
পরপর তিনটি বাংলাদেশ-নেপাল ফাইনাল। একটায় বাংলাদেশের জয়। আরেকবার নেপালের। তৃতীয় ফাইনালের মঞ্চটা হবে কার? এই প্রশ্নের জবাব মিলবে আজ। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে এই দুই দেশ। গত বছর সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডুতে সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে সাবিনা-কৃষ্ণারা। সেই হারের প্রতিশোধ দুমাস পর ঢাকায় নিয়েছে নেপালের অনূর্ধ্ব-১৫ মেয়েরা। তিন দলের আসরে সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট পেয়ে প্রথমবারের মতো সাফের কোনো আসরের শিরোপা জিতে নেয় নেপাল। সাম্প্রতিককালে মুখোমুখি লড়াইয়ে আজ তাই এগিয়ে যাওয়ার হাতছানি দুদলের সামনেই।
সাফের বয়সভিত্তিক আসরগুলোতে প্রথম থেকেই আধিপত্য দেখিয়ে আসছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে শুরু। এ পর্যন্ত সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বয়স শ্রেণিতে মোট সাতটি আসর আয়োজন করেছে। যার তিনটিতে বাংলাদেশের মেয়েরা শিরোপা জিতে নেয়। বাকি চারবার রানার্স-আপ। ২০১৮ সালে নেপালকে অনূর্ধ্ব-১৮ আসরের ফাইনালে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এই পরিসংখ্যানেও আজ দুদলের এগিয়ে যাওয়ার দিন। বড় কোনো অঘটন না ঘটলে সাত পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে থেকে ফাইনালে আসা বাংলাদেশের সম্ভাবনাই আজ বেশি। লিগপর্বে নেপালকে স্বাগতিকরা হারিয়েছিল ৩-১ ব্যবধানে। তবে আজ নেপালকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। দলটি আসরের অন্যতম ফেভারিট ভারতকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে উঠে এসেছে ফাইনালে। তাই তো ছোটনের কথায় নেপালের প্রতি সমীহ স্পষ্ট, ‘ফাইনাল খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও রোমাঞ্চকর ম্যাচ হবে। আশা করি, দর্শকরা উপভোগ করতে পারবে। অবশ্যই নেপাল ভালো দল। গতকাল (মঙ্গলবার) ভারতের বিপক্ষে ওরা জিতেছে। ভারত খুবই শক্তিশালী দল। আমি মনে করি, আগামীকাল (আজ) খুবই ভালো ম্যাচ হবে। ভিন্ন একটি ম্যাচ হবে। নেপাল আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামবে।’
আসর শুরুর আগে ফাইনাল খেলার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিলেন ছোটন। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এবার রাতটা নিজেদের করে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটা স্বাভাবিক ফুটবল খেলে উতরে যাওয়ার প্রত্যাশা ছোটনের, ‘আমাদের যে লক্ষ্য ছিল মেয়েরা সেটা পূরণ করেছে। আমরা শীর্ষ দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছি। আরেকটা ম্যাচ বাকি আছে। যেহেতু ফাইনালে উঠেছি, আমাদের লক্ষ্য বিগত দিনে মেয়েরা কমলাপুরে যে ফুটবল উপহার দিয়েছে, সেটা অব্যাহত রাখবে এবং আমরা ফাইনাল জয়ের জন্যই মাঠে নামব।’ গত বছর ভারতের জামশেদপুরের অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ আসরে নেপালকে গ্রুপপর্বে দুবার হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবারও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে। ছোটনের চাওয়া ধারাটা বজায় থাকুক আজও, ‘নেপালের সঙ্গে আমরা খেলেছি। ওদের খেলাও দেখেছি। ওদের শক্তি-সামর্থ্য বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা সাজিয়েছি। আমরা আমাদের স্বাভাবিক আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলব।’
ভুটানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকে সব আলো কেড়ে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শামসুন্নাহার। খেলা চলাবস্থায় একটা সময় ভুটানের খেলোয়াড়রা তাকে এসে অনুরোধ করেছিল আর বেশি গোল না করার। সে কথা কাল সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার দশা তার, ‘একটা সময় ভুটানের বেশ ক’জন ফুটবলার আমার কাছে এসে বলে পানি খাও, আর গোল দিয়ো না (হাসি)। অনেকে বলেছে তোমার খেলার ফ্যান হয়ে গেলাম। আবার খেলা শেষে সবাই আমাকে ঘিরে ছবিও তুলেছিল।’ আজকের ফাইনাল নিয়ে এই ফরোয়ার্ড প্রত্যয়ী কণ্ঠে বলেন, ‘ফাইনালের লক্ষ্য পূরণের পর চেষ্টা থাকবে ঘরের মাঠে ট্রফি রেখে দেওয়ার। প্রথম ম্যাচ যেভাবে খেলেছি, সেভাবেই খেলব। খেলার মধ্যে আসা সুযোগগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’ চার গোলে আসরের সেরা গোলদাতা হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ শামসুন্নাহারের সামনে। তবে এ নিয়ে একদমই ভাবছেন না অধিনায়ক, ‘দল সবার আগে। আমি চেষ্টা করব দল যেন জয় পায়। গোলের সুযোগ আমার বেলায় যদি ৫০ শতাংশ থাকে, আর অন্যের যদি ৭০ শতাংশ থাকে, তাহলে আমি তাকে দিয়েই গোল করানোর চেষ্টা করব। কারণ এখানে দলের ফল আগে।’
ভারতের বিপক্ষে জয়টাই বদলে দিয়েছে নেপালের মানসিকতা। শিরোপা জয়টা তাই তাদের কাছে অসম্ভব স্বপ্ন নয়। কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরং বাংলাদেশকে খেলা দিয়েই চমকে দেওয়ার কথাও বলেছেন, ‘আশা করি আমরা প্রতিশোধ নিতে পারব এবং আমরা জিতব। মাঠ, দর্শক এবং অন্যান্য দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে। আমরা ভিন্ন কৌশলে খেলব। সবকিছু বদলাবে। আমরা বাংলাদেশের দুর্বল দিক জানি এবং তাদের সেই দুর্বল দিক আমাদের জন্য সুবিধার।’ ভারতের বিপক্ষে প্রথমে পিছিয়ে পড়ে ৩-১ গোলে জিতেছিল নেপাল। সেই ম্যাচে অসাধারণ নৈপুণ্য ছিল অধিনায়ক প্রীতি রায়ের। নেপাল সিনিয়র দলের এই সদস্য বলেন, ‘ফাইনালে উঠতে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমি বিশ্বাস করি আমরা ট্রফি পাওয়ার যোগ্য।’
আজ সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচেই বোঝা যাবে রাতটা হবে কার।
আর মাত্র একটা ম্যাচ জিতলেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ফাইনালে খেলবে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ২০১২ সালে মাঠে গড়ায় বিপিএল, এবারে চলছে নবম আসর। সিলেট বিভাগের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি এখন পর্যন্ত ফাইনালে খেলতে পারেনি, সেরা সাফল্য ২০১৩ সালে সিলেট রয়্যালসের কোয়ালিফায়ার খেলা। কাল খুলনা টাইগার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথম কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ১২ ম্যাচে ৯ জয়ে পাওয়া ১৮ পয়েন্টে সিলেট সবার ওপরে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের পক্ষে পয়েন্টে সিলেটকে ছুঁয়ে ফেলা এবং রান রেটে ছাড়িয়ে যাওয়াটা গাণিতিকভাবে সম্ভব, তাতে সিলেট নামবে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে। তাতেও অবশ্য সিলেটের প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলাটা আটকাবে না।
