
সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভাগ্যবদলে বড় ভূমিকা কাসেমিরোর। তবে মাঠে নিজের ভূমিকার কারণেই কখনো তিনি পার্শ্বনায়ক, কখনো আড়ালের নায়ক। সেই তিনি এবার জোড়া গোলে দলের জয়ের মূলনায়ক। শনিবার চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে ব্রাজিলিয়ানের অসাধারণ পারফরম্যান্সে রিডিংকে ৩-১ গোলে হারায় ম্যানইউ। অধিনায়ক হ্যারি ম্যাগুইয়ার বলছেন, কাসেমিরো একাই বদলে দিয়েছেন গোটা দলের খেলা।
এমনিতে কাসেমিরোর মূল কাজ গোল বানিয়ে দেওয়া কিংবা গোল করার ক্ষেত্র তৈরি করা, প্রতিপক্ষের গোলের সম্ভাবনা ধ্বংস করা। তবে এই ম্যাচে তিনি করেন দারুণ দুটি গোল। আরেকটি গোল করেন তার ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ ফ্রেদ।
এ দিন শুরু থেকে বেশকিছু আক্রমণ করেও গোল পেতে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয় ইউনাইটেডকে। প্রথমার্ধে অবশ্য একবার জালে বল প্রবেশ করাতে পেরেছিলেন মার্কাস র্যাশফোর্ড। কিন্তু অফসাইডের কারণে তা বাতিল করে দেয় ভিএআর। ইউনাইটেডের প্রথম ফুটবলার হিসেবে তাই টানা ১০ ম্যাচে গোলের কীর্তি তার আর গড়া হয়নি। ৫৪তম মিনিটে স্বদেশি আন্তোনির দুর্দান্ত পাস থেকে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন কাসেমিরো। মিনিট চারেক পরই ২৫ মিটারের বেশি দূর থেকে সরাসরি শটে তিনি ব্যবধান করেন দ্বিগুণ। পরে ফ্রেদ চোখ ধাঁধানো ব্যাক হিলে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন আরও।
চলতি মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ইউনাইটেডে কাসেমিরোর দলবদলে সমালোচনা কম হয়নি। ক্যারিয়ারের এই পর্যায় প্রথমবারের মতো ইংলিশ ফুটবলে এসে তিনি কেমন করবেন, এই সংশয়ও ছিল তুমুল। তবে নতুন ক্লাবে, নতুন পরিবেশে দ্রুতই মানিয়ে নেন তিনি। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে রিয়ালের মতো এখানেও হয়ে ওঠেন দলের প্রাণভোমরা। রিডিংয়ের বিপক্ষে ম্যাচের পর সেটিই তুলে ধরলেন ম্যাগুইয়ার। ‘তাকে যে কারণে ক্লাবে আনা হয়েছে, সেটিই করে চলেছেন তিনি। অসাধারণ এক ফুটবলার। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলার না হলে তো এত এত ট্রফি তিনি জিততে পারতেন না! গোটা দলের খেলা তিনি উন্নত করে দিয়েছেন, দলের পারফরম্যান্স ও মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাকে পাওয়া আমাদের জন্য দারুণ।’
কোচ এরিক টেন হাগ প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা জানি, সে কতটা গ্রেট ফুটবলার। রিয়ালে হয়তো খুব বেশি গোল সে করতে পারেনি (দলে ভূমিকার জন্য), আমরা জানি তার সামর্থ্য কতটা। আমি জানি, সে এটা (গোল করা) উপভোগ করে।’
কাউরো মিতোমার যোগ করা সময়ের গোলে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। গতকাল ব্রাইটন ২-১ গোলে হারায় লিভারপুলকে।
জয়ের পর কোর্টে নিজেকে ধরে রেখেছিলেন নোভাক জকোভিচ। তবে গ্যালারিতে কোচ গোরান ইভানিসেভিচ ও মা দিয়ান জকোভিচের কাছে গিয়ে আর নিজেকে সামলাতে পারেননি। অঝোরে কেঁদেছেন। এরপর কোর্টে নেমে প্লেয়ার বেঞ্চে বসেও তোয়ালেতে মুখ ঢেকে কেঁদেছেন জকোভিচ। মাত্রই গ্রিসের স্টেফানোস সিতসিপাসকে ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৭-৬ (৭-৫) সেটে হারিয়ে ২২তম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতেছেন। বিশ্ব র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করেছেন। সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ী রাফায়েল নাদালের রেকর্ডকে ছুঁয়েছেন। এত আনন্দের খবরে কাঁদার প্রশ্নই আসে না। তবুও জকোভিচ কাঁদলেন।
জকোভিচের কাঁদার কারণ অবশ্যই আছে। এই শিরোপা তার হয়ে অনেক কিছুর জবাব দিয়েছে। এই তো গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় ঢুকতেই পারেননি করোনার টিকা না নেওয়ায়। এই টুর্নামেন্টেই বাবা ডিজান জকোভিচ ভøাদিমির পুতিনের ছবিযুক্ত পতাকা হাতে নিয়ে গ্যালারিতে এসে সমালোচিত হলেন। সেই সমালোচনার রেশ জকোভিচের গায়েও লেগেছে। এ ছাড়া লাইন জাজের দিকে বল ছুড়ে মারা তার হাসিখুশি জকোভিচের চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তবে জকোভিচ এমন নয়। যে কারণে তাকে ‘জোকার’ বলা হয়। প্রতি জয়ের পর কোর্টে কিছু মজার কা- না করলে যার হয় না। তার ক্যারিয়ারটা গত কিছু টুর্নামেন্ট কেমন প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। সেসব সমালোচনার জবাব দশমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে দিলেন জকোভিচ।
জকোর জন্য এই টুর্নামেন্ট জেতার পথে বড় বাধা ছিল না কেউ। নাদাল ইনজুরিতে পড়ে ছিটকে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের রেকর্ড বাড়ানোর সুযোগ বেড়ে যায় তার। ফাইনালটাও তাই প্রায় অনায়াসে জিতেছেন এই সার্বিয়ান। সিতসিপাসের বিপক্ষে মুখোমুখি দেখায় ১০-২ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা জকোকে আগেই শিরোপার সুবাস পাইয়ে দেয়। ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্ল্যাম খেলা সিতসিপাস ৩৩ বারের অভিজ্ঞতার সামনে শুরুতে দাঁড়াতেই পারেনি। মাত্র ৩৬ মিনিটে প্রথম সেট হারের পর পরের দুই সেটে কিছুটা লড়াই করেছেন। অবশ্য জকোর থেকে সেট কেড়ে নিতে পারেননি। পরের দুই সেটেকেই টাইব্রেকে নিয়েছেন সিতসিপাস। এটাই তার সাফল্য। ম্যাচ শেষে সিতসিপাসকে হতাশ না হয়ে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ কাজে লাগানোর শুভ কামনাও জানিয়েছেন জকোভিচ।
