
প্যাট কামিন্স, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল চোটে পড়েছিলেন এই চার তারকা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া তাদের নিয়েই ভারতে বিশ্বকাপে খেলতে যাবে। গতকাল তাদের নিয়েই ১৫ জনের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি জানিয়েছেন, চার তারকা দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং সেপ্টেম্বরের শেষে ভারতের বিপক্ষে তিনটি প্রস্তুতিমূলক ওয়ানডে ম্যাচেও অংশ নিতে পারেন। গত অ্যাশেজে কামিন্স হাতে এবং স্মিথ কবজিতে চোট পান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তাই নেই দুই তারকা। গোড়ালিতে চোট আছে ম্যাক্সওয়েলের এবং কুঁচকির সমস্যায় ভুগছেন স্টার্ক।
অস্ট্রেলিয়ার পেস বিভাগে জায়গা পেয়েছেন শন অ্যাবোট। ব্যাকআপ উইকেটকিপার হিসেবে রাখা হয়েছে জস ইংলিশকে। ১৮ জনের প্রাথমিক স্কোয়াড থেকে ১৫ জনের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি নাথান এলিস, অ্যারন হার্ডি ও তানভির সংঘ।
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াড : প্যাট কামিন্স, শন অ্যাবোট, অ্যাশটন অ্যাগার, অ্যালেক্স ক্যারি, ক্যামেরন গ্রিন, জশ হ্যাজলউড, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিশ, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টয়নিস, ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যাডাম জাম্পা।
উন্নয়নের অঙ্ক মানলে বলা যায়, উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ৪ উইকেট পড়েছিল মাত্র ২ রানে, পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ৪ উইকেটের পতন হয়েছে ৩ রানে। ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে এক ধাপ নিচে থাকা শ্রীলঙ্কার কাছে তাদের মাঠে ১৬৪ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ, শীর্ষে থাকা পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের মাঠে বাংলাদেশ সবকয়টি উইকেট হারিয়ে করেছে ১৯৩ রান। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষ হতে অবশ্য তখনো প্রায় ১২ ওভার বাকি, এই পরিসংখ্যানের চেয়ে বাংলাদেশ যে ওভারপ্রতি গড়ে প্রায় ৫ রান করে তুলেছে এটাই অনেক বেশি আকর্ষণীয়।
১১ জন ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন ১৯৩ রান, অর্থাৎ প্রত্যেকের গড় রান প্রায় ১৭.৫! অথচ বাস্তবে দলের বাকি ৯ জনের সঙ্গে মুশফিকুর রহিম আর সাকিব আল হাসানের রান-বৈষম্য অনেক বেশি। সাকিব করেছেন ৫৩ রান আর মুশফিক করেছেন ৬৪ রান। গড় রানের চেয়ে বেশি করেছেন মাত্র ১ জন, ওপেনার নাঈম শেখ। তিনি করেছেন ২০ রান। বাকিরা সবাই গড়ের নিচে, ৫ জনই আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। মাথাপিছু আয় বাড়লেই যে সামগ্রিক উন্নয়ন হয় না, সেই পাঠ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের স্কোরকার্ডটাই হতে পারে অনন্য উদাহরণ।
ভারতের চন্দ্রবিজয়ের পর হঠাৎ করেই আলোচনায় বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান। শিক্ষাগত যোগ্যতা আর চাকরির ক্ষেত্রের গোঁজামিল তাকে নিয়ে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচনায়, অবশেষে তাকে বদলিই করেছে সরকার। বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারটাও তেমনি গোঁজামিলের অঙ্কে ভরা। