
নগর পরিকল্পনার ছাত্র ফুটবল দুর্নীতির মহাপরিকল্পনাকারী। পিকে হালদারের পর বুয়েট পেল আরেক আর্থিক কেলেঙ্কারির খলনায়ক। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর তিনি হতে পারতেন নগর পরিকল্পনাবিদ। সেটা না করে ২০০৬ সালে যোগ দেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে কম্পিটিশন্স ম্যানেজার হিসেবে। দেশের ফুটবলে তখন ঘোড় কলিকাল। তাই পেশা হিসেবে সেই চাকুরি মোটেই লোভনীয় কিছু নয়। তারপরও তিনি থেকে গেলেন কোনো এক অদৃশ্য কারণেই।
পনের বছর পর আজ ১৪৩০ বাংলা বছরের শুরুর দিনে জানা গেল কী কারণে বাফুফেতেই এতগুলো বছর কাটিয়ে দিলেন আবু নাঈম সোহাগ। ছাপোশা কম্পিটিশন ম্যানেজার থেকে ভাগ্যজোড়ে সোহাগের কাছে ২০১১ সালে চলে আসে বাফুফের নির্বাহী ক্ষমতা। প্রথম বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদক আল মুসাব্বির সাদীর অকাল মৃত্যুর পর সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সোহাগকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ দেন। পরের বছর থেকে তিনি পুরোদস্তুর সাধারণ সম্পাদক।
সেই থেকেই সালাউদ্দিনের ঘনিষ্ট সহচর হয়ে ধীরে ধীরে মহীরুহ রূপ নেন সোহাগ। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করে অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য বানিয়ে ফেলেছিলেন বাফুফেকে।
অতি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে ফুটবল প্রশাসন করায়ত্ব করে নামে-বেনামে অসংখ্য সম্পদের মালিক হয়েছেন। সালাউদ্দিনের ব্যাংক চেক পেয়ে বছরের পর বছর ফুটবলের আয়-ব্যায়ে দিয়েছেন নিজের ইচ্ছে মতো। ক্ষমতার জোড়ে তিনি সরকার ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে ছাড়েননি।
তবে এত সুখ তার সইলো না। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফার তদন্তে বেড়িয়ে এসেছে সোহাগের কুকীর্তির ঘটনা। শুক্রবার বাংলা বছরের প্রথম দিনে সোহাগের চাকচিক্যময় জীবনে নেমে এসেছে অমানিষার অন্ধকার। ফিফা তাকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ভুয়া বিল-ভাউচার স্থাপন ও মিথ্যে তথ্য দেওয়ার অভিযোগে।
শান্ত-সুবোধ, স্বল্পভাষী সোহাগের কপালটা খুলে যায় ক্যানসারের কাছে আল মুসাব্বির সাদী হেরে যাওয়ায়। সালাউদ্দিন প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব নিয়েই রানিং মেট হিসেবে বেঁছে নেন তুখোর ক্রীড়া সাংবাদিক আল মুসাব্বির সাদীকে। ভীষণ প্রতিভাবান সাদী যতদিন নির্বাহী দায়িত্বে ছিলেন, ততদিন কক্ষপথেই ছিল বাফুফে। সালাউদ্দিনও হাটছিলেন সঠিক পথে।
সাদীর অকাল মৃত্যুর পর সালাউদ্দিন সাধারণ সম্পাদকের শূন্য পদের জন্য যোগ্য কাউকে না নিয়ে বেঁছে নেন সোহাগকে। অথচ ফুটবল প্রশাসন চালানোর সেই যোগ্যতাই সোহাগের ছিল না। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে দুইবার ফিফার এডমিনিস্ট্রেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট ইন্সট্রাকটর কোর্সে উত্তীর্ণ হতে পারেননি। অথচ তার সঙ্গেই বাফুফেতে মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেয়া প্রয়াত আহমেদ সাঈদ আল ফাত্তাহ প্রথম প্রচেষ্টায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে রিজিওনাল ইন্সট্রাকটর হন।
