে। তাই রেফারি-ম্যাচ কমিশনারদের খুঁজে নিতে হয়েছে ভিন্ন জীবিকা। বাফুফের রেফারিজ কমিটি অবশ্য ১৫ জন পেশাদার রেফারি নিয়োগ দেওয়ার আবেদন করেছে বাফুফের কাছে। যাদের মাসিক বেতন দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
গোটা দুনিয়ায় ফুটবল যে নিয়মে চলে, সেটা এ দেশে অচল বলেই এত দুর্দশা। ফুটবলার, কোচরা যখন কাঁড়ি কাঁড়ি পারিশ্রমিক পকেটে পুড়ছে, তখন রেফারিদের প্রাপ্য সম্মানীটাও মিলছে না। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই তারা। আর সেটা শুধুই খেলাটার প্রতি ভালোবাসার টানে।
‘ব্যাটে লাগলেই ছক্কা’ ফরচুন বরিশালের ইনিংসের শেষটা এমনই ছিল। স্টেডিয়ামের সবার আকাশে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় ছিল না। বলে-বলে বিশাল সব ছক্কার বাহার জমেছিল চট্টগ্রামে। সাকিব আল হাসান ও ইফতিখার আহমেদের এই ছক্কা উৎসবে বিপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরও হয়ে গেল। তাদের ৪ উইকেটে করা ২৩৮ রান টপকে পরে ব্যাট করে জেতা কঠিন। রংপুর রাইডার্সের পক্ষে তা সম্ভবও হয়নি। তবে ৯ উইকেটে ১৭১ রান করে তারা একেবারে লজ্জাতেও পড়েনি। ৬৭ রানের জয়ে চট্টগ্রামে বরিশাল টানা তিন জয়।
গতকাল বরিশালের ইনিংসে ১৯ ছক্কা হয়েছে। ম্যাচে হয়েছে মোট ২৭টি। যা বিপিএলে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ। একই সংখ্যক ছক্কা হয়েছিল ২০১৩ সালে ঢাকা গ্লাডিয়েটরস ও সিলেট রয়্যালস ম্যাচে। ক্রিস গেইল একাই মেরেছিলেন ১২টি। এছাড়া ২০১৭-তে ২৬ ছক্কায় গেইলের ছিল ১৮টি। ২০১২-তেও ছিল এক ম্যাচে ২৬টি। ৪৬ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর বরিশালের হয়ে সাকিব-ইফতিখারের জুটি বিপিএলের সেরা তিনে জায়গা করে নিয়েছে। দুজনে ১৯২ রান যোগ করেছেন মাত্র ৮৯ বলে। তাদের আগে লু ভিনসেন্ট-শাহরিয়ার নাফিসের ১৯৭ ও গেইল-ম্যাককালামের ২০১ রান। দুই ব্যাটারই তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা স্কোর। সাকিব ৪৩ বলে ৯ চার ও ৬ ছক্কায় টি-টোয়েন্টিতে নিজের সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেন। আর ইফতিখান তার ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটি তুলে নিয়েছেন ৯ ছক্কা ও ৬ চারে ৪৫ বলে ১০০ করে। সংক্ষিপ্ত স্কোর : বরিশাল : ২৩৮/৪ (ইফতিখার ১০০*, সাকিব ৮৯*, হাসান ২/৩১)। রংপুর : ১৭১/৯ (শামিম ৪৪*, নাওয়াজ ৩৩; মিরাজ ৩/২৬)। ম্যাচ সেরা : ইফতিখার আহমেদ। ফল : ফরচুন বরিশাল ৬৭ রানে জয়ী।
জয়ের হ্যাটট্রিক কুমিল্লার
ম্যাচ শেষে দুদলের ১৫ ওভারের রানে তাকালে মাত্র ৭ রানের পার্থক্য নজরে আসবে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ছিল ১০০/৩; ঢাকা ডমিনেটরসের ৯৩/৪। কিন্তু ১৬তম ওভারই গড়ে দিয়েছি ম্যাচের ভাগ্য। আমির হামজার ওই ওভারে খুশদিল শাহ একাই নিলেন ২৯। টানা তিন ছক্কা, এরপর চার ও একটি ওয়াইড দেওয়ার পর আবারও চার হজম করেন আফগানি বাঁহাতি স্পিনার। কুমিল্লার সাদামাটা সংগ্রহের সম্ভাবনাকে এক ঝাটকায় দুইশোর দিকে তুলে দেন খুশদিল। অথচ ঢাকা একই ওভারে রান নিতে পেরেছে মাত্র ১০। কুমিল্লা খুশদিলের জন্যই শেষ ৫ ওভারে ৮৪ রান তুলেছে। অপরদিকে ঢাকা ৫৮ রান তুলে শেষ ৫ ওভারে।