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার হাত ধরে যেন পুনর্জীবন পেয়েছে বিপিএলের গত কয়েক আসরে ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে ওঠা সিলেট দল। সিক্সার্স, থান্ডার্স, সানরাইজার্স, সুপার স্টারস...কত নামেই তো বিপিএলে আবির্ভূত হয়েছে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশের দলটি। সাবেক অর্থমন্ত্রী ও সিলেটের কৃতী সন্তান আবুল মাল আব্দুল মুহিতের স্নেহদৃষ্টিও ছিল একটা সময়। তবুও মাঠের পারফরম্যান্স ছিল তলানিতে। এবারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফিউচার স্পোর্টস গ্রুপের মালিকানা আর মাশরাফীর যোগ্য নেতৃত্বে সিলেট শীর্ষ দল হিসেবেই সবার আগে নিশ্চিত করে প্লে-অফ পর্ব। আগের ম্যাচটা রংপুর রাইডার্সের কাছে হেরে যাওয়াতে প্রথম কোয়ালিফায়ারে জায়গাটা নিশ্চিত করার জন্য খুলনার বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচে অধিনায়কের ভূমিকায় ফেরেন মাশরাফী, যদিও চোটের শঙ্কা থাকায় বোলিং করেননি। দল ৬ উইকেটে জেতায় ব্যাট করতে নামারও প্রয়োজন পড়েনি। টসটা করতে গিয়ে অবশ্য হেরেছেন মাশরাফী।
খুলনার তামিম ইকবাল নেই, প্রায় তিন সপ্তাহ পর একাদশে ফিরেছিলেন মুনিম শাহরিয়ার। সবশেষ ম্যাচে ছিল শূন্য, ফেরার দিনে করেছেন ৩। আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি একবার জাকির হাসানের কল্যাণে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েও আউট হয়েছেন মাত্র ৭ রান করে। অধিনায়ক শেই হোপ করেন ৯ রান। খুলনার খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষাতেই ছিল অনিচ্ছার ছাপ, কারণ এরপর আরও একটা ম্যাচ থাকলেও কোনো আশাই যে নেই তাদের। মাহমুদুল হাসান জয়ের ৪১ আর নাহিদুল ইসলামের ২২ রানে ৮ উইকেটে ১১৩ রান করতে পারে খুলনা। আগের ম্যাচে মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিমের বোলিংটা না থাকায় ১৭০ রানের বেশি করেও রংপুরের কাছে হেরেছিল সিলেট। এই ম্যাচে পাকিস্তানের দুজন ফিরে এসেছেন, তবে এই ম্যাচের পরই আবার বিদায় নেবেন পিএসএল খেলতে। ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ১ উইকেট আমিরের আর ৪ ওভারে ১০ রান দিয়ে জোড়া শিকার ইমাদের
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় এক আর দুইয়ে তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। হারের বৃত্তে পাক খাওয়া তলানির দল খুলনার বিপক্ষে দুজনেই ব্যর্থ। হৃদয় ৫ ও শান্ত ৩ রানেই আউট। সুযোগটা লুফে নিয়েছেন সিলেটের ছেলে জাকির হাসান। টেস্ট অভিষেকে শতরান করা জাকিরের এটা আসরে দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি, দুটোই খুলনার বিপক্ষে।
তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পে নিহতদের স্মৃতিতে ১ মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ম্যাচ। যেখানে খুলনার ব্যাটিংটাও ছিল ভূমিকম্পের মতোই থরহরি কম্প। রান তাড়ায় সিলেট শুরুতে কাঁপলেও জাকিরের হাফসেঞ্চুরি আর মুশফিকের ৩৯ রানে জয়ের পথেই ছিল সিলেট। শেষে রায়ান বার্ল এর ১২* রান গুলবদিন নাইবের ২* রানে ১৭.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ১১৪ রান করে জয়ের দেখা পায় সিলেট।
২০১৩ মৌসুমের এক দশক পর সিলেটের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি প্লে-অফে। সেবার মাশরাফীর ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের কাছে প্রথম কোয়ালিফায়ার (সেমিফাইনাল) ৪ রানে হেরে যায় মুশফিকের সিলেট। এরপর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চিটাগং কিংসের কাছে হেরে ফাইনালে খেলা হয়নি সিলেটের। এবার অবশ্য সিলেটে জোট বেঁধেছেন মাশরাফী আর মুশফিক। বাংলাদেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক বিপিএলেও অধিনায়ক হিসেবে সফলতম। অন্যদিকে মুশফিক সাতবারের চেষ্টায় একবার ফাইনালে খেলেছেন, তবে জিততে পারেননি।
আর মাত্র একটা ম্যাচ জিতলেই ফাইনালে সিলেট, প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারলেও সুযোগ আছে দ্বিতীয়টায় জিতে ফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার। প্রথম ফাইনাল হাতছানি দিয়ে ডাকছে সিলেটকে, সেই সঙ্গে পঞ্চম বিপিএল শিরোপাও ডাকছে মাশরাফীকে।
