
গতকাল ছিল ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ২২তম জন্মদিন। বিশেষ দিনটি এই তরুণ রাঙালেন দারুণ এক হ্যাটট্রিকে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথমপর্বের শেষ ম্যাচে আজমপুর এফসি উত্তরার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন ফাহিম। হ্যাটট্রিক করেছেন ফাহিমের আক্রমণভাগের সতীর্থ এলিটা কিংসলেও। ময়মনসিংহ স্টেডিয়ামে হওয়া ম্যাচে আবাহনী পেয়েছে ৭-০ গোলের অনায়াস জয়। শীর্ষে থাকা বসুন্ধরা কিংসের কাছে আগের ম্যাচে ভালো খেলেও হারের তেতো স্বাদ পেতে হয়েছিল আবাহনীকে। যে হারটা শিরোপা লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছিল। কালকের জয়ে এখন বসুন্ধরার সঙ্গে আবাহনীর ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ৯ পয়েন্ট।
১০ ম্যাচ শেষে আবাহনীর ৬ জয় ও ৩ ড্রয়ে ২১ পয়েন্ট। বসুন্ধরা দশে দশ জয়ে ৩০ পয়েন্ট এগিয়ে যাচ্ছে টানা চতুর্থ শিরোপার দিকে। দ্বিতীয়পর্বে বসুন্ধরা বড় কোনো অঘটনের শিকার না হলে তাদের পেছনে ফেলা আবাহনীর জন্য প্রায় অসম্ভব। তারপরও স্থানীয়দের জ্বলে ওঠার ম্যাচে বড় জয় আবাহনীকে দেখাবে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন।
এর আগে প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে মাত্র একটি ম্যাচে সেরা একাদশে খেলার সুযোগ হয়েছিল ফাহিমের। আবাহনীর আক্রমণভাগের দুই তারকা দানিয়েল কলিনদ্রেস ও রাফায়েল আগুস্তোর চোটে গতকাল সুযোগ আসে শুরুর একাদশে। ফাহিম মূলত খেলেন লেফট উইঙ্গার হিসেবে। আবাহনীতে যে জায়গাটা দখল করে আছেন কোস্টারিকান কলিনদ্রেস। এই মৌসুমে ভালো ফর্মে আছেন এই বিশ্বকাপ তারকা। তাই ফাহিমের খেলার সুযোগ খুব কম। তবে সুযোগ পেলে যে নিজেকে প্রমাণ দিতে জানেন, তা সাইফের জার্সিতেই বুঝিয়ে এসেছেন অতীতে। গত লিগে ছয় গোল করার পাশাপাশি করিয়েছিলেন ১০ গোল। কাল ম্যাচ শেষে ফোনে ফাহিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আজ (গতকাল) আমার ২২তম জন্মদিন। বিশেষ দিনে ক্লাব আমাকে শুরু থেকে খেলার সুযোগ দিয়েছিল। মাঠে নামার আগে বিশেষ কিছু করার লক্ষ্য ছিল। প্রিমিয়ার লিগে এটি আমার প্রথম হ্যাটট্রিক। এ দিনটিতে যিনি আমাকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিলেন, হ্যাটট্রিকটা আমার মাকে উৎসর্গ করছি।’
ফাহিমের এই হ্যাটট্রিকের মাহাত্ম্য অনেক। ২০২১ সালে শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল তার। গত বছর বাংলাদেশের সবক’টি ম্যাচের স্কোয়াডে ছিলেন ফাহিম। তবে খেলার সেভাবে সুযোগ পাননি। এই লিগে গোল এবং খেলার পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ায় জাতীয় দল থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। এই হ্যাটট্রিকের পর নিশ্চয় জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ফাহিমকে বাদ দিতে দ্বিতীয়বার ভাববেন। ফাহিম বিশ্বাস করেন নিয়মিত খেলার সুযোগ পেলে তিনি আরও গোল করতেন, ‘এখানে (আবাহনী) টিম কম্বিনেশনের কারণেই হয়তো নিয়মিত খেলার সুযোগ পাচ্ছি না। যতটুকু খেলেছি বদলি হিসেবে ৫ বা ১০ মিনিটের জন্য। আজকের এই পারফরম্যান্স আমাকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। যদি জাতীয় দলে সুযোগ পাই, চেষ্টা করব এই ফর্মটাকে ধরে রাখার।’
আবাহনীর বড় জয়ে এলিটা কিংসলেরও আছে বড় অবদান। নাগরিকত্ব বদলের পর এ মৌসুমে দল বদলে আবাহনীতে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। লিগে এর আগে ছিল চার গোল। গতকাল লিগের প্রথমপর্বে
তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছেন এলিটা। ফাহিম-এলিটার গোল উৎসবের দিনে জালের দেখা পেয়েছেন নাবিব নেওয়াজ জীবনও। স্কোরলাইন ৭-০ হলেও আবাহনী উত্তরার গোল দরজা খুলতে পারে ৩৫ মিনিটে। রহমত মিয়ার লং বল পেয়ে আড়াআড়ি পাস দেন পিটার নওরাহ। ডান পায়ের ভলিতে গোল করেন ফাহিম। প্রথমপর্বে ওই একটাই গোল। তবে বিরতি থেকে ফিরে উত্তরার রক্ষণভাগকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয় আবাহনী। ৫৪ মিনিটে রহমতের ক্রসে এলিটার হেড লক্ষ্যভেদ করে। তিন মিনিট পর এলিটার সহায়তায় ৩-০ করেন ফাহিম। ৬১ মিনিটে জীবনের ক্রসে এলিটা পান দ্বিতীয় গোলের দেখা। এর তিন মিনিট পর পিটারের বাড়ানো ক্রসে হেড করে জীবন যোগ দেন গোলদাতার তালিকায়। ৭০ মিনিটে এলিটাকে হ্যাটট্রিক করতে দেয়নি সাইডবার। তবে ৭৯ মিনিটে ডিফেন্সের ভুলের সুযোগে মোহামেডানের সুলেমান দিয়াবাতের পর দ্বিতীয় ফরোয়ার্ড হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন ফাহিম। আর শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে হ্যাটট্রিক করে লাল-সবুজের জার্সির দাবিটা জোরদার করেন এলিটা কিংসলে।