নিজের জন্য এই ফাইনালকে একটু বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন এই সার্বিয়ান। তাই জয়ের আনন্দে কেঁদেছেনও খুব। ম্যাচ শেষে নিজেই বলেছেন, ‘আমার জীবনের সেরা জয়’। গত বছর করোনার টিকা না নেওয়ায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে পারেননি। তাই দশম শিরোপাও জিততে পারেননি এখানে। গত বছর শুধু উইম্বলডন জিতেছেন জকোভিচ। এ বছর আবার মেলবোর্নে ফিরেছেন রাজার মতো মুকুট পরেই। বুকের ডান পাশে শিরোপা সংখ্যা ২২ লেখা জ্যাকেট পরে জকোভিচ বলেন, ‘গত বছর এখানে খেলতে পারিনি, এ বছর ফিরে আসা এবং নানা পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং একটা টুর্নামেন্ট ছিল। মেলবোর্নে যারা আমাকে আবার স্বাভাবিক হতে সাহায্য করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। একমাত্র আমার পরিবার ও দলই জানে গত ৫-৬ সপ্তাহ আমি কীসের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। এজন্যই আমি বলছি পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা আমার জীবনের সেরা জয়।’
২০১৮ সালে শেষবার গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতেছিলেন রজার ফেদেরার। সেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পর টেনিসের রাজ্যে শুধুই দুজন। নাদাল ও জকোভিচ এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন পর্যন্ত ১৯ টুর্নামেন্টের ১৬টিই ভাগাভাগি করেছেন। নাদালকে ছুঁতে এই সময়ে বেশি জিতেছেন জকোভিচই। ১৬টির মধ্যে ১০টি। তাই ফেদেরারের শেষ গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের পর নাদাল নিজের ১৭তম শিরোপা জেতেন। তা পরের স্ল্যামে উইম্বলডনে জকোভিচ ১৩তম শিরোপা জেতেন। এরপর নাদালের পিছু ছুটছিলেন কিছুটা দূরত্ব রেখে। ২০২১-এর বছরের ইউএস ওপেন বাদে বাকি তিন শিরোপা জিতে নাদালকে ছুঁয়ে ফেলেন জকোভিচ। গত বছর আবারও ২ শিরোপার দূরত্ব বাড়লেও উইম্বলডন ও এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে ২২ শিরোপায় নাদালের পাশে দাঁড়ালেন জকোভিচ।
গত কয়েক বছরের এই প্রতিযোগিতাকে নিজের জীবনের সেরা অংশও বলেছেন জকোভিচ। জানালেন এজন্যই তিনি টেনিস খেলেন, ‘টেনিস আমার জন্য সেরা শিক্ষার জায়গা। আমি অনেকগুলো কারণে পেশাদার টেনিস খেলি। এর মধ্যে একটি ব্যক্তিগত। তা হলো আমি প্রতি ম্যাচে নিজের জন্য নতুন কিছু শিখতে পারি। নিজের ভয়কে জয় করতে লড়াই করি। এরপর অবশ্যই কিছু পেশাদার অর্জন ও লক্ষ্য এবং আশা তো আছেই। আমি টেনিসে আরও অনেক ইতিহাস গড়তে চাই। নিজেকে সেরা হিসেবে দেখতে চাই।’
র্যাংকিংয়ে জকোভিচ সেরা হয়েছেন। তবে তা নতুন কিছু নয়। নতুন যেটা তা হলো নাদালের পাশে দাঁড়িয়েছেন ৩৫ বছর বয়সে টেনিসকে আরও কিছু দেওয়ার আছে তার। আগামী বছরগুলোতে ঠিক নাদালকে ছড়িয়ে গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের সংখ্যাটা এমন জায়গায় নিয়ে যাবেন জকোভিচ যা অন্যদের জন্য হবে অনতিক্রম্য। তখন অবশ্যই ইতিহাসের সেরা হয়ে থাকার ইচ্ছেটা সত্যি হয়ে থাকবে তার।
গত সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পর দেশের নারী ফুটবলারদের নিয়ে প্রত্যাশাটা আকাশ ছুঁয়েছে। এবার তাই মেয়েদের ঘরের মাঠে বিজয়ী রূপে দেখার পালা। ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বসতে যাচ্ছে সাফ নারী অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। চার দলের এই আসরে শিরোপায় চোখ স্বাগতিক বাংলাদেশের। তবে বরাবরেই মতো এবারও সাফল্যের পথে বড় বাধা ভারত।
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে এর আগে দু’বার সাফ পর্যায়ের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-১৯ আসরে শিরোপা জয়ের পর এবার অনূর্ধ্ব-২০-এ নিজেদের প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ। সিঙ্গেল লিগ পদ্ধতিতে চারদল বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান একে অপরের মোকাবিলা করবে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ২ দলের মধ্য ৯ ফেব্রুয়ারি হবে ফাইনাল। আসরের সবক’টি ম্যাচই হবে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে।
এই আসরকে সামনে রেখে গতকাল ২৩ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। দল ঘোষণার সময় ছোটন এই আসরে নিজের শিষ্যদের ফাইনালে দেখার প্রত্যাশা জানিয়েছেন, ‘আমরা এই টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা ফাইনাল খেলতে চাই।’
ভারত যে দলটি নিয়ে খেলতে আসবে, সেই দলে রয়েছে গত বছর সে দেশেই অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলা বেশ ক’জন ফুটবলার। তাতে একদমই ভড়কে যাচ্ছেন না ছোটন, ‘আমরা এর আগে অ-১৮ পর্যায়ে ভারতকে হারিয়েছি। সেই দলের অনেকেই অ-১৭ বিশ্বকাপ খেলেছে। এই দলেও অনেকে হয়তো খেলবে। সুতরাং ভারতকে হারানো আমাদের জন্য অসম্ভব কিছু নয়।’ মাস দেড়েক আগে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছিল ঢাকায়। সেই আসরে ফাইনালে গিয়েও নেপাল বাধা টপকানো হয়নি বাংলাদেশের। এবার সেরকম কিছু হোক, চান না ছোটন। বরং গত সেপ্টেম্বরে সিনিয়র সাফে গড়া ইতিহাস থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে চান বর্ষীয়ান এই কোচ। ছোটনের সেরা ২৩-এ নতুন মুখ দু’জন- আফরোজা খাতুন ও আইরিন খাতুন। যারা প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে। আর সিনিয়র দল থেকে এই দলে সুযোগ পেয়েছেন চারজন- রুপনা চাকমা, ইতি রানী, সাথী বিশ্বাস, শাহসুন্নাহার জুনিয়র, স্বপ্না রানী ও সোহাগি কিসকু। ছোটন বলেন, ‘সাফের শিরোপা জয়ের পর দেশবাসীর প্রত্যাশা বেড়ে গেছে, সেটা মেয়েরা জানে। নেপাল ও ভারত শক্তিশালী দল। তবে আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে ভালো ফুটবল খেলার।’
বিশ্বকাপ জয়ী লিওনেল মেসি আজকের অবস্থানে উঠে আসার আগে ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন আর্জেন্টিনার হয়ে। তার আগে-পরে আরও পাঁচবার যুব বিশ্বশিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা, যা সর্বাধিক সাফল্য কোনো দেশের। একবার রানার্সআপও হয়েছে আলবিলেসেলেস্তেরা। সেই আর্জেন্টিনা আসন্ন বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারল না, যা ২০১৩ সালের পর প্রথম। বিশ্বকাপ জয়ের এক মাস পর যুব দলের জন্য লজ্জা পেতে হলো আর্জেন্টিনাকে।
