হোপের ব্যাটে সিরিজে ফিরল উইন্ডিজ
অনলাইন ডেস্ক | ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:১৯
১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন শাই হোপ। ছবি: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড
সতীর্থদের নিয়ে দারুণ তিনটি জুটি উপহার দিয়েছেন। যে জুটিগুলো শুরু থেকেই ম্যাচে এগিয়ে রেখেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। শাই হোপ শেষ পর্যন্ত খেললেন ১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। যে ইনিংসে ভর করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল ক্যারিবীয়রা।
তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই জয়ে সিরিজে ফিরল তারা। সিরিজে এখন ১-১ সমতা। প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ১৪ ডিসেম্বর সিলেটে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি এখন সিরিজ নির্ধারণী হয়ে দাঁড়াল।
এদিন টস হেরে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৫৫ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ২ বল বাকী থাকতে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় সফরকারী দল।
শেষ ১০ ওভারে ম্যাচে কিছুটা রোমাঞ্চের আভাস মিলেছিল ঠিক। কিন্তু টাইগার বোলারদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হোপ দারুণভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লক্ষ্যে নিয়ে যান। তাতে বাংলাদেশ সফরে প্রথম জয়ের দেখা পায় দলটি।
টেস্ট সিরিজে দুই ম্যাচের বাজেভাবে হেরেছিল উইন্ডিজ। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডের আগে বিকেএসপিতে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও বিসিবি একাদশের বিপক্ষে হেরেছিল তারা। সফরকারীদের এই জয়ে সিরিজে ফিরল রোমাঞ্চ।
আগের ম্যাচের মতো এদিনও দুই প্রান্ত থেকেই স্পিন বোলিং দিয়ে ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভার করেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান, দ্বিতীয় ওভারটি করে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
নিজের তৃতীয় বলেই মিরাজ ফিরিয়ে দেন ওপেনার চন্দরপল হেমরাজকে। অফ ফর্মে থাকা কাইরন পাওয়েলের একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন যিনি। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি ২৫ বছর বয়সী। ব্যক্তিগত ৩ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি।
দলীয় ৫ রানেই প্রথম উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলান হোপ ও ব্রাভো। দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৬৫ রান। ভোগাতে থাকা এই জুটি ভাঙেন রুবেল। ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে ব্রাভোকে বোল্ড করে ফেরান ডানহাতি পেসার। ৪৩ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারে ২৭ রান করেন ব্রাভো।
স্যামুয়েলসকে নিয়ে এরপর আরো একটি কার্যকরী জুটি গড়েন হোপ। ৬২ রানের জুটি গড়েন দুজনে। সেই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর। ৪৫ বলে ২৬ রান করা স্যামুয়েলসকে উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানান এই পেসার।
এরপর হেটমায়ারকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানন রুবেল। ১৪ রান করে ফিরে যান হেটমায়ার। তিন রানের ব্যবধানে অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকে ফিরিয়ে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাতে ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ।
৩৯তম ওভারের শেষ বলে রোস্টন চেজকে মুস্তাফিজ নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান। তাতে ১৮৫ রানে ষষ্ঠ উইকেটে হারায় উইন্ডিজ।
সেখান থেকে বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরবে এই আশাতেই ছিল স্বাগতিক দর্শকরা। কিন্তু হোপ শুধু হতাশাই উপহার দিয়েছেন তাদের। ১১৮ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন হোপ। শেষ পর্যন্ত ১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংসটি তিনি খেলেছেন ১৪৪ বলে। তার ইনিংসে ছিল ১২ চার ও ৩ ছক্কা।
