সাকিবেই পরাস্ত উইন্ডিজ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২২:৩৫
ব্যাট হাতে আলো ছড়ানোর পর বল হাতে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কারের জন্য সাকিব আল হাসানের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না কেউ। ছবি: নাজমুল হক বাপ্পি
প্রথমে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন। পরে বল হাতেও প্রতিপক্ষকে দেখালেন নিজের বিধ্বংসী রূপ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং পারফরম্যান্সের কাছে হার মানতে হলো সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
বৃহস্পতিবার মিরপুরে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৬ রানে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সাকিব খেলেন ২৬ বলে ৪২ রানের ইনিংস। পরে বল হাতে তুলে নেন টি-টুয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠেছে টাইগার অধিনায়কের হাতে।
সিলেটে প্রথম ম্যাচে হারের পর সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখতে এম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাংলাদেশ অবশ্য দল হিসেবেই পারফর্ম করল এদিন। তবে সাকিব ছাপিয়ে গেলেন অন্য সবাইকেই।
প্রথম টি-টুয়েন্টিতে হারের পর সতীর্থদের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশাটা লুকাতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব। নিজে ব্যাট হাতে দারুণ পারফর্ম করলেও অন্যরা ছিলেন অনুজ্জ্বল। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ দারুণভাবে জিতলেও টি-টুয়েন্টির শুরুটা ছিল তাই বাজে হয় বাংলাদেশের।
এদিন অবশ্য সাকিব যখন উইকেটে আসেন, তখন শক্ত ভেতরে ওপর দাঁড়িয়ে তার দল। সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর চার নম্বরে ব্যাট করতে আসেন সাকিব। জুটি বাঁধেন দারুণ খেলতে থাকা লিটন দাসের সঙ্গে। শুরুতে ঝড় তুলে লিটন ততক্ষণে ফিফটি তুলে নিয়েছেন। বাংলাদেশের স্কোরটাও এক শ পেরিয়েছে।
কিন্তু সাকিব-লিটন জুটিটা জমল না। দলীয় ১১৩ রানে বিদায় নিলেন লিটন। ৩৪ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৬০ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমও উইকেটে এসেও স্থায়ী হতে পারেননি। বিদায় নেন ৩ বলে ১ রান করে।
হঠাৎ ছন্দপতনের অজানা আশঙ্কা পেয়ে বসল যেন ভক্তদের মনে। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ-সাকিব জুটি এরপর চড়াও হলেন ক্যারিবীয় বোলারদের উপর। দুজনের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ক্যারিবীয় পেস আক্রমণ ছিল অসহায়। বাংলাদেশ গড়ে ৪ উইকেটে ২১১ রানের স্কোর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যা সর্বোচ্চ। আর সব মিলে নিজেদের দ্বিতীয় সেরা স্কোর।
সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহ একজন আরেকজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ব্যাট করছিলেন। পঞ্চম উইকেটে দুজন গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৯১ রানের ইনিংস। টি-টুয়েন্টিতে পঞ্চম উইকেটে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর।
মাহমুদউল্লাহ ২১ বলে ৭ চারে ৪৩ রান করেন। সমান দাপট দেখিয়ে সাকিব ২৬ বলে করেন ৪২ রান। তার ইনিংসে ছিল ১ ছক্কা ও ৫ চারে।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও দারুণ জবাব দিতে থাকে। ৩.৫ ওভারে দলীয় ফিফটি তুলে নেয় দলটি। টি-টুয়েন্টির সেরা দলটার বিপক্ষে তখন বাংলাদেশর জয় কঠিনই মনে হচ্ছিল।
কিন্তু তখন দৃশ্যপটে এলেন বোলার সাকিব আল হাসান। নিকোলাস পুরানকে নিজের প্রথম শিকার বানান বাংলাদেশ অধিনায়ক। ভাঙেন এভিন লুইসের সঙ্গে গড়া তার ৪১ রানের জুটি।
আরেক ভয়ংকর ব্যাটসম্যান শিভরন হেটমায়ারকে (১৯) ফেরান সাকিব। ৯৮ রানে ৪ উইকেট হারায় উইন্ডিজ। এরপর সাকিব দ্রুত ফিরিয়ে দেন ড্যারেন ব্রাভো (২) ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকেও (৭)। ১১৮ রানে ৬ উইকেটে পরিণত হয় সফরকারী দল।
বলতে গেলে ম্যাচটা তখনই ঝুলে পড়তে থাকে বাংলাদেশের দিকে। এরপর ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে ফিরিয়ে নিজের ৫ উইকেট পূরণ করেন সাকিব। একই ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ম্যাচের ফেরার কাজটাও করে তোলেন কঠিন।
সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বাকি তিন উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে গেছে। বাংলাদেশ ফিরেছে সিরিজে দারুণভাবে।
এখন শনিবার তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২২:৩৫

প্রথমে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন। পরে বল হাতেও প্রতিপক্ষকে দেখালেন নিজের বিধ্বংসী রূপ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং পারফরম্যান্সের কাছে হার মানতে হলো সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
বৃহস্পতিবার মিরপুরে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩৬ রানে হারায় বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সাকিব খেলেন ২৬ বলে ৪২ রানের ইনিংস। পরে বল হাতে তুলে নেন টি-টুয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও উঠেছে টাইগার অধিনায়কের হাতে।
সিলেটে প্রথম ম্যাচে হারের পর সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখতে এম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাংলাদেশ অবশ্য দল হিসেবেই পারফর্ম করল এদিন। তবে সাকিব ছাপিয়ে গেলেন অন্য সবাইকেই।
প্রথম টি-টুয়েন্টিতে হারের পর সতীর্থদের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশাটা লুকাতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব। নিজে ব্যাট হাতে দারুণ পারফর্ম করলেও অন্যরা ছিলেন অনুজ্জ্বল। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ দারুণভাবে জিতলেও টি-টুয়েন্টির শুরুটা ছিল তাই বাজে হয় বাংলাদেশের।
এদিন অবশ্য সাকিব যখন উইকেটে আসেন, তখন শক্ত ভেতরে ওপর দাঁড়িয়ে তার দল। সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর চার নম্বরে ব্যাট করতে আসেন সাকিব। জুটি বাঁধেন দারুণ খেলতে থাকা লিটন দাসের সঙ্গে। শুরুতে ঝড় তুলে লিটন ততক্ষণে ফিফটি তুলে নিয়েছেন। বাংলাদেশের স্কোরটাও এক শ পেরিয়েছে।
কিন্তু সাকিব-লিটন জুটিটা জমল না। দলীয় ১১৩ রানে বিদায় নিলেন লিটন। ৩৪ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৬০ রান করেন তিনি। তার বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমও উইকেটে এসেও স্থায়ী হতে পারেননি। বিদায় নেন ৩ বলে ১ রান করে।
হঠাৎ ছন্দপতনের অজানা আশঙ্কা পেয়ে বসল যেন ভক্তদের মনে। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ-সাকিব জুটি এরপর চড়াও হলেন ক্যারিবীয় বোলারদের উপর। দুজনের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ক্যারিবীয় পেস আক্রমণ ছিল অসহায়। বাংলাদেশ গড়ে ৪ উইকেটে ২১১ রানের স্কোর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যা সর্বোচ্চ। আর সব মিলে নিজেদের দ্বিতীয় সেরা স্কোর।
সাকিব এবং মাহমুদউল্লাহ একজন আরেকজনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ব্যাট করছিলেন। পঞ্চম উইকেটে দুজন গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৯১ রানের ইনিংস। টি-টুয়েন্টিতে পঞ্চম উইকেটে যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর।
মাহমুদউল্লাহ ২১ বলে ৭ চারে ৪৩ রান করেন। সমান দাপট দেখিয়ে সাকিব ২৬ বলে করেন ৪২ রান। তার ইনিংসে ছিল ১ ছক্কা ও ৫ চারে।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজও দারুণ জবাব দিতে থাকে। ৩.৫ ওভারে দলীয় ফিফটি তুলে নেয় দলটি। টি-টুয়েন্টির সেরা দলটার বিপক্ষে তখন বাংলাদেশর জয় কঠিনই মনে হচ্ছিল।
কিন্তু তখন দৃশ্যপটে এলেন বোলার সাকিব আল হাসান। নিকোলাস পুরানকে নিজের প্রথম শিকার বানান বাংলাদেশ অধিনায়ক। ভাঙেন এভিন লুইসের সঙ্গে গড়া তার ৪১ রানের জুটি।
আরেক ভয়ংকর ব্যাটসম্যান শিভরন হেটমায়ারকে (১৯) ফেরান সাকিব। ৯৮ রানে ৪ উইকেট হারায় উইন্ডিজ। এরপর সাকিব দ্রুত ফিরিয়ে দেন ড্যারেন ব্রাভো (২) ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকেও (৭)। ১১৮ রানে ৬ উইকেটে পরিণত হয় সফরকারী দল।
বলতে গেলে ম্যাচটা তখনই ঝুলে পড়তে থাকে বাংলাদেশের দিকে। এরপর ফ্যাবিয়ান অ্যালেনকে ফিরিয়ে নিজের ৫ উইকেট পূরণ করেন সাকিব। একই ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ম্যাচের ফেরার কাজটাও করে তোলেন কঠিন।
সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বাকি তিন উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে গেছে। বাংলাদেশ ফিরেছে সিরিজে দারুণভাবে।
এখন শনিবার তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।