
ব্যাট হাতে নিজেদের মেলে ধরলেন দুই সিনিয়র ক্রিকেটার নিগার সুলতানা জ্যোতি ও ফারজানা হক পিংকি। গত বারের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক পিংকি শুরু থেকেই নির্ভরতা দিয়ে গেলেন। জ্যোতি করলেন ঝোড়ো সেঞ্চুরি। তাতে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি গড়ে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবকে বড় ব্যবধানে হারাল রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন নারী ক্রিকেট লিগে বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী দিনে ফতুল্লায় মুখোমুখি হয়েছিল রূপালী ব্যাংক ও গুলশান ইয়ুথ ক্লাব। গতবারের রানার্সআপ রূপালী ব্যাংক ১৪৮ রানের বড় জয় তুলে নেয়। তাদের দেওয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৮ উইকেটে ১৩৮ রানের বেশি করতে পারেনি গুলশান ইয়ুথ।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে গুলশান ইয়ুথ। পরে অধিনায়ক শারমিন সুলতানার ৮০ বলে ৪০ ও লেকি চাকমার ১২৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংসের পরও লড়াই জমাতে পারেনি দলটি।
অন্যদের মধ্যে দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল শিরিন আক্তার। ২১ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। রূপালী ব্যাংকের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদা আক্তার, আশরাফি ইয়াসমিন ও শরিফা খাতুন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে রূপালী ব্যাংক। অধিনায়ক জ্যোতি ৭৬ বলে ১২ চারে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তার স্ট্রাইক রেট ১৩১.৫৮। সঙ্গে ফারজানা হক পিঙ্কি ১০৭ বলে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন। তৃতীয় উইকেটে এই দুজন যোগ করেন ১৭১ রান।
জ্যোতি ও পিঙ্কি ছাড়াও রূপালীর উদ্বোধনী ব্যাটার সাথী রানী ৩৫ বলে ৩৯ ও ফারজানা আক্তার লিসা ৮২ বলে ৪৪ রান করেন। সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২ উইকেটে ২৮৬ রানের পুঁজি গড়ে দলটি। দারুণ সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরা হয়েছেন জ্যোতি।
দিনের আরেক ম্যাচে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রকে ৩২ রানে হারিয়েছে শিরোপাধারী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। বিকেএসপি ৬৬ রানে হারিয়েছে সিটি ক্লাবকে।
আজই কী সেই কাক্সিক্ষত দিন? বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শেষ তিন আসরে এই দিনটির দেখা মিলেছে প্রতিবারই। বসুন্ধরা কিংস মাঠ ছেড়েছে বীরের বেশে, শিরোপা আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে। আজও এমন একটা দিনের হাতছানি সেরাদের সামনে। কিংস এরেনায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে হারালেই ইতিহাসে উঠে যাবে কিংসের নাম। জেতা হবে টানা চতুর্থ লিগ শিরোপা। পেশাদার যুগ দূরে থাক, স্বাধীনতা পরবর্তী শীর্ষ ফুটবল লিগে কোনো দলই পারেনি টানা চারটি লিগ শিরোপা জিততে। যদিও টানা পাঁচবার লিগ জয়ের একটা রেকর্ড আছে ওয়ান্ডারার্সের থলেতে। তবে সেটা দেশ স্বাধীনের অনেক আগে, ষাটের দশকে।
শীর্ষ লিগে অভিষেকের বছর লিগ জয় খানিকটা কঠিন ছিল বসুন্ধরা কিংসের জন্য। তারপরও তারা শিরোপা ঘরে তুলেছিল দুই ম্যাচ হাতে রেখে। আবাহনী ঘরে হানা দেওয়ার বছরে পয়েন্ট টেবিলে কিংস এগিয়ে ছিল পাঁচ পয়েন্টে। পরের মৌসুমে অবশ্য অত কষ্ট করতে হয়নি। চার ম্যাচ বাকি থাকতেই শিরোপা উদযাপন করে নিকটতম প্রতিপক্ষ শেখ জামালকে ২-০ গোলে হারিয়ে। সেবার জামালের চেয়ে কিংস এগিয়ে ছিল ১৩ পয়েন্টে। আর হ্যাটট্রিক শিরোপার আসরে তারা আবাহনীর চেয়ে এগিয়ে ছিল পুরো ১০ পয়েন্টে। শিরোপা নিশ্চিত হয়েছিল ২ ম্যাচ হাতে রেখে।