সোহাগ অবশ্য নির্বাহী ক্ষমতা হাতে পেয়ে শুরুতেই চক্রান্ত করে ‘পথের কাটা’ ফাত্তাহকে সরিয়ে দেন বাফুফে থেকে। এরপর থেকেই শুরু তার রাম রাজত্ব। সোহাগের নিষিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে বাফুফের একটি বড় পদে চাকুরি করে পরবর্তীতে সোহাগের অন্যায়ের শিকার হয়ে চাকুরি হারানো এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সাত-আট বছর আগেই তার অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছিলাম। একটি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নিতে বাফুফে সভাপতি ও সোহাগের সঙ্গে আমারও বিদেশ সফরে যাওয়ার কথা ছিল। সোহাগ আমাকে বলেছিল, বাফুফে ভবনে আসার পথে মতিঝিলের একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি থেকে তিনজনের টিকিট সংগ্রহ করে নিয়ে আসার জন্য। আমি সেই ট্র্যাভেল এজেন্সিতে যাওয়ার পর সেখানকার লোকজন সোহাগকে ফোন করে জানতে চায়, বিলে কত টাকা বাড়িয়ে লিখবে। সোহাগ ফোনে প্রতি টিকিটে ২০০ ডলার করে বাড়িয়ে বিল বানাতে বলে। এভাবেই প্রতিটি ক্ষেত্রে সোহাগ দুর্নিতির আশ্রয় নিয়েছে। সারা বছর সকল কেনাকাটা নিজের হাতে রেখে কমিশন বানিজ্য চালিয়েছে সে দীর্ঘদিন যাবৎ। বন্ধুদের নাম ব্যবহার করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে ফুটবল কেন্দ্রীক ব্যবসা পরিচালনা করে সোহাগ। এ সব কিছুই বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিনের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দীর্ঘদিন করেছে সে। অথচ বাফুফে সভাপতি জেনেও না জানার ভান করে থেকেছে।’
ক্ষমতার জোড়ে সোহাগ হিতাহিত জ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়েছিলেন এক পর্যায়ে। তার আর্থিক অনিয়ম-দুর্নিতির বিষয়টি ছিল ফুটবল অঙ্গনে ওপেন সিক্রেট। ফুটবলের মানুষদের অনেকেই তার নাম দিয়েছিলেন মিস্টার ১০ পারসেন্ট। অর্থের নয়Ñছয়ের পাশাপাশি বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদক হওয়া সত্যেও কাজী সালাউদ্দিন যাতে ক্ষমতায় থাকেন, সে জন্য নানা কুকীর্তির আশ্রয় নিতে দেখা গেছে সোহাগকে।
চলতি মেয়াদের আগের মেয়াদে সোহাগ বাফুফের প্রয়াত সহ-সভাপতি বাদল রায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ব্যপক সমালোচিত হয়েছিলেন। অসুস্থ বাদল রায়ের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তিনি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে শুরু করেন। এ নিয়ে গোটা ফুটবল অঙ্গন উত্তাল হয়ে উঠলেও সোহাগকে শাস্তি না দিয়ে উল্টো চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে দেন সালাউদ্দিন। একই সঙ্গে বেতনসহ নানা সুযোগ সুবিধাও বাড়ানো হয়।
সোহাগের বিরূদ্ধে প্রায়ই ওঠা নানা অভিযোগ লহমায় উড়িয়ে দিয়ে সালাউদ্দিন বারবারই তাকে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছেন। সোহাগের ঢাল হয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমকেও ফুটবলের শত্রু তকমা দিয়েছেন নির্দ্বিধায়। এমনকি ফিফা সোহাগের বিপক্ষে তদন্ত শুরু করার পরও সালাউদ্দিন বাফুফের পক্ষ থেকে কোনরকম ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাটেননি। উল্টো কী করে তাকে বাঁচানো যায় সেই ফন্দি এঁটেছেন।