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান, দুই দলই বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতে সম্ভাব্য চার বামহাতি ব্যাটসম্যানের জন্যই নতুন বলে অফস্পিনারকে বোলিংয়ে আনে। তাই কাজে লাগে মেহেদি হাসান মিরাজকে ওপেনার বানিয়ে দেওয়ার টোটকাটা। কিন্তু আগের দিনই একাদশ জানিয়ে দেওয়া পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ আর নাসিম শাহকে নিয়ে গড়া পেস আক্রমণের বিপক্ষে যে সেই সূত্র কাজে লাগবে না, এমনটা বোধহয় দলের সঙ্গে থাকা কর্তাব্যক্তিরা ভাবেননি। মিরাজকে নিয়ে আবারও ফাটকা খেলেছেন, এবার শূন্য হাতে ফিরেছেন মিরাজ তাই কাজে লাগেনি তুকতাক। ভাইরাল জ্বরে ভুগে দেরিতে হলেও দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া লিটন দাস খুব সম্ভবত লাহোরের তপ্ত রোদে মাঝমাঠে বেশিক্ষণ থাকতে চাননি। তিনে নেমে ১২ বল খেলে চারটা বাউন্ডারিতে করেছেন ১৬ রান, দৌড়ে কোনো রানই নেননি। তার চারের মারগুলো যতটা দৃষ্টিনন্দন, আউট হওয়ার ধরনটা ততটাই দৃষ্টিকটু। শাহিন শাহ আফ্রিদির শর্ট এবং অফস্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন লিটন।
নাঈম সফল না ব্যর্থ, সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোও কঠিন। এশিয়া কাপে ৩ ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ১৬, ২৮ এবং ২০ রান। ক্যারিয়ারের প্রথম তিন ইনিংস মিলিয়ে যার মোট রান ১০, পরের তিন ম্যাচে তার এই স্কোর নিঃসন্দেহে উন্নতির লক্ষণ। কিন্তু ঐ যে, এখানে উন্নয়নের অঙ্ক লুকানো! নাইম ২০ রান করেছেন ২৫ বলে, তার ইনিংসে ৪টা ৪ আর ৪টা সিঙ্গেল। আউট হওয়ার বলটি বাদে বাকি ১৬ বলে তিনি কোনো রান নেননি, লিটন তো কোনো সিঙ্গেলই নেননি। তাই দুজনের জুটিটা ২২ বলে ৩১ রানের হলেও তাতে দলের খুব একটা উপকার হয় না। বরং দুজনের একজন যদি ইনিংসটা লম্বা করতেন, তাহলে লাহোরের ব্যাটিং স্বর্গে বাংলাদেশের সংগ্রহটা বড় হতো।
তৌহিদ হৃদয়ের স্টাম্প উড়িয়েছেন হারিস রউফ। তার ব্যাটিং অর্ডারটা নিয়ে নড়চড়েই বোধহয় আত্মবিশ্বাস নড়ে গেছে এই নবীন ব্যাটসম্যানের। তাই ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসা বলটা চোখেই দেখেননি, তার আগেই ভেঙে গেছে স্টাম্প।
অনেক আর্থিক অনিয়মের মধ্যেও যেভাবে তৈরি পোশাক শিল্পের সস্তা শ্রম আর প্রবাসী শ্রমিকের রক্ত পানি করে পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে, তেমনি করেই বাকিদের ব্যর্থতার দিনে হাল ধরেন সাকিব আর মুশফিক। বিকেএসপি, বয়সভিত্তিক দল থেকে শুরু করে জাতীয় দলেও প্রায় দেড় যুগ ধরে একসঙ্গে খেলছেন দুজনে। বহুবার বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছেন ব্যাটিং বিপর্যয় থেকে। পঞ্চম বা তার পরের উইকেট জুটিতে ৫ বার শতরান যোগ করার কৃতিত্ব আছে দুজনের, যে কাজটা তাদের চেয়ে বেশি করেছেন কেবল মহেন্দ্র সিং ধোনি আর সুরেশ রায়না মিলে। এক রান, দুই রান আর সুযোগ হলে বাউন্ডারি; এভাবেই জুটিটা বড় করছিলেন সাকিব আর মুশফিক। ১২০ বলে ১০০ রানের জুটি হলো, এরপর কি খেয়ালে মিডিয়াম পেসার ফাহিম আশরাফকে উড়িয়ে মারতে গেলেন সাকিব। বাউন্ডারিতে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়ার পর সাকিবের হতাশার বহিঃপ্রকাশই বলে দিচ্ছিল, ম্যাচের লাগাম ফস্কে গেছে ওখানেই।
