পাকিস্তানে এক ডলারের দাম পৌঁছেছে ২০০ রুপিতে!
অনলাইন ডেস্ক | ১৯ মে, ২০২২ ১৮:৪১
মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির ঐতিহাসিক রেকর্ড দরপতন হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের মুদ্রাবাজারে ১ ডলারের দাম পৌঁছেছে ২০০ রুপিতে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে ডলারের বিপরীতে রুপির মান ছিল ১৯৮ দশমিক ৩৯; কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই মান ২০০ ছাড়িয়ে যায়। অর্থাৎ দেশটিতে এক ডলার কিনতে এখন ২০০ রুপির বেশি খরচ করতে হচ্ছে।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে নিজেদের মুদ্রার এই পরিমাণ পতন আর কখনো দেখেনি পাকিস্তান।
চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ৬০০ কোটি ডলারের তহবিলের জন্য যখন পাকিস্তানের সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে তদবির করছে, সে সময়েই ঘটল মুদ্রার এই দরপতন।
ওদিকে, আগাম নির্বাচন ঘোষণার কারণে এমনিতেই দেশটির বর্তমান সরকারের ওপর ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই রুপির মান এতটা কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে, রুপির এই দরপতনের কিছুক্ষণের মধ্যেই শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন পাকিস্তানের প্রধামন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বৈঠকে তিনি দেশের বর্তমান পণ্য আমদানি-রপ্তানির হালনাগাদ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। পাশাপাশি, বিলাসজাত ও অতি জরুরি নয়- এমন পণ্য আমদানির বিষয়ে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, সেটির বাস্তবায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদনও তিনি তলব করেন।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল আইএমএফের মিশন প্রধানের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেছেন বৃহস্পতিবার। বৈঠকে তিনি জানান, দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী ‘কঠোর নীতি’ গ্রহণে প্রস্তুত পাকিস্তানের সরকার।
২০১৮ সাল থেকেই অর্থনৈতিক সংকট চলছে পাকিস্তানে। করোনা মহামারিত তা আরও তীব্র হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মাত্র দেড় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলার মজুত আছে। ফলে পাকিস্তানের অবস্থাও শ্রীলাঙ্কার মতো হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বিশ্লেষকদের মতে, চাহিদার তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ কম, বিশ্বব্যাপী নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ১৯ মে, ২০২২ ১৮:৪১

মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির ঐতিহাসিক রেকর্ড দরপতন হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের মুদ্রাবাজারে ১ ডলারের দাম পৌঁছেছে ২০০ রুপিতে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে ডলারের বিপরীতে রুপির মান ছিল ১৯৮ দশমিক ৩৯; কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই মান ২০০ ছাড়িয়ে যায়। অর্থাৎ দেশটিতে এক ডলার কিনতে এখন ২০০ রুপির বেশি খরচ করতে হচ্ছে।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে নিজেদের মুদ্রার এই পরিমাণ পতন আর কখনো দেখেনি পাকিস্তান।
চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ৬০০ কোটি ডলারের তহবিলের জন্য যখন পাকিস্তানের সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে তদবির করছে, সে সময়েই ঘটল মুদ্রার এই দরপতন।
ওদিকে, আগাম নির্বাচন ঘোষণার কারণে এমনিতেই দেশটির বর্তমান সরকারের ওপর ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই রুপির মান এতটা কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে, রুপির এই দরপতনের কিছুক্ষণের মধ্যেই শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন পাকিস্তানের প্রধামন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বৈঠকে তিনি দেশের বর্তমান পণ্য আমদানি-রপ্তানির হালনাগাদ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। পাশাপাশি, বিলাসজাত ও অতি জরুরি নয়- এমন পণ্য আমদানির বিষয়ে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, সেটির বাস্তবায়ন সম্পর্কিত প্রতিবেদনও তিনি তলব করেন।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল আইএমএফের মিশন প্রধানের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেছেন বৃহস্পতিবার। বৈঠকে তিনি জানান, দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী ‘কঠোর নীতি’ গ্রহণে প্রস্তুত পাকিস্তানের সরকার।
২০১৮ সাল থেকেই অর্থনৈতিক সংকট চলছে পাকিস্তানে। করোনা মহামারিত তা আরও তীব্র হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মাত্র দেড় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলার মজুত আছে। ফলে পাকিস্তানের অবস্থাও শ্রীলাঙ্কার মতো হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বিশ্লেষকদের মতে, চাহিদার তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ কম, বিশ্বব্যাপী নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে।