অনিশ্চয়তা নিয়েই সাকিব ফিরলেন দেশে
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ১৪ অক্টোবর, ২০১৮ ১৬:৩৭
ফাইল ছবি
ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আছে। আঙুলটার অবস্থাও ভালো। এসব সুখবর। কিন্তু সাকিব আল হাসানের মাঠে ফেরাটা আপাতত অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে। মেলবোর্ন থেকে চিকিৎসা নিয়ে ঢাকা বিমান বন্দরে পৌঁছে সাকিব যা বললেন তার ভেতর থেকে একটা কথা তুলে আনা যায়। ‘এটা আসলে এমন একটা সমস্যা যেটার কোনো টাইম ফ্রেম নাই।’ সাকিব নিজেও জানেন না। তার কথায় স্পষ্ট, চিকিৎসক বা ফিজিওর পক্ষেও এখনই কিছু নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। তার মনে হচ্ছে, ‘হতে পারে একমাস পরেও খেলতে পারি আবার ছয় মাসও লাগতে পারে।’ তবে আশা. একমাস পরই খেলতে পারার।
এক সপ্তাহ অস্ট্রেলিয়ার হাসপাতালে কাটিয়ে রোববার দুপুরে সাকিব ফিরেছেন দেশে। গেল জানুয়ারিতে ডান হাতের কড়ে আঙুলের যে ইনজুরিতে পড়েছিলেন শেষ এশিয়া কাপে তার বেহাল অবস্থা হয়েছিল। আঙুল ফুলে ঢোল। ভেতর থেকে বের হলো একগাদা পুঁজ। খেলার অবস্থা তো নেই। সাকিব নিজেও অস্ট্রেলিয়ার বিমান ধরেছিলেন ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বুকে নিয়ে। ফিরে জানালেন, ‘(আঙুলের) আপডেট ভালো। ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করতে হবে। এটা আবার বাড়ল বা অন্য কোনো সমস্যা হলো কিনা। তবে এখন পর্যন্ত ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আছে।’
সাকিব নিজের আবস্থাটা ব্যাখ্যা করছিলেন এভাবে, ‘এটা আসলে এমন একটা সমস্যা যেটার কোনো টাইম ফ্রেম নাই। হতে পারে যে সামনের মাসেও খেলতে পারি। এখন আমার হাতে ব্যথা নেই। খুব ভালো অনুভব করছি। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার হাতের স্ট্রেন্থ কতক্ষণে ফিরে আসে। রিহ্যাবের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারে। যদি আসে তাহলে সামনের মাসেও খেলতে পারি। ’ সাকিব অন্যদিক বিবেচনা করেও বলছিলেন, ‘আবার রিহ্যাবের পর যদি ব্যথা অনুভব করি তাহলে আবার অপেক্ষা করতে হবে যে কখন সার্জারি করতে পারব। এটা আসলে খুব অনিশ্চিত। আবার একটা জিনিস ভালো যে ইনফেকশন হবার পর এখন সেটা কমে গেছে। এখন সার্জারি বাদেও খেলা যেতে পারে। যদি সেটা হয় তাহলে সেটা হবে সব থেকে সেরা ব্যাপার। কিন্তু এটা আসলে নিশ্চিত করে বলাটা মুশকিল। বললাম যেটা, হতে পারে একমাস পরেও খেলতে পারি আবার ছয় মাসও লাগতে পারে। আশা করি একমাস পরই খেলতে পারব। তারপরও যেহেতু স্ট্রেন্থ আসার ব্যাপার আছে। একমাস হয়তো হবে না। একটু সময় বেশিই লাগবে।’
জিম্বাবুয়ে দল আসল বলে। সামনের মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ শুরু। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারিতে বিপিএল। ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফর। আর ২০১৯ এর মে মাসে তো ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ। এমন ব্যস্ত সূচি সামনে। কিন্তু বাংলাদেশের টেস্ট এবং টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক কবে থেকে খেলতে পারবেন? সাকিব তো বললেনই।