কাল লিগের অপর দুই ম্যাচের একটিতে ফর্টিস এফসির সঙ্গে ১-১ ড্র করে শেখ জামাল। রাজশাহীতে শুরুতেই দশজনের দলে পরিণত হওয়া ফর্টিসের শাহীন আহমেদের লম্বা থ্রো-ইন কোন স্পর্শ ছাড়াই সরাসরি জালে জড়ায়। রেফারি অবশ্য সেটিতেই গোলের বাঁশি বাজান। তবে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে জামালের উজবেক মিডফিল্ডার নদিরবেগ গোল করে নিশ্চিত হার থেকে দলকে রক্ষা করেন। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে জামাল আছে পঞ্চমে। ফর্টিস ১২ পয়েন্টে আছে সাতে।
মুন্সীগঞ্জে ম্যাচের সপ্তম মিনিটে শাহরিয়ার ইমনের গোলে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট নিয়ে প্রথমপর্ব শেষ করেছে মোহামেডান। তাদেরও সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট। তবে গোল গড়ে এগিয়ে তারা আছে ছয়ে।
বাংলাদেশ সফরে এসে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। মেয়র কাপের উদ্বোধনের পর শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সস্ত্রীক। এরপর বন্ধু ইফতিখার আহমেদ মিঠুর বাসায় আপ্যায়নপর্ব শেষে দেশে ফিরে গেছেন বিকেলে। যাওয়ার আগে গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসার পাশাপাশি জানিয়েছেন এ বছর হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে তার অনুমানও।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিসিআইর সাবেক প্রেসিডেন্ট সৌরভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে আমি অনেক আশাবাদী, আমি তো কোয়ার্টার ফাইনাল-সেমিফাইনাল অবধি আশা করি। যদি ভাগ্য সহায় থাকে, খেলোয়াড়রা ফর্মে থাকে বিশেষ করে স্পিনাররা আর ফাস্ট বোলাররা; তাহলে তোমরা কোয়ার্টার ফাইনাল-সেমিফাইনাল অবধিও যেতে পারবে।’ বাংলাদেশ দলের প্রশংসায় সৌরভ বলেন, ‘বাংলাদেশ খুব ভালো দল। কিছুদিন আগে ভারত এখানে সফরে এসেছিল, ওয়ানডেতে বাংলাদেশ তাদের হারিয়েছে। বছর পাঁচেক আগেও বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছিল ভারতকে। এই যে ইংল্যান্ড আসছে, আমাকে পাপন ভাই (নাজমুল হাসান) বলছিল আমরা সবাইকে হারিয়েছি ইংল্যান্ড বাদে। আমি বলেছি এবার আপনারা ইংল্যান্ডকেও হারিয়ে দেবেন।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রশংসায় সৌরভ বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষ, সেখান থেকে এত এত প্রতিভা বের হয় দেখার মতো। বোলিং, ব্যাটিং, সাকিবের মতো অলরাউন্ডার আছে, মুশফিকুর আছে, এখন শান্ত (নাজমুল হোসেন) ভালো খেলছে। খবর রাখি তো, দেখি কে কেমন করছে।’ বিপিএলের মান উন্নয়নেও পরামর্শ দিলেন সৌরভ, ‘আইপিএল অন্য পর্যায়ে চলে গেছে, তবে বিপিএলকেও ভালো করা যাবে, কেন যাবে না? তোমাদের এখানে এত উন্মাদনা ক্রিকেটের, বিপিএলের সব ম্যাচে মাঠ ভর্তি থাকে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাশে থাকতে চান সবসময়, বিসিবি চাইলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের মেন্টর হওয়ার কথাও ভেবে দেখবেন, বলে গেছেন সৌরভ।
শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্তপর্ব শুরু হচ্ছে আগামীকাল। এবারের আসরের মশাল বাহকদের একজন শুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকী। যুব গেমস নিয়ে তার প্রত্যাশার কথা বললেন দেশ রূপান্তরের তোফায়েল আহমেদকে। চোটের সঙ্গে লড়াইয়ে থাকা তারকা নিজেকে নিয়েও বলেছেন অনেক কিছু যুব গেমসের দ্বিতীয় আসরের চূড়ান্তপর্ব শুরুর অপেক্ষা। বাংলাদেশের খেলাধুলার প্রেক্ষাপটে এই গেমসকে কীভাবে দেখেন?
আব্দুল্লাহ হেল বাকী: যেকোনো প্রতিযোগিতাই খেলোয়াড়দের জন্য ইতিবাচক ব্যাপার। যুব গেমস বয়সভিক্তিক পর্যায়ের খেলা। তাই নতুনদের জন্য এটা খুব কাজে আসবে। বিভিন্ন ফেডারেশনের খেলোয়াড় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ভালো প্রভাব রাখবে এই আসর। অন্তত বোঝা যাবে যে, নতুন অবস্থাতেই কারা ভালো, কাদের ওপর যতœ নেওয়া বা নজর দেওয়া উচিত। কোন খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিসের মধ্যে রাখা উচিত। আমার কাছে মনে হয়, এগুলো খুবই ইতিবাচক দিক।
অর্থাৎ খেলোয়াড়দের উঠে আসার বড় মঞ্চ এটা...