লিগের প্রথমপর্বে টানা ১০ ম্যাচ জয়ের পর এবার মনে হচ্ছিল আরও সহজে চারে-চার হবে কিংসের। বিশেষ সেই মনে হওয়ায় বাদ সাধে পুলিশ এফসি। তারা হারিয়ে দেয় কিংসকে। পুঁচকে আজমপুর এফসিও পয়েন্ট কেড়ে নেয়। তাতে দুইয়ে থাকা আবাহনীর সামনে সুযোগ ছিল ব্যবধান কমানোর। তবে আকাশিরা ছোট দলের কাছে একাধিক ম্যাচ পয়েন্ট খুইয়ে কিংসের শিরোপার পথটা আরও মসৃণ করে দেয়। তিন দিন আগে ফেডারেশন কাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে রাসেলের মুঠোয় থেকে জয় কেড়ে নেওয়া কিংস আজও যদি জিতে যায়, তবে তিন ম্যাচ বাকি থাকতেই নিশ্চিত হবে শিরোপা।
জিতলে তো কথাই নেই, রাসেলের কাছে হেরেও কিংসের শিরোপা উৎসবের সুযোগ আছে আজ। সেক্ষেত্রে কুমিল্লায় লিগের অপর ম্যাচে দুইয়ে থাকা আবাহনীকে হারতে হবে চিরবৈরী মোহামেডানের কাছে। তখন আর ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা কিংসকে স্পর্শ করার কেউ থাকবে না। আর দুই মাঠের দুটি ম্যাচই যদি ড্র হয়, তবে শেষ তিন ম্যাচ থেকে কিংসের প্রয়োজন হবে ২ পয়েন্ট।
সেই ২০১৮ সাল থেকেই কিংসকে পথ দেখানো স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন অবশ্য অত হিসেব নিকেশের পক্ষে নন। তিনি চান ভালো খেলে আজই শিরোপা নিশ্চিত করতে। গতকাল দেশ রূপান্তরকে এই কোচ বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) ভালো সুযোগ আছে দারুণ একটা বিপিএল অভিযানের সফল সমাপ্তি টানার। আমাদের লক্ষ্য নিজেদের মাঠে ভালো একটা ম্যাচ উপহার দেওয়া। তবে ম্যাচটা আমাদের খেলতে হবে সত্যিকারের এক শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে। এই ম্যাচটার জন্য আমরা দারুণ একটা প্রস্তুতিমূলক সপ্তাহ পার করেছি। এবার সময় এসেছে সেরা ফুটবলটা খেলে আরেকবার শিরোপা নিজেদের করে নিতে।’
শীর্ষ পর্যায়ে কিংসের শুরু থেকেই আছেন এই কোচ। ধারাবাহিক সাফল্যের পেছনে সামগ্রিক প্রচেষ্টাকেই সামনে টেনে আনছেন তিনি, ‘টানা চার মৌসুম ধরে আমরা একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছি। যখন ম্যানেজমেন্ট, খেলোয়াড়, কোচ ও সমর্থকরা একই উদ্দেশ্যে হাতে হাত রেখে এগোয়, তখন সাফল্য পাওয়ার সুযোগটা বহুগুণে বেড়ে যায়। আর এমন একটা ক্লাবের সঙ্গে থাকতে পারাটা আমার জন্য ভীষণ গর্বের।’
দুটি দলেরই ক্যাম্প বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। ক্যাম্পের দূরত্বও খুব বেশি নয়। রাসেল ক্যাম্পের করুণ আবহটা কিংসকে দিচ্ছে আজই শিরোপা উদযাপনের আশা। দশ দিনের মধ্যে লিগ ও ফেডারেশন কাপে চার বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হাই-ইনটেন্স চার ম্যাচ খেলে দলটির সব শক্তি নিঃশেষ হয়ে গেছে বলা চলে। চারটির একটিতেও জেতা হয়নি রাসেলের। শেখ জামালের সঙ্গে লিগে ড্রয়ের পর টানা তিন ম্যাচে তাদের হারতে হয় দুবার আবাহনী ও শেষটায় কিংসের কাছে। অথচ তিন দিন আগের ফেডারেশন কাপের তৃতীয়স্থান নির্ধারণী ম্যাচটায় জয়ের খুব কাছে ছিল রাসেল। সেটাও শেষ পর্যন্ত তাদের হারতে হয়েছে কিংসের শেষ দিকের ছয় মিনিটের ঝড়ে।
