
চন্দিকা হাথুরুসিংহেই ফিরছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচের পদে। এই শ্রীল ঙ্ক ান বিসিবি’র চাকরি ছেড়ে নিজ দেশের জাতীয় দলের কোচের চাকরিতে গিয়েছিলেন উচ্চ বেতনে। কিš ‘শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সে ঙ্গ তার বিচ্ছেদটা হয়েছে তি ক্ত, দেনা-পাওনা নিয়ে মামলা গড়িয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে। এরপর নিউ সাউথ ওয়েলসে দ্বিতীয় অধ্যায় শেষ করে বাংলাদেশে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছেন হাথুরুসিংহে। তার আগমনবার্তায় সাকিব আল হাসান বলেছেন ‘নো কমেন্টস’। বিসিবি কর্তারা খুশি হলেও ক্রিকেটাররা যে খুব একটা স্বস্তিতে নেই সেটা সাকিবের কথাতেই স্পষ্ট।
আটঘাট বেঁধেই বাংলাদেশে আসছেন হাথুরুসিংহে, সেটা স্পষ্ট। কারণ এরই মধ্যে বিসিবি প্রথমবারের মতো হেড অব প্রোগ্রাম পদে কাউকে নিয়োগ দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড মুর নিয়োগ পেয়েছেন এই পদে, যে পদের কাজ মূলত হাই পারফরম্যান্স ও বাংলাদেশ টাইগারস, এই দুই কর্মসূচি থেকে যেন জাতীয় দল সরাসরি উপকৃত হতে পারে সেটা দেখভাল করা। ক্রিকেট এনএসডাব্লিউতেই দীর্ঘকাল জেনারেল ম্যানেজার ক্রিকেট পারফরম্যান্স ও হেড কোচ ডেভেলপমেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন সাবেক এই উইকেটরক্ষক। ধারণা করা হচ্ছে হাথুরুসিংহের পরামর্শেই বিসিবি নিয়োগ দিয়েছে মুরকে। এই অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশে চলে এসেছেন, আজ সকালে বিসিবিতে তার উপস্থিত হওয়ার কথা।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের পরবর্তী সূচি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে ৩ টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। ইংল্যান্ড দল আসবে ২৪ ফেব্রুয়ারি, নাজমুলের কথা অনুযায়ী বলা যায় সাদা বলের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বাংলাদেশে পা রাখার দিন পাঁচেক আগেই দেশে চলে আসবেন হাথুরুসিংহে, সিলেটে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হোসেনের কথায় মিলেছে তেমনই আভাস, ‘ফেব্রুয়ারির ১৮-২০ তারিখের ভেতরই নতুন কোচ এসে পড়বেন।’
ইংল্যান্ডের সবশেষ বাংলাদেশ সফরের সময় কোচ ছিলেন হাথুরুসিংহেই, ৩ ওয়ানডের সিরিজটা হয়েছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এবং ১-১ সমতার পর শেষ ওয়ানডে ৪ উইকেটে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড। টেস্ট সিরিজেও প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের জয় ২২ রানে আর দ্বিতীয় টেস্টে ১০৮ রানে জিতে ইতিহাস গড়েছিল বাংলাদেশ।
২০১৪ থেকে ২০১৭, এই তিন বছর বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান কোচ ছিলেন হাথুরুসিংহে। এই সময় বাংলাদেশে দেশের মাটিতে টেস্টে হারায় অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে। ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনালে আর আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেমিফাইনালে। তবে এমন সাফল্যের পাশাপাশি সমালোচনাও ছিল তাকে ঘিরে। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ দেওয়া, শততম টেস্টের আগে মাহমুদউল্লাহকে শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফেরত পাঠাতে চাওয়াসহ মুমিনুল হককে টেস্ট দল থেকে বাদ দেওয়ার কঠিন সিদ্ধান্তগুলো তাকে অপ্রিয় করে তুলেছিল ড্রেসিং রুমে।
কাল ঢাকার বিপক্ষে বিপিএলের ম্যাচ শেষে বরিশালের হয়ে খেলা সাকিব আল হাসানের কাছে হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় অধ্যায় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে সাকিব বলেছেন ‘নো কমেন্টস’।
দুই বছরের জন্য হাথুরুসিংহের সঙ্গে চুক্তি বিসিবির, প্রথম বছরেই ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ। আছে ওয়ানডের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপও।
হাথুরুসিংহের পর দায়িত্ব নেওয়া স্টিভ রোডসের চাকরি যাওয়ার প্রধান কারণ তিনি ‘ভালো মানুষ’। ২০১৯ বিশ্বকাপের সময় খেলোয়াড়দের বেশি বেশি ছুটি দিয়েছিলেন, এমন অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে যদিও এই এখতিয়ার ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের। রাসেল ডমিঙ্গোর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ড্রেসিংরুমে কর্র্তৃত্ব না থাকার, সেই সঙ্গে পারফরম্যান্সের পতন। যদিও দেশে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় ও দেশে ভারতকে ওয়ানডে সিরিজে হারানোর কৃতিত্ব দাবি করতেই পারেন ডমিঙ্গো। তবে ডমিঙ্গো মূলত বোর্ড কর্তাদের বিরাগভাজন হয়েছেন বিতর্কিত সাক্ষাৎকার দিয়ে।
বাংলাদেশে দ্বিতীয় অধ্যায়ে হাথুরুসিংহে হয়তো অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিখেই দায়িত্ব পালন করবেন। তবে একটা ব্যাপার নিশ্চিত করেই বলে দেওয়া যায়, দল নির্বাচনে থাকবে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সেই সঙ্গে দলের শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্বের বেলায় কঠোর অবস্থান নেবেন হাথুরুসিংহে। তাতে করে হয়তো বাংলাদেশের কোনো কোনো সিনিয়র ক্রিকেটারকে দলে জায়গা হারাতে হতে পারে, নাও খেলা হতে পারে বিশ্বকাপ।
রানের খেলা ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য এক দিন কাটল কাল। দুই দলের চার ব্যাটারের লড়াইয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও খুলনা টাইগার্স ম্যাচ হয়ে উঠল দারুণ উপভোগ্য। রান উৎসবের ম্যাচে বিপিএলের ইতিহাসে সেরা রান তাড়ার রেকর্ড হলো তাতে। এই গৌরব নিয়ে খুলনাকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারাল কুমিল্লা। দলটির উইন্ডিজ ব্যাটার জনসন চার্লসের বিধ্বংসী সেঞ্চুরির কাছে ম্লান খুলনার তামিম ইকবাল ও শেই হোপের নব্বই ছাড়ানো ইনিংস। তাদের ব্যাটে ২ উইকেটে ২১০ করেছিল খুলনা। অথচ ১১ ছক্কা ও ৫ চারে মাত্র ৫৬ বলে অপরাজিত ১০৭ রানের ইনিংসে চার্লস কুমিল্লাকে অনায়াসে জয় এনে দেন, সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। এ জয়ে ৬ জয়ে সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে বরিশালের পাশে বসলেও রান রেটে তৃতীয় কুমিল্লা।
কাল দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে স্পিন নির্ভর সিলেটের পিচ হয়ে গেল ব্যাটিং নির্ভর। তাই দুই দলের চার ব্যাটারের ব্যাটে চার-ছক্কার বৃষ্টি। তাদের বিধ্বংসী ইনিংস মিলে হলো বিপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ম্যাচ। এই ম্যাচে খুলনা ও কুমিল্লার দুই ইনিংস মিলিয়ে হলো ৪২৩ রান। এর আগে ২০১৯ সালে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ম্যাচে বিপিএলের সর্বোচ্চ ৪৬০ রান হয়েছিল। ম্যাচে প্রথম রানের উৎসবে মাতেন খুলনার দুই ব্যাটার। তামিম ইকবাল বিপিএলে নিজের
তৃতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ফিরে যান ৪ ছক্কা ও ১১ চারে ৬১ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলে। এদিকে শেই হোপও সেঞ্চুরির সুযোগ করে ৭ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৫ বলে ৯১ করে অপরাজিত থাকেন। ১৩ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর তামিম-হোপের জুটি দাঁড়ায় ১৮৪ রানের। বিপিএল ইতিহাসে যা চতুর্থ সেরা জুটি। অথচ এত অর্জন কুমিল্লা টপকে যায় জনসন চার্লসের ব্যাটে। তার সঙ্গে ১২২ রানের জুটিতে বিধ্বংসী ইনিংস ছিল মোহাম্মদ রিজওয়ানেরও। মাত্র ৩৯ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৩ রান করেন পাকিস্তান ওপেনার। দুজনের বিশ্বংসী জুটিতে বিপিএলের সেরা রান তাড়ার রেকর্ড হয়।
প্রথম ম্যাচে তালিকার শীর্ষ দুই দলের একটি হওয়ার চ্যালেঞ্জে কাল ধাক্কা খেল ফরচুন বরিশাল। সাকিবদের হাতে আরও ৫ ম্যাচ আছে। এর মধ্যে দুটি জিতলেও শীর্ষ দুই নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবুও ঢাকার সঙ্গে বিগ বাজেটের দল বরিশালের হারটা যেন মানায় না। সাকিবের বিপিএল পারফরম্যান্স পড়ে যাওয়ার সঙ্গে দলটির ছন্দও যেন হারাল। আসরে এতদিন দারুণ ছন্দে ছিলেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। তবে সিলেটে গিয়ে ব্যাটে আর রান পাচ্ছেন না। আগের ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সঙ্গে তার ২ রান সত্ত্বেও দল জিতেছিল কিন্তু কাল রক্ষা হলো না, সাকিব করলেন ৫ আর দল হারল ঠিক ৫ উইকেটে।
আগে ব্যাট করে বরিশালের সাধারণ সংগ্রহ সত্ত্বেও ঢাকাকে সরাসরি বিজয়ী বলা যাচ্ছিল না ইনিংস বিরতিতে। গত চার ম্যাচে ১০৪, ১০৮ ও ১৪৭ করা ঢাকা বরিশালের সঙ্গে ১৫৭ ছুঁতে পারবে তো! চ্যালেঞ্জটা সহজ করে দেন ঢাকার দুই ওপেনার। ওপেনিংয়ে বদল এনে এ ম্যাচে দারুণ সফল হয়েছে দলটি। সৌম্য সরকারের সঙ্গে মোহাম্মদ মিঠুন আসরে এই প্রথম শুরুতে নামেন। আর ১০ ম্যাচে প্রথমবার ফিফটিও পেলেন। দুজনের ৭.৪ ওভারে ৭৪ রানের জুটি ঢাকাকে জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে দেয়। সৌম্য ২২ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ রান করেন। মিঠুন এতদিন রান-ই পাচ্ছিলেন না। অথচ কাল প্রথম ১৮ বলে ১৮ রানের পর হাত খুলে মেরেছেন মিঠুন। তাই ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৩৬ বলে ৫৪ রান তার ব্যাটে। দলের জয়ে ভূমিকা রাখায় ম্যাচ সেরাও হয়েছেন।
বরিশালের ইনিংস মিডলঅর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় উড়তে পারেনি। দলটির হয়ে নিয়মিত রান করা সাকিব ও ইফতিখার রান না পাওয়ায় বাকিরা অভাব মেটাতে ব্যর্থ। ওপেনিংয়ে এনামুল হক বিজয় ৩৫ বলে ৪২ আর নিচের দিকে মাহমুদউল্লাহ ২৭ বলে ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৩৯ করেন। তবে করিম জানাত ৫ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ১৭ রানের ক্যামিও না খেললে বরিশালের স্কোর আরও কম হতো।
ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত মিরপুর টেস্টে এক দর্শক মাঠে ঢুকে সাকিব আল হাসানের দিকে ছুট দেন। এক মাসের মধ্যে আরও দুবার ঘটল এমন ঘটনা। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বে ঢাকা-সিলেট ম্যাচে এক ভক্ত মাঠে ঢুকে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে জড়িয়ে ধরেন। সিলেটে কাল বরিশাল-ঢাকা ম্যাচের মধ্যে সাকিবকে জড়িয়ে ধরেন পাগলাটে এক দর্শক। ছবিও তোলেন। ক্রিকেটারদের প্রতি ভক্তদের ভালোবাসার প্রতিফলন হলেও এতে আছে ভয়। ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা প্রবলভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয় কান্ডগুলোতে।
রোমাঞ্চকর ফাইনালে ২৩-২২ পয়েন্টে টেকনো মিডিয়াকে হারিয়ে প্রথম কর্পোরেট নারী কাবাডা লিগ শিরোপা জিতেছে ঢাকা টুয়েলভ।
জাতীয় কাবাডি স্টেডিয়ামে ফাইনালের শুরুতে অবশ্য একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করতে দেখা যায় ঢাকা টুয়েলভকে। প্রথম সাত মিনিটে ১০-১ পয়েন্টে এগিয়ে যায় তারা। তবে বাকিটা সময় দারুণভাবে ফিরে আসে টেকনো মিডিয়া। তাতে প্রথমার্ধে দুদলের ব্যবধান দুইয়ে নেমে আসে। বিরতি শেষে ম্যাচের ভাগ্য দুলেছে দুদিকেই। জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক স্মৃতি আক্তার ও কচি রানী ম-লের নৈপুণ্যে ২৯ মিনিট পর্যন্ত খেলায় ছিল ২২-২২ সমতা। ম্যাচের ১১ সেকেন্ড বাকি থাকতে টেকনো মিডিয়ার সোমা রেইড দিয়ে ফেরার পথে পারসু করেন ঢাকা টুয়েলভের অধিনায়ক রেখা আক্তার। অসাধারণ নৈপুণ্যে জয়সূচক এক পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের কোর্টে ফিরলে শুরু হয়ে যায় বিজয়োৎসব। ফাইনাল শেষে রেখা বলেন, ‘ম্যাচের শেষ দিকে আমরা মনোযোগ ধরে রাখতে পারছিলাম না। আমাদের মধ্যে কিছুটা হতাশাও কাজ করছিল। তবে আল্লাহ সহায় ছিল বলে আমাদের চ্যাম্পিয়ন হতে শেষ রেইড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।’
লিওনেল মেসি গত ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে উঁচিয়ে ধরেছেন বিশ্বকাপ ট্রফি। বিশ্বকাপ জয়ের পর এক মাসেরও বেশি সময় পর আর্জেন্টাইন অধিনায়ক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দেশটির রেডিও চ্যানেল ‘উরবানা প্লে’-তে। সাক্ষাৎকারে মেসি জানিয়েছেন, বিশ্বকাপ জয়ের পর কেমন লেগেছে, বিশ্বকাপে কঠিন সময় ছিল কোনটি, ডাচ কোচ ফন ডাইকের সামনে উদযাপনসহ নানা বিষয় নিয়ে। এ সময় ডিয়েগো ম্যারাডোনাকেও স্মরণ করেন মেসি। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ প্রসঙ্গে
আগেও এটা নিয়ে কথা বলেছি। মনে হয় ২০১৪ সালের আগে। বলেছিলাম, সৃষ্টিকর্তা আমাকে বিশ্বকাপ উপহার দেবেন। এরপর ব্রাজিলে কোপা আমেরিকা জিতলাম। তারপর (বিশ্বকাপ জয়) মুহূর্তটার দেখা পেলাম। আমি জানতাম তিনি আমাকে এটা উপহার দেবেন। এটা কীভাবে টের পেয়েছি, বুঝিয়ে বলতে পারব না। জীবনে যা অর্জন করেছি, তার জন্য প্রতিদিনই তাকে ধন্যবাদ জানাই। এর চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারতাম না। যা কিছু অর্জন করেছি, সে জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে কঠিন সময়
সৌদি আরবের সঙ্গে হারটা সবচেয়ে কঠিন মুহূর্ত ছিল। তবে মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল সবচেয়ে কঠিন। ফলাফল পক্ষে এলেও ওই ম্যাচটা আমরা সবচেয়ে বাজে খেলেছি। তবে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এই দলটা না পেলে ম্যাচটা বের করে আনা কঠিন হতো।
ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে নিয়ে
ডিয়েগো ম্যারাডোনার হাত থেকে বিশ্বকাপ ট্রফিটা পেলে খুশি হতাম। তিনি আর্জেন্টিনার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া দেখে যেতেন, জাতীয় দল নিয়ে তার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ট্রফিটা তার হাত থেকে নিতে পারলে দারুণ একটা ছবি হতো! ডিয়েগো ছাড়াও ওপর থেকে আরও যারা আমাদের ভালোবাসে, তাদের ভালোবাসা আমাদের শক্তি জুগিয়েছে।
ফন গাল এর সামনে উদযাপন এবং ভেহর্স্ট প্রসঙ্গে
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচের আগে ফন গাল কী বলেছিলেন তা আমার সতীর্থরা জানিয়েছেন। সেই ঘটনাটি (গোল উদযাপন) সেই কারণে আসলে ঘটে গেছে। আমি আসলে ওই ছবিটা মনে রাখতে চাই না, কিন্তু সেটা সহজাতভাবেই চলে এসেছিল। যা আমি করেছি, তা কোনোভাবেই নিজে থেকে পছন্দ করি না। আমি মিক্সড জোনে ছিলাম এবং ম্যাচ মাত্রই শেষ হয়েছিল। এমন ম্যাচে চিন্তায় ছিলাম পরে অনেক নার্ভাস ছিলাম ওই সময়। তাই এমনটি হয়ে গিয়েছিল।