আফিফ হোসেনের আগে শামীম হোসেন কেন এলেন এবং কেনই বা তার এত দ্রুত রান তোলার তাড়া বোঝা গেল না। স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা মেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেছিলেন, সেভাবেই কাল অক্কাও পেলেন। আফিফের সামনে সুযোগ ছিল মুশফিকের সঙ্গে মিলে একটা জুটি গড়ে নিজের দায়িত্বশীলতার প্রমাণ দেওয়ার, তাতে তিনি ব্যর্থ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শান্তর বিদায়ে যেভাবে বাকি সবার বিদায় হয়েছিল ত্বরান্বিত, মুশফিকের বিদায়ের পরও তাসের ঘরের মতোই ধসে পড়ে জোড়াতালির ব্যাটিং। আট নম্বর ব্যাটসম্যানকে উদ্বোধনে, উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে তিনে, ছয়ের ব্যাটসম্যানকে আটে নামিয়ে জগাখিচুড়ি পাকানো ব্যাটিং লাইনআপ থেমে যায় ৩৮.৪ ওভারে, ১৯৩ রানে। ইনিংসের তখনো ৬৮ বল বাকি।
অবশ্য এশিয়া কাপটাই চলছে জোড়াতালি দিয়ে। খেলা হচ্ছে দুই দেশে। ভারত বাদে সবাই শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা শাটল ককের মতো ঘুরেছে। বৃষ্টির বিঘঘ্নে ভেন্যু সরাবার আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত কলম্বোতেই থাকছে। আগের ম্যাচে আফগানিস্তান জানত না জয়ের অঙ্ক। জোড়াতালি দিয়ে যখন এত কিছু চলছে, তখন বাংলাদেশের ব্যাটিং চলতেই বা কী সমস্যা! কিংবা কে জানে, গোটা ক্রিকেটটাই!
বিশ্ব র্যাংকিংয়ে আফগানিস্তানের অবস্থান ১৫৭তম। বাংলাদেশের চেয়ে ৩২ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটি কয়েক বছর আগে দক্ষিণ এশিয়া ছেড়ে মধ্য এশিয়ায় নাম লিখিয়েছে নিজেদের অবস্থান আরও ওপরে নেওয়ার লক্ষ্যে। ২০২৭ এশিয়ান গেমসের চূড়ান্তপর্বে খেলার স্বপ্নে বিভোর আফগানিস্তান কোচ হিসেব বেছে নিয়েছে কুয়েতি আব্দুল্লাহ আল মুতাইরিকে। নেপালের সাবেক এই কোচ দায়িত্ব নিয়েই দলের খোলনলচে পাল্টে ফেলেছেন। ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ খেলোয়াড় বদলে তিনি এখন একটি শক্তিশালী দল গড়ার প্রক্রিয়ায় আছেন। সেই দলটিকেই ৩ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠে বাগে পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালিস্টরা বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আধিপত্য বিস্তার করেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি দুই ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন ও শেখ মোরসালিনের বিস্ময়কর ব্যর্থতায়। তিনটি নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করে ৩৯ বছর পর জয়ের খুব কাছে গিয়েও তা ছুঁতে পারেনি বাংলাদেশ। আজ আরেকবার সুযোগ আফগানদের হারানোর। দলের কোচ-অধিনায়ক অবশ্য জয়-পরাজয়ের চেয়ে খেলায় উন্নতি আনার দিকেই বেশি নজর দিচ্ছেন। বোনাস হিসেবে জয়টা পেয়ে গেলে তা অক্টোবরে মালদ্বীপের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দুই লেগের প্রথম রাউন্ডে দেবে বাড়তি অনুপ্রেরণা।
প্রীতি ম্যাচ হলেও এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষকে হারাতে পারলে মিলবে ভালো রেটিং পয়েন্ট। বাংলাদেশ এখন অবশ্য খুব একটা র্যাংকিং নিয়ে ভাবছে না। তাদের ভাবনাজুড়ে শুধু মালদ্বীপ। দুই লেগের সেই লড়াইয়ে জিততে না পারলে যে এক বছরের জন্য আন্তর্জাতিক নির্বাসনে চলে যেতে হবে। তারই প্রস্তুতি নিতে মূলত আফগানদের সঙ্গে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়া। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা তাই আজ কিংস অ্যারেনায় বিকেল ৫টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচে জয়-পরাজয়ের চেয়ে মালদ্বীপের প্রস্তুতিকে দিচ্ছেন প্রাধান্য, ‘মালদ্বীপ ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে আমরা একটি প্রস্তুতি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যতটুকু সময় আছে সেটা কাজে লাগিয়ে আমরা প্রস্তুতির সেরা পর্যায়ে পৌঁছাতে চাই। অবশ্যই আমাদের চোখ উন্নতিতে এবং একই সঙ্গে ম্যাচটা জেতার আশাও করছি।’