দক্ষিণ আমেরিকা অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনা হেরে গেছে কলম্বিয়ার কাছে। অথচ এই ম্যাচটি জিতলেই আর্জেন্টিনা যোগ্যতা অর্জন করতে পারত। গ্রুপ ‘এ’তে ছিল আর্জেন্টিনা। এই গ্রুপ থেকে যোগ্যতা অর্জন করেছে ব্রাজিল, কলম্বিয়া ও প্যারাগুয়ে। এই তিন দেশের কাছেই হেরেছে আর্জেন্টিনা। শুধু জয় পায় পেরুর বিপক্ষে। অপর গ্রুপ থেকে যোগ্যতা অর্জন করেছে উরুগুয়ে।
আর্জেন্টিনা ও বার্সেলোনায় মেসির সাবেক সতীর্থ হাভিয়ের মাসচেরানো আর্জেন্টিনা যুব দলের কোচ। ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে সরে যেতে চেয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘ব্যর্থতার সব দায় আমার। ওদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারিনি। মনে হয় না আমার এই কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিত। আপাতত আর্জেন্টিনায় ফিরে শান্তিতে কিছু দিন কাটাতে চাই।’ ২৩তম যুব বিশ্বকাপ ইন্দোনেশিয়ায় আয়োজিত হবে ২০ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত। আয়োজক ছাড়া বাকি ২৩ দল আসবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে।
পহেলা ফেব্রুয়ারিতে বয়স ৪১ হবে শোয়েব মালিকের। বিশ্বজুড়ে সেরা পর্যায়ের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে যাওয়া সবচেয়ে বেশি বয়সী ক্রিকেটার তিনি। তাই খেলার সংখ্যাটাও ৫০০ ছুঁতে চলেছে। বিপিএলে আর দুটি ম্যাচ খেললে কায়রন পোলার্ডের (৬১৪) পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এত ম্যাচ হবে মালিকের। অথচ কাল বললেন এখনো নিজেকে ২৫ বছর বয়সী মনে করেন এই পাকিস্তান তারকা।
নিজের ফিটনেস নিয়ে বেশ সচেতন মালিক। তেমনি বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়েও। দীর্ঘ সময় ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই আছেন। জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেছেন। ২০১৫ সাল থেকে বিপিএলেও নিয়মিত মালিক। সেই দেখা থেকেই এখনো বাংলাদেশের উন্নতির সুযোগ দেখছেন মালিক, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরিচিত আছে এখন বিশ্বের সব জায়গায়। তারাও তো এখন বিশ্বের নানা জায়গায় লিগগুলোতে সুযোগ পাচ্ছে। নিজেদের কন্ডিশনে বাংলাদেশের সাফল্যের হার তো দুর্দান্ত। একটা জায়গায় তাদের এখনো উন্নতির জায়গা আছে, তা হলো দেশের বাইরের পারফরম্যান্সে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎটা অবশ্য সামনেও দেখতে পারবেন মালিক। কারণ, সহসাই অবসরের কোনো ইচ্ছে দেখাননি সবচেয়ে বয়সী এই সেরা পর্যায়ের ক্রিকেটার। বরং ২৫ বছর বয়সের মালিক আভাস দিলেন আবারও পাকিস্তান দলে ফিরতে চান, ‘বিশ্বাস করুন, যদিও আমার বয়স দলে সবচেয়ে বেশি, তবে আমার ফিটনেস আপনি তুলনা করতে পারেন ২৫ বছর বয়সী কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে। মাঠে আসা উপভোগ করা ও ভালো করার ক্ষুধা যতদিন আছে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাব। এই কারণেই অবসরের কথা চিন্তাও করছি না আমি। যদি সম্ভব হয়, আমি অবসর নিতে চাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে কিংবা পরিপূর্ণ ক্রিকেট খেলে। যেখানেই সুযোগ মেলে, আমি যাই এবং খেলি।’
চার দিন পিছিয়েছে ইংল্যান্ড দলের বাংলাদেশে আগমনের তারিখ। পূর্বঘোষিত সূচিতে ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখে বাংলাদেশে পা রাখার কথা ছিল ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। তবে পরিবর্তিত সূচিতে ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়রা ২৪ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশে আসবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীস। সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের তিনটি ম্যাচ ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলবে ইংল্যান্ড।
বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে থাকা ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের অনেকেই খেলছেন এসএ টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। এই আসরের ফাইনাল ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে। এসব কারণেই জস বাটলার-মইন আলিদের বাংলাদেশে আসা পেছাতে পারে বলে জানিয়েছেন নাফীস, ‘ইংল্যান্ড দল আসবে ২৪ তারিখে। ওদের অনেকেরই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে কমিটমেন্টসহ অনেক ধরনের ব্যক্তিগত কমিটমেন্টও আছে। তাই ওরা আসাটা পিছিয়ে দিয়েছে।’ আগের সূচিতে ২৪ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের, পরিবর্তিত সূচিতে থাকছে না প্রস্তুতি ম্যাচ, ‘ওরা প্রস্তুতি ম্যাচ দুটো খেলছে না। সরাসরি অফিশিয়াল ম্যাচগুলোই খেলবে। অর্থাৎ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের সূচিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।’ বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনও গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘ইংল্যান্ড দল তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা থেকে এই সফরটাকে শুধু অফিশিয়াল ম্যাচের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কথা জানিয়েছে। এখন সেভাবেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’
এই সফরটি হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে, পরে সেটা পিছিয়ে দেওয়া হয় ২০২৩ সালের মার্চে। এবার এখন পর্যন্ত সিরিজ পেছানোর কোনো ঘোষণা না এলেও পিছিয়েছে আগমনের তারিখ। সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে ইংল্যান্ড আছে চতুর্থ অবস্থানে আর বাংলাদেশ আছে ষষ্ঠ অবস্থানে। স্বাগতিক ভারতসহ শীর্ষে থাকা আট দল সরাসরি খেলবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে।