দুই দলের এই রান পার্থক্যটা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টির করুণ চিত্রটাও তুলে ধরে। ঢাকার হয়ে শেষের ওই ৫ ওভারে নাসির হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন ও আরিফুল হক ব্যাটিংয়ে ছিলেন। চেষ্টা করেছেন দ্রুত রান তোলার। আরিফুল ও নাসির মিলে এই সময়ে ৬টি চার ও ২ ছক্কা মারতে পারেন কেবল। অথচ এক টানে ম্যাচ বের করে আনার যে শক্তি তা নেই বাংলাদেশি ব্যাটারদের। যে ব্যাপারটি খুশদিলের ব্যাটিংয়ে স্পষ্ট। এক ওভারেই নিজের ইনিংসের ৫ ছক্কার তিনটি মেরেছেন। এক ওভারেই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেওয়া পারফরম করেছেন।
টি-টোয়েন্টির এই যুগে এ ব্যাপারটাই যখন সবচেয়ে বেশি দরকার তা বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারেরই নেই। এই আসরে এখন পর্যন্ত সাকিব আল হাসান ছাড়া একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে জাকির হাসান বলার মতো স্কোর (১৮ বলে ৪৩) করেছেন। ওই স্কোরে সিলেট স্ট্রাইকার্স ঢাকার প্রথম পর্বে বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচও জিতেছে। তবে এমন ইনিংস আর আসে না বাংলাদেশ ব্যাটারদের থেকে। তাই বারবার সব দলের জন্য খুশদিল বা উইন্ডিজ ব্যাটাররাই ভরসা।
খুশদিলের ওই ইনিংস ছাড়া কুমিল্লার জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৪৭ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। এছাড়া ইমরুল কায়েন ২৬ বলে ৩৩ ও জনসন চার্লস ১৯ বলে ২০ করেন। ১৮৬ তাড়া করতে বরাবরের মতো চরম ব্যর্থ সৌম্য সরকারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে। মাত্র ৪ বল খেলে ভুল শটে পয়েন্টে দাঁড়ানো ফিল্ডারের হাতে তুলে দেন এই ব্যাটার। পরে রবিন দাশও স্ট্যাম্পড হয়ে ফেরেন ০ রানে ঠিক ৪ বল খেলেই। এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইংলিশ ব্যাটার দুই ম্যাচে রানের হিসাবই খুলতে পারলেন না। এছাড়া ১৯ রান করা আহমেদ শেহজাদ রান আউট হলে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় ঢাকা। প্রথম পর্বের মতো এবারও তাই ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নিতে হয় মিঠুন ও নাসিরকে। দুজনে ৫১ রান করে দলের হারের ব্যবধান কমিয়েছেন কেবল। মিঠুন ৩৪ বলে ৩৬ রান করে ফেরেন। নাসির ৪৫ বলে ৬৬ ও আরিফুল ১৭ বলে ২৪ রান করে শেষ পর্যন্ত ৬৬ রানের জুটি গড়ে টিকে থেকেও দলকে জেতাতে পারেননি।
রাসেল ডমিঙ্গোর বিদায় বার্তাটা দিয়েছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তার কথায় ডমিঙ্গোর সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটের দর্শন না মেলার প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। আর সেটাই সত্যি হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকান কোচের বিদায়ও নিশ্চিত হয়ে যায়। এবার নতুন কোচের ব্যাপারেও একটি ইঙ্গিত দিলেন সুজন। সাবেক কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের বাংলাদেশে ফিরে আসার আভাস দিয়ে বিষয়টি আরও পাকা করলেন তিনি। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের বক্তব্য হাথুরুসিংহের পক্ষেই। তবে টি-টোয়েন্টি কনসালটেন্ট হিসেবে বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করা শ্রীধরন শ্রীরামকেও রাখতে চান সুজন।