টাইব্রেকারে মন্তিয়েলের শেষ শট
তখন কেমন লেগেছে, তা বোঝানো কঠিন। অনেক কিছুই মাথায় আসছিল। জয়টা বিশ্বাস হচ্ছিল না। সবাই বলছিল, সবকিছু শেষ হয়েছে। আর আমি ভাবছিলাম, শেষ পর্যন্ত একদম শেষ দিকে এসে জাতীয় দলের হয়ে সবকিছু জিততে পারলাম! কখনো কল্পনা করিনি সবকিছু এভাবে হবে।
বিশ্বকাপ ট্রফিতে চুমু দেওয়া বিষয়ে
ট্রফিটা (মঞ্চে) রাখা ছিল। যা করতে ইচ্ছা হচ্ছিল, তা পারছিলাম না। ট্রফিটা যেন আমাকে ডাকছিল ‘এসো, আমাকে নিয়ে যাও। এখন তুমি আমাকে ছুঁতে পারো।’ তাই যাওয়ার সময় ট্রফিটায় চুমু খাই, ইচ্ছে করছিল।
বিশ্বকাপ ফাইনালের আগের রাত যেভাবে কেটেছে
বিশ্বকাপজুড়ে যা করেছি, সেটাই। আন্তোনিলার সঙ্গে গল্প করেছি। তবে খেলা নিয়ে তেমন কথা বলিনি। প্রতিটি ম্যাচের আগে যা করতাম, সেটাই মেনেছি। নতুন কিছু নয়, একই কাজ করেছি। ঘুমটা ভালো হয়েছিল। বিশ্বকাপজুড়েই ফুরফুরে মেজাজে ছিলাম।
রোজারিওতে উৎসব
বিশ্বকাপ জিতে সেখানে ফিরতে পারার অনুভূতিটা খুব সুন্দর ছিল। আমি মাত্র এক-দুই ঘণ্টা ঘুমাতে পারি। ভোর ৫-৬ টার মধ্যেই লোকজন বুয়েন্স আইয়ার্সে অবিলিস্কে ভিড় জমাতে শুরু করে। বুঝতে পেরেছিলাম উদ্যাপনটা পাগলাটে হবে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষ জমায়েত হয়েছিল, তবে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে
বিশ্বকাপ জয়ের পর এত এত মেসেজ এসেছে যে, কিছুদিনের জন্য আমার ইন্সটাগ্রাম ব্লক করে দিয়েছিল।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মেসি ছোটবেলার (বার্সার) মেসিকে যা বলবেন
আমি বলব, অসাধারণ কিছু অপেক্ষা করছে। এমন কিছু, যা সে ভাবতেও পারেনি। তোমার চলার পথটা সুন্দর হবে, কঠিন সময় আসবে, যা তাকে অতিক্রম করতে হবে। স্বপ্ন দেখায় কখনো হাল ছেড় না। কারণ, শেষ পর্যন্ত সে নিজের প্রাপ্য পুরস্কারটি পাবে এবং সবকিছু ভালোভাবে শেষ হবে, যেন একটা সিনেমা।
ফেডারেশন কাপে গ্রুপ সেরা হতে মোহামেডানের প্রয়োজন ছিল এক পয়েন্ট। গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে শেখ জামালের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে সেই প্রয়োজনটা মিটিয়েছে সাদা-কালোরা। আর ড্র করেও গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে শেখ জামাল। দিনের অপর ম্যাচে রহমতগঞ্জ ২-১ গোলে তলানির আজমপুর এফসি উত্তরাকে হারিয়ে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়েছে।
২৮ মিনিটে অসাধারণ গোলে মোহামেডানকে লিড এনে দেন আরিফ হোসেন। বাঁ-দিকে আক্রমণে উঠে মার্কারকে পরাস্ত করে বাইলাইনের কাছাকাছি থেকে কাছের পোস্টে বল জমা দেন এই তরুণ ফরোয়ার্ড। শেখ জামাল কিপার রাসেল মাহমুদ লিটনও কাছে পোস্টে অবস্থা নিয়েও পারেননি আরিফকে রুখতে। পিছিয়ে পড়ে খোলসমুক্ত হয়ে খেলতে দেখা যায় শেখ জামালের আক্রমণভাগকে। ৪৪ মিনিটে ফল পায় দলটি। বক্সের বাইরে বল বুক দিয়ে নামিয়ে তিন ডিফেন্ডারের সামনে থেকে জোরালো শটে বল জালে জমা দেন স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস। ৭১ মিনিটে আসিফের বুদ্ধিদীপ্ত গোলে ফের এগিয়ে যায় মোহামেডান। বল ক্লিয়ার করতে পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে এসেছিলেন জামাল কিপার লিটন। তবে তার ক্লিয়ারেন্স পেয়ে যান আসিফ। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ফাঁকা পোস্টে বল পাঠান আসিফ। ৭৬ মিনিটে কিপার সুজনের ভুলে গোল হজম করতে হয় মোহামেডানকে। সোলাইমান সিল্লাহ দুর্বল শট আয়ত্তের মধ্যে থাকলেও রুখতে পারেননি সুজন। বল জালে জড়ালে নিশ্চিত হয় জামালের কোয়ার্টার ফাইনাল।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে জেলেখা বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বিগত ৫ মাস যাবৎ তিনি বয়স্ক ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে তার নাম পরিবর্তন করে আমিনা নামে অন্যজনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মেম্বার বাদশার বিরুদ্ধে।
রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলেখা বেগম নন্দুয়ার ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের আ. রহিমের স্ত্রী। পূর্বের চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন।
ভুক্তভোগী বলেন, আমি ভাতার কার্ড পাওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর ১৫০০ টাকা করে পেয়েছিলাম। কিন্তু গত তারিখে আমার টাকার কোনো মেসেজ না আসায় আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমাকে মৃত দেখিয়ে আমিনা নামে ভাতার কার্ড করে দিয়েছেন মেম্বার বাদশাহ।
ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৃত্যুর নিবন্ধন বইয়ের ২০২১ সালের রেজিস্ট্রারে বৃদ্ধার মৃত্যু নিবন্ধিত নেই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এমন একটি সনদ দেওয়ায় তার ভাতাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তিনি এ বিষয়ে আরও বলেন, আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার বাদশাহ আমাকে মৃত দেখিয়ে আরেকজনের নামে কিভাবে টাকা খেয়ে ভাতার টাকা পরিবর্তন করে দেয়! আমি জীবিত থাকার পরও মেম্বার আমাকে মৃত দেখাল। আমি গরিব মানুষ। আমার কোনো ছেলেমেয়ে নাই। এই টাকা দিয়ে ওষুধ খেয়ে বেঁচে আছি। আমি এর বিচার চাই।
মেম্বার বাদশাহ বলেন, প্রথমবারের মতো এমন ভুল করেছি। সামনের দিকে সর্তকতার সাথে কাজ করব।
নন্দুয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারী বলেন, জীবিত মানুষ মৃত দেখিয়ে ভাতার কার্ড পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে মেম্বার যদি করে থাকেন তাহলে খুবই খারাপ করেছেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলেখা বেগম ৭ ডিসেম্বর ২০২১ এ মৃত্যু বরণ করেন। তাই ভাতাটি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে মৃত্যু সনদ যাচাই ছাড়া সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কাউকে মৃত দেখাতে পারবে না- সাংবাদিকের এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের এভাবেই হয়। আমরা এভাবেই করে থাকি, প্রত্যায়নপত্র দেখে প্রতিস্থাপন করে থাকি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমাজসেবা অফিসে প্রেরিত প্রত্যায়নটির কোনো তথ্য ইউনিয়ন পরিষদের ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এটি সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব।
বিরতি কাটিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে আর্জেন্টিনা। গত মার্চে ঘরের মাঠে সবশেষ আকাশী-নীলদের দেখা গিয়েছিল তিন মাস পর আগামী জুনে তারা আসছে এশিয়া সফরে। সফরকালে ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচও খেলবেন লিওনেল মেসিরা।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। চারদিন পর ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার মুখোমুখি হবেন তারা। সেই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছেন দেশটির কোচ লিওনেল স্কালোনি। লিওনেল মেসিকে অধিনায়ক করে ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু নাম। এই দলে এই দলে চমক হিসেবে রয়েছে আলেজান্দ্রো গার্নাচো। যিনি বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনার প্রথম প্রীতি ম্যাচের দলে ছিলেন। তবে চোটের কারণে অভিষেকের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন গার্নাচো। গত বছরের জুলাইয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মূল দলে জায়গা হয় তার। এখন পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে ৩৫ ম্যাচ খেলেছেন এই লেফট উইঙ্গার। এখন পর্যন্ত নিজে করেছেন ছয়টি গোল, করিয়েছেন আরও ছয়টি। এমন পারফরম্যান্স নজর এড়ায়নি স্কালোনির। তাই জাতীয় দলে জায়গা পেতে বেগ পেতে হয়নি।
দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন ওয়াল্টার বেতিনেজ। এছাড়া বেশ কয়েক বছর পর দলে ফিরেছেন লিওনার্দো বলের্দি। ফরাসি ক্লাব মার্সেইয়ের হয়ে চলতি মৌসুমে তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। তবে স্কোয়াডের মাঝ মাঠের ফুটবলারদের নিয়ে কোনো চমক নেই।
তবে এই স্কোয়াডে নেই লাউতারো মার্তিনেজের নাম। গোড়ালির চোটের কারণে এই দুই প্রীতি ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না আর্জেন্টিনা। তবে তার জায়গায় মাঠ মাতাতে দেখা যাবে জিওভানি সিমিওনেকে।
আর্জেন্টিনার ২৭ সদস্যের দল
গোলরক্ষক:
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ (অ্যাস্টন ভিলা), জেরনিমো রুলি (আয়াক্স), ওয়াল্টার বেনিটেজ (পিএসভি)।
ডিফেন্ডার:
নাহুয়েল মোলিনা (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), গঞ্জালো মন্তিয়েল (সেভিয়া), জার্মান পেজেল্লা (রিয়েল বেটিস), ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো (টটেনহ্যাম হটস্পার), লিওনার্দো বলের্দি (অলিম্পিক মার্সেই), নিকোলাস ওতামেন্ডি (বেনফিকা), ফ্যাকুন্ডো মদিনা (আরসি লেন্স), নিকোলাস তাগলিয়াফিকো (লিয়ন), মার্কোস অ্যাকুনা (সেভিলা)।
মিডফিল্ডার:
লিয়ান্দ্রো পেরেদেস (জুভেন্তাস), এনজো ফার্নান্দেজ (চেলসি), গুইডো রদ্রিগেজ (রিয়েল বেটিস), রদ্রিগো ডি পল (অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ), এজেকিয়েল পালাসিওস (বেয়ার লেভারকুসেন), অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার (ব্রাইটন), থিয়াগো আলমাদা (আটলান্টা ইউনাইটেড), জিওভানি লো সেলসো (ভিলারিয়াল)।
ফরোয়ার্ড:
লুকাস ওকাম্পোস (সেভিয়া), অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্তাস), লিওনেল মেসি (পিএসজি), জুলিয়ান আলভারেজ (ম্যানচেস্টার সিটি), জিওভানি সিমিওনে (নাপোলি), আলেজান্দ্রো গার্নাচো (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), নিকোলাস গঞ্জালেজ (ফিওরেন্টিনা)।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামে স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় চাচাতো ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে পলাশ হোসেন (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পলাশ হোসেন ওই গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত পলাশ হোসেনের চাচাতো ভাই সুমন প্রায়ই পলাশের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করত। শনিবার সন্ধ্যায় আবারো উত্ত্যক্ত করে। পলাশ বাড়িতে এলে বিষয়টি তাকে জানায় তার স্ত্রী। এ ঘটনায় পলাশ তার চাচাতো ভাইয়ের কাছে বিষয়টির প্রতিবাদ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সুমন ছুরি দিয়ে পলাশকে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই পলাশ মারা যায়।
মহেশপুর থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। নিহত পলাশ পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন, সঙ্গে কৃষিকাজও করত।
মার্চে ঘরের মাঠে দুটি প্রীতি ম্যাচের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেখা যায়নি আর্জেন্টিনাকে। তিন মাস পর আগামী মাসে তারা খেলবে আরও দুটি প্রীতি ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচের জন্য ২৭ সদস্যের দল ঘোষণা করেছেন লিওনেল স্কালোনি। তবে ঘোষিত সেই দলে নেই লাউতারো মার্তিনেজ।
আর্জেন্টিনার ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস ও ওলে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গোড়ালির চোটের কারণে মার্তিনেজ চিকিৎসাধীন আছেন। তাই তাকে জাতীয় দলের স্কোয়াডে রাখা হয়নি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের হয়ে গোল করেছিলেন। ফাইনালেও তাকে ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে খেলতে দেখা যেতে পারে। তারপরই তিনি মাঠের বাইরে চলে যাবেন। ঐ সময়ে তিনি বিশ্রামে থাকবেন। আর তাই কোচ স্কালোনি তাকে দলে রাখবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের অন্যতম সদস্য মার্তিনেজ। তবে পুরো টুর্নামেন্টে তিনি ব্যাথানাশক ঔষধ খেয়ে খেলছিলেন।
আগামী ১৫ জুন বেইজিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ও ১৯ জুন জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা।
দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কৃষি খাতে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ জন্য কৃষি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে একাধিক পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর ব্যাংকগুলোর বার্ষিক কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রাও বাড়ানো হয়েছে। ১০ মাসেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ফেলেছে ২৪ ব্যাংক। যদিও কোনো কোনো ব্যাংক এখনো ৪০ শতাংশের কম ঋণ বিতরণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ২৬ হাজার ৯৩০ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ ঋণ বিতরণ করতে পেরেছে ২৪ ব্যাংক। তবে অনেক ব্যাংক ঋণ বিতরণে ব্যর্থ হওয়ায় সার্বিক লক্ষ্যমাত্রার ৮৭ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ বিতরণ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। করোনা মহামারী ও বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কৃষির গুরুত্ব ব্যাপকহারে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের মাধ্যমে সহায়তা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সচেষ্ট রয়েছে। এমতাবস্থায় ব্যাংকগুলো যদি এই খাতের প্রতি গুরুত্ব দেয় তবে আসন্ন খাদ্য বা অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা বাংলাদেশের জন্য সহজ হয়ে যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৯২৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক। চলতি বছর ব্যাংকটিকে ৭ কোটি টাকা বিতরণ করার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ৬৫ কোটি টাকা। এর পরের অবস্থানে থাকা বিদেশি ব্যাংক আল ফালাহ বিতরণ করেছে লক্ষ্যমাত্রার ৩৫৯ দশমিক ২৯ শতাংশ। চলতি বছর ২৪ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করার কথা ছিল ব্যাংকটির। কিন্তু ১০ মাসে বিদেশি এই ব্যাংক বিতরণ করেছে ৮৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
২৩৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বেসরকারি খাতের ঢাকা ব্যাংক। ব্যাংকটির ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ছিল ৩৯০ কোটি টাকা। কিন্তু এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকটি ঋণ বিতরণ করেছে ৯২৮ কোটি টাকা। ২০০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করে