১ মার্চ ঢাকায় শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে। ১৪ মার্চ শেষ টি-টোয়েন্টি।
আগের ইনিংসের মতোই ব্যর্থ উসমান খাজা। পারেননি ডেভিড ওয়ার্নারও। প্রথম ইনিংসের দুই সেঞ্চুরিয়ানও ফিরে গেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে তাই খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই অস্ট্রেলিয়া। তবুও তৃতীয় দিন শেষে এগিয়ে আছে তারা।
ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ২৯৬ রানে আটকে দেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান করে অসিরা। এগিয়ে আছে ২৯৬ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরেছে তারা।
দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজা ফেরেন ২৪ রানের মধ্যেই। মারনাস লাবুশান ও স্টিভেন স্মিথের ৬২ রানের জুটি ভাঙেন রবীন্দ্র জাদেজা, পরে ট্রাভিস হেডকেও ফেরান এই স্পিনার। টেস্ট ক্যারিয়ারে অষ্টমবারের মতো স্মিথকে আউট করেছেন জাদেজা।
তৃতীয় দিন শেষে মারনাস লাবুশানের সঙ্গে অপরাজিত আছেন ক্যামেরুন গ্রিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: অস্ট্রেলিয়া: ৪৬৯ ও ৪৪ ওভারে ১২৩/৪ (লাবুশেন ৪১*, স্মিথ ৩৪; জাদেজা ২/২৫, উমেশ ১/২১)ভারত ১ম ইনিংস: ৬৯.৪ ওভারে ২৯৬ (রাহানে ৮৯, শার্দূল ৫১, জাদেজা ৪৮; কামিন্স ৩/৮৩, গ্রিন ২/৪৪, বোল্যান্ড ২/৫৯)।
আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের পালন করা সাড়ে ২১ মণ ওজনের গরু উপহার দিতে চেয়েছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাউনা গ্রামের সাধারণ কৃষক বুলবুল আহমেদ ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান। তাদের এই ভালোবাসার প্রতি সম্মান জানিয়ে উপহারের এই গরু গ্রহণে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপহারের গরু গ্রহণে সম্মতি দেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী খুশি হয়েছেন এবং এই বিরল ভালোবাসার জন্য বুলবুল আহমেদ ও তার স্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন।
হাসান জাহিদ তুষার জানান, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা এই গরু বুলবুল আহমেদের নিজ বাড়িতেই থাকবে এবং সেখানেই কোরবানি হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোরবানির গরুর মাংস স্থানীয় দরিদ্র-অসহায় জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
গরুটি ক্রস ব্রাহমা প্রজাতির। এতে আনুমানিক ৮০০ কেজি মাংস হতে পারে বলে জানিয়েছেন বুলবুল আহমেদ। বুলবুল জানান, ২০২০ সালে নেত্রকোনা জেলা থেকে আড়াই লাখ টাকায় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য তিনি এই গরু কেনেন। গরু কেনার পর কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত পাগলা মসজিদে পাঁচ হাজার টাকা মানতও করছিলেন তিনি যেন তার গরুটি সুস্থ থাকে।
তিনি আরও জানান, তিনি ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত তার স্ত্রী ইসরাত জাহান আওয়ামী লীগ সরকারের একটি বাড়ি, একটি খামার প্রকল্প থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই গরু কেনেন। তারা গত তিন বছর গরুটির নিবিড় পরিচর্যা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেগ ও ভালবাসা থেকে তারা এই গরু ক্রয় ও লালন পালন করেছেন বলে জানান।
উপহার হিসেবে তার গরুটি গ্রহণ করার সম্মতি দেওয়ায় বুলবুল আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। বুলবুল আহমেদ কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
ষাটের দশকে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের আগুন তরুণদের বুকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্র তৈরি করতে গড়ে তুলেছিলেন ‘নিউক্লিয়াস’। স্বাধীনতার পর তিনি সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের বাঁধভাঙা ঢেউ তুলেছিলেন। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে সবকিছু থেকে দূরে আড়ালে চলে যান। রাজনীতিতে তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল রহস্য। সেই রহস্য নায়ক সিরাজুল আলম খান চলে গেলেন চিররহস্যের দেশে।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এ সংগঠক গতকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটার কিছু পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক।
সিরাজুল আলম খানের ব্যক্তিগত সহকারী রুবেল দেশ রূপান্তরকে বলেন, অসুস্থ অবস্থায় তাকে রাজধানীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত ১ জুন নেওয়া হয় আইসিইউতে। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাতে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন সিরাজুল আলম খানের জন্ম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর গ্রামে, ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি। তার বাবা খোরশেদ আলম খান ছিলেন স্কুল পরিদর্শক। মা সৈয়দা জাকিয়া খাতুন গৃহিণী ছিলেন। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় সিরাজুল আলম খান।
১৯৬১ সালে ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক হন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬৩ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠন করেন।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান (মান্না), জনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক (নুর)।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তার আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। শোক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন সংগঠন।