গত ফেব্রুয়ারির একটা ঘটনায় হাজারো কুকর্মের কারিগর সোহাগের প্রতি সালাউদ্দিনের রহস্যময় অন্ধ বিশ্বাসের নজির মিলেছে। ফেব্রুয়ারিতে সোহাগ বাফুফেতে তার অধস্তন তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে গোপনে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফা সদরদপ্তরে গিয়েছিলেন জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিতে। যাওয়ার আগে কয়েক রাত সোহাগ তার কুশিলবদের নিয়ে অবৈধভাবে অনেক রাত পর্যন্ত বাফুফে ভবনে অফিস করেন। কঠোর গোপনীয়তার বিষয়টি অবশ্য প্রকাশ্যে চলে আসে দৈনিক দেশ রূপান্তরের অনুসন্ধানে।
পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাদের গোপন সফরের খবর। এ নিয়ে তুলকালাম শুরুর পর সালাউদ্দিন দাবী করেন, ‘সোহাগসহ চার অফিসিয়াল ছুটি নিয়ে ব্যক্তিগত খরচে জুরিখ যান। তাদের জুরিখ সফরের খরচ বাফুফে নয়, তবে অন্য কেউ বহন করেছেন।’
ভীষণ শক্তিমান সোহাগ বাকি তিনজনকে নিয়ে গিয়েছিলেন মূলত ফিফার জেরার মুখে যাতে তালগোল পাকিয়ে না ফেলেন, সেই সুবিধার্থে। চার অফিসিয়াল ফিরে আসার পর সোহাগকে পাশে বসিয়ে সালাউদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে বোঝাতে চেয়েছেন তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যে।
সম্প্রতি সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাইপর্ব খেলতে পাঠাতে না পারার দায় সোহাগ দেন সরকার ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে। দল মিয়ানমারে পাঠানো বাবদ ৯২ লাখ টাকার চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়কে দিয়েছিল বাফুফে। সেখানে বিভিন্ন খাতে বাজেট বাড়িয়ে দেখানো হয়। চাহিদাপত্র দেয়ার দু’দিন পর সরকার টাকা দিতে ব্যর্থ দাবী করে সংবাদ মাধ্যমে ভিডিওবার্তা দেন সোহাগ।
এ নিয়ে সমালোচনামুখর হয়ে ওঠে ক্রীড়াঙ্গন। খোদ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত মেয়েদের না পাঠানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর জন্য সরকারকে দায়ী করা বেজায় ক্ষেপে যান ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সোহাগ এবং সালাউদ্দিনের ঔদ্ব্যর্তপূণপ্র্য বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় বাফুফের বিরুদ্ধে তদন্ত করার সুপারিশ করে।
তারপরও থামেনি সোহাগের মুখ। নিজের সিদ্ধান্তকে অকাট্য প্রমাণে মিথ্যে-বানোয়াট বক্তব্য দিতে শুরু করেন। পদত্যাগ করবেন কি না- এমন প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে দুই দিন আগেও বড় বড় কথা বলতে শোনা গেছে। তবে কোন কিছুতেই আর পিঠ বাঁচলো না আলোচিত সোহাগের।
দেশকে ফাঁকি দিলেও ফিফার জালে ঠিকই ধরা পড়তে হলো সোহাগকে। ফুটবল থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন সোহাগ। তাতে দেশের ভাবমূর্তিতে আরেকবার পড়েছে কলঙ্কের কালীর ছটা। এবার প্রশ্ন, তাকে লালন-পালন করে চারাগাছ থেকে মহীরূহে রূপান্তরিত করা সালাউদ্দিন কতদিন পারবেন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে? চার মেয়াদে ফুটবলকে তিনি নিয়ে গেছেন ধ্বংসের দ্বাড়প্রান্তে। সোহাগের জারিজুড়ি ফাস হওয়ার মধ্য দিয়ে ডানহাতটা কাটা পড়েছে সালাউদ্দিনের। এবার নিজেকে কিভাবে রক্ষা করবেন বাফুফে বস?
