পাকিস্তানকে উড়িয়ে সেমিতে বাংলাদেশ
অনলাইন ডেস্ক | ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:১৯
ব্যাট হাতে অপরাজিত ৮৫ রানের পর বল হাতে দুই উইকেট নিয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন। ছবি: বিসিবি
ইমার্জিং কাপের বাঁচামরার ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে যে জয়ে আসরের সেমিফাইনালে পা রেখেছে নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন দল।
রোববার করাচি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮৪ রানে হারায় বাংলাদেশ। সেমি-ফাইনালে পৌঁছাতে হলে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
টস জিতে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩০৯ রানের বড় স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৬.৫ ওভারে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে যায় ২২৫ রানে।
হারলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে সেমিফাইনালের পা দিয়ে রেখেছিল দলটি। ৩ ম্যাচের ২টি করে জয় ও ১ হার নিয়ে সেমিফাইনালে উঠল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। রান রেটে এগিয়ে পাকিস্তান।
তবে সেমিফাইনালে জায়গা পেতে এক অর্থে ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছে বাংলাদেশ। হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যকার ম্যাচটি পরিত্যাক্ত হয়। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয় ম্যাচটিতে। আবর আমিরাত জিতে গেলে কঠিন হিসেবের মধ্যে পড়তে হতো বাংলাদেশকে। ৩ পয়েন্ট নিয়ে শেষ পর্যন্ত ছিটকে গেছে আরব আমিরাত।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ৯৭ রানে হেরে গিয়েছিল সোহানের দল। তবে মোসাদ্দেক হোসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দ্বিতীয় ম্যাচে হংকংকে ২৮ রানে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর বল হাতেও ২ উইকেট নিয়েছিলেন মোসাদ্দেক।
পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতেও ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠলেন মোসাদ্দেক। ব্যাট হাতে খেলেন দলীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস। বল হাতেও নেন ২ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে।
মিজানুর রহমান ও জাকির হোসেনের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। ৪৮ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। ব্যক্তিগত ২৫ রান করে খুশদিল শাহর শিকার হন মিজানুর।
তবে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৯৮ রানের জুটি গড়েন জাকির। ৬৯ বলে ৮ চারে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন জাকির। মোহাম্মদ মুসার শিকার হয়ে যখন তিনি ফেরেন তখন দলীয় রান ২ উইকেটে ১৪৬। তিন রানের ব্যবধানে নাজমুলও ফিরেন যান। মুসার শিকার হয়েছেন তিনিও। ৫৪ বলে ৪ চারে ৪৯ রান করেন শান্ত।
এরপর আফিফ হোসেন দ্রুত ফিরে গেলেও ইয়াসির আলিকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান মোসাদ্দেক। পঞ্চম উইকটে দুজনে গড়েন ১২৬ রানের জুটি। যে জুটি বাংলাদেশকে এনে দেয় বিশাল সংগ্রহ।
ইয়াসির ৪৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন। মোসাদ্দেক অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংসটি খেলেন ৭৪ বলে। ৩টি চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা হাঁকান তিনি। শেষ দিকে তাকে সঙ্গ দিয়ে অধিনায়ক সোহান ৮ রানে অপরাজিত থেকে যান।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাঈম হাসানের আঘাতে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। আলি ইমরান ও সাউদ শাকিলকে ফেরান নাঈম।
তবে তৃতীয় উইকেটে ভালো জুটি গড়েন জিসান মালিক ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৪৭ রান করা জিসানকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন শরিফুল। দুই রানের ব্যবধানে ৪৬ রান করা রিজওয়ানকে ফিরিয়ে দেন মোসাদ্দেক।
১০ রান করা সাদ আলিকে নাঈম ফিরিয়ে দেওয়ার পর পরের ওভারেই হুসাইন তালাতকে ফেরান মোসাদ্দেক। ১০ রান করেন তালাত। ১৩৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
এরপর স্রোতের বিপরীতে একা লড়াই করেছেন খুশদিল শাহ। কিন্তু তার লড়াই কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হন তিনি তার নামের পশে ছিল ৬১ রান। ৫৮ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় এই রান করেন তিনি। তাকে ফেরান শফিউল ইসলাম। গোলাম মোদাসসেরকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দেন তানবীর হায়দার।
বাংলাদেশের পক্ষে নাঈম সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন শফিউল ও মোসাদ্দেক। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল, তানভীর ও আফিফ।
শেয়ার করুন
অনলাইন ডেস্ক | ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৯:১৯

ইমার্জিং কাপের বাঁচামরার ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে যে জয়ে আসরের সেমিফাইনালে পা রেখেছে নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন দল।
রোববার করাচি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮৪ রানে হারায় বাংলাদেশ। সেমি-ফাইনালে পৌঁছাতে হলে এ ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
টস জিতে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ৩০৯ রানের বড় স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৬.৫ ওভারে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে যায় ২২৫ রানে।
হারলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে সেমিফাইনালের পা দিয়ে রেখেছিল দলটি। ৩ ম্যাচের ২টি করে জয় ও ১ হার নিয়ে সেমিফাইনালে উঠল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। রান রেটে এগিয়ে পাকিস্তান।
তবে সেমিফাইনালে জায়গা পেতে এক অর্থে ভাগ্যের সহায়তাও পেয়েছে বাংলাদেশ। হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যকার ম্যাচটি পরিত্যাক্ত হয়। ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হয় ম্যাচটিতে। আবর আমিরাত জিতে গেলে কঠিন হিসেবের মধ্যে পড়তে হতো বাংলাদেশকে। ৩ পয়েন্ট নিয়ে শেষ পর্যন্ত ছিটকে গেছে আরব আমিরাত।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ৯৭ রানে হেরে গিয়েছিল সোহানের দল। তবে মোসাদ্দেক হোসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে দ্বিতীয় ম্যাচে হংকংকে ২৮ রানে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর বল হাতেও ২ উইকেট নিয়েছিলেন মোসাদ্দেক।
পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতেও ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠলেন মোসাদ্দেক। ব্যাট হাতে খেলেন দলীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস। বল হাতেও নেন ২ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে।
মিজানুর রহমান ও জাকির হোসেনের উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। ৪৮ রানের জুটি গড়েন এই দুজন। ব্যক্তিগত ২৫ রান করে খুশদিল শাহর শিকার হন মিজানুর।
তবে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৯৮ রানের জুটি গড়েন জাকির। ৬৯ বলে ৮ চারে ৬৯ রানের ইনিংস খেলেছেন জাকির। মোহাম্মদ মুসার শিকার হয়ে যখন তিনি ফেরেন তখন দলীয় রান ২ উইকেটে ১৪৬। তিন রানের ব্যবধানে নাজমুলও ফিরেন যান। মুসার শিকার হয়েছেন তিনিও। ৫৪ বলে ৪ চারে ৪৯ রান করেন শান্ত।
এরপর আফিফ হোসেন দ্রুত ফিরে গেলেও ইয়াসির আলিকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান মোসাদ্দেক। পঞ্চম উইকটে দুজনে গড়েন ১২৬ রানের জুটি। যে জুটি বাংলাদেশকে এনে দেয় বিশাল সংগ্রহ।
ইয়াসির ৪৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন। মোসাদ্দেক অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংসটি খেলেন ৭৪ বলে। ৩টি চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা হাঁকান তিনি। শেষ দিকে তাকে সঙ্গ দিয়ে অধিনায়ক সোহান ৮ রানে অপরাজিত থেকে যান।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাঈম হাসানের আঘাতে শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। আলি ইমরান ও সাউদ শাকিলকে ফেরান নাঈম।
তবে তৃতীয় উইকেটে ভালো জুটি গড়েন জিসান মালিক ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৪৭ রান করা জিসানকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন শরিফুল। দুই রানের ব্যবধানে ৪৬ রান করা রিজওয়ানকে ফিরিয়ে দেন মোসাদ্দেক।
১০ রান করা সাদ আলিকে নাঈম ফিরিয়ে দেওয়ার পর পরের ওভারেই হুসাইন তালাতকে ফেরান মোসাদ্দেক। ১০ রান করেন তালাত। ১৩৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
এরপর স্রোতের বিপরীতে একা লড়াই করেছেন খুশদিল শাহ। কিন্তু তার লড়াই কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হন তিনি তার নামের পশে ছিল ৬১ রান। ৫৮ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় এই রান করেন তিনি। তাকে ফেরান শফিউল ইসলাম। গোলাম মোদাসসেরকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দেন তানবীর হায়দার।
বাংলাদেশের পক্ষে নাঈম সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন শফিউল ও মোসাদ্দেক। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল, তানভীর ও আফিফ।