প্রয়াত সিরাজুল আলম খানের ঘনিষ্ঠ ও নাট্য পরিচালক সাকিল সৈকত দেশ রূপান্তরকে বলেন, সিরাজুল আলম খানের মরদেহ বিকেলে হাসপাতাল থেকে মোহাম্মদপুরের আল-মারকাজুলে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গোসল শেষে রাতে শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জানাজা শেষে নোয়াখালীতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে পুনরায় জানাজা শেষে বেগমগঞ্জের আলীপুরে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে রাজনীতির এ নায়ককে।
১৯৪১ সালে জন্ম নেওয়া এ কিংবদন্তি রাজনীতিককে বিগত কয়েক বছর ধরে নিয়মিত হাসপাতালে যেতে হয়েছে। দেশে এবং বিদেশে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
জন্মের কয়েক বছর পর পিতার চাকরির সুবাদে সিরাজুল আলম খুলনায় চলে যান। ১৯৫৬ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৫৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। অনার্স ডিগ্রি অর্জনের পর কনভোকেশন মুভমেন্টে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।
স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনায় ১৯৬২ ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এ ছাত্রনেতারা। ছয় দফার সমর্থনে জনমত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন সিরাজুল আলম খান। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। তিনি কখনো নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শ দিয়ে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে খ্যাতি পান। অনুসারী সবাই তাকে ‘দাদা ভাই’ নামেই ডাকতেন।
মূলত নব্বইয়ের দশকে সিরাজুল আলম খান কখনো জনসমক্ষে আসতেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেন না; আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিতি পান। নব্বই পর্যন্ত একাধিকবার জেল-জুলুম খেটেছেন তিনি।
দাদা ভাইয়ের মৃত্যুত গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, গণফোরাম একাংশে সভাপতি মোস্তফা মোহসিন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।
বেশ ক'দিন তীব্র তাপদাহের পর গতকাল রাজধানী ঢাকাজুড়ে হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। এতে তাপমাত্রা এসেছে কমে, পরিচ্ছন্ন হয়েছে পরিবেশ। তবুও আজ সকালে বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে আছে ঢাকা। বৃষ্টিধোয়া রাজধানী ঢাকা আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ১৫৫ স্কোর নিয়ে দূষণের তালিকায় চতুর্থ।
আজ শনিবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় বায়ুমানের সূচক (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকায় বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৫। বায়ুর মান বিচারে এ মাত্রাকে 'অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়। একই সময়ে একিউআই স্কোর ১৬৮ নিয়ে প্রথম অবস্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয়, স্কোর ১৫৬। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইসরায়েলের তেলআবিব। আর পঞ্চম স্থানে আছে চীনের শেংডু, স্কোর ১৪৯।
একইসময়ে ১৩৮ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহেনেসবার্গ। ১৩২ স্কোর নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। অষ্টম নেপালের কাঠমান্ডু, স্কোর ১২৭। ১১৮ স্কোর নিয়ে নবম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট আর ১১৭ স্কোর নিয়ে দশম সৌদি আরবের রিয়াদ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।
তথ্যমতে, একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত 'অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে বিবেচিত হয়। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকলে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' এবং স্কোর ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকলে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় ১২ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. রহুল আমিন (৫৬) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৯ জুন) শিশুটির বাবা বাদী হয়ে বরুড়া থানায় মামলা করলে তাকে আটক করা হয়।
আটক মো. রহুল আমিন উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের বেওলাইন গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে।
ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বরুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে বরুড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষককে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ মার্চ ভোর আনুমানিক ৬টায় দিকে উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের বেওলাইন গ্রামে ১২ বছরের শিশুকে গোয়ালঘরের পেছনে ধর্ষণ করেন মো. রহুল আমিন। এবিষয়ে এতোদিন জানাজানি না হলেও ৪ জুন (রোববার) হঠাৎ শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে পরিবারের লোকজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে পল্লী চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়ার পর পরীক্ষা করে কর্তবরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসা জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হন। তারপর ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারকে বিষয়টি জানান। ভুক্তভোগী শিশুটি এখন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বাসায় তেলাপোকা মারার ওষুধ দেওয়ার পর বিষক্রিয়ায় মারা গেছে রাজধানীর বারিধারা এলাকার ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষারের দুই ছেলে। তার মেয়ে এখনো অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গত শনিবার ‘ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড’ নামের একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বাসায় ওষুধ দিয়ে ছয় ঘণ্টা পরে ঢুকে ঘর পরিষ্কার করতে বলেছিলেন। পরিবারটি ৯ ঘণ্টা পরে বাসায় ঢুকে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এ সময় তাদের সবারই পেট খারাপ, বমির মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