বাকী: সে তো বটেই। তবে গেমস আয়োজনেই যেন দায়িত্ব শেষ না হয়। এখান থেকে খেলোয়াড় নির্বাচন করতে হবে। সম্ভাবনাময়দের সবদিক দিয়ে যত্ন নিতে হবে। অনুশীলন সুবিধা, আর্থিক সুবিধা বা স্পন্সর, এগুলো নিশ্চিত করে নির্বাচিতদের অনুশীলনটা চালিয়ে নিতে হবে সবসময়। যেন ওরা উন্নতি করতে পারে এবং সামর্থ্যরে সেরা অবস্থানে যেতে পারে।
এই গেমসে বিকেএসপির খেলোয়াড়রা তাদের নিজ নিজ জেলার হয়ে খেলতে পারছেন। তাদের সঙ্গে তো তৃণমূলের খেলোয়াড়দের ব্যবধান অনেক থাকে...
বাকী: বিকেএসপিতে তো বিভিন্ন জেলার খেলোয়াড়রাই ট্রায়াল ও বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ভর্তি হয়। এই যে একটা ছেলে কোনো জেলা বা উপজেলা থেকে বিকেএসপিতে ভর্তি হচ্ছে, এটা তো তার ব্যক্তিগত ক্রেডিট। কারণ বিকেএসপিতে আসার আগেই তো তার শেখার শুরু। যখন নিজ জেলাকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ আসে তখন সেই সুযোগ খেলোয়াড়রা নিতেই পারে।
গেমসটাকে আরও কার্যকর করতে আর কী যোগ করা যেতে পারে?
বাকী: আমি সেভাবে কিছু বলতে চাই না। এর আগে একবার এই গেমস হয়েছে। এবার নিশ্চয়ই আরও কার্যকর কিছু হবে। শুটিংয়ের কথা যদি বলি, এই প্রতিযোগিতার পরই যেন সব বন্ধ হয়ে না যায়। খেলোয়াড়দের পরিচর্যা যেন করা হয়। শুধু সিলেকশন করলেই হবে না। খেলোয়াড়দের আর্থিক সুযোগ-সুবিধাসহ অনুশীলনের পর্যাপ্ত ক্ষেত্র দিতে হবে। যেন তারা আরও ভালো করতে পারে।
এবারের গেমসের মশাল বহকদের একজন আপনি। একটু অনুভূতির কথা যদি বলতেন...
বাকী: এটা বরাবরই গর্বের। যখন শুনলান এরকম একটা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে আমাকে, তখন খুবই ভালো লেগেছে। এর আগে কমনওয়েলথ গেমসের কুইন্স ব্যাটনে র্যালিতে পরপর তিনবার থাকার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। যুব গেমস দিয়ে আমার মোট চারবার এরকম অভিজ্ঞতা হলো।
এবার ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে আসি। কোমরের ইনজুরির কারণে অনেক দিন তো শুটিংয়ের বাইরে ছিলেন। এখন কী অবস্থা?
বাকী: সত্যি কথা বলতে এখনো ওভাবে শুরু (অনুশীলন) করতে পারিনি। আগামী মাসের শুরুতে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। এই আসরের জন্য কয়েক দিন হলো অনুশীলনে যাচ্ছি। ১০ মিটারে অংশ নিতে পারব কি-না এখনো নিশ্চিত নই। কয়েক দিন অনুশীলন করলে বোঝা যাবে। ৫০ মিটার যেহেতু ২০ শট করে, তাই এখানে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এমনিতে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসটা কেমন?
বাকী: দেখুন, আমি যদি ইনজুরির কারণে দাঁড়িয়ে শুটিংই না করতে পারি, তাহলে আত্মবিশ্বাসের জায়গাটা থাকে না। আত্মবিশ্বাস খোঁজারও রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমার বেলায় পরিস্থিতিটা এখন তেমনই। আপাতত ৫০ মিটারে চেষ্টা করে যাচ্ছি আগের জায়গায় ফিরে আসার জন্য।
ডাক্তার কী বলছেন?
বাকী: ইনজুরির অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে যেমন হাঁটতে বা নড়াচড়া করতেও কষ্ট হতো। এখন আর ও রকম হয় না। এখন শুধু প্র্যাকটিসের সময় কষ্ট হয়। ডাক্তার যখন ট্রিটমেন্ট করলো তখন চার মাসের কথা বলেছিল। এর মধ্যে তিন মাস শেষ।
এই ইনজুরিটা কীভাবে হলো?
বাকী: প্রথম ইনজুরি হয় জিম করতে গিয়ে। পরে ১০-১২ দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। এরপর প্র্যাকটিসের হঠাৎ করেই ইনজুরিটা মাথাচাড়া দেয়।
এই চোটের জন্য তো বেশকিছু আন্তর্জাতিক গেমস খেলা হলো না। এ বছর এশিয়ান গেমস আছে। এ নিয়ে কী ভাবছেন?
বাকী: আমি হয়তো আর এক-দেড় মাসের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাব আশা করি। এশিয়ান গেমস সেপ্টেম্বরে। তাই আশা করছি তার আগে পুরোদমে শুটিং করতে পারব।
২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক শুটিং শুরু আপনার। প্রায় ১৫ বছর কাটল। কতদিন খেলা চালিয়ে যেতে চান?