পুরো সিরিজে যে ব্যর্থতা ছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের তা শেষদিনের পারফরম্যান্সে অনেকটা ঢাকা পড়ল। সিরিজের শেষ চারদিনের ম্যাচের শেষদিন মাহমুদুল হাসান জয়ের বীরত্বে হার বাঁচাল স্বাগতিকরা।
উইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৪৬১ রানের লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশ ‘এ’ ৯১ ওভার ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৩০৬ রান করেছে। জয় ২৬৮ বলে ১৪ চারে অপরাজিত ছিলেন ১১৪ রানে। পুরো সিরিজে তার ব্যাট থেকেই এসেছে একমাত্র সেঞ্চুরি।
আন্তর্জাতিক ম্যাচ নয় বলেই জয়ের বীরত্ব বড় করে প্রচার হলো না। তিনি যে ব্যাট ক্যারি করলেন পুরো ইনিংসে। ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে নেমে ৩৮ বলে ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। কাল ম্যাচের শেষদিন নিজের দৃঢ়তাকে টেনে নিলেন শেষ পর্যন্ত। ২৬৮ বলে ইনিংসে মোচট ৪২২ মিনিট ব্যাট করেছেন প্রখর রোদ উপেক্ষা করে।
আন্তর্জাতিকে মোট ৫৬ ব্যাটার টেস্টে ব্যাট ক্যারি করেছেন পুরো ইনিংসে। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র জাভেদ ওমর ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়েতে ব্যাট ক্যারি করেছিলেন।
জয় তার ইনিংসে শুরুতে ৪৩ রান করা জাকির হাসানের সঙ্গে ৯৩ রানের ওপেনিং জুটি, ৩৮ রান করা সাইফ হাসানের সঙ্গে ৫৩ এবং ইয়াসির আলির ৬৭ রানের সঙ্গে ১১৭ রানের জুটি গড়েন। প্রথম উইকেটে শাহাদাত হোসেন দিপুর (২০) সঙ্গে ২৯ রানের জুটির সময় দিনের খেলা ১৩ ওভার ম্যাচ ড্র ঘোষনা করে দুই আম্পায়ার।
আগামী ৭ জুন শুরু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এ ম্যাচে নতুন জার্সিতে খেলবে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা।
ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাডিডাস ভারতীয় ক্রিকেট দলের কিট স্পনসর হিসাবে সম্প্রতি পাঁচ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। অনুশীলন জার্সি তারা আগেই প্রকাশ করেছিল। এ বার ম্যাচের জার্সিও সামনে এলো।
শুধু টেস্টই নয়, টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সংস্করণের জন্যও ভারতের নতুন জার্সি প্রকাশ্যে এসেছে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ছাড়াও এ বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ রয়েছে। ঘরের মাঠে ভারতকে নতুন জার্সিতে খেলতে দেখা যাবে দলটিকে।
টেস্ট ক্রিকেটের জার্সি চিরাচরিত সাদা। কোহলিদের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জার্সির রং আকাশি নীল। তবে ওয়ানডের জার্সির রং তুলনায় গাঢ়। জার্সি দুটির নকশাও আলাদা। আগের রঙের সঙ্গে রয়েছে পার্থক্য।
কোহলিদের নতুন জার্সির ডিজাইন করেছেন আকিব বানি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিও তারই ডিজাইন করা।
কোহলিদের মতো হরমনপ্রীত কৌর, স্মৃতি মন্ধানারাও এ বার থেকে পরবেন নতুন জার্সি।
রেফারিশ বাঁশি বেজেছে, খেলা শুরু হয়েছে। খেলার গতিপ্রকৃতিই তখনও বুঝে উঠতে পারেনি কোনো দল। কিন্তু তারই মাঝে মোহামেডান ঘটিয়ে দিল অঘটন। দ্বিতীয় মিনিটে রজারের দেওয়া লম্বা পাস ডি বক্সের খুব কাছে পেয়ে যান ইমানুয়েল সানডে। দূর পাল্লার শট থেকে তিনি পেয়ে যান গোলের দেখা।
শুরুতেই গোল পেয়ে এগিয়ে যাওয়া মোহমেডান উল্লাসে মেতে উঠেছিল। তবে তাদের সেই উচ্ছ্বাস ১০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। কারণ ১২ মিনিটেই সমতায় ফিরে আসে তারা। মোরসালিনের এগিয়ে দেওয়া বলটিকে মোহামেডানের জালে জড়ান মিগেল ফিগেইরা।
সমতায় ফেরার পর দুই দলই মরিয়া হয়ে উঠেছে গোল করে এগিয়ে যাওয়ার। সেই লক্ষ্যে জয়ী হয় বসুন্ধরা। এবারও মূল কারিগর মোরসালিন। তার বাড়িয়ে দেওয়া শট দূর্দান্ত এক গোল করেন রাকিব হোসাইন। তাতে প্রথমার্ধে ২-১ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় কিংসরা।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে এ মাসেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম দেশটিতে যাবেন লিওনেল মেসি। এরই মধ্যে প্রীতি ম্যাচটির টিকেটের মূল্য প্রকাশ করেছে আয়োজকরা। তবে টিকেটের উচ্চমূল্য নিয়ে চীনের ফুটবল সমর্থকদের মনে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়।