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। চলতি বছর ব্যাংকটির শর্ত ছিল ১৪ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ। কিন্তু ১০ মাসেই বিতরণ করেছে ২৮ কোটি টাকা। শতভাগ ঋণ বিতরণের তালিকায় বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে উরি ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এনএ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, এইচএসবিসি ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে বিডিবিএল, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। এছাড়া বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক এশিয়া, এনসিসি, এনআরবি, সীমান্ত, এনআরবি কমার্শিয়াল, ওয়ান, প্রাইম, পূবালী, শাহাজালাল ইসলামী, সিটি, ট্রাস্ট, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল (ইউসিবি) এবং উত্তরা ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা ধরা হলেও ব্যাংকগুলো তার চেয়েও বেশি বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০২ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার ৮৭ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। আর চলতি বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ৭৫৮ কোটি এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ১৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম ১০ মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১০ হাজার ৯৩৪ কোটি বা লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং বিদেশি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ১৫ হাজার ৯৯৫ কোটি বা লক্ষ্যমাত্রার ৮৩ দশমিক ৫১ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। গত ১০ মাসে
কৃষি ও পল্লীঋণ খাতে সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে রাষ্ট্রের বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটি এই সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণ করেছে ৬ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ১০১ শতাংশের বেশি।
আলোচ্য ১০ মাসে শস্য খাতে বিতরণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা, সেচ সরঞ্জাম কিনতে দেওয়া হয়েছে ২২৪ কোটি, কৃষি সরঞ্জাম কিনতে ১৮২ কোটি, গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগির খামারে ৫ হাজার ৭৫৯ কোটি, মৎস্য খাতে ৩ হাজার ৩১৭ কোটি, শস্য গুদামজাত এবং বিপণনে ১৩৫ কোটি, ব্যক্তিগত খাতে এক হাজার ৬৫১ কোটি এবং অন্যান্য খাতে ২ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ২৬ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকার ঋণ শোধ করেছেন কৃষকরা। গত বছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ২২ হাজার ২৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় বেড়েছে ৮ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা। বর্তমানে ব্যাংক খাতে কৃষিঋণের স্থিতি বা পরিমাণ ৫১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে এপ্রিল পর্যন্ত কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
সংলাপে রাজনৈতিক সংকট দূর হওয়ার নজির তৈরি হয়নি এখনো। তবুও নানা সময়ে সংকট নিরসনে রাজনীতিতে সংলাপ করা নিয়ে আলোচনা হয়। সংলাপের আশ্রয় নিতেও দেখা গেছে দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভিন্ন মেরুতে অবস্থান থাকায় আবারও রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় আলোচনায় এসেছে ‘সংলাপ’। যদিও প্রধান দুই দলের নেতারা সংলাপে অনীহা প্রকাশ করে আসছেন। আবার আড়ালে আলাপে দুই দলের আগ্রহও দেখা গেছে।
অন্তরালের সংলাপ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার আড়ালে আলাপের মূল কারণ হলো বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বড় একটি অংশ বয়স্ক হয়ে গেছেন। তাদের অনেকের এবারের পরে নির্বাচন করার সক্ষমতা আর থাকবে না। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকতে গিয়ে সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হয়েছে। এ সময় সংসদ সদস্য হয়ে মর্যাদা নিয়ে চলতে চান তারা। বিএনপির ওই অংশের সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতাও রয়েছেন যারা নির্বাচনে যেতে চান। ফলে নির্বাচনে যেতে আগ্রহী বিএনপির সেই সব নেতা আড়ালে আলাপে থাকতে রাজি আছেন। অন্যদিকে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখতে চাওয়া বিদেশি শক্তিগুলোর সরকারের ওপর চাপ থাকায় বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায় আওয়ামী লীগ। ফলে প্রকাশ্যে সংলাপের আগ্রহ না দেখিয়ে আড়ালের আলাপে আগ্রহী দলটির নেতারা।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বে না। অন্যদিকে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে কোনোভাবেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যাবে না। দুই দলই নিজেদের এমন অনড় অবস্থান দেখাচ্ছে। দুই দলের পরস্পরবিরোধী অবস্থানে সৃষ্ট সংকট সমাধানে বিদেশি তৎপরতা বেশ আগে থেকেই শুরু হয়েছে। নির্বাচন যতই এগিয়ে আসতে শুরু করেছে বিদেশি সেই তৎপরতায়ও গতি এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ-বিএনপি কাউকেই কাছাকাছি অবস্থানে, অর্থাৎ এক মেরুতে আনতে পারেনি এখনো। তবে বিদেশি প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা সংকট নিরসনে দুই দলকেই সংলাপে বসার জন্য বলছেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা সংলাপের মধ্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের রাস্তা ঠিক করতে দুই দলকেই তাগিদ দিয়েছেন। বিদেশিদের অবস্থান হলো আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চান তারা। সে জন্য রাস্তা তৈরি করতে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলই সংলাপে অনীহা দেখিয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যে অনীহার কথা জানিয়েছেন। বিএনপিও প্রায় প্রতিদিনই অনীহা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখছে।
তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এর আগেও সংলাপে সমাধান আসেনি। এবারও সংলাপে সমাধান আসার সম্ভাবনা কম। যদি সংলাপের আগেই এজেন্ডা নির্ধারণ করে সংলাপে বসে, সেই সংলাপ সফল হওয়ার পথ থাকে না।