বাকী: সত্যি বলতে শুটিং আমি ভালো লাগা থেকে খেলি। ভালোবাসার জায়গা থেকে যতদিন ভালো লাগবে, ততদিন খেলে যাব।
ক্যারিয়ারে তো অনেক প্রাপ্তি। দু-দুবার কমনওয়েলথ গেমসে ব্যক্তিগত রুপা জিতেছেন। কিন্তু এসএ গেমসে ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ জিততে না পারা কি পোড়ায়?
বাকী: শুধু এসএ গেমস না, কমনওয়েলথ গেমসটাও পীড়া দেয়। কাছাকাছি গিয়েও না পারা সব সময়ই একজন খেলোয়াড়ের জন্য কষ্টের। ২০১৯ সালের এসএ গেমসে তো একটা সময় পর্যন্ত আমিই প্রথম ছিলাম। তার ঠিক আগের বছর গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসেও ফাইনাল শটের আগ পর্যন্ত কনফার্ম ছিল, আমিই গোল্ড পাচ্ছি। অবশ্যই এসব মাঝেমধ্যে পীড়া দেয়।
এই আক্ষেপ মেটানোর ইচ্ছেও নিশ্চয়ই জাগে তখন?
বাকী: আসলে শুটিংটা আক্ষেপ বা আসফোসের জায়গা নয়। এখানে সত্যি সত্যিই যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে সবকিছু। প্র্যাকটিসের পারফরম্যান্স এবং নির্দিষ্ট দিনটায় আমি কী করলামÑএটা খুব জরুরি। এই দুটি জিনিস মেলাতে পারলেই হয়ে যায়। যদি না মেলে তাহলে তো কিছু করার নেই।
শেষ প্রশ্ন, বাকী নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কতটা খুশি?
বাকী: (হেসে) খুশি, পুরোপুরিই খুশি। আমি খুশি এ কারণে যে, আমার জায়গা থেকে অ্যাফোর্টটা আমি সবসময় দিতে পেরেছি।
ভারতকেই যদি হারানো যায়, তবে ইংল্যান্ডকে কেন নয়! বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন সর্বত্রই এই সুর। গত ডিসেম্বরে ভারতকে দেশের মাটিতে সিরিজে হারানোর সুখস্মৃতি এখনো তাজা। নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে সিরিজ হারের পর বাংলাদেশের কাছে হার ছিল ভারতের টানা দ্বিতীয়। ২০২০ এরপর এই প্রথম ওয়ানডেতে টানা দুই সিরিজ হারেন রোহিত শর্মারা। দেশের মাটিতে বিশ্বের অন্যতম সেরা দলের বিপক্ষে এমন সাফল্য বাংলাদেশ দলের মানসিকতা শক্ত করেছে। তাই এবার ওয়ানডের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতিটা নিচ্ছে বাংলাদেশ। কাল কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের অধীনে অনুশীলনের দ্বিতীয় দিন নির্বাচক হাবিবুল বাশারও জানিয়ে গেলেন ভারত সিরিজের আত্মবিশ্বাস কাজে লাগবে ইংলিশদের বিপক্ষেও।
২০১৫ সালের পর টানা দ্বিতীয় হোম সিরিজে ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। এবার সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিশ্চিত করা গেছে। দুটো ম্যাচেই শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকেই ধারাবাহিক ভালো খেলছে। দেশের মাটিতে নিয়মিত সিরিজও জিতেছে। জয় এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও। তাই ওয়ানডে সুপার লিগে সবার আগে ১০০ পয়েন্ট অর্জন করা দল বাংলাদেশ। ১৮ ম্যাচে ১২ জয়ে বাংলাদেশের পয়েন্ট ১২০। ওদিকে সুপার লিগের শেষ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসা ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ২১ ম্যাচে ১৩ জয়ে ১৩৫। ঘরের মাঠে ভালো করার অভ্যাস ধরেই শেষ সিরিজে ইংলিশদের হারের স্বাদ দিতে চায় বাংলাদেশ।
হাবিবুল বাশারের মতে, সামনের সিরিজটিতে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে হারিয়ে এই সাফল্যের ধারা ধরে রাখা সম্ভব, ‘আমরা কিন্তু শুধু বাংলাদেশে নয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে তাদের হারিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাদের কন্ডিশনে হারানো খুবই কঠিন। আমরা ৫০ ওভারে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করছি, সবার সঙ্গেই। ভারতও কিন্তু অনেক শক্তিশালী দল নিয়ে এসেছিল। তাদেরও তো হারালাম। ইংল্যান্ডকে হারানো যাবে নাÑএমন কোনো কথা নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সহজ বলে কোনো দল নেই। ইংল্যান্ডও ভালো দল। কিন্তু আমরা যে ধারাবাহিকতায় খেলছি, সেটা রাখলে সিরিজ জয়ের ভালো সম্ভাবনাই থাকবে।’
ইংল্যান্ডকে হারানোর সম্ভাবনাটা বেড়েছে ভারতের বিপক্ষে সাফল্য দিয়েই। উপমহাদেশের কন্ডিশন অনুযায়ী বাংলাদেশের চেয়ে ভারত অভিজ্ঞতায় এগিয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের সফর থেকে সেরা তারকাদের বিশ্রামও দেয়নি ভারত। তাই ওই সিরিজে খুব বেশি চ্যালেঞ্জ ছিল। সেই সিরিজে যেহেতু জয় এসেছে উপমহাদেশে অনভিজ্ঞ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জেতা উচিত বললেন বাশার।
ভারতের বিপক্ষে স্পোর্টিং উইকেট ছিল মিরপুরে। কিন্তু ইংল্যান্ডের সঙ্গে উইকেটে যে বদল আসবে তা জানিয়ে দিলেন হাবিবুল। তবে ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে হারাতে এখন আর বাংলাদেশের উইকেটের সহযোগিতা লাগবে না বলেও জানান সাবেক অধিনায়ক, ‘কোন দলের সঙ্গে খেলছি সেটার ওপর নির্ভর করে উইকেট কেমন হবে। ভারতের সঙ্গে যেমন উইকেটে খেলব, ইংল্যান্ডের সঙ্গে একই উইকেটে নাও খেলতে পারি। তবে আমার মনে হয় না উইকেটের খুব বেশি সাহায্য নিতে হবে।’
হাথুরু কাল হাবিবুল বাশারের সঙ্গেও আলোচনা করলেন অনেকক্ষণ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাথুরুর তাই সফল শুরুই দেখছেন হাবিবুল বাশার। নতুন কোচ হলেও হোমে বাংলাদেশের ওয়ানডে সাফল্যে তাই ছেদ পড়ছে না!
