
পাকিস্তানে বিনামূল্যের আটা বিতরণের সময় পদদলিত হয়ে একজন নিহত এবং আটজন আহত হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) মূল্যস্ফীতি বিপর্যস্ত দেশটিতে এ ঘটনা ঘটে। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশের চরসাদ্দার পুলিশ প্রধান মুহাম্মদ আরিফ বলেন, সব মিলিয়ে নয়জন পদদলিত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে একজন মারা যান।
এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, রমজান মাসে শতাধিক পয়েন্টে বিনামূল্যে আটা বিতরণ করছে শেহবাজ সরকার। তার একটিতেই এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ওই বাজারটিতে শতাধিক লোক জড়ো হয়েছিল। সারা দেশে লক্ষাধিক নিম্ন আয়ের পরিবার এই প্রকল্পের আওতায় নিবন্ধিত।
এ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী একটি জেলায় বিনামূল্যের আটার জন্য ভিড় জমানোর সময় একটি দেয়াল ধসে পড়ে। সে ঘটনায় একজন মারা যায় এবং চারজন আহত হয়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তানে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে এবং প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বছরের পর বছর ধরে চলা আর্থিক অব্যবস্থাপনা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশটি এখন বিপর্যস্ত। সেই সঙ্গে গভীরভাবে ঋণে জর্জরিত দক্ষিণ এশীয় দেশটি।
চার দিনের সফরে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সহিংসতা-বিধ্বস্ত রাজ্য মণিপুর সফরে এসেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্যটিতে দ্রুত শান্তি এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে রাজ্যপাল ও মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। এ ছাড়া দাঙ্গা-বিধ্বস্ত চুরাচাঁদপুরে পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে তার।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। বলা হয়, এন বীরেন সিংয়ের মন্ত্রী পরিষদ এবং রাজ্যপাল অনুসুইয়া উইকের সঙ্গে দেখা করেছেন অমিত শাহ। এ ছাড়া মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতাদের সাথেও বৈঠক করবেন তিনি।
এদিকে এক বিবৃতিতে মণিপুর সরকার এবং জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়, এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে মণিপুরের সহিংসতায় নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এই টাকার মধ্যে ৫ লাখ দেয়া হবে রাজ্যের তরফে এবং বাকি ৫ লাখ টাকা দেবে কেন্দ্র। একই সঙ্গেই সংঘর্ষে নিহত পরিবারগুলির একজন করে সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।
আগামী কয়েকদিন সহিংসতা-বিধ্বস্ত মণিপুর রাজ্যে থাকবেন অমিত শাহ। জাতিগত সহিংসতা রোধের উপায় বের করতে তিনি শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং প্রভাবশালী সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
গত ৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া জাতিগত এই সংঘর্ষে একাধিক পুলিশ আধিকারিক, সেনা জওয়ান, সাধারণ নাগরিক সহ অন্তত ৮০ জন মারা গিয়েছেন। এছাড়া রবিবার, সেনাবাহিনীর সঙ্গে কুকি বিচ্ছিন্নতাবাদী সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে অন্তত ৪০জন বিচ্ছিন্নতাবাদী সদস্য মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী।
জম্মুতে বৈষ্ণো দেবী মন্দিরগামী তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি বাস সেতু থেকে ছিটকে গভীর খাদে পড়ে ১০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৫৫ জন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ঝাজ্জার কোটলি এলাকার কাছে জম্মু-শ্রীনগর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ৭৫ জন যাত্রী নিয়ে পঞ্জাবের অমৃতসর থেকে কাটরার দিকে যাচ্ছিল বাসটি। কাটরা হল বৈষ্ণোদেবী তীর্থযাত্রীদের বেস ক্যাম্প।
জম্মু পুলিশের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট চন্দন কোহলি বলেন, "এ দুর্ঘটনায় দশজন মারা গেছে এবং ৫৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।“ ঘটনাস্থলে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও স্থানীয়রাও উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করেছে বলেও জানান চন্দন কোহলি।
তিনি আরও জানান, বাসটিতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি যাত্রী থাকায় ভিড় ছিল এবং এটাই দুর্ঘটনার কারণ মনে করা হচ্ছে। তবে পুলিশ একটি মামলা নথিভুক্ত করেছে এবং দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত শুরু করেছে। আহতদের জম্মুর সরকারি মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে আহতদের সব ধরনের সহায়তা ও চিকিৎসা দিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা।
পাকিস্তানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান বলেছেন, ‘দেশের সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ৭০ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে।’
সোমবার (২৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি উর্দু।
সম্প্রতি সংবাদামাধ্যমটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করতে দেখা গেছে পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
এসময় তিনি দাবি করেন যে, দেশ পরিচালনার সথে সেনাবাহিনীর কিছুই করার থাকবে না বলে যারা চিন্তা করেন, তারা এখনও ‘বোকার স্বর্গেই বাস করছেন।’
তাকে কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান ইমরান।
পাকিস্তান শুধু নয় উপমহাদেশে এখন অন্যতম আলোচিত চরিত্র পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গুলির মুখ থেকে ফিরে আসা, গ্রেপ্তার হওয়া, পরে আবার জামিন পাওয়া-সাম্প্রতিক সময়ে এত ঘটনার মুখোমুখি আর কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়েছেন কি না খোঁজ নিতে হয়।
ইমরান খান সব সময় যেন প্রধান চরিত্র হয়ে থাকতে চান। ক্রিকেট মাঠে যেমন ছিলেন আলোচিত, একের পর এক বিয়ে আর ভাঙনের খেলায়ও তিনি নায়ক। এরপর পাকিস্তানের মতো অনিশ্চিত ও বিদসংকুল দেশের রাজনীতিতে নেমে হয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রীও। সেটাও টিকল না তিন বছরের বেশি। প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়ে হয়ে গেলেন বিরোধী শিবিরের প্রধান সেনাপতি। বলতে গেলে পাকিস্তানের রাজনীতি এখন ঘুরছে তাকে কেন্দ্র করে।
কিন্তু যাকে নিয়ে এত কিছু তিনি নাকি একটা ডিমও সেদ্ধ করে খেতে জানেন না, অতিথি আপ্যায়ন কাকে বলে জানেন না সেটাও।
আর এসব তথ্য জানিয়েছেন আতিকা রেহমান। তিনি পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য ডন’-এর কূটনীতি প্রতিবেদক।
বিভিন্ন সময়ে ইমরান খানের সাক্ষাৎকার নিতে যান তিনি। সেখানে ব্যক্তি ইমরানকে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা হয় তার।
যেমন তিনি ২০১৩ সালে ইমরান খানের সাক্ষাৎকার নিতে যান তার লাহোরের বাসায়। সেদিন সকালবেলা ছিল। ইমরান তার সামনেই ডোবা তেলে ভাজা পুরি খাচ্ছিলেন। তবে তাকে সামান্য পানীয় ছাড়া আর কিছু খাওয়ার অনুরোধ জানাননি।
আতিকা ইমরানের এক বন্ধুর বরাত দিয়ে আরো জানান, ইমরান যখন জেমিমার (খান) সঙ্গে ছিলেন, তখন কেউ তাদের বাসায় গেলে আতিথ্য পেতেন। আর ইমরান, তিনি জানেনও না কীভাবে একটা ডিম সেদ্ধ করতে হয়, তিনি কখনো কাউকে এক গ্লাস পানিও পান করার অনুরোধ জানাবেন না, আর এটাই তার স্বভাব।
প্রসপেক্ট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আতিকা লিখেছেন, একজন সাংবাদিক যখন কোনো রাজনীতিবিদের কাছে যাবেন, তাকে বিস্কুট থেকে শুরু করে খামে ভরা টাকা পর্যন্ত সাধা হবে। কিন্তু ইমরান এসবের ধার ধারেন না। তার কাছে গেলে শুধু তাকেই পাওয়া যাবে।