অস্ট্রেলিয়ানরা সাধারণত এমন অভ্যাসে অভ্যস্ত না। টেস্ট ম্যাচের আগেরদিনই একাদশ ঘোষণা করে তৈরি থাকে তারা। ওদিকে ভারতও এক-দুটো জায়গা বাদে ইদানীং টেস্ট একাদশ প্রায় ঠিক-ই রাখে। কিন্তু বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি মাঠে গড়ানোর আগে দুই দল একাদশ নিয়ে দারুণ লুকোচুরিতে ব্যস্ত। অস্ট্রেলিয়া এখনো তিনটি জায়গা নিয়ে সংশয়ে। ভারত আরও বেশি, একাদশে পাঁচটি জায়গায় ক্রিকেটার নিশ্চিত হয়নি তাদের। দল নিয়ে তো লুকোচুরি হচ্ছেই, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রথম টেস্টের ভেন্যু নাগপুরের পিচ। দুই দিন আগে থেকেই পিচটিকে চিরাচরিত ভারত হোম সিরিজের অংশ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান মিডিয়ার প্রকাশ করা কিছু ছবিতে পিচটিতে নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পানি কম-বেশি দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। সব মিলিয়ে এমন লুকোচুরির লড়াই সঙ্গে করে শুরু হচ্ছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই চক্রের সবচেয়ে আগ্রহের সিরিজটি। এ সিরিজেই নির্ধারিত হয়ে যাবে লন্ডনের ওভারে ৭-১১ জুনের টেস্ট ফাইনালের প্রতিপক্ষ! ১৩৬ পয়েন্ট ও ৭৫.৫৬ শতাংশ পয়েন্টে শীর্ষে থেকে ৪ টেস্টের সিরিজ খেলতে নামছে অস্ট্রেলিয়া। ভারত ৫৮.৯৩ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে তাদের পরেই।
নাগপুর পিচে বাঁহাতি ব্যাটারদের জন্য বল ড্রপের জায়গাটাতে শুকনো রাখা হয়েছে। ডানহাতি বোলারদের বুটের খোঁচায় এই জায়গাটা নষ্ট হলে বাঁহাতি ব্যাটারদের অপরপ্রান্ত থেকে বোলিং সামলানো কঠিন হবে। কামিন্স অবশ্য এসব বিষয়কে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন, ‘অ্যাওয়েতে খেলার এটা একটা চ্যালেঞ্জ। স্বাগতিক দল সবসময়ই জিততে চাইবে এটা স্বাভাবিক। আমরা যেমন পেস ও বাউন্সি উইকেট তৈরি করি। যে দলই ভারতে আসে... তারা জানে এখানের পিচগুলো বিশেষভাবে তৈরি করা হয়।’ এই চিন্তা বাদ দিয়ে ম্যাচকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানালেন অজি অধিনায়ক। তাই একাদশের কথা উঠতে কৌশলগত কারণে তা আগেই প্রকাশ করেননি, ‘আমি একাদশ টসের আগে বলছি না। তবে এটা নিশ্চিত ক্যামেরুন গ্রিন খেলবে না। দুর্ভাগ্যবশত জশ হ্যাজেলউড ও মিচেল মার্শের মতো ওকেও পাচ্ছি না।’ একাদশ সাজাতে একটু কৌশল নিতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। ভারতের চিন্তা রোহিত শর্মার সঙ্গে অপর ওপেনার নিয়ে। পাঁচ নম্বরে শ্রেয়ার আইয়ারের জায়গায় কে থাকবেন। ঋষভ পান্থের অনুপস্থিতিতে কিপিং কে করবেন। এছাড়া রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে অপর স্পিনার কে ও মোহাম্মদ সামির সঙ্গে অপর পেসার কে হবেন এসব নিয়ে ভাবনায় ভারত। এদিক থেকে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশি চিন্তায় স্বাগতিকরা। তাই পিচ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেননি ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, ‘আপনাদের উচিত পিচ নিয়ে না ভেবে সামনের ৫ দিনে যে ক্রিকেট হবে তাতে নজর দেওয়া। দুই দলের ২২জনই এখানে সেরা ক্রিকেটার। জিততে হলে দুই দলকেই সেরা খেলাটা দিতে হবে। এটাই শেষ কথা। যখন বল বেশি স্পিন করে তখন একজন ব্যাটারকে কী করতে হয় তা সব দল জানে। যারা সফল হবে তারাই জিতবে।’