নিউজিল্যান্ডের বেসিন রিজার্ভে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টেস্ট খেলছে ইংল্যান্ড। এর মধ্যেই ঢাকায় শুক্রবার সকালে পা রেখেছে আরেক ইংল্যান্ড দল। তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে জস বাটলারের নেতৃত্বে বাংলাদেশে এসেছে ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের ক্রিকেট দল। যে সিরিজটা হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালের অক্টোবরে, সেটাই করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে হতে যাচ্ছে এই মার্চে।
ওয়েলিংটনে যখন হ্যারি ব্রুকের তা-ব চলছে, তখনই বাংলাদেশে নেমেছেন বাটলার-মঈন আলীরা। ২০১৬ সালের পর এবারই প্রথম বাংলাদেশে এসেছে থ্রি লায়নরা, তবে আগের সেই দলের সঙ্গে এই দলের মানসিকতায় অনেক তফাত। এই ইংল্যান্ড একই সঙ্গে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলাই যাদের দর্শন। ৭ বছর আগে বাংলাদেশে খেলে যাওয়া দলটার অনেকেই আছেন এই দলেও। সেবার নিয়মিত অধিনায়ক এউইন মরগান না আসায় বাটলার ছিলেন নেতৃত্বে, এবার বাটলার এসেছেন ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতিয়ে। সঙ্গে জেসন রয়, জেমস ভিন্স, ক্রিস ওকস, মঈন আলী, আদিল রশিদরাও ছিলেন। এবারে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ফিল সল্ট, স্যাম কারানদের মতো ক্রিকেটাররা। আনকোরা টম অ্যাবেল ও এখনো সাদা বলে জাতীয় দলে না খেলা রেহান আহমেদও আছেন।
মঈন আলী কিছুদিন আগেই বিপিএলের ফাইনালে খেলে গেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে, দাভিদ মালান বিপিএলে খেলেছেন একটা ম্যাচে। জোফরা আর্চারও একটা মৌসুম খেলেছিলেন খুলনা টাইটানসে, তখন অবশ্য তিনি তারকা খ্যাতি পাননি। জেসন রয়ও খেলেছেন বিপিএলে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একেবারে অচেনা নয় ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের কাছে।
শুরুতে সফরসূচিতে দুটো প্রস্তুতি ম্যাচ থাকলেও পরে ইংল্যান্ডের ঢাকায় আসার তারিখ পিছিয়ে যাওয়াতে বাদ হয়ে গেছে দুটো ম্যাচই। আগামী চারদিন মিরপুরের শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠেই অনুশীলন সেরে নেবে থ্রি লায়নরা, ১ মার্চ প্রথম ওয়ানডে।
স্পেনের ঘরোয়া লিগে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। তবে জাভির অধীনে কাতালান ক্লাবটির সাফল্য আটকে আছে স্পেনের মধ্যেই। আবারও ইউরোপা লিগ থেকে আগেই বিদায় নিল বার্সেলোনা। আগের মৌসুমে সেমিফাইনাল খেললেও এবার প্লে-অফ রাউন্ডেই বিদায় নিল তারা। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দ্বিতীয় লেগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ২-১ এ হারিয়েছে বার্সেলোনাকে। দুই লেগ মিলে ৪-৩ এ জয়ী হয়ে শেষ ষোলোতে গেল এরিক টেন হাগের দল।
ক্যাম্প ন্যুতে প্রথম লেগ ড্র হয়েছিল ২-২ গোলে। বৃহস্পতিবার রাতে শুরুতে এগিয়েও গিয়েছিল বার্সেলোনা। নিজেদের মাঠে তৃতীয় মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় এরিক টেন হাগের দল। খুব কাছ থেকে ব্রুনো ফার্নান্দেসের শট পা দিয়ে ঠেকিয়ে দিয়ে বার্সেলোনার ত্রাতা টের স্টেগেন। ম্যাচের ১৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে দেন রবার্ট লেভানডফস্কি। সব প্রতিযোগিতা মিলে এটি তার ২৫তম গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১২ মৌসুম ২৫ বা তার বেশি গোল করলেন লেভা। তার শট দে হেয়ার হাতে লেগে জালে ঢোকে। ব্রুনো ফার্নান্দেজ নিজেদের বক্সে আলেহান্দ্রো বাল্দেকে ফেলে দিলে পেনাল্টি পেয়েছিল বার্সা। ৪৭ মিনিটে ফার্নান্দেজের অ্যাসিস্টে গোল শোধ দেন ফ্রেড। গোল শোধের পর স্বাগতিকরা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে। তবে ৬৪ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বার্সা। কুন্দের হেড কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান দে হেয়া। অবশ্য ছয় মিনিট পরই এগিয়ে যায় রেড ডেভিলরা। ৭৩ মিনিটে আলেহান্দ্রো গারাঞ্চো ও ফ্রেডের শট ব্লক হওয়ার পর জাল খুঁজে নেন আন্তোনি। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমেছিলেন ব্রাজিলিয়ান এ উইঙ্গার।
২০০৮ সালের পর এ প্রথম বার্সেলোনাকে হারাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এর আগে ২০০৮ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমির দ্বিতীয় লেগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডই জিতেছিল রেড ডেভিলরা। শেষ ষোলোতে ম্যানইউ খেলবে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে। আর আর্সেনাল খেলবে স্পোর্টিং সিপির বিপক্ষে।
ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্তাস জায়গা করে নিয়েছে ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোতে। প্লে-অফ নকআউট রাউন্ডের দ্বিতীয় লেগে ডি মারিয়ার হ্যাটট্রিকে (৩-০ তে) নতের বিপক্ষে জয় পেয়েছে জুভেন্তাস। ডি মারিয়া ম্যাচের ৫ ও ২০ মিনিটে গোল করেন। ৭৮ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন পেনাল্টি থেকে গোল করে। ২০০০ সালের পর ইউরোপিয়ান ফুটবলে এ প্রথম জুভেন্তাসের কোনো খেলোয়াড় হ্যাটট্রি করলেন। এর আগে সবশেষ হ্যাটট্রিক করেছিলেন ফিলিপে ইনজাঘি। জুভেন্তাস শেষ ষোলোতে খেলবে ফ্রেইবুর্গের সঙ্গে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকে বলা হয় ‘লাশের সাক্ষ্য’। সেই প্রতিবেদনে প্রায়ই ভুল থাকছে। হত্যা হয়ে যাচ্ছে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা। দেশের মর্গগুলোর আধুনিকায়ন না হওয়া, চিকিৎসকদের অদক্ষতা এবং মর্গে আসার আগেই মরদেহের আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ভুলের অন্যতম কারণ। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য এরকমই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের বেশিরভাগ মর্গে মরদেহের ভিসেরা বা বিভিন্ন নমুনা সংরক্ষণের আধুনিক সুবিধাসংবলিত জায়গা নেই। এসব ধারণের জন্য কনটেইনার, প্রিজারভেটিভ বা রাসায়নিকের সরবরাহও প্রয়োজনের তুলনায় কম। অনেক সময় প্রিজারভেটিভ না থাকলে লবণ পানির সাহায্যে মর্গে লাশ সংরক্ষণ করা হয় এবং হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল ল্যাবে যেসব স্যাম্পল বা নমুনা পাঠানো হয়, সেসব ভালোমানের ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষিত করে পাঠানো হয় না। ফলে আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও ভুলের আশঙ্কা বাড়ে। কখনো চিকিৎসক প্রভাবিত হয়েও ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন।
ময়নাতদন্তসংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের দেশে আধুনিক মর্গ ব্যবস্থাপনা নেই। তাছাড়া লাশ মর্গে আসার আগেই অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নেয়; তারপর থানা থেকে নেয় মেডিকেল কলেজে। এরপর অ্যাম্বুলেন্স, লেগুনা বা ট্রাকে বা ভ্যানে করে আনে মর্গে। এত আলামত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে। এসব কারণে ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসে।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ময়নাতদন্তের ভুল প্রতিবেদনের প্রধান কারণ আধুনিক যন্ত্রপাতি ও আধুনিক মর্গের অভাব। দ্বিতীয় কারণ, লাশ যখন আমাদের কাছে আসে তখন আমরা সিন অব দ্য ক্রাইম (অপরাধের দৃশ্য) ভিজিট করি না। ফলে অনেক ইনফরমেশন ধরা পড়ে না। উন্নতবিশ্বে কোথাও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে পুলিশ ওই স্থানকে হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে রাখে এবং সবার আগে ভিজিট করে একজন ফরেনসিক স্পেশালিস্ট। ওখান থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগৃহীত হয়ে মর্গে চলে আসে। মর্গে লাশ পাঠায় পুলিশ, পরে পোস্টমর্টেম করে সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে মরদেহের ফাইন্ডিংস মিলিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সেটাই সঠিক ও নির্ভরযোগ্য হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এমন হয় না।’
ময়নাতদন্ত কী : খুন বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ভুক্তভোগীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য একজন ফরেনসিক চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ মরদেহের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গ বা অঙ্গবিশেষের গভীর নিরীক্ষণ করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে মন্তব্যসহ যে প্রতিবেদন দেওয়া হয় তাই পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন, ময়নাতদন্ত হওয়া জরুরি, তখন মৃতদেহ সিভিল সার্জন বা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা ও রেল দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর কথা উল্লেখ থাকা ২২টি মামলা তদন্ত করে পিবিআই জানায়, এগুলো ছিল পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। ওই মামলাগুলোতে পুলিশের অন্যান্য সংস্থা তদন্ত করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল।
পিবিআইপ্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘হত্যা বা অপমৃত্যুর মামলার তদন্তে ময়নাতদন্তের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভালো ময়নাতদন্ত মামলার রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে ময়নাতদন্ত সঠিক না হলে তদন্ত ভিন্ন পথে মোড় নেয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে সাহায্য করে, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে দারুণভাবে সহায়তা করে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিটফোর্ড বা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে ২০২১ সালে ৭৪০টি, ২০২২ সালে ৬০০টি ও চলতি বছর ১৫ মে পর্যন্ত ১৪৫টি মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। গত ১৫ মে দুপুরে সেখানকার মর্গে গিয়ে দেখা গেছে জরাজীর্ণ দশা। দুটি মরদেহ পড়ে আছে পোস্টমর্টেমের অপেক্ষায়। মর্গ সহকারী নাম প্রকাশ না করে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘মর্গের লাশ রাখার একমাত্র ফ্রিজটি তিন বছর ধরে নষ্ট। ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় মালামালের সংকট সবসময়ই থাকে। নেই আধুনিক কোনো সুবিধা। তিনজন মর্গ সহকারীই বছরের পর বছর চুক্তিভিত্তিতে কাজ করছেন।’
জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য মর্গের দশা একই।