আতিকার সঙ্গে ইমরান খানের কথা হয় তার তৃতীয় স্ত্রী বুশরা বিবিকে নিয়েও। যিনি পাঞ্জাব শহরের একটি রক্ষণশীল জমিদার পরিবারের মেয়ে। সুফি সাধকদের প্রভাবাধীন এলাকায় বুশরা বিবির বেড়ে ওঠা। যিনি ‘পিরনি’ হিসাবে এলাকায় বিখ্যাত। সুফি ঐতিহ্যে আধ্যাত্মিক গুরুদের দেওয়া উপাধি ‘পিরনি’।
৪৮ বছর বয়সী বুশরা বিবি প্রার্থনার মাধ্যমে সমস্যাগ্রস্ত আত্মাদের সাহায্য করে থাকেন বলে জানা যায়।
২০১৪ প্রথম স্ত্রী জেমিমার সঙ্গে ইমরানের বিচ্ছেদ হয়। এর এক দশক পর তিনি রেহাম খানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রেহাম খান ছিলেন একজন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি। তিনি সংবাদমাধ্যম বিবিসির আবহাওয়া উপস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। তবে বিচ্ছেদের পর তিনি ইমরান খানের যৌনতা ও মাদক গ্রহণ নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
নিজের বিয়ে ও সংসারজীবন নিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘সহজভাবে বলতে আমি আসলে কখনো ‘আত্মার সঙ্গী’ (সোলমেট) পাব সেটা বিশ্বাস করিনি। কিন্তু আমি এখন জানি একজন আত্মার সঙ্গী কী। আমি আমার জীবনের বেশির ভাগ সময় একা ছিলাম, অনেক বিয়ে ভেঙে যেতে দেখেছি… আমি বিয়ে করতে চাইনি আর, কারণ আমি ভেবেছিলাম এ কাজ আর করব না। মাঝে মাঝে, আমি এই শব্দটি 'আত্মার সঙ্গী' শুনতাম... এবং আমি ভাবতাম, আমি কি কখনো সেই সৌভাগ্য পাব?"
তিনি জানান, নেলসন ম্যান্ডেলা একবার তাকে এবং জেমিমাকে তহবিল সংগ্রহের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেখানে ম্যান্ডেলা এবং তার শেষ স্ত্রী গ্রাসা মিশেলকে একসঙ্গে বসে থাকতে দেখেন। তাদের ভেতরের প্রেম ওই অবস্থায়ও বোঝা যাচ্ছিল। ইমরান তখন মনে মনে ভাবছিলেন, ‘আমার কি কখনো একজন ‘আত্মার সঙ্গী’ হবে? তবে এখন আমার একজন (বুশরা বিবি) আছে’।
জানা যায়, আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনার জন্য খান যখন বুশরার কাছে ‘গোপনে’ যেতে শুরু করেন তখন মিডিয়া এ সম্পর্ক নিয়ে কথা তোলে। তখন প্রচার করা হয় যে, বুশরা ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করতে পারেন। পরে তাকে বিয়ে করে ইমরান নিজেকে নতুন রাজনৈতিক উচ্চতায় নিয়ে যাবেন। অবশেষে বুশরা তার তার পাঁচ সন্তানের জনক স্বামীকে তালাক দেন এবং ২০১৮ সালে ইমরান খানকে বিয়ে করেন।
বুশরাকে নিয়ে প্রচলিত গুজব হলো, যে তিনি জাদু জানতেন এবং মাংস খাওয়া জিনদের একটি বাহিনীকে পালতেন।
বুশরাকে বিয়ের পর ইমরান খান দাফনে যোগ দেওয়া করা বন্ধ করে দেস। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বা সহযোগী হলেও দাফনে উপস্থিত হতেন না। অনেকের সন্দেহ, ইমরান খান বিশ্বাস করছেন যে, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে একই ঘরে থাকলে দুর্ভাগ্য বাড়বে তার। এমনকি ২০২১ সালে তিনি বেলুচিস্তানে ইসলামিক স্টেটের হাতে নিহত সংখ্যালঘু হাজারা জাতির খনি শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিতর্কিত হন।
এমনকি এটাও শোনা যায় যে, ইমরান খানের এসব ‘কুসংস্কার’ সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সম্পর্কে প্রথম ফাটলের জন্ম দেয়। আর সেটি ছিল গোয়েন্দা প্রধান নিয়োগে তার অতিরিক্ত সময় নেয়া। একজন মন্ত্রীর দাবি, জনৈক নারী (বুশরা বিবি) তাকে উপযুক্ত সময়ে গোয়েন্দা প্রধান নিয়োগের ঘোষণা দিতে বলেছিলেন। যার কারণে বিলম্ব ঘটে।
ইমরান খান যদিও বর্তমানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন, তবে অনেকে মনে করেন তাদের সঙ্গে যোগসাজশেই ইমরান ক্ষমতায় আসেন। কারণ পাকিস্তান পিপলস পার্টি জুলফিকার আলি ও বেনজির ভুট্টো) ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ শরিফ) দুর্নীতিতে পর্যুদস্ত। তাদের বাইরে ইমরান খানকে দিয়ে দুর্নীতি যদি কমানো যায়। তবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী খুশি হয় যখন ইমরান ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ১৩৭ আসন না পেয়ে ১১৫ আসন পায়। ঘাটতি আসনগুলোর মাধ্যমে সেনাবাহিনী ইমরানের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপের সুযোগ পায়। তবে উচ্চ শ্রেণির দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ইমরান খান সরকারকে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেল না। পরে তিনি ক্ষমতাচ্যুতও হন।