আর্জেন্টিনা-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি হবে ৬৮ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার ওয়ার্কার্স স্টেডিয়ামে। এ ম্যাচটি দেখতে চীনা মুদ্রায় সর্বনিম্ন ৫৮০ ইউয়ান (৮২ ডলার) থেকে সর্বোচ্চ ৪৮০০ ইউয়ান (৬৮০ ডলার) খরচ হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সর্বনিম্ন ৯ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৩ হাজার টাকা।
সবশেষ কাতার বিশ্বকাপে শিরোপা জেতা আর্জেন্টিনার ম্যাচটি ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই প্রবল আগ্রহ রয়েছে চীনে। কিন্তু টিকেটের এমন উচ্চমূল্য মানতে পারছেন না অনেকেই। টুইটারে যেমন একজন বিষয়টিকে আয়োজকের ‘ডাকাতি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা ও অস্ট্রেলিয়া। সেবার ২-১ গোলে হারিয়েছিল আলবিসেলেস্তারা। ওই ম্যাচে জালের দেখা পেয়েছিলেন লিওনেল মেসি।
চারদিনের ব্যবধানে দুই দলই পেয়েছে শিরোপার স্বাদ। ২৬ মে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে টানা চতুর্থবারের মতো শিরোপা জিতে নেয় বসুন্ধরা কিংস। আর ৩০ মে ফেডারেশন কাপের রোমাঞ্চকর ফাইনালে চিরশত্রু আবাহনীকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ৯ বছর পর কোনো আসরের শিরোপা স্বাদ পায় মোহামেডান।
দীর্ঘ ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা জয়ের সুখস্মৃতি সঙ্গে নিয়ে আজ মোহামেডান মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংসের। কিংস অ্যারেনায় ম্যাচটা শুরু হবে বিকেল ৫টায়। শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় এমনিতে এই ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ থাকার কথা নয়। তবে আগ্রহটা থাকছে দুই চ্যাম্পিয়নের মুখোমুখি লড়াই বলেই।
১০ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ ৬-৪ গোলে শেখ রাসেলকে হারিয়ে কিংস অ্যারেনায় শিরোপা উৎসবে মেতেছিল বসুন্ধরা কিংস। মৌসুম শুরুর স্বাধীনতা কাপ জয়ের পর লিগ শিরোপাও ঘরে তোলে তারা। তবে ফেডারেশন কাপটা এবার আক্ষেপ হয়ে থাকল তাদের কাছে। এই মোহামেডানের কাছেই ৯ মে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল ঢাকার ফুটবলের নয়া পরাশক্তির। সেই ম্যাচটা ২-১ গোলে জিতে রীতিমতো চমকে দিয়েছিল আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা। আজ তাই কিংসের সামনে প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ।
তবে পরপর দুই জায়ান্টকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপ নিজেদের করে নেওয়া এই মোহামেডানকে এখন আর হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই। এই সাদা-কালোরা বড্ড ভয়ংকর প্রতিপক্ষ। যদিও কিংস শিবিরের জন্য সুসংবাদ হতে পারত তিন হলুদ কার্ডের কারণে ফেডারেশন কাপে একাই চার গোল করে মোহামেডানকে জেতানো মালির স্ট্রাইকার সুলেমান দিয়াবাতের আজকের ম্যাচ খেলতে না পারাটা। সেটা হচ্ছে না কারণ একই কারণে কিংসও পাচ্ছে না তাদের সেরা স্ট্রাইকার ডরিয়েলটন গোমেজকে। তিন কার্ডের খাড়ায় পড়েছেন ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশাও। আর চোট সমস্যাও ভাবাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস কোচ অস্কার ব্রুজনকে। চোটের কারণে এই ম্যাচে থাকবেন না উজবেক মিডফিল্ডার আশরর গফুরভ, ডিফেন্ডার তপু বর্মণ, ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া ও বিপলু আহমেদ।
ব্রুজন তাই দিয়াবাতের না থাকায় কোনো বাড়তি সুবিধা দেখছেন না, ‘এটা অবশ্যই কঠিন ম্যাচ হতে যাচ্ছে। মোহামেডানের বিপক্ষে প্রতিটি ম্যাচই কঠিন। তারা এখন দারুণ ফর্মে আছে এবং ফেডারেশন কাপ জিতে আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় অবস্থান করছে। আমরা এই ম্যাচটাকে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি কারণ বিরতিতে যাওয়ার আগে চাইব জয়ের ধারায় থাকতে।’
