
ইপিএলে ৪৮ মিনিটের মধ্যে দুই গোলে লিডসের সঙ্গে পিছিয়ে পড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তবে মার্কাস রাশফোর্ড আর জ্যাডন সানচোর দুগোলে ঘরের মাঠে হার এড়িয়েছে ম্যানইউ। এক পয়েন্ট তুলে নিয়ে ২২ ম্যাচে সংগ্রহ বাড়িয়েছে ৪৩-এ।
এর আগে দুবার বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শিরোপা খুব কাছে গিয়েও তা ছোঁয়া হয়নি। সেই আক্ষেপ ভুলতেই অনন্য রূপে উদ্ভাসিত হয়েছিলেন শামসুন্নাহার। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন আদর করে ডাকেন চাম্পু বলে। সেই চাম্পুই দেশকে আরেকবার শিরোপা জয়ের উপলক্ষ এনে দিয়েছেন সামনে থেকে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচ গোল করে সবাইকে ছাড়িয়ে জিতেছেন সর্বোচ্চ গোলদাতার খেতাব। সেই স্বীকৃতি নিয়ে মঞ্চ ছাড়তে না ছাড়তেই উচ্চারিত হয় বাংলাদেশ অধিনায়কের নাম। টুর্নামেন্ট সেরা স্বীকৃতিটাও নিজের করে নিয়েছেন তিনি। অথচ প্রথম ম্যাচে পাওয়া মাথায় আঘাত পুরোটা আসরেই ভুগিয়েছে তাকে। তবে সেই চোটকে পাত্তা দেননি। দেশের স্বার্থে ফাইনাল দিয়েছেন সামর্থ্যরে পুরোটুকু। তাতেই মাথা উঁচু করে বলতে পারছেন, ‘আমিও শিরোপা এনে দিতে পারি।’
ফাইনালে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি ছিল শামসুন্নাহারের। গড়নে ছোটখাটো। তবে মাথায় বাঁধা গোলাপি রঙা ব্যান্ড আর বল পায়ে গতির ঝড় তুলে নিজেকে আলাদা করেই চিনিয়েছেন সিনিয়র জাতীয় দলকে গত সেপ্টেম্বরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতাতে বড় ভূমিকা রাখা ফরোয়ার্ড। ক্যারিয়ারে অনেকবার শিরোপা উৎসব করেছেন। তবে আগের দুবার হয়নি বলেই এই আসরের শিরোপার মুখিয়ে থাকাটা অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি, ‘অনেক শিহরণ অনুভব করছি। এর আগে দুই আসরে অধিনায়কত্ব করে ফাইনাল খেলেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। এই প্রথম শিরোপা জিতলাম। আমাকে নিয়ে সবার একটা আক্ষেপ ছিল। সবাই বলত, তুমি কেন শিরোপা আনতে পার না? তোমার হাতে ট্রফি নেই।’ একটু থেমে বলতে শুরু করলেন, ‘এবার আমি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েছি, আশা করেছি, এবার ঘরের মাঠে খেলা, ট্রফিটা যেন ঘরেই থাকে। সবচেয়ে বড় পাওয়া অধিনায়ক হিসেবে আমি চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, আমার দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এটা ভাগ্যের ব্যাপার। দলের সবার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা।’ প্রথম ম্যাচে মাথায় চোট পেয়ে কিছুক্ষণের জন্য স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছিলেন শামসুন্নাহার। সেই কনকাশনের প্রভাব ছিল পুরো আসরেই। তবে একটা বারের জন্যও ভাবেননি মাঠের বাইরে থাকার, ‘আমি চোট পেয়েছিলাম, কিন্তু আমি যদি না থাকি তাহলে আমার দলের ইয়ে হয়ে যাবে (মনোবল ভেঙে যাবে)। তাই খেলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং আমি পেরেছি।’
কমলাপুরের কাল রাতে উৎসবের কেন্দ্রে ছিলেন শামসুন্নাহার। তবে পুরো আসরে শাহেদা আক্তার রিপা যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, তাতে তাকে এই সাফল্যের পার্শ্বনায়ক বলাই যায়। বিশেষ করে ফাইনালে আরেকবার রিপা নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন নজরকাড়া ফুটবলে। প্রথম গোল করিয়েছেন। এরপর বদলি উন্নতি খাতুনকে দিয়ে করিয়েছেন দলের শেষ গোলটি। দুবছর আগে এই মাঠেই সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিততে বড় ভূমিকা ছিল রিপার। করেছিলেন আসর সেরা ৫ গোল। এই আসরেও করেছেন তিন গোল। বয়সভিত্তিক পর্যায়ে এমন পারফরম্যান্সের পর রিপার স্বপ্ন এখন সিনিয়র জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া, ‘এর আগে এই মাঠে অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম, এবার অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়ন হলাম। অবশ্যই ভালো লাগছে। গোলটা করার পর মনে হচ্ছিল কাপটা এবার আমরাই নেব। ভুটান ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছিলাম বলে আক্ষেপ ছিল। সেটা এখন দূর হয়ে গেছে। এখন লক্ষ্য সিনিয়র দলে জায়গা পাওয়া।’