ইমরান সব সময়ে বলে আসছেন, পাকিস্তান হবে ধনী-গরিব সবার। তিনি ‘ভিআইপি’ কালচারকে অপছন্দ করতেন, চাইতেন এসব উঠে যাক। কিন্তু নিজে যখন চলাচল করতেন তখন আবার ‘ভিআইপি’ সুবিধা পেতে অস্থির হয়ে উঠতেন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, এ বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠেয় মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তার দল। আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন অনুসারে,মধ্যপ্রদেশে আমরা ১৫০টি আসন পেতে যাচ্ছি।
সোমবার (২৯ মে) রাজধানী নয়া দিল্লির এক সংবাদ সম্মেলনে মধ্যপ্রদেশের আসন্ন বিধানসভা নিয়ে একথা বলেন রাহুল।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। দেশটির মধ্যাঞ্চালের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এ নির্বাচন হতে এখনও চার মাস বাকি। সদ্য কর্নাটক রাজ্যে জয় পেয়েছে বিরোধী দল কংগ্রেস। এরইমধ্যে মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে সোমবার বৈঠকে বসে দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধীও।
বৈঠকের পর এক সংবাদসম্মেলনে রাহুল দাবি করেন, মধ্যপ্রদেশে ১৫০টি আসনে জয় পেতে চলেছে কংগ্রেস। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা কর্নাটকে ১৩৬টি আসন পেয়েছিলাম। মধ্যপ্রদেশে আমরা ১৫০টি আসন পেতে চলেছি।’
মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার আসন সংখ্যা ২৩০। এর মধ্যে কংগ্রেস ১৫০টি আসন পেলে রাজ্যটিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে ক্ষমতায় আসবে তারা।
মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে জোর হওয়া চলায় জয়ের আশা দেখছে কংগ্রেস। দেশটির রাজনীতিবিদদের একাংশের অভিমত,কর্নাটকে আশাতীত সাফল্যের পরে নির্বাচনমুখী রাজ্যগুলোর কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে কংগ্রেস। যার প্রতিফলন দেখা গেছে রাহুলের কথায়।
চলতি বছরেই আরও তিন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজ্যগুলো হলো, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড় এবং তেলেঙ্গানায়। এদিকে রাজস্থান এবং ছত্রিশগড় ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস তাই এ দুই রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখাতে প্রাণপণ লড়বে তারা। তেলেঙ্গানায় তাদের লড়াই হবে বিআরএস-এর সঙ্গে।
জলাশয়ের ওপর স্থাপিত সোলার প্যানেল থেকে সূর্যের আলোর সাহায্যে উৎপাদিত হচ্ছে বিদ্যুৎ। এর নিচে পানিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা প্রজাতির মাছ। কৃষিজমির ক্ষতি না করে নির্মিত দেশের প্রথম ভাসমান এই সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
জ্বালানি সংকটের এই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু অকৃষি জমির স্বল্পতা ও কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে নবায়নযোগ্য এই জ্বালানির প্রসার হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে। এমন পরিস্থিতিতে ভাসমান সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র সফল হলে পরিবেশ ও কৃষিজমি নষ্ট না করে তুলনামূলক কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার ব্যাপকহারে বাড়বে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুকে লিখেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বুলনপুরে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ভাসমান সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২.৩০ মেগাওয়াট। প্রকল্পটির ফলে একই জলাশয় থেকে মিলবে মাছ এবং বিদ্যুৎ।