হোপের পাশাপাশি কিমো পলের কথা বলতে হবে আলাদা করে। সপ্তম উইকেটে হোপের সঙ্গে তার ৭১ রানের জুটিই জয় উপহার দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ৩১ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজ ও রুবেল। ১টি করে উইকেট নেন মিরাজ ও মাশরাফি।
এরআগে তিন অর্ধশতকে লড়ার পুঁজি গড়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু স্কোরটা হতে পারতো তিনশ ছাড়ানো। মাঝে ও শেষ দিকে উইন্ডিজ বোলাররা ম্যাচে ফিরেছিল দারুণভাবে।
তামিম ইকবালের সঙ্গে এদিন ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন লিটন। ওশানে থমাসের বলে পায়ে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ইমরুল কায়েস উইকেটে এসেই ফিরে যান শূন্য রানে। আগের ম্যাচেও মাত্র ৪ রান করেছিলেন এই বাঁহাতি।
তবে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের জুটি দারুণ জমে উঠে। ১১১ রান যোগ করেন এই দুজন। অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ বড় স্কোরের দিকে এগোতে থাকে বাংলাদেশ।
তবে তামিম ও মুশফিককে ৭ রানের ব্যবধানে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরে ক্যারিবীয়রা। দেবেন্দ্র বিশুর বলে ৬৩ বলে ৫০ রান করে ফিরেন তামিম। তার ইনিংসে ছিল ১ ছক্কা ও ৪ চার। থমাসের বলে ফেরার আগে মুশফিক খেলেন ৬২ রানের ইনিংস।
মুশফিক তার ৮০ বলের ইনিংসটি সাজান ৫ চারে। আগের ম্যাচেও ফিফটি করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
তবে তামিম-মুশফিককে হারানোর চাপ বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। পঞ্চম উইকেটে এই দুজন যোগন করেন ৬১ রান।
মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন পাওয়েল। ৫১ বলে ৩ চারে ৩০ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর দ্রুত উইকটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। লিটন ফের ব্যাটিংয়ে নেমে ফিরে যান ৮ রান করেই। ৪৭তম ওভারের শেষ বলে সাকিব ফিরে যান দলীয় সর্বোচ্চ ৬৫ রান করে। ৬২ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ চার ও ১ ছক্কায়।
মাশরাফি ৬ ও মিরাজ ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। ক্যারিবীয়দের পক্ষে ওশানে থমাস সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শাই হোপ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২১:১৯

সতীর্থদের নিয়ে দারুণ তিনটি জুটি উপহার দিয়েছেন। যে জুটিগুলো শুরু থেকেই ম্যাচে এগিয়ে রেখেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। শাই হোপ শেষ পর্যন্ত খেললেন ১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। যে ইনিংসে ভর করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল ক্যারিবীয়রা।
তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই জয়ে সিরিজে ফিরল তারা। সিরিজে এখন ১-১ সমতা। প্রথম ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ১৪ ডিসেম্বর সিলেটে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি এখন সিরিজ নির্ধারণী হয়ে দাঁড়াল।
এদিন টস হেরে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৫৫ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ২ বল বাকী থাকতে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় সফরকারী দল।
শেষ ১০ ওভারে ম্যাচে কিছুটা রোমাঞ্চের আভাস মিলেছিল ঠিক। কিন্তু টাইগার বোলারদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা হোপ দারুণভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লক্ষ্যে নিয়ে যান। তাতে বাংলাদেশ সফরে প্রথম জয়ের দেখা পায় দলটি।
টেস্ট সিরিজে দুই ম্যাচের বাজেভাবে হেরেছিল উইন্ডিজ। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডের আগে বিকেএসপিতে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচেও বিসিবি একাদশের বিপক্ষে হেরেছিল তারা। সফরকারীদের এই জয়ে সিরিজে ফিরল রোমাঞ্চ।
আগের ম্যাচের মতো এদিনও দুই প্রান্ত থেকেই স্পিন বোলিং দিয়ে ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভার করেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান, দ্বিতীয় ওভারটি করে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