যদি, হয়তো ইত্যাদির বৃত্তে আটকে ক্রিকেটার। সার্জারি ছাড়া ব্যাট হাতে নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা ছাড়া বিশ্বের অন্যতম সেরা অল রাউন্ডারের বুঝি তেমন কিছু করার নেই। তার কণ্ঠেই শুনুন, ‘সার্জারি (অস্ত্রোপচার) ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে করা যাবে না। করা যাবে না কারণ, যদি ইনফেকসন বোনের ভেতরে থেকে থাকে সেটা আসলে সারার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওখানে ব্লাড যায় না। যেহেতু অ্যান্টিবায়োটিক ব্লাডের মাধ্যমে ছড়ায়...যেখানে ব্লাড যায় না সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক কিভাবে কাজ করবে? তাই এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে কোনো সার্জারি করা যাবে না।’ এর মাঝে স্বস্তির খবর সাকিবের জন্য এই যে, ‘তবে ভালো দিক হচ্ছে সার্জারি না করেও হয়তো খেলা সম্ভব হতে পারে। এখন যেহেতু সার্জারি করার সুযোগ নেই... আমি বলেন আর ফিজিওর পরামর্শে বলেন ওই দিকটা চিন্তা করা হচ্ছে যে সার্জারি বাদে কিভাবে খেলা যায়।’
প্রসঙ্গটা ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিব খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে। সেটাও তো এখনো প্রায় সাড়ে ছয় মাস দুরে। তবু এখনো কোনোকিছু নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই সাকিবের। তবে আঙুলকে পুরো সারিয়ে তুলতে যা কিছু করার দরকার তা সাকিব শুরু করে দিয়েছেন। বলছিলেন রিহ্যাব বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার কথা, ‘আমি অলরেডি শুরু করে দিয়েছি। ওখানে থাকতেই শুরু করেছি। ওখানে হ্যান্ড থেরাপিস্টকে দেখানো হয়েছে। উনি যেভাবে বলেছেন সেভাবে ফলো করে করে কাজ করতে হবে। যত বেশি করা যাবে তত আমার জন্য ভালো। যত বেশি করে করে স্ট্রেন্থটা আবার আনা সম্ভব সেটাই এখন মূল উদ্দেশ্য।’
তাই অপেক্ষা। সাকিবের। তার জন্য বাংলাদেশ ও ভক্তদের এবং ক্রিকেটের। লড়াকু সাকিবের ওই সমস্যা নিয়ে স্বস্তি এই যে, ‘এখন খুবই ভালো। কোনো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি না। শুধু সময়ের ব্যাপার কতদিনে আমার শক্তি ফিরে আসে।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
ক্রীড়া প্রতিবেদক | ১৪ অক্টোবর, ২০১৮ ১৬:৩৭

ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আছে। আঙুলটার অবস্থাও ভালো। এসব সুখবর। কিন্তু সাকিব আল হাসানের মাঠে ফেরাটা আপাতত অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে। মেলবোর্ন থেকে চিকিৎসা নিয়ে ঢাকা বিমান বন্দরে পৌঁছে সাকিব যা বললেন তার ভেতর থেকে একটা কথা তুলে আনা যায়। ‘এটা আসলে এমন একটা সমস্যা যেটার কোনো টাইম ফ্রেম নাই।’ সাকিব নিজেও জানেন না। তার কথায় স্পষ্ট, চিকিৎসক বা ফিজিওর পক্ষেও এখনই কিছু নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই। তার মনে হচ্ছে, ‘হতে পারে একমাস পরেও খেলতে পারি আবার ছয় মাসও লাগতে পারে।’ তবে আশা. একমাস পরই খেলতে পারার।
এক সপ্তাহ অস্ট্রেলিয়ার হাসপাতালে কাটিয়ে রোববার দুপুরে সাকিব ফিরেছেন দেশে। গেল জানুয়ারিতে ডান হাতের কড়ে আঙুলের যে ইনজুরিতে পড়েছিলেন শেষ এশিয়া কাপে তার বেহাল অবস্থা হয়েছিল। আঙুল ফুলে ঢোল। ভেতর থেকে বের হলো একগাদা পুঁজ। খেলার অবস্থা তো নেই। সাকিব নিজেও অস্ট্রেলিয়ার বিমান ধরেছিলেন ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বুকে নিয়ে। ফিরে জানালেন, ‘(আঙুলের) আপডেট ভালো। ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু প্রতি সপ্তাহে ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে পরীক্ষা করতে হবে। এটা আবার বাড়ল বা অন্য কোনো সমস্যা হলো কিনা। তবে এখন পর্যন্ত ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আছে।’