ওদিকে মোহামেডান কোচ আলফাজ আহমেদও চান ৯ মে’র ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে পুনরাবৃত্তি ঘটাতে। শফিকুল ইসলাম মানিকের কাছ থেকে লিগের দ্বিতীয়পর্বে দায়িত্ব নিয়েই মোহামেডানকে আমূল বদলে দেওয়া আলফাজ কিংসকে শক্ত চ্যালেঞ্জ জানানোর কথাই বলেছেন, ‘দিয়াবাতে তিনটি হলুদ কার্ড থাকায় খেলতে পারবে না। এটা আমাদের জন্য একটু ক্ষতির দিক হলেও দলের বাকিদের ওপর আমার আস্থা আছে। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে তারা বুঝিয়েছে নিজেদের দিনে যে কোনো প্রতিপক্ষকেই তারা হারানোর সামর্থ্য রাখে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
লিগের প্রথমপর্বে কিংস জিতেছিল ১-০ গোলে। তবে সেই মোহামেডানের সঙ্গে এই মোহামেডানের বিস্তর ফারাক। ১৬ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় চারে রয়েছে মোহামেডান। এখান থেকে আবাহনীকে (১৭ ম্যাচে ৩৪) হটিয়ে হয়তো রানার্স-আপ হওয়ার স্বপ্ন দেখাও বাড়াবাড়ি। তবে সাদা-কালোদের সামনে বাংলাদেশ পুলিশকে পেছনে ফেলে তৃতীয় হওয়ার সুযোগ আছে।
আলফাজ সেই লক্ষ্যের কথাই বলেছেন, ‘নিজেদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ধারা যদি বজায় রাখতে পারি তবে লিগে তৃতীয় হওয়ার ভালো সুযোগ আছে।’
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এমন অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। তাই বলে গরমের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে হবে। আর কর্মজীবীদের অফিস ও অন্যান্য কর্মস্থলে। অনেকেরই এই গরমেও কাজের প্রয়োজনে সারাদিন কেটে যায় বাইরে ঘুরে ঘুরেই। গরমকে মোকাবিলা করতে সঙ্গে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখলেই গরমের কাছে নিজেকে হার মানতে হবে না।
পানি পান
গরমের সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি ঘাম বের হয়ে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পারে পানি শূন্যতা। শরীরের মধ্যে যদি পানির পরিমাণ কমে যায় তাহলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। পানি শূন্যতা দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি ফলের জুস কিংবা কচি ডাবের পানি খেতে পারেন। দেহের ত্বককে ভালো রাখতে পানি, শরবত বা জুস পানের বিকল্প নেই। গরমে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেলে ডিহাইড্রেশন এবং পানি শূণ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার স্যালাইন
গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হতে থাকে যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। বিকেল বেলা খাবার স্যালাইন খেলে অতিরিক্ত গরমেও শরীরে সতেজতা ফিরে আসে। আবার অনেকেই স্বাদযুক্ত স্যালাইন খান যেমন, টেস্টি স্যালাইন। ভুল করেও এসব খাবেন না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো ওরস্যালাইন । তবে আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খাবার স্যালাইন খাওয়ার আগে ভালো কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়া উচিত।
রেড মিট পরিহার করুন
অতিরিক্ত গরমের সময় গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় বা অতিরিক্ত গরমের সময় গরুর মাংস খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু-ছাগলের মাংস ছেড়ে মাছ খেতে পারেন। আর অতিরিক্ত গরমে অবশ্যই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
সবুজ শাক সবজি
গরমের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। সবুজ শাক সবজিতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং খনিজ উপাদান থাকে। এতে করে অতিরিক্ত গরমেও শরীর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাছাড়াও খেতে পারেন তরমুজ যা শরীরে এনার্জি দিতে পারে।
টক জাতীয় ফল