ময়নাতদন্ত সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে পিবিআইয়ের এক প্রতিবেদনে দেশের মর্গসংশ্লিষ্টদের ফরেনসিক বিষয়ে আধুনিক ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের অভাব, বিশেষজ্ঞ ফরেনসিক চিকিৎসকের তুলনায় লাশের সংখ্যা বেশি, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও হিমাগারসহ মানসম্মত অবকাঠামো না থাকাকে ভুল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এ ছাড়া মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ডোমের স্বল্পতা, জটিল ও চাঞ্চল্যকর মরদেহের ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্ত না করা, আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা থাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত কাজে অংশ নিতে চান না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত বিষয়ে পিবিআইয়ের প্রতিবেদন ও দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মর্গগুলোতে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও আলোর ব্যবস্থাসহ আধুনিক অবকাঠামো ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ঘাটতি রয়েছে। অনেক জেলায় মর্গে বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে জেনারেটর নেই। অনেক জেলায় মর্গে পর্যাপ্ত দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল নেই। বংশ পরম্পরায় মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ডোমরা ময়নাতদন্তের সহযোগী হিসেবে কাজ করলেও তাদের কোনো মৌলিক প্রশিক্ষণ নেই। তাছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ ব্যস্ত মর্গগুলোতে মর্গ অ্যাসিস্ট্যান্টদের স্বল্পতা প্রকট। অনেক জায়গায় দেখা গেছে, লাশ সংরক্ষণের সুরক্ষিত পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অভাব। বিদেশি নাগরিক ও বিশেষ ক্ষেত্রে মরদেহ প্রচলিত নিয়মে হিমঘরে সংরক্ষণ করার প্রয়োজন পড়ে। অল্পসংখ্যক মর্গে কুলিং বা ফ্রিজিং বা মর্চুয়ারি কুলার সিস্টেম থাকলেও অধিকাংশ সময় নষ্ট থাকে বলে গরমের সময় লাশে দ্রুত পচন ধরে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর সম্ভাব্য সময়ের উল্লেখ থাকা জরুরি। মর্গে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় অভিমত প্রদানে বিশেষজ্ঞদের সমস্যা হয়। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১ জুন রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকায় নিজ বাসা থেকে ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি খুন হয়েছিলেন। মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে। খুনের ধরন মোটামুটি স্পষ্ট হলেও ঘটনার রহস্য উন্মোচনে খুনের ‘সম্ভাব্য সময়’ জানার জন্য পিবিআই ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধা কম হওয়ায় চিকিৎসা শিক্ষায় এ শাখাটি অবহেলিত এবং কম গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। ফলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে বিশেষজ্ঞ ফরেনসিক ডাক্তারের স্বল্পতা রয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে আরেকটি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে, সিএমএম আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের লালমোহন থানা এলাকা থেকে কামাল মাঝির (৪৫) ৩৮ মাসের পুরনো মরদেহ তুলে ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। সেখানে কর্মরতদের কারও এ ধরনের মরদেহের ময়নাতদন্তের অভিজ্ঞতা না থাকায় মরদেহটি ভোলা থেকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে নেওয়া হয়। দায়িত্বরত প্রভাষক জানান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের পদে কেউ কর্মরত নেই। তিনি মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য অন্য কোনো মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে নেওয়ার অনুরোধ করেন। পিবিআই মরদেহটি বরিশাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিয়ে যায়।
হত্যা কেন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা হিসেবে আসে জানতে চাইলে ফরেনসিক চিকিৎসকরা জানান, কাউকে হত্যা করে রেললাইনে ফেলে রাখলে তার ওপর দিয়ে ট্রেন গিয়ে একেবারে ক্ষতবিক্ষত হয়ে হাড়গোড় বেরিয়ে দলিত হয়ে যায়। একে চিকিৎসাশাস্ত্রে মিউটিলেডেট লাশ বলে। ওইসব লাশের আলামত বোঝা যায় না। আগের আলামত নষ্ট হয়ে নতুন আলামত তৈরি হয়। তখন রেল দুর্ঘটনাই মনে হয়। এতে অনেক সময় চিকিৎসকরা মিসগাইডেড হয়।
ফরেনসিক বিভাগে চিকিৎসকের সংকট বিষয়ে এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমি ঢাকায়ে আছি, অথচ আমাকে কক্সবাজার বা পঞ্চগড় গিয়ে স্বাক্ষর দিতে হচ্ছে। বাইরে যাওয়ার, বিশেষ করে একা, বিপদ আছে অনেক, সংক্ষুব্ধ পক্ষ হামলা চালাতে পারে। এজন্য অনেক চিকিৎসক এ বিভাগে থাকতে চান না। এখানে সুবিধাও অনেক কম। মফস্বলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে মিসগাইড করে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট লেখানো হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ফ্যাটি লিভার রোগটি এখন ঘরে ঘরে। প্রাথমিকভাবে এই রোগের লক্ষণ না বুঝতে পারলে, অনেক সমস্যাই দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকরা জানান, এই রোগ থেকে বাঁচতে জীবনধারায় বদল আনতে হবে।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন? শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, হঠাৎ ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া, হলুদ রঙের দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, ওজন অত্যন্ত বেড়ে যাওয়া, সারাক্ষণ ক্লান্তিভাব— এই উপসর্গগুলি ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ হতে পারে। অনেকের ধারণা, মদ্যপান করলেই এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে কেবল মদ্যপান ছেড়ে দিলেই এই রোগের ঝুঁকি কমবে না। কম তেলমশলার খাবার খাওয়া, বাড়ির খাবারে অভ্যস্ত হওয়া, মদ ছেড়ে দেওয়া— এই অভ্যাসগুলিই লিভারকে ভাল রাখার অন্যতম উপায়। এই অসুখকে ঠেকিয়ে রাখতে ডায়েটের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। তবে এগুলিই শেষ কথা নয়। লিভার ভাল রাখতে মেনে চলতে হয় আরও কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু কী কী?