নিজের তৃতীয় বলেই মিরাজ ফিরিয়ে দেন ওপেনার চন্দরপল হেমরাজকে। অফ ফর্মে থাকা কাইরন পাওয়েলের একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন যিনি। তবে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি ২৫ বছর বয়সী। ব্যক্তিগত ৩ রানে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি।
দলীয় ৫ রানেই প্রথম উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলান হোপ ও ব্রাভো। দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৬৫ রান। ভোগাতে থাকা এই জুটি ভাঙেন রুবেল। ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে ব্রাভোকে বোল্ড করে ফেরান ডানহাতি পেসার। ৪৩ বলে ১ ছক্কা ও ১ চারে ২৭ রান করেন ব্রাভো।
স্যামুয়েলসকে নিয়ে এরপর আরো একটি কার্যকরী জুটি গড়েন হোপ। ৬২ রানের জুটি গড়েন দুজনে। সেই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর। ৪৫ বলে ২৬ রান করা স্যামুয়েলসকে উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানান এই পেসার।
এরপর হেটমায়ারকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানন রুবেল। ১৪ রান করে ফিরে যান হেটমায়ার। তিন রানের ব্যবধানে অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকে ফিরিয়ে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাতে ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ।
৩৯তম ওভারের শেষ বলে রোস্টন চেজকে মুস্তাফিজ নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান। তাতে ১৮৫ রানে ষষ্ঠ উইকেটে হারায় উইন্ডিজ।
সেখান থেকে বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরবে এই আশাতেই ছিল স্বাগতিক দর্শকরা। কিন্তু হোপ শুধু হতাশাই উপহার দিয়েছেন তাদের। ১১৮ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন হোপ। শেষ পর্যন্ত ১৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংসটি তিনি খেলেছেন ১৪৪ বলে। তার ইনিংসে ছিল ১২ চার ও ৩ ছক্কা।
হোপের পাশাপাশি কিমো পলের কথা বলতে হবে আলাদা করে। সপ্তম উইকেটে হোপের সঙ্গে তার ৭১ রানের জুটিই জয় উপহার দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ৩১ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজ ও রুবেল। ১টি করে উইকেট নেন মিরাজ ও মাশরাফি।
এরআগে তিন অর্ধশতকে লড়ার পুঁজি গড়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু স্কোরটা হতে পারতো তিনশ ছাড়ানো। মাঝে ও শেষ দিকে উইন্ডিজ বোলাররা ম্যাচে ফিরেছিল দারুণভাবে।
তামিম ইকবালের সঙ্গে এদিন ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন লিটন। ওশানে থমাসের বলে পায়ে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ইমরুল কায়েস উইকেটে এসেই ফিরে যান শূন্য রানে। আগের ম্যাচেও মাত্র ৪ রান করেছিলেন এই বাঁহাতি।
তবে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের জুটি দারুণ জমে উঠে। ১১১ রান যোগ করেন এই দুজন। অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ বড় স্কোরের দিকে এগোতে থাকে বাংলাদেশ।
তবে তামিম ও মুশফিককে ৭ রানের ব্যবধানে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরে ক্যারিবীয়রা। দেবেন্দ্র বিশুর বলে ৬৩ বলে ৫০ রান করে ফিরেন তামিম। তার ইনিংসে ছিল ১ ছক্কা ও ৪ চার। থমাসের বলে ফেরার আগে মুশফিক খেলেন ৬২ রানের ইনিংস।
মুশফিক তার ৮০ বলের ইনিংসটি সাজান ৫ চারে। আগের ম্যাচেও ফিফটি করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।
তবে তামিম-মুশফিককে হারানোর চাপ বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। পঞ্চম উইকেটে এই দুজন যোগন করেন ৬১ রান।
মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন পাওয়েল। ৫১ বলে ৩ চারে ৩০ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর দ্রুত উইকটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। লিটন ফের ব্যাটিংয়ে নেমে ফিরে যান ৮ রান করেই। ৪৭তম ওভারের শেষ বলে সাকিব ফিরে যান দলীয় সর্বোচ্চ ৬৫ রান করে। ৬২ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ চার ও ১ ছক্কায়।
মাশরাফি ৬ ও মিরাজ ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। ক্যারিবীয়দের পক্ষে ওশানে থমাস সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শাই হোপ।