উৎসবের ভিড়ে দলের সাফল্যের নেপথ্যের নায়ক গোলাম রব্বানী ছোটনকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে সংবাদকর্মীদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জাগরণে অগ্রণী ভূমিকা রাখা এই কোচ এবারের সাফল্যের কৃতিত্ব দেন অনেকটাই স্নেহের ‘চাম্পুকে’। আসরসেরা গোলকিপার রুপনা চাকমার প্রশংসাও ঝরেছে তার কণ্ঠে, ‘শামসুন্নাহার আমাদের কী প্লেয়ার। আমার দৃষ্টিতে দলের জন্য সে আলাদা অনুপ্রেরণা। আর আমি সবসময় বলেছি রুপনা দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। গত রাতে ওকে বলেছিলাম আবারও তোমার সামনে সেরা প্রমাণ দেওয়ার সুযোগ। সেটা সে দেখিয়েছে।’ ছোটন তার শিষ্যদের মধ্যে অমিয় সম্ভাবনা দেখছেন, ‘মারিয়া মান্ডারা ২০১৪ সাল থেকে খেলে একটা পর্যায়ে এসেছে। তবে আমি মনে করি এই দলের মেয়েরা যদি পর্যাপ্ত সুযোগ পায়, তবে মারিয়াদেরও একটা সময় ছাড়িয়ে যেতে পারবে।’
এ লড়াইয়ে থাকার কথা ছিল ফরচুন বরিশালের। কিছু ম্যাচ আগেও তারা সাত দলের মাঝে ছিল দ্বিতীয়। অথচ গত ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হেরে ক্ষতিটা হয়েছে বরিশালের। ওই দুই পয়েন্টে এখন শীর্ষ দুইয়ের লড়াইয়ে বেশ ভালোভাবেই আছে কুমিল্লা। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে কোয়ালিফায়ার ১-এ ওঠার লড়াই আজ বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। দুপুর ২টায় শুরু এ ম্যাচ হারলে এলিমিনেটরে চলে যেতে হবে, তখন ওই ম্যাচে হারলে বিদায় আর জিতলেও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। তার চেয়ে আজ জিতলে সরাসরি কোয়ালিফায়ার ১ হয়ে ফাইনালে পা রাখার হাতছানি। এ ম্যাচটি তাই অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনাল। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে জিতলেও শীর্ষ দুইয়ে ওঠার সুযোগ নেই গতবারের রানার্সআপ বরিশালের।
পিএসএলের ব্যস্ততায় বেশিরভাগ পাকিস্তানি ক্রিকেটার চলে যাওয়ায় কুমিল্লা ও রংপুরে একটু ছন্দপতন হয়েছে। অবশ্য একমাত্র পাকিস্তানি হিসেবে আজও খেলবেন কুমিল্লার মোহাম্মদ রিজওয়ান। এদিকে নকআউট পর্ব নিশ্চিত করে দল আরও শক্তিশালী করেছে কুমিল্লা। আন্দ্রে রাসেল ও সুনিল নারাইনকে উড়িয়ে এনে গত ম্যাচে দারুণ জয়ও পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। আজও দলটির জয়ের চিন্তায় আছেন এই তারকারা। কুমিল্লার সহকারী কোচ হুমায়ন কবির শাহিন জানান, ‘(তালিকায়) এক, দুই তো সবার আশা থাকে, আমাদেরও আছে। কাল (আজ) যদি আমরা ভালো করতে পারি, তাহলে তো দুইয়ে থাকব তখন একটা ম্যাচ বেশি পাব।’ রিজওয়ানের বদলে আজকের ম্যাচের পর কুমিল্লায় যোগ হবেন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির নিয়মিত খেলোয়াড় মঈন আলি। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে একটু আগেই বাংলাদেশে আসছেন তিনি। এ ছাড়া আজ ইনজুরি কাটিয়ে লিটন দাশও একাদশে ফিরবেন।
রংপুর গত ম্যাচে নতুন যোগ দেওয়া রহমানউল্লাহ গুরবাজের ব্যাটে জিতলেও এ ম্যাচে পাচ্ছে না হারিস রউফকে। তার বদলে আফগানিস্তান পেসার নাভিন উল হককে এনেছে। টম কোহলার-চ্যাডমোর দলটির অপর নতুন মুখ। এর আগে শোয়েব মালিককেও পিএসএল ব্যস্ততার কারণে হারিয়েছে রংপুর। এ ছাড়া খুব একটা বড় নাম না থাকায় শীর্ষ দুইয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে কুমিল্লার চ্যালেঞ্জটা বেশ কঠিন হবে দলটির জন্য।