শুধু ভারত সিরিজটি বাদ দিলে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ দলের অপরিহার্য অংশ তিনি। টিম ডিরেক্টর পদে থাকলেও সব সিদ্ধান্তেই সামনে থাকেন সুজন। অনেক সময় কোচিংয়ের কাজও করতে হয়। দল নির্বাচন তো সুজনের নিয়মিত ব্যাপার। ভারত সিরিজে পারিবারিক কারণে ছুটি নেওয়ার পর এখনো দলের সঙ্গে যোগ দেননি এই সাবেক। দলে কবে ফিরবেন সে ব্যাপারেও এখনো সিদ্ধান্ত নেননি। তবে বাংলাদেশের নতুন কোচ নিয়োগের ব্যাপারে খবর রাখছেন নিয়মিত, যিনি আবার বিসিবি পরিচালক, ক্রিকেট অপারেশন্সের ভাইস-চেয়ারম্যানও। সেদিক থেকেই কাল খুলনা টাইগার্সের অনুশীলন শেষে নিজের পছন্দের ব্যাপারটি জানালেন, ‘হাথুরু এলে ভালো। আমার বিশ্বাস ও এখন আরও পরিণত, আমাদের জন্য ভালো হবে। ও এসে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল, পারফরম্যান্সটা ভালো হচ্ছিল। দ্বিতীয়বার আসাটা খারাপ হবে না। যেহেতু আমাদের উপমহাদেশের মানুষ, আমাদের সম্পর্কে ভালো জানেন, বুঝেন। ওর অভিজ্ঞতা এখন অনেক।’
হাথুরুর পাশাপাশি শ্রীরামে প্রচুর অগ্রহ বিসিবির। টি-টোয়েন্টি শুধু না ওয়ানডেতেও এই কোচকে পাওয়ার ইচ্ছে আছে। ওদিকে হাথুরু চাইছেন সব ফরম্যাটের জন্য কোচ হতে। তাই শ্রীরামকে সহকারী রেখে হাথুরুকে প্রধান কোচ করতে চায় বিসিবি। এসব নিয়ে আলোচনা প্রায় শেষ, মাঝ ফেব্রুয়ারিতে কোচের নাম ঘোষণা করা হবে। দুই কোচ না এক কোচ সে ব্যাপারে সুজন জানান, ‘আমরা চিন্তা করি আমাদের জন্য কোনটা ভালো। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কে ভালো হবে। সেটা যদি হাথুরু হয় বা শ্রীরাম হয়, বা যে কেউ হোক না কেন, বা দুজন হয় সেটাও ভালো, তিনজন হলেও ভালো। যে আসে সে যেন বাংলাদেশকে সার্ভিস দিতে পারে। লম্বা সময় যেন কোচিং করাতে পারে, এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।’
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জয়ের ধারায় ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছিল তারা। তবে বুধবার ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে পয়েন্ট হারিয়েছে রেড ডেভিলরা। ব্রুনো ফার্নান্দেজের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ম্যাচের ইনজুরি সময়ে মাইকেল ওলিসের দারুণ এক ফ্রি-কিক জয় ছিনিয়ে নেয় ম্যানইউর।
এমন গোলে জয় বঞ্চিত হওয়াকে দুর্ভাগ্যজনক বলছেন ম্যানইউ কোচ টেন হাগ, ‘দুর্ভাগ্যজনক একটি মুহূর্তে এভাবে গোল হজম করাটা হতাশাজনক। কারণ এরপর আর ফেরার সময়ই ছিল না। দ্বিতীয় গোলের জন্য আরও চেষ্টা করতে হবে আমাদের, যাতে এরকম একটি মুহূর্তে পয়েন্ট হারাতে না হয়। দ্বিতীয় গোলের চেষ্টা করা উচিত ছিল আমাদের। ২-০ হলেই খেলা শেষ হয়ে যেত।’ পয়েন্ট হারানোর সঙ্গে আরও এক দুঃখ যোগ হয়েছে ম্যানইউর। বুধবারের ম্যাচে মৌসুমের পঞ্চম হলুদ কার্ড দেখেছেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরো। ফলে নিষেধাজ্ঞার কারণে লিগ শীর্ষের আর্সেনালের সঙ্গে রবিবারের ম্যাচে খেলতে পারবেন না তিনি। ১৮ ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল। ১৯ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ম্যানউই।
প্রায় ১০০ কোটি টাকা খরচায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনাকে ঢাকায় এনে খেলানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এর মধ্যেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক নির্দেশনায় বোঝা যাচ্ছে, বাফুফের এমন বিলাসী স্বপ্ন মনে ধরেনি তাদের। বুধবার বাফুফেসহ সব ক্রীড়া ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অযথা বিদেশ সফর না করার নির্দেশনা দিয়েছে। দেশের চলমান অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে কৃচ্ছ্র সাধনের পথে হাঁটার নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল চিঠি পাঠানোর প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অযথা কেউ যেন বিদেশ সফর না করে। আমন্ত্রণ এলেই দল যেন ভারী করা না হয়। যতটুকু দরকার সেই মতো বিদেশের খেলাগুলোয় যেন অংশ নেয়। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, যেখানে না গেলেই নয়।’ আর্জেন্টিনাকে ঢাকায় আনার বিষয়ে মন্ত্রী নিজেও আছেন অন্ধকারে, ‘এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। মিডিয়ার মাধ্যমে যা কিছু জানতে পেরেছি। এখন বিষয়টি নিয়ে কিছু বলার নেই।’