দুই দলের একাধিক সূত্র দেশ রূপান্তরকে আরও বলেন, প্রকাশ্যে সংলাপ না করে এবার আড়ালে সংলাপ হতে পারে। অনেকটা হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে-বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়ে বসতে পারেন।’ তিনি বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে দেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা সংকট নিরসনে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। ওই সব বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দুই দলেরই অবস্থান জানতে চেয়েছেন তারা। একই সঙ্গে দুই দলকে তারা এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন যে ভিন্নমত থাকলেও স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের স্বার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও অবাধ হওয়া জরুরি। এ কারণে নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার আবশ্যকতা রয়েছে। এই সমঝোতার জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ, কিংবা উভয় পন্থায় দুই দলের মধ্যে ‘আলাপ’ হওয়া দরকার, তা সেটা সংলাপ বা আলোচনা যে নামেই করা হোক না কেন। এদিকে কূটনীতিকদের কাছে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করেছে, বিএনপি কোনো ধরনের সংলাপে আগ্রহী নয়। ২০১৪ সালের নির্বাচন কেন্দ্র করে বিএনপির আচরণ বিদেশিদের কাছে তুলে ধরে সংলাপে বিএনপির অনীহার কথা জানান।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা দাবি করছেন, রাজনীতিতে কোনো কিছু আদায় করতে হলে আন্দোলনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতাসীনদের বাধ্য করতে হয়। কিন্তু সেটা বিএনপি পারছে না। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছিল। সেখানে জনগণকে সম্পৃক্ত করে বিএনপিকে পদত্যাগে বাধ্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিএনপি এখন সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে বলে মনে করছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। মাঠে আওয়ামী লীগের অবস্থান আছে। জনগণ সরকারের সঙ্গে আছে। আর তাদের সঙ্গে জনগণই নেই। তাই তো খালেদা জিয়াকে এখনো মুক্ত করতে পারেনি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘যেকোনো সমস্যার সমাধান সংলাপের মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব। সংলাপে বসলে হয়তো শতভাগ পাব না। তবে গিভ অ্যান্ড টেক তো কিছু হবেই। গণতন্ত্রে সংলাপের কোনো বিকল্প নেই।’
তবে দলটির সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য বলেন, ‘সংলাপ চলছে। মিডিয়ায়, টক শোতে, মাঠে মঞ্চে। এক দল আরেক দলকে উদ্দেশ্য করে যে বক্তব্য দিচ্ছে, তাও এক ধরনের সংলাপ। এসব অনেকেই সংলাপ বলে টের না পেলেও মূলত এটাও সংলাপ।’
আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, সংলাপের ব্যাপারে পশ্চিমা কূটনীতিকেরা তাদের তেমন কোনো পরামর্শ দেননি। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘আমরা তাদের (কূটনীতিক) বলেছি সংলাপের উদ্যোগ আমরা নিয়ে কী করব? তাদের (বিএনপি) যদি কোনো দাবি থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলতে পারে। নির্বাচন কমিশন যদি সুপারিশ করে, সেটা অবশ্যই সরকারের কাছে আসবে। সরকার দেখবে তখন।’
সংলাপ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ভাবনা আমাদের নাই।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন এই সরকারই থাকবে এবং তাদের অধীনে নির্বাচনে হবে। নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সংকট সমাধানে কূটনীতিকদের দূতিয়ালি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও ইতিবাচক বিএনপি। সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, জাতিসংঘসহ বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থার দূতসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। ওই বৈঠকগুলোতে কেন এই সরকারের অধীনে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না তা ব্যাখ্যা করেছে দলটি। বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে যাবে না, সেটিও স্পষ্ট করেছে। একই সঙ্গে কূটনীতিকদের বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে সে বিষয়ে সংলাপের আহ্বান আসলে তাতে সাড়া দেবে বিএনপি। আর এই সংকট মোকাবিলায় কূটনীতিকদের ‘রোল প্লে’ (ভূমিকা রাখা) করার সুযোগ আছে বলে মনে করেন দলটির নেতারা। তাদের মতে, প্রকাশ্যে না হলেও পর্র্দার অন্তরালে সংলাপ হতে পারে। কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনেও গুঞ্জন রয়েছে ভেতর-ভেতর সংলাপ হচ্ছে।
সর্বশেষ ১৮ মে গুলশানের আমেরিকান ক্লাবে মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল চিফ ব্রান্ডন স্ক্যাট, পলিটিক্যাল অফিসার ম্যাথিউ বে, পলিটিক্যাল কনস্যুলার ডেনিয়েল শেরির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
জানতে চাইলে শামা ওবায়েদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকগুলোতে তারা আমাদের অবস্থান জানতে চান। আমরাও আমাদের অবস্থান তুলে ধরি। সর্বশেষ তারা জানতে চেয়েছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে আপনাদের অবস্থান কী। আমরা বলেছি, আন্দোলন চলছে, সেটা আমরা কন্টিনিউ (চালিয়ে যাব) করব। তারা অন্য পক্ষের (ক্ষমতাসীনদের) কথাও শুনছেন। এ অবস্থায় তারা কী করছে (দূতিয়ালি), নাকি অন্য কিছু হচ্ছে সেটা তাদের বিষয়। তবে আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আরেকটি গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হোক, সে ব্যাপারে তাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকুক।’
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক সংলাপের ব্যাপারে কূটনীতিকেরা কোনো বৈঠকেই আমাদের কিছু বলেনি।’
তবে বৈঠকগুলোতে থাকা দলের আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা একাধিকবার সরকারের সঙ্গে সংলাপ করেছি। ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনের সংলাপে পর চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের তিন মাস পর নতুন নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে তারা প্রতারণা করেছে। তাই এজেন্ডা ছাড়া কোনো সংলাপে আমরা যাচ্ছি না। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বলেছি, আনুষ্ঠানিক সংলাপের বিষয়ে আমরা ইতিবাচক। কিন্তু সেটি হতে হবে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে।’
ওই নেতার আরও বলেন, ‘সরকার এখন বিভিন্ন চাপে আছে। আন্তর্জাতিক চাপ তো আগে থেকেই আছে। এখন নতুন করে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ বেড়েছে। এসব চাপ সামাল দিতে তারা সংলাপের নামে নানা কথা বলবে। কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনায় সরকারের মনোভাবে কিছু হলেও আঁচ করা যায়। হয়তো কয়েক দিন পর সরকার আনুষ্ঠানিক সংলাপের জন্য আমন্ত্রণও জানাতে পারে।’
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে বর্তমানে তার মাসিক বেতন প্রায় ৩৪ হাজার। বাবার আর্থিক অবস্থাও অসচ্চল। কিন্তু তার আছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, দামি জমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি। সবমিলে তিনি অন্তত ১০ কোটি টাকার মালিক। দেশের ভেতরে যাতায়াত করেন বিমানে। ইচ্ছে হলে বিদেশেও যান। মাত্র ২৬ বছরে এত স্বল্প বেতনে চাকরি করেও সম্পদের বিশাল পাহাড় গড়ে সবাইকে তাজ্জব লাগিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী মুহাম্মদ এয়াকুব। একই সঙ্গে তিনি সিবিএর সাধারণ সম্পাদক এবং গ্যাস অ্যান্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিব। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ-পদোন্নতি নিয়ে বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রমাণ হয়নি। আমি নিয়মিত আয়কর দাখিল করি। কোথাও অসামঞ্জস্য থাকলে সেটা আরও আগে ধরা পড়ত। আমি দুর্নীতিবাজ না। তবে আবার সুফিও না। সিবিএর নেতা হয়ে মসজিদের ইমাম সাহেবও হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচবার প্রত্যক্ষ ভোটে এবং তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। কিন্তু বেতন-ভাতা ভালো। এর বাইরে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা কোম্পানির লভ্যাংশ পাই। মাছ চাষের জন্য তিনটি পুকুর আছে। গরু পালন করি। দুই ভাই বিদেশে থাকে। এসব টাকা দিয়েই বাড়ি কিনেছি। যমুনা অয়েলের একজন ক্লিনারেরও তো বাড়ি আছে। আমি সিবিএর নেতা। আমার একটা বাড়ি থাকা কি অন্যায়?’