‘আগামী কয়েক মাস আমরা উক্ত জলাশয়ে মাছের বৃদ্ধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করব। পরিবেশগত ভারসাম্য অটুট থাকলে পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন জলাধারে আমরা আরও বড় পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেব। যুগান্তকারী এই প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন’ যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে বুলনপুরে অবস্থিত নবাব অটোরাইস মিল এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে জুলস পাওয়ার লিমিটেড। এর আগে বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি কক্সবাজারে ২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে, যেটি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত রয়েছে। ওই সময় তাদের এই সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি দেশের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র ছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় ২ দশমিক ৩ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রটির দশমিক ৮ মেগাওয়াট সৌর প্যানেল ভাসমান অবস্থায় স্থাপন করা হয়েছে অটোরাইস মিল মালিকের জলাশয়ের পানির ওপর। এজন্য মোট ৬ একর জলাশয়ের মধ্যে ৩ একর ব্যবহৃত হয়েছে। বাকি সৌর প্যানেল বসানো হয়েছে জলাশয়ের পাশে মিলের ছাদে। গত সোমবার দুপুরের দিকে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট মোহাম্মদ নাহিদুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ওপেক্স মডেলের আওতায় অনগ্রিড এই সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে। এই মডেলে ক্রেতাকে কোনো ধরনের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় না। আমাদের প্রতিষ্ঠান নিজস্ব অর্থায়নে কেন্দ্রটি নির্মাণ করার পর এখান থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ৮ টাকা ১০ পয়সা দরে কিনবেন অটোরাইস মিল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে মিল মালিক বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি নেসকোর কাছ থেকে ১০ টাকা ৬০ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কিনছেন। অর্থাৎ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য তার আড়াই টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। পাশাপাশি যখন মিলটি বন্ধ কিংবা আংশিক উৎপাদনে থাকবে তখন এই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত সৌরবিদ্যুৎ নেট মিটারিং সিস্টেমের আওতায় নেসকোর কাছে বিক্রিও করতে পারবেন।’
‘গ্রিড বিদ্যুতের মতোই এখানে এনার্জি মিটার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি মাসে উৎপাদিত বিদ্যুতের ইউনিট হিসেবে তিনি বিল পরিশোধ করবেন। এভাবে ১২ বছর ধরে বিল পরিশোধের পর পুরো কেন্দ্রটি বিনামূল্যে ওই ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর তিনি প্রায় ১৫ বছর এই কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সামান্য কিছু রক্ষণাবেক্ষণের খরচ লাগবে’ যোগ করেন তিনি।
নাহিদ জানান, ‘পানিতে সৌর প্যানেল ভাসানোর জন্য ফুডগ্রেডের প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। যাতে এটি পানি কিংবা মাছের কোনো ক্ষতি না করে। আগামী ২০ বছর এর গুণগত মান অক্ষুন্ন থাকবে। পানিতে সৌর প্যানেলগুলো এমনভাবে বসানো হয়েছে যেন মাছের স্বাভাবিক জীবনচক্রে ব্যাঘাত না ঘটে। তারপরও আমরা এক বছর পর্যবেক্ষণ করব। এরপর একই ক্রেতার আরও ৪২টি পুকুর রয়েছে যেখানে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
বিদেশি মুদ্রার সংকট থাকায় বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডিস। সংস্থাটির ভাষ্য, বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উঁচুমাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি রয়েছে। একই সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাও প্রকাশ পেয়েছে।