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন হামলা করে। ওই সময় গুলি ও ককটেলে অন্তত পাঁচজন আহত হন।
তবে বিদ্রোহী প্রার্থীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা মিছিল নিয়ে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অন্তত ১৫ নেতাকর্মীকে আহত করেছে।
সংঘর্ষের পর ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষুব্ধরা। পরে রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগামী ১২ জুন তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক, বিদ্রোহী প্রার্থী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নুরুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির এম এ মাসুদ তালুকদার, ইসলামী আন্দোলনের রফিকুল ইসলাম মণ্ডল।
বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তারাকান্দা উপজেলা সদর বাজারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামানের প্রধান নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিল। রাত ৮টার দিকে তারাকান্দা উত্তর বাজার থেকে উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিদ্রোহী প্রার্থীর কার্যালয়ের কাছে যেতেই ককটেল ও গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা।
স্থানীরা জানান, এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। তাৎক্ষণিক ভাবে আহতদের কারো নাম সংগ্রহ করা যায়নি।
এদিকে ঘটনার পরপর ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের তারাকান্দার মধুপুর বাজার এলাকায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামানের সর্মথকরা। সড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশ রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
নুরুজ্জামান সরকার বলেন, আমার নেতাকর্মীরা নির্বাচনী কার্যালয়ে অবস্থান করার সময় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিল থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ককটেল, দেশীয় অস্ত্র ও নাইট শুটারগান দিয়ে আমাকে মারার জন্য হামলা করে। অন্তত ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলুল হক দাবি করেন, তারাকান্দা উত্তর বাজার থেকে নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করলে সেই মিছিলে অতর্কিতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও গুলিবর্ষণ করে হামলা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন। এ সময় তার অন্তত পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, তারাকান্দা থেকে গুলিবিদ্ধসহ আটজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তারাকান্দা থানার ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছে এমন তথ্য আছে আমাদের কাছে। ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে সত্য কিন্তু গুলির বিষয়টি যাচাই করতে হবে। ঘটনার পর সড়ক অবরোধ করলে পরিস্থিতি শান্ত করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। ঘটনাস্থলসহ আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।