কাল সন্ধ্যায় কিংস অ্যারেনার ট্রেনিং গ্রাউন্ডে প্রস্তুতি শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছ থেকে আফগান কোচ মুতাইরির একটা কথা শুনে খানিকটা হাসলেন কাবরেরা। আফগানিস্তানের কোচ চলতি এশিয়া কাপে বাংলাদেশের কাছে আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের হারের বদলা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কাবরেরা সরাসরি এর জবাব না দিয়ে দল যে আফগানদের মাঠে জবাব দিতে প্রস্তুত সেটাই বোঝাতে চাইলেন, ‘ছেলেরা পুরো সময়টাই খুব উপভোগ করছে, তারা ভীষণ উদ্বুদ্ধ এবং আবারও মাঠে যাওয়ার জন্য, ভালো কিছু উপহার দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। আমরা মালদ্বীপের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছি। সেই প্রস্তুতির মধ্যে আফগানিস্তানের মতো দলের মুখোমুখি হতে পেরে সত্যি আনন্দিত। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক এবং চ্যালেঞ্জিং। আমরা আগামীকাল আরেকটি চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
কিংস অ্যারেনায় দশমবারের মতো মুখোমুখি হচ্ছে দুদল। আগের ৯ বারের দুবার আফগানিস্তান ও একবার বাংলাদেশ জিতেছে। বাকি ছয় ম্যাচ ড্র। কাল বাংলাদেশ তাই মুখোমুখি লড়াইয়ে সমতা ফেরাতে চাইবে ম্যাচটা জিতে।
২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে মাঠের লড়াই শুরু হচ্ছে আজ থেকে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের শুরুটা হচ্ছে কনমেবল অঞ্চল দিয়ে। বাংলাদেশ সময় কাল ভোর সাড়ে ৪টায় প্যারাগুয়ে খেলবে পেরুর বিপক্ষে। ভোর ৫টায় কলম্বিয়ার ম্যাচ ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে।
কলম্বিয়া গেলবার বাছাইয়ে ছয় নম্বরে থেকে শেষ করে। পেরু পঞ্চম হয়ে খেলেছিল প্লে-অফ পর্ব। তবে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারেনি তারা। প্যারাগুয়ে হয়েছিল অষ্টম। আর বলিভিয়া শেষ করে নয় নম্বরে থেকে। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপ ৪৮ দল নিয়ে হবে। তাই কনমেবল অঞ্চল থেকে এবার শীর্ষ ছয় দল সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। সপ্তম দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। তাই ১০ দলের মধ্যে ৭ দলেরই সুযোগ থাকছে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার।
শেষ পাঁচ ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে জিততে পারেনি প্যারাগুয়ে। তবে ঘরের মাঠে সবশেষ ম্যাচে পেরুর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে প্যারাগুয়ে। বাছাইপর্ব জয় দিয়েই শুরু করতে চাইবে দুদলই। কলম্বিয়ার সঙ্গেও শেষ পাঁচ ম্যাচে জয় পায়নি ভেনেজুয়েলা। হেরেছে তিনটিতে, ড্র করে দুটি। কলম্বিয়া সবশেষ ২০২২ এর মার্চে ১-০ গোলে হারিয়েছিল ভেনেজুয়েলাকে।
এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই শুরু হবে ১২ অক্টোবর থেকে। ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হবে প্রথম রাউন্ডের খেলা। এশিয়া অঞ্চল থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা পাবে ৮ দেশ। আরেকটি দেশ সুযোগ পাবে প্লে-অফ খেলার।