ওই পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সেই পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানি পোকামাকড় নিধনের জন্য অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (গ্যাস ট্যাবলেট) ব্যবহার করেছিল, যেটা থেকে বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। সেই গ্যাসের বিষক্রিয়াতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানের ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে রাজধানীতে গত পাঁচ বছরে এই বিষক্রিয়ায় বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চমাত্রার এই কীটনাশক বাসায় ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ বিভিন্নভাবে সাধারণ কীটনাশক হিসেবে দেদার বিক্রি হচ্ছে সারা দেশে।
সূত্র বলছে, রাজধানীসহ সারা দেশে কয়েক শতাধিক পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব কোম্পানির প্রায় ৯৫ ভাগের কোনো অনুমোদন নেই। কৃষি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এসব দেখভাল করার কথা থাকলেও তারাও খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না।
পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান সেবা নিন প্ল্যাটফর্ম লি.-এর চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। অধিক মুনাফার আশায় তারা এক ধরনের নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ব্যবহার করে। আবার অনেকে লিকুইড কেমিক্যাল ব্যবহার করে। কিন্তু কোন মাত্রায় এসব ব্যবহার করতে হয় তার প্রশিক্ষণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।
রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায় অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে দেয়াল লিখন ও অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে চটকদার বিজ্ঞাপন। অথচ চাষাবাদ ছাড়া অন্য কাজে যার ব্যবহার নিষিদ্ধ। বদ্ধ ঘরে এই ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলে যে কারও বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাইকিং করে এসব কীটনাশক বিক্রি করছিলেন কাঞ্চন মিয়া। এ ধরনের কীটনাশক বিক্রির অনুমতি তার আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের অনুমতি লাগে না। দশ বছর ধরে এই ব্যবসা করি। কেউ তো কিছু বলে না। কোথা থেকে এসব পণ্য সংগ্রহ করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশিরভাগ পুরান ঢাকা থেকে সংগ্রহ করি। গাজীপুর সাভার থেকেও এসে দিয়ে যায়। এসব ব্যবহারে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে তা জানেন না বলে জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন কীটনাশক জাতীয় একপ্রকার ওষুধের জেনেটিক বা গ্রুপ নাম হলো অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড। বাজারে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট আকারে ফসটক্সিন, সেলফস, কুইকফস, কুইকফিউম, ডেসিয়াগ্যাস এক্সটি ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়। অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট গ্যাস ট্যাবলেট নামেও পরিচিত। বাতাসের সংস্পর্শে এসে জীবনবিনাশী ভয়াবহ টক্সিক গ্যাস ফসফিন উৎপাদন করে। এই ট্যাবলেট সাধারণত গুদামজাত শস্যের পোকা দমন, ধান ক্ষেতের পোকা দমন, কলাগাছের পোকা দমন ও ইঁদুর দমনে ব্যবহার হয়ে থাকে। গত এক দশকে দেশে এই বিষাক্ত কীটনাশক মানুষের বাসাবাড়িতে ব্যবহার বাড়ছে। দেশের বাজারে ট্যাবলেট আকারে সহজলভ্য। রাজধানীতে ছারপোকা দমনে প্রায় যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে এই ট্যাবলেট।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বালাইনাশক গ্রহণ করলে সেটা দ্রুত ফুসফুসে শোষিত হয় এবং রক্তে মিশে যায়। যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ বালাইনাশক শ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় তাহলে নাক, গলা ও ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারের যে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান রয়েছে এসব বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোন কোন কীটনাশক কোন মাত্রায় কোন কোন কীটপতঙ্গের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে সেটি নির্দিষ্ট করে নিশ্চিত করতে হবে। আমদানির সময়ও বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। অথবা দেশেই যদি তৈরি করতে হয় তাহলে যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের লাইসেন্স নিয়ে উৎপাদন করতে হবে। এটির গুণগত মান থাকছে কি না তারও পরীক্ষা করতে হবে।
পরিবেশ গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি ওই বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানটি অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহার করেছে। যদিও আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত না। আমার মতে এটা আরও বেশি তদন্ত করা উচিত। সরকারের যে প্রতিষ্ঠান এসব বিক্রির অনুমোদন দেয় তাদের এই তদন্ত করে জানানো দরকার কী ধরনের কেমিক্যাল সেখানে ব্যবহার করা হয়েছিল। কারণ পেস্ট কন্ট্রোলের নামে কী ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় এটা জানাটা জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোন ধরনের কীটনাশক কীভাবে ব্যবহার করা হবে তার কোনো নীতিমালা নেই। কীটনাশকগুলো সাধারণ কৃষিজমিতে ব্যবহৃত হয়। ঢাকা শহরে এরকম বিষ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা উচিত। তাছাড়া রাস্তাঘাটে এসব জিনিস অহরহ বিক্রি হচ্ছে। এসবও তদন্তের আওতায় আনতে হবে।