আজ কিংস এরেনায় বসুন্ধরার কিংসের আক্রমণের ঝড়টা শুরু থেকেই ওঠার কথা। অস্কার ব্রুজন এই ম্যাচে নিশ্চয় পরীক্ষায়-নিরীক্ষায় যাবেন না। দলের সেরাদের দিয়েই সাজাবেন শুরুর একাদশ। তাই যদি হয়, তবে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার দক্ষিণ প্রান্তের আকাশ আজ কিংসের জয়ের রঙে রাঙার সম্ভাবনাই প্রবল।
উইন্ডিজ ‘এ’ তখন ৬ উইকেটে ৩২৮ রানে। প্রথম ইনিংসে দলটির লিড দাঁড়িয়েছে ৯১ এ। প্রথম চারদিনের ম্যাচের মতো আরও একবার বড় লিডের পথে এগোচ্ছিল তারা। আরও চার উইকেটে লিডটা যথেষ্ট বড় করা যায়। ঠিক সময় বল হাতে আগুন ঝরালেন তানজিম হাসান সাকিব। বাকি থাকা চার উইকেট একাই তুলে ক্যারিবীয় প্রথম ইনিংস মুড়িয়ে দিলেন ৩৪৫ রানে।
১০৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে দলীয় ২০৯ রানে শাহাদাত হোসেন দিপুর বিদায়ে বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ ‘এ’। তখনো লিড মাত্র ১০১ রান। সেখান থেকে নাঈম হাসানকে সঙ্গে নিয়ে লড়াকু ৬৫ রানের অপরাজিত জুটি গড়েছেন ইরফান শুক্কুর। তাতে তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২৭৪/৬। লিড দাঁড়িয়েছে ১৬৬।
প্রথম চারদিনের ম্যাচের মতো এই ম্যাচে অসহায়ত্ব ছিল না ‘এ’ দলের। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও ভালো লড়াই করেছেন আফিফ হোসেনরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ভেঙে না পড়ে ক্যারিবিয়ানদের শেষদিনের পিচে কমপক্ষে দুইশো রানের চ্যালেঞ্জে ফেলার পথে বাংলাদেশ ‘এ’। ১৪ রান করা নাঈমকে নিয়ে দারুণ প্রতিরোধ গড়েছেন ইরফান। নিজে অপরাজিত আছেন ১১ চারে ৮৫ বলে ৬৪ রানে। এর আগে এই ম্যাচের দ্যুতিময় পারফরমার শাহাদাত হোসেন দিপু প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয়টিতেও ত্রাতা হয়ে আসেন ‘এ’ দলের জন্য। টানা দুই ইনিংসে ফিফটি করা দিপু এবার আউট হন ৬৮ বলে ৭ চারে ৫০ রান করে। ১২৭ বলে ১০ চারে ৭৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলা ওপেনার সাদমান ইসলামের সঙ্গে ৬৮ রানের ভালো জুটি গড়েছিলেন। এছাড়া নাঈম ইসলামের ২৮, সাইফ হাসানের ৬ ও জাকির হাসানের ১৩ রানের ইনিংসগুলো বাংলাদেশ ‘এ’ দলকে উইন্ডিজের লিড ছাড়িয়ে যাওয়ার সহায় হয়েছে। তবে মূল কাজ এখনো বাকি। কাল প্রথম সেশনে ব্যাট করে টার্গেটটা দুইশোর দিকে না নিলে ম্যাচ বাঁচানো কঠিন হতে পারে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের জন্য। সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে ৬৪ রানে অপরাজিত ইরফানকে।
চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের আগে ইতালিয়ান কাপ ঘরে তুলল ইন্তার মিলান। বুধবার রাতে ফাইনালে ফিওরেন্তিনার বিপক্ষে শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও লাউতারো মার্তিনেজের জোড়া গোলে শিরোপা জেতে ইন্তার। টুর্নামেন্টে এটি তাদের টানা দ্বিতীয়, সব মিলিয়ে নবম শিরোপা।
চলতি মৌসুমে ইন্তার মিলান উঠেছে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে। আর ফিওরেন্তিনা খেলবে ইউরোপা কনফারেন্স লিগের ফাইনাল। তাই ইতলিয়ান কাপের ফাইনালটা দু’দলের জন্যই ছিল প্রস্তুতির ভালো মঞ্চ। রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই আর্জেন্টাইন নিকোলাস গঞ্জালেসের গোলে এগিয়ে যায় ফিওরেন্তিনা। তবে সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি তারা। আট মিনিটের মধ্যে দুই গোল করেন আরেক আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেজ।
২৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে সমতা ফেরায় ইন্তার। মার্সেলো ব্রজোভিচের পাস থেকে গোল করেন মার্তিনেজ। ৩৭ মিনিটে নিকো বারেল্লার ক্রসে ভলিতে বল জালে পাঠান মার্তিনেজ। চলতি মৌসুম সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ইন্তারের হয়ে ২৭ গোল করলেন বিশ্বকাপ জয়ী এ আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। ৫৮ মিনিটে এডেন জেকোর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন রোমেলু লুকাকু। শেষ দিকে তার একটি শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন ফিওরেন্তিনা গোলকিপার।
ম্যাচ শেষে ইন্তার কোচ সিমোন ইনজাঘি বলেন, ‘আমাদের শুরুটা খারাপভাবে হয়েছে। এমনটি সব সময় হয় না। যাই হোক আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আমি খুশি কেননা যে শিরোপাটি চাইছিলাম সেটি পেয়েছি। গেল মৌসুমেও এটি জিতেছিলাম। ফিওরেন্তিনা ভালো দল। আমাদের বেশ ভুগিয়েছে।’ এর আগে গেল জানুয়ারিতে ইতালিয়ান সুপার কাপও জিতেছিল ইন্তার মিলান।
৭ জুন উয়েফা ইউরোপা কনফারেন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ফিওরেন্তিনা ও ওয়েস্টহাম। ১০ জুন চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্তার মিলান খেলবে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে। দুই টুর্নামেন্টেই লড়াইটা ইতালি বনাম ইংল্যান্ডের ক্লাবের।
কাতার বিশ্বকাপ ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দ জুগিয়েছে এক মাস। ‘র্যাংগস-দেশ রূপান্তর ফুটবল বিশ্বকাপ কুইজ ২০২২’ সেই আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছিল কয়েকগুণে। গতকাল দেশ রূপান্তর কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন এবং সনি র্যাংগসের ম্যানেজার আবু শাহরিয়ার সরকারের উপস্থিতিতে সেই কুইজের ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দেশ রূপান্তরের জিএম সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং হারুনের রশীদ। এ সময় আরও ছিলেন দেশ রূপান্তরের ক্রীড়া সম্পাদক সাইফুর রহমান খোকন, হেড অব সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং মিজানুর রহমান, এজিএম মার্কেটিং শফিকুল আলম, সিনিয়র ম্যানেজার সার্কুলেশন মো. আব্দুল হাকিম, সিনিয়র ম্যানেজার সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং আমিনুল ইসলাম বাদল এবং ম্যানেজার মার্কেটিং ওবায়দুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সনি-র্যাংগসের সাদ্দাম হোসেন ও মেরাজুল আশেকিন খান।
ড্র অনুষ্ঠানে সনি র্যাংগের ম্যানেজার আবু শাহরিয়ার সরকার বলেন, ‘চার বছর পর পর ফুটবল বিশ্বকাপ আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে। ফুটবল বলতেই উন্মাদনা কাজ করে। সমর্থক, দর্শকদের সেই উন্মাদনায় বাড়তি কিছু যোগ করতেই এই চেষ্টা। দেশ রূপান্তর প্রথম দিন থেকেই তাদের কার্যক্রম দিয়ে পাঠকদের মন জয় করেছে। সবকিছু বিবেচনা করেই দেশ রূপান্তরের সঙ্গে এই কুইজের আয়োজন; এই অজস্র কুপন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আয়োজনটিতে দেশ রূপান্তর কতটা সফল।’
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন বলেন, ‘বিশ্বকাপে দেশ রূপান্তরের সবচেয়ে বড় আয়োজন ছিল। সেই আয়োজনের একটা অংশ আমরা দেখে বুঝতে পারছি কী পরিমাণ সাড়া মিলেছে। সনি-র্যাংগস সব সময়ই আমাদের সঙ্গে থাকে। ভবিষ্যতেও যে কোনো ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা তারা দেশ রূপান্তরের সঙ্গে থাকবে।’
বিজয়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অতি দ্রুতই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কারগুলো হস্তান্তর করা হবে।
কুইজ বিজয়ীরা
প্রথম পুরস্কার : ৪০ ইঞ্চি র্যাংগস অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট টেলিভিশন ১টি- আরিফা, মুগদা, ঢাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার : ৩২ ইঞ্চি র্যাংগস অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট টেলিভিশন ১টি- শরিফুন নাহার, নয়ানীগ্রাম, ভোলা। তৃতীয় পুরস্কার : ব্লেন্ডার ১টি- নুরুল আহাদ, আশুলিয়া, ঢাকা। চতুর্থ পুরস্কার : ইন্ডাকশন কুকার ১টি- মোশাররফ, গোদনাইল, নারায়ণগঞ্জ। পঞ্চম পুরস্কার : টোস্টার ১টি- কাজী আব্দুল আলী, হালিশহর, চট্টগ্রাম।
যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলে বয়সে ছোটদের একজন ছিলেন তিনি। তবুও শাহাদাত হোসেন দিপুর সামর্থ্য কম ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকা যুব দলের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস খেলে দল জিতিয়েছিলেন। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদুল হাসান জয়ের সেঞ্চুরির সহযোগী হয়ে করেছিলেন ৪০ রান। সেই দিপু ঘরোয়া ক্রিকেটে নেমেই ছিলেন উজ্জ্বল। প্রথমবারের মতো প্রথম শ্রেণির ম্যাচে (জাতীয় লিগ) খেলতে নেমেই করেন সেঞ্চুরি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মাত্র দুই মৌসুমে করে ফেলেছেন তিন সেঞ্চুরি। দুর্দান্ত ব্যাটিং সামর্থ্য আর কার্যকর অফস্পিনে ভবিষ্যতের জন্য আরেকজন অলরাউন্ডার পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক ২১ বছর বয়সী এ তরুণকে এখনই আলোচনার কেন্দ্রে তুলে দিতে নারাজ। তার ইচ্ছে দিপু যেমন খেলছে তেমনি ভালো খেলুক। আরও সময় নিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে তৈরি হয়ে আসুক জাতীয় দলের জন্য।
বাংলাদেশ দলে উল্কার মতো উঠে আসা ক্রিকেটার আছে অনেক। আবার হারিয়ে যাওয়াদের তালিকাটাও লম্বা। অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই এখন তরুণ ক্রিকেটারদের ভালো খেলায় বেশি আলোচনা তুলে দিতে অনীহা বিসিবি সংশ্লিষ্টদের। বরং ওই ক্রিকেটারকে নিজের মতো ভালো খেলে আত্মবিশ্বাস গড়ে দেওয়ার দিকে নজর। শাহাদাত হোসেন দিপুকে নিয়েই সেই চিন্তা বিসিবির। নির্বাচকম-লীর সদস্য সাবেক স্পিনার আবদুর রাজ্জাকও সেই দলে। দেশ রূপান্তরকে বলছিলেন, ‘এটাই আসলে মূল বিষয়। (ভালো খেলতে থাকা ক্রিকেটারকে চাপে না ফেলানো) বাংলাদেশ ক্রিকেটের উন্নতিতে অবশ্যই ক্রিকেটার, বোর্ড সংশ্লিষ্ট সবাই, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সংবাদ মাধ্যম ভূমিকা রাখে। সেখানে কোনো ক্রিকেটার যদি ভালো খেলা শুরু করে তাকে নিয়ে এত বেশি আলোচনা না করা যে সে চাপে পড়ে বা অতি আত্মবিশ্বাসে তার স্বাভাবিক খেলার পথ থেকে সরে যায়। এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। এর আগেও এমন হয়েছে যে কিছু ক্রিকেটার একটা পজিশনে ভালো খেলেছে এবং সংবাদ মাধ্যমে দেখানো হয় যে বাংলাদেশ দলে ওই জায়গার সমস্যা মিটে গেছে। কিন্তু পরে সেই অবস্থানটা ছিল না। তাই আমার মনে হয় দিপু হোক বা অন্য যে কেউ, একটা ক্রিকেটারকে ভালো ক্রিকেট খেলে ওই মানের আত্মবিশ্বাস আসার সময় দেওয়া উচিত। তার আগে ওই ক্রিকেটারকে নিয়ে অতি আলোচনা না করাটাই ভালো।’