চিনির মাত্রা কমানো
সহজে রোগা হতে চেয়ে অনেকেই নিজের খুশি মতো ডায়েট প্ল্যান বানিয়ে নেন। চিনি বাদ দিয়ে দেদারে কৃত্রিম চিনির উপরেই ভরসা করেন। এতেই আসলে চরম ক্ষতি করছেন শরীরের। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের লিভারের ব্যাপক ক্ষতি করে। ফ্রুকটোজ হোক কিংবা কৃত্রিম চিনি, লিভারের অসুখ ডেকে আনে।
ব্যথার ওষুধ কম খান
বেশকিছু বেদনানাশক ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে। কিছু প্যারাসিটামল বা কোলেস্টেরলের ওষুধও লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে। ঘুম না হলে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করেন। এই অভ্যাসের কারণে লিভারের জটিল রোগে ভুগতে হতে পারে।
পানি বেশি করে খান
শরীর থেকে যতটা দূষিত পদার্থ বার করে দিতে পারবেন, লিভার ততটাই সুস্থ থাকবে। তাই বেশি করে পানি খেতে হবে। তবেই প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের টক্সিন পদার্থগুলি বেরিয়ে যাবে। দিনে কয়েক বার গরম পানিতে পাতিলেবুর রস দিয়ে সেই পানি খান। ডায়েটে রাখুন টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক।
পর্যাপ্ত ঘুম
সারাদিন কর্মব্যস্ততা আর রাত জেগে মোবাইলে চোখ রেখে সিনেমা দেখা— সব মিলিয়ে ঘুমের সঙ্গে আপস। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ঘুমের অভাব হলে তার প্রভাব পড়ে লিভারের উপরেও।
ওজন কমান
শুধু সুন্দর দেখানোর জন্যই নয়, লিভার সুরক্ষিত রাখতে চাইলেও কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমাদের শরীরে কার্বহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সঠিক ভারসাম্য থাকা ভীষণ জরুরি। তবে ইদানিং বাড়ির খাবার নয়, বরং রেস্তোরাঁর খাবার, রেড মিট, বাইরের ভাজাভুজি, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেয়ে অভ্যস্ত। আর এর জেরেই শরীরে ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা বাড়ছে। লিভারের পক্ষে এই ফ্যাট মোটেই ভাল নয়।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।
প্রথম সেট ২৫ মিনিট, দ্বিতীয়টি ২৮ মিনিটে জিতলেন কার্লোস আলকারাজ। মনে হচ্ছিল কোয়ালিফায়ার ফ্যাভিও কোবোলিকে বুঝি উড়িয়েই দিচ্ছেন শীর্ষ বাছাই।
না, তৃতীয় সেটতে প্রতিরোধ গড়লেন ইতালিয়ান। সময় গড়ালো ঘন্টায়। শেষপর্যন্ত জয় এসেছে ৬৬ মিনিটে। ৬-০, ৬-২, ৭-৫ গেমে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে রাফায়েল নাদালের উত্তরসুরি ক্লে কোর্টের সর্বোচ্চ আসর শুরু করলেন।
নাদালের চোটজনিত অনুপস্থিতিতে শীর্ষবাছাই আলকারাজ। ২০২১ এ তৃতীয় রাউন্ড, গতবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন। এবার আরো এগোলে সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচের সংগে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা।
সে দেখা যাবে। আপাতত দ্বিতীয় রাউন্ডে আলকারাজকে টপকাতে হবে জাপানের টি. দানিয়লেকে।
আইপিএলের পঞ্চম শিরোপা জিততে চেন্নাই সুপার কিংসের চাই ১৫ ওভারে ১৭১ রান। আহমেদাবাদে রাত ১২.৪০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। গুজরাট টাইট্যান্সের ২১৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৩ বলে ৪ রান করার পর বৃ্স্টিতে বন্ধ হয় ফাইনাল। অর্থাৎ বাকি ১৪.৩ ওভারে আরো ১৬৭ রান চাই ধোনীর দলের।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।