আগামী ১৩ নভেম্বর থেকে শুরু হবে আফ্রিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই। ৫৪ দেশ থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে সুযোগ পাবে ৯টি দেশ। এছাড়া একটি দল সুযোগ পাবে প্লে-অফ খেলার। ২০২৪ সালের মাঠে শুরু হবে উত্তর ও মধ্য আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই। এই অঞ্চল থেকে তিনটি দেশ বিশ্বকাপে জায়গা পেয়েছে স্বাগতিক হিসেবে। তারা হলো যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা। আরও তিনটি দেশ বাছাইপর্ব থেকে জায়গা করে নেবে। দুটি দেশ প্লে-অফ খেলার সুযোগ পাবে। ওসেশিয়ান অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে সুযোগ পাবে ১টি দেশ। প্লে-অফে একটি। তাদের বাছাই শুরু হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। ইউরোপীয় অঞ্চলের বাছাইপর্ব শুরু হবে সবার শেষে। মার্চ ২০২৫-এ। ইউরোপ থেকে বিশ্বকাপে খেলবে মোট ১৬ দেশ।
এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান গেমস বাছাইপর্ব হার দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডে গতকাল তারা ২-০ গোলে হেরেছে শক্তিশালী মালয়েশিয়ার কাছে। দুটি গোলই জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুর শিষ্যরা হজম করেছেন ম্যাচের একেবারে শেষ সময়ে। ৮১ মিনিট পর্যন্ত মালয়েশিয়াকে ঠেকিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ। মূলত রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলা বাংলাদেশের প্রতিরোধ শেষ হয়ে যায় ৮২ মিনিটে মুহূর্তের অসতর্কতায়। বক্সের অনেক বাইরে থেকে আচমকা শটে মালদ্বীপকে এগিয়ে নেন আলিফ ইজওয়ান। আর দ্বিতীয় গোলটি বাংলাদেশ হজম করেছে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে। গোলটি করেন বদলি ফরোয়ার্ড ফের্গাস। বাংলাদেশ তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে শনিবার স্বাগতিক থাইল্যান্ডের বিপক্ষে।
সেপ্টেম্বরের এই ফিফা উইন্ডোতে ইউরোপের দেশগুলো খেলবে ইউরো ২০২৪ এর বাছাইপর্ব। ইউরোর বাছাইপর্ব শুরু হয়েছে গেল মার্চে। আজ মাঠে নামছে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস। বি গ্রুপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচ খেলবে ফ্রান্স আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। একই গ্রুপে থাকা নেদারল্যান্ডস নিজেদের তৃতীয় ম্যাচ খেলবে গ্রিসের বিপক্ষে।
বি গ্রুপে চার ম্যাচের সবগুলো জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে ফরাসিরা। আয়ারল্যান্ড খেলেছে তিনটি ম্যাচ। একটি জয় তাদের, হার দুটিতে। আজ ফ্রান্সের ম্যাচ পার্ক দ্য প্রিন্সেসে। অর্থাৎ পিএসজির মাঠে। তাই চেনা আঙিনা ফ্রান্স অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপ্পের। পিএসজির সঙ্গে এমবাপ্পের ঝামেলা মিটেছে। নতুন মৌসুমে পিএসজির হয়ে তিন ম্যাচ খেলে করেছেন ৫ গোল। তাই ফ্রান্সের হয়েও দারুণ করবেন সেই প্রত্যাশা করাই যায়। ফরাসিদের হয়ে জুনে দুই ম্যাচ খেলে গোল করেছেন এমবাপ্পে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এটি ফ্রান্সের ফিরতি ম্যাচ। গেল মার্চে ডাবলিনে ফ্রান্স জিতেছিল ১-০ গোলে। ম্যাচের ৫০ মিনিটে গোলটি করেছিলেন পাভার্ড। ফ্রান্স ঘরের মাঠে টানা ১১ ম্যাচে অপরাজিত। ৯টি জিতেছে, ড্র দুটি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ১১ ম্যাচে হারেনি ফ্রান্স।
বি গ্রুপে চার নম্বরে আছে নেদারল্যান্ডস। তারা খেলেছে দুটি ম্যাচ। একটিতে জিতেছে, হার একটিতে। জিব্রাল্টারের সঙ্গে জিতলেও ডাচরা ইউরো বাছাই শুরু করেছিল ফ্রান্সের বিপক্ষে ৪-০ গোলের হার দিয়ে। গেল জুনে নেদারল্যান্ডস খেলেছিল নেশন্স লিগে। সেমিফাইনালে তারা হারে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে।
জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হারে বাংলাদেশ দল। যে সিরিজে চট্টগ্রামে ঘরের মাঠে টাইগাররা ২-১ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। আর এই সিরিজে পরাজয়ের পেছনে বড় কারণ অধিনায়ক তামিম ইকবাল! এমনটাই মনে করেন বাংলাদেশ দলের বর্তমান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ শেষে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তামিম। একদিন পরে অবশ্য অবসর ভাঙলেও সেই সিরিজ আর খেলেননি তিনি। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় কিস্তিতে সাকিব সেই সিরিজ হারের দায় দিলেন তামিমের ওপরই।
'আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ হারটা আমি পুরোপুরি একজনকে দায় দেব, অধিনায়ক। এক ম্যাচ পরে আমাদের হাতে আরও দুই ম্যাচ ছিল। আমরা তৃতীয় ম্যাচে ঠিকই কামব্যাক করেছি কিন্তু একটা ম্যাচ সময় লেগেছে আমাদের। সুতরাং এটা আর কারো দায় নয়, পুরো সিরিজটায় দায় একজনের ওপর। বিশ্বের কোথাও অন্তত দেখিনি যে এক ম্যাচ পরেই এরকম অধিনায়ক এসে ইমোশনালি বলে ফেলেন যে আমি ভাই খেলব না আর ক্রিকেট।’
সাকিব বলেন, 'আমার ধারণা যদি কোনো অধিনায়কের দায়িত্ববোধ থাকত, সে এটা করতে পারত না। আমার কাছে মনে হয়, এটা দলকে অনেক বাজে একটা পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে এবং আমার মনে হয় ওইটাই এখনো রিকভার করতে সময় লাগছে, যেটা আমি অনুভব করি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
বাংলাদেশের কিছু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বলে জানিয়েছেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর আজ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করার ঘোষণা পর তিনি এ তথ্য জানান। তবে কতজনের ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তা তিনি জানাননি ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেছেন, ‘আমরা যখন এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছি, তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার ঘটনাবলির ওপর গভীর দৃষ্টি রাখছে। সতর্কতার সঙ্গে তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনার পর আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছি।’
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ করবে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এসব ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম আমরা প্রকাশ করব না।’ কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে ভিসা রেকর্ড গোপনীয়।
ব্রায়ান শিলার এই কথা বলার ঘণ্টাখানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ (শুক্রবার) স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অতিরিক্ত ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। এর মধ্যে বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশী কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের আজকের পদক্ষেপগুলি শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।’
মে মাসে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে ভিসানীতির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্থনি ব্লিংকেন ওই ঘোষণা দেন।
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।