৬ মাস পর ক্রিকেটে ফিরেছেন, অথচ হাঁটুর ইনজুরির জড়তা বিন্দুমাত্র নেই রবীন্দ্র জাদেজার। বরং ১১তম ৫ উইকেট নিয়ে নাগপুর টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দিনই এগিয়ে দিলেন ভারতকে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭৭ রানে গুঁড়িয়ে গেছে টসজয়ী অস্ট্রেলিয়া। জবাবে রোহিত শর্মার অপরাজিত ফিফটিতে ভারত দিন শেষে ১ উইকেটে ৭৭ রান তুলেছে।
শুধু ৫ উইকেট বললেও জাদেজার প্রভাবকে খাটো করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস বড় করার চেষ্টায় যে তিন ব্যাটার এগোচ্ছিলেন তিনজনকেই ফিরিয়েছেন এ স্পিনার। মার্নাস লাবুশেন, স্টিভেন স্মিখ ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব তিনজনই জাদেজার শিকার হন। এ ছাড়া হাল ধরতে যাওয়া অপর ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারিকে ফিরিয়ে দারুণ মাইলফলক গড়েছেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্টে ৪৫০ উইকেট নেওয়া দ্বিতীয় দ্রুততম বোলার তিনি। সাদা পোশাকে ৪৫০ বা তার বেশি উইকেট নেওয়া মাত্র নবম বোলার অশ্বিন। সবচেয়ে দ্রুততম ৮০ ম্যাচে ৪৫০ ছোঁয়া মুত্তিয়া মুরালিধরন। এ ছাড়া ভারতীয়দের মধ্যে অনীল কুম্বলের (৬১৯) পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছেন অশ্বিন। তার শিকার এখন ৪৫২টি।
টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ভয়াবহ শুরু পায় অস্ট্রেলিয়া। মাত্র ২ রানে দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজা বিদায় নেন। এরপর লাবুশেন ও স্মিথের ব্যাটে এ বিপর্যয় সামাল দেয় অস্ট্রেলিয়া। অথচ মাত্র দুই বলে লাবুশেন ও ম্যাট রেনশকে তুলে নিয়ে আবারও অস্ট্রেলিয়াকে পথহারা করেন জাদেজা। পরে নিজের তৃতীয় শিকার স্মিথকে তুলে নিয়ে সফরকারীদের আরও বিপদে ফেলেন এ স্পিনার। টেস্টে এ নিয়ে তৃতীয়বার জাদেজার শিকার হলেন স্মিথ। এই ব্যাটারের ক্যারিয়ারে কোনো এক বোলারের কাছে সর্বোচ্চবার আউট হওয়ার নজির। ইনিংসের বাকি সময় জাদেজা ও অশ্বিনের ঘূর্ণিতে আর ইনিংস বড় করতে পারেনি অজিরা। এতে ২০০৫ অ্যাশেজের পর এই প্রথম কোনো টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেই দুইশর কমে অলআউটের লজ্জায় পড়ল অস্ট্রেলিয়া।
অথচ একই পিচে বিপরীত চিত্র ভারতের ব্যাটিংয়ে। স্বাগতিক স্পিনাররা যেমন দাপুটে ছিলেন তেমনি কার্যকর হতে ব্যর্থ অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়ন ও টড মারফি। অভিষিক্ত মারফি দিন শেষের আগের ওভারে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন। তবে ২০ রান করা লোকেশ রাহুল ভুল শট না খেললে উইকেট শূন্যই থাকতে হতো অস্ট্রেলিয়া। নাগপুরের পিচকে স্পিন ভয়ংকর বলা হলেও তাতে খুবই সাবলীল ছিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ওয়ানডে স্টাইলে ৬৯ বলে ৫৬ রানের ইনিংসে ১টি ছক্কা ও ৯টি চার আছে তার। আজ দিনের শুরুতে থিতু হওয়া রোহিতকে না ফেরালে কপালে দুঃখ আছে অস্ট্রেলিয়ার।
চোটের কারণে এমবাপ্পে ছিলেন না। তবে ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছিলেন নেইমার। ছিলেন লিওনেল মেসিও। পেনাল্টি উপহার দিয়ে সার্জিও রামোস দলকে পিছিয়ে দিলেও প্রথমার্ধে তিনিই ফিরিয়েছিলেন পিএসজিকে। তবুও মার্শেইয়ের কাছে হার ঠেকাতে পারেনি পিএসজি। গতবারের মতো এবারও ফ্রেঞ্চ কাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে তারা।
গেলবার শেষ ১৬র ম্যাচে নিসের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য থাকার পর সাডেন ডেথে গিয়ে হেরে যায় পিএসজি। পরে লিগ শিরোপা জিতলেও ম্যানেজার মরিসিও পচেত্তিনোকে বরখাস্ত করে নিস থেকে মার্শেইয়ে জন্ম নেওয়া ক্রিস্তফ গালতিয়েরকে মেসি-নেইমাদের কোচ করে আনে পিএসজি। তার অধীনে লিগে শীর্ষস্থান নিয়ে এগিয়ে চললেও কাপ থেকে বিদায় নিল পিএসজি।
মার্শেইয়ের মাঠে ম্যাচের ৩১ মিনিটে চেঙ্গিস আন্দারকে রামোস ফাউল করলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। গোল করেন চিলির বর্ষীয়ান ফরোয়ার্ড অ্যালেক্সিস সানচেজ। ৩৮ মিনিটে ফ্রি-কিক পোস্টে রাখতে পারেননি মেসি। দুই মিনিট পর ফ্লিক থেকে বল পেয়ে নেইমারের নেওয়া শট বাধা পায় দূরের পোস্টে। বিরতির ঠিক আগে নেইমারের নেওয়া কর্নার কিক থেকে দারুণ এক হেডে রামোস সমতা ফেরান পিএসজির।
৫৭ মিনিটে আবারও ব্যবধান বাড়ায় মার্শেই। অবশ্য এই গোলে দায় রয়েছে পিএসজির রক্ষণভাগের। নিজেদের অর্ধে থ্রো-ইনে জটলায় বল পেয়ে যান সানচেজ। তার শট একজন ফেরালেও আলগা বলে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন ইউক্রেনের মিডফিল্ডার রুসলান মালিনোভস্কি।
সমতায় ফিরতে চাপ সৃষ্টি করে পিএসজি। তবে তাদের একের পর এক আক্রমণ দারুণ দৃঢ়তায় ঠেকিয়ে দেয় মার্শেইয়ের গোলরক্ষক পাউ লোপেজ। দুর্ভাগ্যও সঙ্গী হয় পিএসজির। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে মেন্দেসের শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। আলগা বলে শট নিয়েছিলেন রামোস। বল জালে পাঠালেও অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল। পরের মিনিটে মেসির ক্রস থেকে ফাঁকায় হেড নিয়েছিলেন রামোস। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর থাকায় সহজেই ফেরান লোপেজ। মার্শেইয়ের সঙ্গে শেষ ২৭ দেখায় দ্বিতীয় হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় পিএসজিকে।
ম্যাচ শেষে কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের বলেন, ‘বিরতির পর একটি গোল হজম করি এবং সেই মুহূর্ত থেকে আমরা অনেক ভুল করেছি। হতাশা আছে, কিন্তু আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে।’ কাল লিগ ম্যাচে মোনাকোর মুখোমুখি হবে পিএসজি। এরপর মঙ্গলবার রাতে খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে।
এক রাতে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মিসরের আল আহলিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথমার্ধে ভিনি জুনিয়রের গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। ৪৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ভালভের্দে। ৬৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ দেন আল আহলির আলি। ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় ও অষ্টম মিনিটে ব্যবধান বাড়ান আরিবাস। আগামীকাল রাতে আল হিলালের বিপক্ষে ফাইনাল খেলবে রিয়াল।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তিন সংস্করণের পূর্ণাঙ্গ সফরে শক্ত দল নিয়ে আসছে আয়ারল্যান্ড। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মূলপর্বে ইংল্যান্ড ও উইন্ডিজকে হারানোর দলের সবাই আছে। আয়ারল্যান্ড টেস্ট দল : অ্যান্ড্রু বলবার্নি (অধিনায়ক) মার্ক অ্যাডেইর, কার্টিস ক্যাম্ফার, মারে কামিন্স, জর্জ ডকরেল, গ্রাহাম হিউম, ম্যাথিউ হাম্ফ্রেস, অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রায়ান, ব্যারি ম্যাকক্যার্থি, জেমস ম্যাককলাম, পিটার মুর, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট। টি-টোয়েন্টি দলে যোগ দেবেন : ক্রেইগ ইয়ং, পল স্টারলিং, কনর ওলফার্ট, গ্যারেথ ডেলানি, রস অ্যাডেইর। ওয়ানডে দলে যোগ দেবেন : গ্যারেথ ডেলানি, স্টেফেন ডোহেনি, জস লিটল, পল স্টারলিং।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।