দিপুকে নিয়ে আলোচনার কারণটা তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। ঢাকা প্রিমিয়ার ১৩ ম্যাচে ৪৮০ রান করে ‘এ’ দলে সুযোগ পেয়েছেন এই তরুণ। উইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে তিনটি চারদিনের ম্যাচের সিরিজে আছেন দ্বিতীয় ম্যাচের সেরা একাদশেও। ১ থেকে ৭ নম্বরে ব্যাটিং অর্ডারের যে কোনো পজিশনে ব্যাট করতে পারা দিপু এই ম্যাচে ব্যাট করছেন পাঁচে। প্রথম ইনিংসে দল বাঁচানো ১২৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৭৩ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ চারে ৬৮ বলে করেছেন ৫০। ক্যারিবিয়ান দীর্ঘদেহী পেসারদের সামলে দুই ইনিংসেই ফিফটি করে বেশ প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। তবে রাজ্জাক এখনই ওকে পরিপক্ব ব্যাটার বলছেন না। দিপুর কাছ থেকে আরও ভালো ইনিংস দেখতে চান, ‘সম্ভাবনা তো দেখি। অবশ্য সে ভালো ক্রিকেটার। যে কোনো দলের ক্ষেত্রে সেখানে জায়গা পেতে হলে ক্রিকেটারদের মূল কাজটা হল ভালো খেলা। দিপু এখন সেই অবস্থানে আছে। এজন্য সে ‘এ’ দলে জায়গা পেয়েছে। অবশ্যই এই বিষয়টা ধরে রাখলে ভবিষ্যতে তার জন্য আরও বড় পর্যায়ের সুযোগ আসবে। কিন্তু এখন যে সে ধারাবাহিকতা রাখছে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। পরিপক্ব এখনই বলব না। ও এখনো বাচ্চা ছেলে। সঠিক পথে আছে। ভালো ক্রিকেটার হওয়ার জন্য যা দরকার সেটা ওর মধ্যে আছে। এটা আমি মনে করি। কারণ এখনই ওকে নিয়ে উচ্চবাচ্য হওয়ার চেয়ে ওকে সঠিক পথে আগানোর সাহস বা পথ তৈরি করে দেওয়া জরুরি।’
দিপুকে নিয়ে নির্বাচকদের সতর্কতার কারণ আছে। অতি সম্প্রতি যুব বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটারদের জাতীয় দলে সুযোগ দিয়ে তাদের পিছলে পড়ার ঘটনাও আছে। তাই ভালো ব্যাটার হয়ে ওঠা দিপুকে আরও সময় দিয়ে তৈরি করতে চায় বিসিবি।
আগামী চেস গিল্ড স্কুল দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আইয়ান রহমান ও মনন রেজা নীড়। একক ইভেন্টের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে আইয়ান ও ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নীড়। ৭ রাউন্ডের খেলায় আইয়ান ও নীড় দুজনই পেয়েছে সাড়ে ছয় পয়েন্ট করে।
বিটজ দলগত বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এলিগেন্ট চেস একাডেমি। এই দলে খেলেছে জারিফ হক আফনান, তাসরিক সায়হান, সিয়াম চৌধুরী ও নীলাভা চৌধুরী। আজ শনিবার দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে শেষ হয়েছে এই প্রতিযোগিতা।
আগামী চেস গিল্ডের আয়োজনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয় ‘আমরা ৯২’ আগামী চেস গিল্ড স্কুল রেটিং টুর্নামেন্ট। সুইস লিগ পদ্ধতিতে হয়েছে খেলা। একক ও দলগত দুই বিভাগে অংশ নেয় ১৪৫ জন দাবাড়ু। টুর্নামেন্টে বিজয়ীরা ট্রফি, মেডেল ও সার্টিফিকেটের পাশাপাশি পেয়েছে ৭০ হাজার টাকা।
টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার, আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম।
টানা ৬ ম্যাচ জিতে লা লিগার শীর্ষে উঠে এসেছিল জিরোনা। আগের রাতে সেভিয়াকে হারানো বার্সেলোনা সেই জিরোনাকে পেছনে ফেলে। আর রিয়াল মাদ্রিদ এবার উড়তে থাকা জিরোনাকে হারিয়ে লা লিগার কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধার করেছে।
শনিবার মন্তিলিভি স্টেডিয়ামে জিরোনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল। রিয়ালের হয়ে গোল তিনটি করেছেন জোসেলু, অঁরেলিয়ে চুয়ামেনি ও জুড বেলিংহাম।
আট ম্যাচের সাতটিতে জিতে রিয়ালের পয়েন্ট এখন ২১। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা। আর টানা ছয় জয়ের পর রিয়ালের কাছে হেরে যাওয়া জিরোনা ১৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে।
সপ্তাহ খানেক আগেই আতলেতিকো মাদ্রিদে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরেছিল রিয়াল। এবার জিরোনায় গিয়ে
প্রথমার্ধেই ২ গোলে এগিয়ে যায় আনচেলোত্তির শিষ্যরা। এর মধ্যে ১৭ মিনিটে বেলিংহামের ক্রস থেকে বল জালে পাঠান জোসেলু। আর ২২ মিনিটে টনি ক্রুসের কর্নার থেকে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন চুয়ামেনি।
রিয়াল ব্যবধান ৩-০ করে ৭১ মিনিটে। জোসেলুর শট জিরোনা গোলরক্ষক প্রতিহত করলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। নাগালে বল পেয়ে দারুণভাবে বল জালে পাঠান বেলিংহাম। এটি রিয়ালের হয়ে ৭ ম্যাচে তার অষ্টম গোল।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
লাক্সারিয়াস জীবন পাওয়ার জন্য এখন মানুষ দিনরাত শুধুই কাজ করে চলেছেন। যার মধ্যে অফিস ডেস্কে বসে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেয়ারে বসে ল্যাপটপের সামনে তাকিয়ে থাকা রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক।
শুধু তাই নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। যারা অফিসে ডেস্কে কাজ করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সারাদিন যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের অন্যতম অভিযোগও এটি। তারা বলে থাকেন, চেয়ারে বসে কাজ করে মোটা হয়ে যাচ্ছি! তবে এই অজুহাতকে একেবারে সত্য বলার সুযোগ নেই। কারণ ডেস্কে বসে কাজ করেও স্লিম ও ফিট থাকা সম্ভব। এজন্য মেনে চলুন পাঁচটি টিপস।
হাঁটুনফিট ও কর্মক্ষম থাকতে নিয়মিত হাঁটুন। দিনের পর দিন দীর্ঘ সময় বসে থাকলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এমনকি কাজের ফাঁকেও ১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে হেঁটে আসতে পারেন।
সোজা হয়ে বসুনচেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন। মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে অনেক চাপ পড়ে, সেই সঙ্গে চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের পাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টের ওপর। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় মনিটরটি চোখের সমান স্তরে রাখুন। মাউস ব্যবহার করার সময় শুধু আপনার কব্জি নয় পুরো হাত ব্যবহার করুন।
চাপ এড়িয়ে চলুনএটা খুব কঠিন কাজ, চাপমুক্ত থাকা। বিশেষ করে যখন চারপাশ থেকে নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। তবে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখুন, নিজেকে মোটিভেট করুন। কোনও চাপই বেশি দিন থাকে না, এগুলো নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে মনোযোগ বাড়ান। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে অনলাইনে কিছু যোগা শিখে অভ্যাস করুন।
চোখের যত্নকম্পিউটারে কাজ করার সময় স্ক্রিনে একটানা ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাকিয়ে থাকবেন না। নিয়মিত চোখের পাতা ফেলুন। স্ক্রিনে পর্যাপ্ত আলো রাখুন, যেন চোখের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
হাড়ের যত্ন বসে থাকার ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে। এজন্য নজর দিতে হবে প্রতিদিনের খাবারে স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ডিম, দুধ, দই ও বাদাম রাখুন।