ভোটে হারলেন ভারতের প্রথম গো-মন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক | ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৩:২৭
রাজস্থানে গো-মন্ত্রী দেবাসি ১০ হাজার ভোটে হেরেছেন এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। ছবি: ফেসবুক
ভারতের পাঁচটি রাজ্যের বিধান সভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। দেশটির রাজনীতিতে এনিয়ে শোরগোলের মধ্যে রয়েছে আরো একটি বিষয়। দেশের প্রথম গো-মন্ত্রী ওতারাম দেবাসিও হেরেছেন এই নির্বাচনে।
এনডিটিভি জানায়, অন্য চার রাজ্যের মতো রাজস্থানেও ভরাডুবি হয় বিজেপির। এই রাজ্যের গো-মন্ত্রী দেবাসি ১০ হাজার ভোটে হেরেছেন এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে।
এই পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে গো-মন্ত্রী হিসেবে দেবাসিকে একটি বিতর্কিত মেয়াদের ইতি টানতে হচ্ছে। তার চোখের সামনেই না খেয়ে এবং বিষক্রিয়ায় কয়েকশ’ গরু মারা গেছে।
পুলিশ থেকে হিন্দুত্ববাদী নেতা বনে যাওয়া দেবাসি লাল পাগড়ি এবং সাদা ধুতি পরে হাতে ঐতিহ্যবাহী একটি লাঠি নিয়ে চলাফেরা করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গো-রক্ষার নামে রাজস্থানে বহু সহিংস ঘটনা ঘটেছে। গরুর মাংস বহন কিংবা গরু জবাইয়ের অভিযোগে মুসলিমদের গণপিটুনি দিয়ে হত্যার মতো চিত্র দেখা গেছে।
গত বছর আলায়ারের ব্যস্ত মহাসড়কে একজন মুসলিম দুগ্ধ খামারিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গো-রক্ষা নিয়ে ওই এলাকায় সবচেয়ে বেশি সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
গত ২০১৫ সালে রাজস্থানে বিশেষ গো-রক্ষা মন্ত্রণলায় চালু হয় যা ভারতে প্রথম। আর মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান পুলিশ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো ওতারাম দেবাসি।
দায়িত্ব পেয়ে ‘গরু কর’ হিসেবে জমি কেনাবেচায় ২০ ভাগ সারচার্জ আরোপ করেন এই মন্ত্রী। মালিকানা নেই এমন এবং বুড়িয়ে যাওয়া গরুর জন্য তৈরি রাজ্যের ২ হাজার ৩০০টি আশ্রয়কেন্দ্রে এসব অর্থ ব্যয় করার কথা বলা হয়। এছাড়া পাচার ঠেকাতে সাড়ে ছয় লাখ গরুকে বিশেষ ট্যাগের আওতায় আনা হয়।
কিন্তু ২০১৬ সালে বন্যায় রাজ্য পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৫০০ গরু না খেয়ে মারা গেলে সমালোচনার মুখে পড়েন গো-মন্ত্রী। আগস্টে আরো ২৮টি গরু মারা গেলে ফের ভাবমূর্তি সংকটে পড়েন দেবাসি।
এই রাজ্যে গরু জবাইয়ের সাজা ১০ বছরের কারাদণ্ড। গরু জবাইয়ের সাজা আরো বাড়ানো এবং আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য আরো অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিধান সভা নির্বাচনে জোর প্রচারণা চালিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মঙ্গলবার ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, রাজ্যে কংগ্রেসের কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি।
‘হার্টল্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত রাজস্থানসহ পাঁচটি রাজ্যে এমন সময় বিজেপির ভরাডুবি হলো, যখন মাত্র ছয় মাস পর দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য লড়বেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গোটা দেশে গরু জবাই বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৪ সালে রেকর্ড আসনে জয়লাভ করেছিল তার দল।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৩:২৭

ভারতের পাঁচটি রাজ্যের বিধান সভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। দেশটির রাজনীতিতে এনিয়ে শোরগোলের মধ্যে রয়েছে আরো একটি বিষয়। দেশের প্রথম গো-মন্ত্রী ওতারাম দেবাসিও হেরেছেন এই নির্বাচনে।
এনডিটিভি জানায়, অন্য চার রাজ্যের মতো রাজস্থানেও ভরাডুবি হয় বিজেপির। এই রাজ্যের গো-মন্ত্রী দেবাসি ১০ হাজার ভোটে হেরেছেন এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে।
এই পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে গো-মন্ত্রী হিসেবে দেবাসিকে একটি বিতর্কিত মেয়াদের ইতি টানতে হচ্ছে। তার চোখের সামনেই না খেয়ে এবং বিষক্রিয়ায় কয়েকশ’ গরু মারা গেছে।
পুলিশ থেকে হিন্দুত্ববাদী নেতা বনে যাওয়া দেবাসি লাল পাগড়ি এবং সাদা ধুতি পরে হাতে ঐতিহ্যবাহী একটি লাঠি নিয়ে চলাফেরা করেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গো-রক্ষার নামে রাজস্থানে বহু সহিংস ঘটনা ঘটেছে। গরুর মাংস বহন কিংবা গরু জবাইয়ের অভিযোগে মুসলিমদের গণপিটুনি দিয়ে হত্যার মতো চিত্র দেখা গেছে।
গত বছর আলায়ারের ব্যস্ত মহাসড়কে একজন মুসলিম দুগ্ধ খামারিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গো-রক্ষা নিয়ে ওই এলাকায় সবচেয়ে বেশি সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
গত ২০১৫ সালে রাজস্থানে বিশেষ গো-রক্ষা মন্ত্রণলায় চালু হয় যা ভারতে প্রথম। আর মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান পুলিশ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো ওতারাম দেবাসি।
দায়িত্ব পেয়ে ‘গরু কর’ হিসেবে জমি কেনাবেচায় ২০ ভাগ সারচার্জ আরোপ করেন এই মন্ত্রী। মালিকানা নেই এমন এবং বুড়িয়ে যাওয়া গরুর জন্য তৈরি রাজ্যের ২ হাজার ৩০০টি আশ্রয়কেন্দ্রে এসব অর্থ ব্যয় করার কথা বলা হয়। এছাড়া পাচার ঠেকাতে সাড়ে ছয় লাখ গরুকে বিশেষ ট্যাগের আওতায় আনা হয়।
কিন্তু ২০১৬ সালে বন্যায় রাজ্য পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৫০০ গরু না খেয়ে মারা গেলে সমালোচনার মুখে পড়েন গো-মন্ত্রী। আগস্টে আরো ২৮টি গরু মারা গেলে ফের ভাবমূর্তি সংকটে পড়েন দেবাসি।
এই রাজ্যে গরু জবাইয়ের সাজা ১০ বছরের কারাদণ্ড। গরু জবাইয়ের সাজা আরো বাড়ানো এবং আশ্রয়কেন্দ্রের জন্য আরো অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিধান সভা নির্বাচনে জোর প্রচারণা চালিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মঙ্গলবার ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, রাজ্যে কংগ্রেসের কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি।
‘হার্টল্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত রাজস্থানসহ পাঁচটি রাজ্যে এমন সময় বিজেপির ভরাডুবি হলো, যখন মাত্র ছয় মাস পর দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য লড়বেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গোটা দেশে গরু জবাই বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৪ সালে রেকর্ড আসনে জয়লাভ করেছিল তার দল।