সাকিব নিজের আবস্থাটা ব্যাখ্যা করছিলেন এভাবে, ‘এটা আসলে এমন একটা সমস্যা যেটার কোনো টাইম ফ্রেম নাই। হতে পারে যে সামনের মাসেও খেলতে পারি। এখন আমার হাতে ব্যথা নেই। খুব ভালো অনুভব করছি। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার হাতের স্ট্রেন্থ কতক্ষণে ফিরে আসে। রিহ্যাবের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারে। যদি আসে তাহলে সামনের মাসেও খেলতে পারি। ’ সাকিব অন্যদিক বিবেচনা করেও বলছিলেন, ‘আবার রিহ্যাবের পর যদি ব্যথা অনুভব করি তাহলে আবার অপেক্ষা করতে হবে যে কখন সার্জারি করতে পারব। এটা আসলে খুব অনিশ্চিত। আবার একটা জিনিস ভালো যে ইনফেকশন হবার পর এখন সেটা কমে গেছে। এখন সার্জারি বাদেও খেলা যেতে পারে। যদি সেটা হয় তাহলে সেটা হবে সব থেকে সেরা ব্যাপার। কিন্তু এটা আসলে নিশ্চিত করে বলাটা মুশকিল। বললাম যেটা, হতে পারে একমাস পরেও খেলতে পারি আবার ছয় মাসও লাগতে পারে। আশা করি একমাস পরই খেলতে পারব। তারপরও যেহেতু স্ট্রেন্থ আসার ব্যাপার আছে। একমাস হয়তো হবে না। একটু সময় বেশিই লাগবে।’
জিম্বাবুয়ে দল আসল বলে। সামনের মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ শুরু। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারিতে বিপিএল। ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফর। আর ২০১৯ এর মে মাসে তো ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ। এমন ব্যস্ত সূচি সামনে। কিন্তু বাংলাদেশের টেস্ট এবং টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক কবে থেকে খেলতে পারবেন? সাকিব তো বললেনই।
যদি, হয়তো ইত্যাদির বৃত্তে আটকে ক্রিকেটার। সার্জারি ছাড়া ব্যাট হাতে নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা ছাড়া বিশ্বের অন্যতম সেরা অল রাউন্ডারের বুঝি তেমন কিছু করার নেই। তার কণ্ঠেই শুনুন, ‘সার্জারি (অস্ত্রোপচার) ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে করা যাবে না। করা যাবে না কারণ, যদি ইনফেকসন বোনের ভেতরে থেকে থাকে সেটা আসলে সারার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওখানে ব্লাড যায় না। যেহেতু অ্যান্টিবায়োটিক ব্লাডের মাধ্যমে ছড়ায়...যেখানে ব্লাড যায় না সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক কিভাবে কাজ করবে? তাই এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে কোনো সার্জারি করা যাবে না।’ এর মাঝে স্বস্তির খবর সাকিবের জন্য এই যে, ‘তবে ভালো দিক হচ্ছে সার্জারি না করেও হয়তো খেলা সম্ভব হতে পারে। এখন যেহেতু সার্জারি করার সুযোগ নেই... আমি বলেন আর ফিজিওর পরামর্শে বলেন ওই দিকটা চিন্তা করা হচ্ছে যে সার্জারি বাদে কিভাবে খেলা যায়।’
প্রসঙ্গটা ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপে সাকিব খেলতে পারবেন কি না তা নিয়ে। সেটাও তো এখনো প্রায় সাড়ে ছয় মাস দুরে। তবু এখনো কোনোকিছু নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই সাকিবের। তবে আঙুলকে পুরো সারিয়ে তুলতে যা কিছু করার দরকার তা সাকিব শুরু করে দিয়েছেন। বলছিলেন রিহ্যাব বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার কথা, ‘আমি অলরেডি শুরু করে দিয়েছি। ওখানে থাকতেই শুরু করেছি। ওখানে হ্যান্ড থেরাপিস্টকে দেখানো হয়েছে। উনি যেভাবে বলেছেন সেভাবে ফলো করে করে কাজ করতে হবে। যত বেশি করা যাবে তত আমার জন্য ভালো। যত বেশি করে করে স্ট্রেন্থটা আবার আনা সম্ভব সেটাই এখন মূল উদ্দেশ্য।’
তাই অপেক্ষা। সাকিবের। তার জন্য বাংলাদেশ ও ভক্তদের এবং ক্রিকেটের। লড়াকু সাকিবের ওই সমস্যা নিয়ে স্বস্তি এই যে, ‘এখন খুবই ভালো। কোনো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি না। শুধু সময়ের ব্যাপার কতদিনে আমার শক্তি ফিরে আসে।’