প্রচুর গরমে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। যেমন: কামরাঙ্গা, লেবু, তেতুল, আমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি কারো এসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে তবে টক জাতীয় ফল খাওয়া হতে বিরত থাকুন। টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এতে করে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পারতে পাবেন।
টক দই
অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে টক দই খেতে পারেন। যারা করা রোদে কাজ করেন বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক উপকারী হলো টক দই। রোদের প্রচুর তাপ থেকে শরীরকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে টক দই। টক দই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
প্রতিদিন গোসল করুন
গরমের সময় প্রতিদিন এক বার করে হলেও গোসল করতে হবে। যদি পারেন তবে দিনে ২ বার গোসল করতে পারেন। গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। বাহির থেকে এসে সাথে সাথে গোসল করতে যাবেন না। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করতে যাবেন। কারণ হঠাৎ করে গরম থেকে এসে গোসল করলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
ঘরেই অবস্থান করুন
অতিরিক্ত গরমে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাহিরে যাবেন না । যদিও বিভিন্ন কারণে বাহিরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে রোদ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
শারীরিক পরিশ্রম কম করুন
গরমের সময় অনেকেই আছে অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন এমনটি করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি হয়ে থাকে।
পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা
গরমের সময় পাতলা সুতি কাপড় পরা দরকার। কারণ সাদা কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না বরং তাপের প্রতিফলন ঘটায় ও গরম কম লাগে।
পারফিউম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অতিরিক্ত গরমে ঘামের গন্ধ থেকে বেচে থাকার জন্য অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে পারফিউম ব্যবহার না করাটাই উত্তম কাজ। কারণ, পারফিউম গরম লাগা বৃদ্ধি করে দেয়।
যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে হালকা গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার করতে পাবেন। বাজারে কিছু সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠাণ্ডা লাগে। সেগুলো ব্যবহার করলে আরো ভালো হয়।
ধূমপান পরিত্যাগ করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা ধূমপান করে থাকি। ধূমপান করলে শরীরের তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। তাই প্রচন্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে। যদিও এই অভ্যাসটি সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। তাই যতটুকু পারেন ধূমপান কম করার চেষ্টা করুন।
চা কফি পরিত্যাগ করুন
চা, কফি বা অ্যালকোহল খেলে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। আর যদি অতিরিক্ত গরমে চা, কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাবে যার ফলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। তাই গরমের সময় চা কফি বা অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
শান্ত থাকুন
মন মেজাজ গরম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। রাগের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত গরমের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় আর দুই তাপমাত্রা এক সঙ্গে হলে কি অবস্থা হতে পারে একবার হলেও সেটা ভেবে দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত গরমে শান্ত থাকার জন্য মতামত দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শান্ত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।