এয়াকুব বলেন, ‘আমি আমার বিরুদ্ধে লেখেন কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আজ পড়লে কাল ভুলে যাবে। হয়তো কিছু সম্মানহানি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও দেশ ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটে আজ আমি কেরানি। কমার্স কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছি। চাইলে আজ থেকে ১০ বছর আগেই কর্মকর্তা হতে পারতাম। কিন্তু সিবিএর নেতা হওয়া একটা নেশা।’
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার বেঙ্গুরা গ্রামের এয়াকুব ১৯৯৪ সালে যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অস্থায়ী পদে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি শুরু করেন। মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানের টাইপিস্ট পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়। দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রভিডেন্টফান্ড ও অন্যান্য খাতে টাকা কর্তন শেষে মাস শেষে তিনি বেতন পান ৩৩ হাজার ৯০৩ টাকা।
জানা গেছে, এত দিন ৪২ হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন এয়াকুব। সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত এলাকা লালখান বাজারে তিনটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার আয়তন প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গফুট। দুটো ইউনিটে তিনি নিজে থাকেন, অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, তিনটি ফ্ল্যাটের আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো হবে। অভিজাত ফ্ল্যাট দুটি দামি আসবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে চার হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছি।
আরও জানা গেছে, নিজস্ব ফ্ল্যাট ছাড়াও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এক্সেল রোডে এয়াকুবের ৪ কাঠা জমিতে টিনশেডের ঘর আছে। ১০টি পরিবারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এয়াকুবের জমি ও ঘরসহ বর্তমানে ওই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, ওই সম্পত্তির মালিক তিনি নন। জমিটি প্রথমে বায়না করলেও পরে আর কেনেননি।
এর বাইরে পতেঙ্গা, বেঙ্গুরাসহ বিভিন্ন স্থানে এয়াকুবের নামে-বেনামে জমি ও অন্যান্য সম্পদ থাকার তথ্য এসেছে দেশ রূপান্তরের কাছে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এয়াকুব একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। তবে দেশ রূপান্তরের কাছে তার দাবি, এই গাড়ির মালিক তার পরিচিত। কিন্তু গাড়িটি তার নয়।
অভিযোগ উঠেছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির ঠিকাদারের শ্রমিক মো. আবদুল নুর ও মো. হাসান ফয়সালের সহযোগিতায় সিবিএ নেতা এয়াকুব কোম্পানির ডিপোতে চাকরি দেওয়ার নামে ৮ জনের কাছ থেকে কুরিয়ার সার্ভিস ও বিকাশের মাধ্যমে ২০১৯ সালে কয়েক দফায় ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি। ওই টাকাও ফেরত পাননি কেউই। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপোতে কর্মরত তৎকালীন কর্মচারী তোতা মিয়ার মাধ্যমে এয়াকুবকে ওই টাকা পাঠানো হয়। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর একাধিক রসিদ দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে।
চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তোতা মিয়া ও চাকরি প্রার্থীদের নানা রকম ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এয়াকুবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই সাধারণ ডায়েরি করেন মো. তোতা মিয়া।
এয়াকুব দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। তিনি কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগকারী আমার কাছে এবং কোম্পানির দায়িত্বশীলদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তাদের অভিযোগ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিএ নেতা এয়াকুব তোতা মিয়াকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দেন। ওই সময় টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে একটা মীমাংসা করা হলেও পরে ওই টাকা ফেরত দেয়নি এয়াকুব। তবে এয়াকুবের দাবি, তিনি কাউকে চাপ প্রয়োগ করেননি। অভিযোগটি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় তোতা মিয়া তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করেন, সিবিএর কিছু নেতা নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতি করলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেন না।
এ বিষয়ে জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দীন আনচারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে, খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কোম্পানির ঢাকা কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি দুদকের এক প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, ক্যাজুয়াল ও কন্ট্রাক্টর ক্যাজুয়াল নিয়োগ, ফার্নেস অয়েল, বিটুমিনসহ বিভিন্ন খাতে এয়াকুব মাসোহারা নেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রধান তেল স্থাপনা ও দেশের সব ডিপো থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়েরও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বদলিসহ নানা রকম শাস্তি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ করেছেন একাধিক কর্মচারী।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বিভিন্ন রেকর্ডপত্র এবং সরেজমিন তথ্য পর্যালোচনা করে এয়াকুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তা প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা দরকার। তার ওই সুপারিশ আমলে নিয়ে কমিশন আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছেন।