১৯৩০ সালে ইতিহাসের প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক ছিল উরুগুয়ে। একশো বছর পর ২০৩০ সালেও বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায় তারা। তবে এককভাবে নয়। প্রতিবেশী আর্জেন্টিনা, চিলি, প্যারাগুয়েকে নিয়ে যৌথভাবে আয়োজনের স্বত্ব পেতে প্রার্থিতা জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) এক অনুষ্ঠানে চার দেশের ফুটবল কর্মকর্তা ও লাতিন আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশনের (কনমেবল) প্রেসিডেন্ট আলজান্দ্রো ডমিনগুয়েজের উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট আলেহান্দ্রো ডমিনগুয়েজ বলেন, ঐতিহাসিক কারণেই তাদের স্বত্ব পাওয়া উচিত, ‘২০৩০ সালের বিশ্বকাপ স্রেফ আরেকটি বিশ্বকাপ নয়, এটা ১০০ বছর পূর্তির একটা উদযাপনও। আমরা মনে করি ফিফা এই স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখাবে। প্রথম বিশ্বকাপে সেই ঐতিহাসিক যাত্রা উদযাপন করবে।’ এদিকে ফুটবলের জনপ্রিয়তার কারণে স্বত্ব পাওয়ার আশা আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) প্রেসিডেন্ট ক্লদিও তাপিয়ার, ‘দক্ষিণ আমেরিকানের স্বপ্ন এটা। কেবল প্রথম বিশ্বকাপের শতবর্ষ পূর্তির জন্যই নয়, ফুটবল নিয়ে আমাদের অঞ্চলের আবেগের কারণে এটা পাওয়া দরকার।’ দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের এই চার দেশ এই প্রার্থিতা জানিয়ে একটি ট্যাগলাইনও জুড়ে দিয়েছে, ‘যেখানে ফুটবলের জন্ম হয়েছিল।’ বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পেতে তাদের লড়াই করতে হবে স্পেন-পর্তুগাল ও মরক্কো-সৌদি আরবের বিপক্ষে।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের এ পর্যন্ত চারটি বিশ্বকাপ হয়েছে। ১৯৩০-এ উরুগুয়ের পর চিলি ১৯৬২ সালে, আর্জেন্টিনা ১৯৭৮ সালে এবং ব্রাজিল ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করে।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের পর ভারতের সঙ্গেও হার জুটেছে নিগার সুলতানাদের। ভারতের করা ৫ উইকেটে ১৮৩ রানের জবাবে ১৩১ রান করে ৫২ রানে হারে বাংলাদেশ। মূলত রিচা ঘোষের কাছেই হেরেছে বাংলাদেশ। এই ব্যাটার ৯টি বিশাল ছক্কা ও ৩ চারে মাত্র ৫৬ বলে ৯১ রানে অপরাজিত ছিলেন। সঙ্গে জেমিমাহ রদ্রিগেজও ২৭ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের ইনিংসে ঝড়ো ব্যাটিং করতে পারেনি কেউই। ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ৩২ বলে ৩২ ও অধিনায়ক নিগার ৩৬ বলে ৪০ রান করেন।
এর আগে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের সঙ্গে ৬ উইকেটে হেরেছিল নারীরা। বাংলাদেশের দেওয়া মাত্র ১০১ রানের লক্ষ্য ৪ ওভার হারে রেখে টপকে যায় পাকিস্তান।
আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজের ম্যাচগুলো হবে মে মাসে, ইংল্যান্ডের এসেক্স কাউন্টি ভেন্যু চেমসফোর্ডে। নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক জালাল ইউনুস। মে মাসে বৃষ্টিবহুল আবহাওয়ার কারণে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড সিরিজটি আয়োজন করতে চাইছিল ইংল্যান্ডে। কারণ বাংলাদেশকে ৩-০তে হারাতে পারলে আয়ারল্যান্ডের সরাসরি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা সম্ভব। আর ঘরের মাঠে বৃষ্টিতে কোনো ম্যাচ যাতে প- না হয়, তা নিশ্চিতেই ম্যাচগুলো ইংল্যান্ডে আয়োজনের ভাবনা আয়ারল্যান্ডের। বিসিবিও সায় দিয়েছে এতে, তাই চেমসফোর্ডে ৯, ১২ ও ১৪ মে হবে ওয়ানডেগুলো। ৭ তারিখে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ। করোনার কারণে সিরিজটা আগে খেলা সম্ভব হয়নি।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।