তবে ঋণমান কমালেও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলে মনে করে সংস্থাটি। এর মানে ঋণ যোগ্যতা বা আর্থিক বাধ্যবাধকতা মেটানোর ক্ষমতাতে বাংলাদেশের কোনো পরিবর্তন আসেনি। গত ডিসেম্বরে ঋণমান কমানোর বিষয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল সংস্থাটি। গতকাল সেই পূর্বাভাসের প্রতিফলন ঘটল।
মুডিসের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের বর্তমান ঋণমান কমে দাঁড়িয়েছে বি১-এ। আগে এটি বিএ৩ ছিল। চলমান সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা প্রকাশ পাওয়া এ পদক্ষেপ নিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। তবে বাংলাদেশের জন্য মুডিস তাদের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রেখেছে। যদিও স্বল্পমেয়াদি ইস্যুয়ার রেটিংয়ের ক্ষেত্রে ‘নট প্রাইম’ মান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে তারা।
মুডিসের র্যাংকিং কমার অর্থ হচ্ছে, বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে র্যাংকিং যত কমবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে তত বেশি প্রশ্নের মুখোমুখি হবে। বিশেষ করে, ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বৈশিক লেনদেন ব্যয় বেড়ে যাবে।
মুডিস বলেছে, পরিস্থিতি খানিকটা সহজ হলেও বাংলাদেশে ডলার-সংকট চলমান এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ কমে যাচ্ছে, যা দেশটির বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে আমদানির ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধা তৈরি হয়েছে। যার ফলাফল হিসেবে জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা পুরোপুরি প্রত্যাহার করেনি। একাধিক বিনিময় হার চালু এবং সুদের হার ঠিক করে দেওয়ার মতো অপ্রচলিত যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকেও দেশটি ফিরে আসেনি। এসব পদক্ষেপ বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি ঘটাচ্ছে।
এ ছাড়া অর্থনীতির আকারের তুলনায় কম রাজস্ব আদায়ের ফলে সরকারের পছন্দসই নীতি গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে টাকার অবমূল্যায়ন ও স্বল্প সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ফলে সুদবাবদ সরকারকে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে, যা তার ঋণ গ্রহণের সক্ষমতা দুর্বল করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। মুডিস আশা করছে, বিদেশি অর্থায়ন বৈদেশিক ও রাজস্বসংক্রান্ত চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে। তবে মহামারীর আগের তুলনায় বৈদেশিক পরিস্থিতি দুর্বল থাকবে এবং উঁচুমাত্রার ঋণের কারণে রাজস্ব পরিস্থিতি দুর্বল হবে। বিশেষ করে মুডিস মনে করছে, যেসব রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন হতে অনেক বছর লেগে যাবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুডিস বলেছে, দেশটি কম সুদে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থায়ন ও সহায়তা পেয়ে যাচ্ছে। ফলে বৈদেশিক ও রাজস্ব খাতে চাপ হালকা হবে বলে তারা মনে করছে। বাংলাদেশের ঋণভার একইরকম অন্যান্য দেশের তুলনায় মাঝারি পর্যায়ে রয়েছে এবং কম সুদে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঋণ নেওয়ার কারণে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে মুডিস মনে করে।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন মাত্র ১২ দিন পরে। জোরেশোরে চলছে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রচারে এগিয়ে আছেন। অন্য প্রার্থীরা নালিশ জানাতে ব্যস্ত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ৩০টি ওয়ার্ডে নির্বাচন আগামী ১২ জুন। মেয়র, কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। পোস্টার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাইকিং চলছে। প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ করছেন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত নগরবাসীকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছেন। দিন-রাত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রচার-প্রচারণায় শামিল হয়েছেন তার অর্ধাঙ্গিনী লুনা আবদুল্লাহ। তার কর্মী-সমর্থকদের প্রচারণায় গরম সিটির বিভিন্ন এলাকা।