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে বর্তমানে তার মাসিক বেতন প্রায় ৩৪ হাজার। বাবার আর্থিক অবস্থাও অসচ্চল। কিন্তু তার আছে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, দামি জমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি। সবমিলে তিনি অন্তত ১০ কোটি টাকার মালিক। দেশের ভেতরে যাতায়াত করেন বিমানে। ইচ্ছে হলে বিদেশেও যান। মাত্র ২৬ বছরে এত স্বল্প বেতনে চাকরি করেও সম্পদের বিশাল পাহাড় গড়ে সবাইকে তাজ্জব লাগিয়ে দিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী মুহাম্মদ এয়াকুব। একই সঙ্গে তিনি সিবিএর সাধারণ সম্পাদক এবং গ্যাস অ্যান্ড অয়েলস ফেডারেশনের মহাসচিব। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ-পদোন্নতি নিয়ে বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রমাণ হয়নি। আমি নিয়মিত আয়কর দাখিল করি। কোথাও অসামঞ্জস্য থাকলে সেটা আরও আগে ধরা পড়ত। আমি দুর্নীতিবাজ না। তবে আবার সুফিও না। সিবিএর নেতা হয়ে মসজিদের ইমাম সাহেবও হওয়া যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচবার প্রত্যক্ষ ভোটে এবং তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। কিন্তু বেতন-ভাতা ভালো। এর বাইরে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা কোম্পানির লভ্যাংশ পাই। মাছ চাষের জন্য তিনটি পুকুর আছে। গরু পালন করি। দুই ভাই বিদেশে থাকে। এসব টাকা দিয়েই বাড়ি কিনেছি। যমুনা অয়েলের একজন ক্লিনারেরও তো বাড়ি আছে। আমি সিবিএর নেতা। আমার একটা বাড়ি থাকা কি অন্যায়?’
এয়াকুব বলেন, ‘আমি আমার বিরুদ্ধে লেখেন কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আজ পড়লে কাল ভুলে যাবে। হয়তো কিছু সম্মানহানি হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেও দেশ ও পারিবারিক প্রেক্ষাপটে আজ আমি কেরানি। কমার্স কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেছি। চাইলে আজ থেকে ১০ বছর আগেই কর্মকর্তা হতে পারতাম। কিন্তু সিবিএর নেতা হওয়া একটা নেশা।’
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার বেঙ্গুরা গ্রামের এয়াকুব ১৯৯৪ সালে যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অস্থায়ী পদে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চাকরি শুরু করেন। মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠানের টাইপিস্ট পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়। দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রভিডেন্টফান্ড ও অন্যান্য খাতে টাকা কর্তন শেষে মাস শেষে তিনি বেতন পান ৩৩ হাজার ৯০৩ টাকা।
জানা গেছে, এত দিন ৪২ হাজার টাকার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন এয়াকুব। সম্প্রতি ভাড়া বাসা ছেড়ে চট্টগ্রাম নগরীর অভিজাত এলাকা লালখান বাজারে তিনটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার আয়তন প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গফুট। দুটো ইউনিটে তিনি নিজে থাকেন, অন্যটি ভাড়া দিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, তিনটি ফ্ল্যাটের আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো হবে। অভিজাত ফ্ল্যাট দুটি দামি আসবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে এয়াকুব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ এবং নিজের জমানো টাকা দিয়ে চার হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট কিনেছি।
আরও জানা গেছে, নিজস্ব ফ্ল্যাট ছাড়াও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এক্সেল রোডে এয়াকুবের ৪ কাঠা জমিতে টিনশেডের ঘর আছে। ১০টি পরিবারের কাছে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এয়াকুবের জমি ও ঘরসহ বর্তমানে ওই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে তিনি অস্বীকার করে বলেছেন, ওই সম্পত্তির মালিক তিনি নন। জমিটি প্রথমে বায়না করলেও পরে আর কেনেননি।
এর বাইরে পতেঙ্গা, বেঙ্গুরাসহ বিভিন্ন স্থানে এয়াকুবের নামে-বেনামে জমি ও অন্যান্য সম্পদ থাকার তথ্য এসেছে দেশ রূপান্তরের কাছে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এয়াকুব একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। তবে দেশ রূপান্তরের কাছে তার দাবি, এই গাড়ির মালিক তার পরিচিত। কিন্তু গাড়িটি তার নয়।
অভিযোগ উঠেছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির ঠিকাদারের শ্রমিক মো. আবদুল নুর ও মো. হাসান ফয়সালের সহযোগিতায় সিবিএ নেতা এয়াকুব কোম্পানির ডিপোতে চাকরি দেওয়ার নামে ৮ জনের কাছ থেকে কুরিয়ার সার্ভিস ও বিকাশের মাধ্যমে ২০১৯ সালে কয়েক দফায় ২৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি। ওই টাকাও ফেরত পাননি কেউই। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ডিপোতে কর্মরত তৎকালীন কর্মচারী তোতা মিয়ার মাধ্যমে এয়াকুবকে ওই টাকা পাঠানো হয়। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর একাধিক রসিদ দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে।
চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তোতা মিয়া ও চাকরি প্রার্থীদের নানা রকম ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এয়াকুবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই সাধারণ ডায়েরি করেন মো. তোতা মিয়া।
এয়াকুব দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। তিনি কোনো ধরনের অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগকারী আমার কাছে এবং কোম্পানির দায়িত্বশীলদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছে দেশ রূপান্তর। তাদের অভিযোগ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিবিএ নেতা এয়াকুব তোতা মিয়াকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ দেন। ওই সময় টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে একটা মীমাংসা করা হলেও পরে ওই টাকা ফেরত দেয়নি এয়াকুব। তবে এয়াকুবের দাবি, তিনি কাউকে চাপ প্রয়োগ করেননি। অভিযোগটি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় তোতা মিয়া তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যমুনা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করেন, সিবিএর কিছু নেতা নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতি করলেও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেন না।
এ বিষয়ে জানতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দীন আনচারীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে, খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কোম্পানির ঢাকা কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি দুদকের এক প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনা অয়েল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, ক্যাজুয়াল ও কন্ট্রাক্টর ক্যাজুয়াল নিয়োগ, ফার্নেস অয়েল, বিটুমিনসহ বিভিন্ন খাতে এয়াকুব মাসোহারা নেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রধান তেল স্থাপনা ও দেশের সব ডিপো থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়েরও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বদলিসহ নানা রকম শাস্তি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ করেছেন একাধিক কর্মচারী।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বিভিন্ন রেকর্ডপত্র এবং সরেজমিন তথ্য পর্যালোচনা করে এয়াকুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক ও গ্রহণযোগ্য হওয়ায় তা প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা দরকার। তার ওই সুপারিশ আমলে নিয়ে কমিশন আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।