আরও এক কর্মী গ্রেপ্তার : দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় টিটু মোল্লা নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি বালাইনাশক কোম্পানিটির কর্মকর্তা। গত সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভাটারা থানার ওসি আবুল বাসার মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, ওই ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর (৪১) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত্যুর আগে তিনি চিরকুট লিখে গেছেন। তবে সেখানে কি লেখা আছে তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মহাখালীর আমতলী এলাকার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম। পুলিশের ধারণা, অর্পিতা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করতেন অর্পিতা। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মা ফাতেমা কবিরের মৃত্যুর কারণে তিনি দেশে আসেন। এরপর দেশেই ছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্থ ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার তার লণ্ডনে ফেরার কথা ছিল। মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া একটি চিরকুটে (সুইসাইড নোট) তিনি আত্মহত্যার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
মেয়ের মৃত্যুতে শোকে বিবহবল লেখক–কলামিস্ট শাহরিয়ার কবির গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। তবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল বলেন, রাজধানীর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অর্পিতাকে তাঁর মায়ের কবরে দাফন করা হয়েছে। রবিবার তাঁর কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে বনানীর বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
শুক্রবার সকালে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বনানীর একটি বাসা থেকে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যা ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। পরে রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্ত্রী হারান শাহরিয়ার কবির।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এরপর দুপুরে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। এই বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখানে মূলত আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে দেশের রাজনীতিতে যে উত্তাপ দেখা দিয়েছে তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আনিসুল হক গণমাধ্যমে বলেছেন, তাদের এ বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরামর্শ ছিল। বৈঠকে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এ মাসেই জেনেভা যাওয়ার কথা রয়েছে।
পরে বেলা ১টা ১০ মিনিটে মার্কিন দূতাবাসে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে তিনি দূতাবাস থেকে বের হন। রাতে মির্জা ফখরুল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই নীতি দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক হবে আমরা মনে করি বলে রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতকে আমি জানিয়েছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে দেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। দেশের জনগণও তাই মনে করে। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমাদের কোনো আলাপ হয়নি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সম্প্রতি আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছিলেন, “নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন।” তার এমন বক্তব্য নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠলে পরে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেয় আইন মন্ত্রণালয়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কীভাবে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের সংবিধানে কী আছে তা-ও জানতে চেয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।’
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কোনো ধরনের রাখঢাক ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আরও বেশি দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের দূরত্ব এখন স্পষ্ট। আলোচনা আছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পশ্চিমা এ দেশটি হঠাৎ আরও ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্য ছিল না। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে দেশটি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও এ নিয়ে কোনো দ্বিমত করেনি। এরই মধ্যে, ভিসানীতি ঘোষণা করে সরকারকে বড় চাপ দেওয়ার পূর্বাভাস দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। তবে ভিসানীতি যে সরকারের ও আওয়ামী লীগের ওপরই বেশি চাপ তৈরি করেছে, সেটা ভেতরে-বাইরে আলোচনা আছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায় ও কূটনীতি-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অবস্থান পাল্টে নির্বাচনের স্বার্থে প্রয়োজনে সংবিধানের বাইরে যেতে হবে সরকারকে এমন প্রস্তাব দিতে চলেছে। ওই সূত্রগুলো দাবি করেছে, গত মাসের শেষের দিকে অথবা চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পিটার হাস ওই বৈঠকে রাজনৈতিক সমঝোতায় না আসলে সব দলের অংশগ্রহণে জাতীয় সরকারের আদলে একটা কিছু করার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। তা না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধানসম্মত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাব সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও দেওয়া হয়েছে। আনিসুল হকের সঙ্গে শ্রম আইন নিয়েও দীর্ঘ আলাপ করেন এ রাষ্ট্রদূত।
আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, পিটার হাসের ওই প্রস্তাব নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে গেলে তাতে বড় আপত্তি তোলা হয়। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা পাওয়া যাবে না এটা ধরেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুর বার্তা দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে। তারা স্বীকার করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ক্রমেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের অসহযোগিতা করবে ধরে নিয়েই সরকারি দল আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পিটার হাস সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও নির্ধারিত-অনির্ধারিত বৈঠক করা শুরু করেছেন। গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে পিটার হাসকে উদ্দেশ্য করে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রাষ্ট্রদূতরা সীমা লঙ্ঘন করলে আইনি ব্যবস্থা নেবে সরকার।
আগামী নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, পিটার হাসের দৌড়ঝাঁপ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘নাহি ছাড়ি’ অবস্থান আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে।
সরকারের দুই মন্ত্রীও দেশ রূপান্তরের কাছে স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সরকারের বিপক্ষে যেতে শুরু করেছে। ‘অন্যায় হস্তক্ষেপ’ বেড়েছে পিটার হাসের।
আওয়ামী লীগের কূটনীতিসম্পৃক্ত এক নেতা বলেন, সরকার বিকল্প হিসেবে শক্তিশালী দেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করে চলেছে। বিকল্প দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠলে নির্বাচন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে মাইনাস করে চলার এক ধরনের কৌশল গ্রহণ করা হবে। এ কৌশলে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রর সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করা হবে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য দেশ রূপান্তরকে বলেন, ভিসানীতি মূলত সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই ভিসানীতিকে সব গেল বলে ধরে নিয়ে অবস্থান টলমলে করে তুলতে চায়। এরকম অবস্থা আওয়ামী লীগকে একটু চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা যেন সাহস হারিয়ে না ফেলে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করার কৌশল গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এমন কথা শোনা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগ কি তাদের অবস্থান থেকে সরতে শুরু করবে? আবার প্রশ্নও আছে যে, নির্বাচন কি হবে? জাতীয় সরকার আসবে খুব শিগগিরই, এমন গুঞ্জনও রয়েছে জোরালোভাবে। শুধু তাই নয়, বাতিল হওয়া নির্বাচন পদ্ধতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমন গুঞ্জনও শুরু হয়েছে। যদিও এসবে কোনো ভিত্তি রয়েছে মনে করেন না আওয়ামী লীগ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা দাবি করেন, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। এ ইস্যুতে কোনো শক্তির সঙ্গেই আপস করবেন না আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, কোনো দেশের চাওয়ায় বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষের চাওয়া অনুযায়ী সংবিধানসম্মতভাবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, সবার মতো করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে বদ্ধপরিকর।
কূটনীতিসম্পৃক্ত আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের আরেক নেতা বলেন, দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সরকারের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে মনে করা হলেও সেপ্টেম্বরের আগে পশ্চিমা এ দেশটি তার চূড়ান্ত অবস্থান পরিষ্কার করবে না বলে তারা মনে করছেন। ওই নেতা বলেন, সেপ্টেম্বরে ভারত সফর রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মূলত সেই সফরেই বোঝা যাবে সরকার কোনদিকে যাবে। এ নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের ডিপ্লোম্যাসি (পররাষ্ট্রনীতি) পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নীতি। কূটনীতিতে প্রধানমন্ত্রী দেশি-বিদেশি অনেক নেতাকে ছাড়িয়ে গেছেন। সেই আস্থা-বিশ্বাসও প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমাদের রয়েছে।’
এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার হয়ে না ওঠায় সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা দাবি করতেন, দেশটিকে তারা বোঝাতে পেরেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সমালোচনা প্রমাণ করে না যে, ক্ষমতাধর দেশটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের বোঝাপড়া ঠিক আছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণার পরই দেশটির অবস্থান আওয়ামী লীগের পক্ষে আছে এমন কথা কেউ আর বিশ্বাস করছে না।
আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমেরিকাকে মাইনাস ধরেই এগিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের দুই নেতা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আগের চেয়ে বেশি স্পষ্ট হয়ে ওঠায় রাজনীতিতে তারা ‘ব্যাকফুটে’ চলে যাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি একটাই বুঝি, একটাই জানি, আগামী নির্বাচন সংবিধানসম্মতভাবেই হবে। এ জায়গা থেকে একটুও নড়বে না সরকার।’