গতকাল মঙ্গলবার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চকবাজার, বাজার রোড, বাঁকলার মোড়ে গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি বরিশালকে তিলত্তোমা নগরীতে পরিণত করবেন।
ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখার প্রার্থীর প্রচারণায় প্রথম দিন থেকেই মাঠে নেমেছেন ২ হাজার ১০০ নারী কর্মী। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭০ জন করে ৩০টি ওয়ার্ডেই যুগপৎ প্রচারণা শুরু করেছেন তারা। হাতপাখা নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
গতকাল সারা দিন নগরীর টেক্সটাইল মোড়, মড়কখোলা পোল, কালিজিরা বাজার, বারুইজ্জার হাট ও বটতলা বাজারে গণসংযোগ করেন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম এবং তার অনুসারীরা। তারা নগরীর উন্নয়ন এবং নারীদের ইজ্জত রক্ষায় হাতপাখাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
নগরবাসীকে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নিজেকে আলোচনায় রেখেছেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বাঁকলার মোড়-বাজার রোডে গণসংযোগকালে তিনি বলেন, ‘কয়েকটি সংস্থা আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে দেনদরবার করছে। নির্বাচন নিয়ে জনসাধারণের প্রশ্ন ও হতাশা এখনো কাটেনি। আমরা শঙ্কিত সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে। স্থানীয় প্রশাসন এখনো পুরোপুরি নিরপেক্ষ নয়। তাদের একচোখা আচরণ আমার চোখে পড়েছে।’
বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র প্রয়াত আহসান হাবিব কামালের ছেলে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন টেবিল-ঘড়ি প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন। তার নামে নানা অভিযোগ উঠেছে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রচার-প্রচারণায় বলছেন ‘আমি বলতে পারি ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন যারা ঘড়ি মার্কায় ভোট দেবেন তারা।’ এমন কথায় ক্ষুব্ধ নগর বিএনপি। তারা বলছেন, রুপন দলের (বিএনপির) কেউ নয়। মিডিয়া এবং তিনি নিজে বিএনপির লোক বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে দলের মান ক্ষুণœ হচ্ছে।’
রুপনসহ বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১৯ বিএনপি নেতাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে নগর বিএনপি। বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাহিদুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৯ জনের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। মেয়র প্রার্থী রুপন দলের কেউ না হলেও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তাই তার নামও এই তালিকায় এসেছে।’
বিসিসি নির্বাচনে সাত মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য তিন মেয়র প্রার্থীর প্রচারণা তেমন দৃশ্যমান নয়। আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটির ১২৬ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এবারের নির্বাচনে ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন।
গাজীপুরের ভয় বরিশালের নৌকায় : ‘আমরা গাজীপুর সিটি নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েছি। অনেক কিছু আমাদের জানার আছে। আমরা জনগণের ভোটে হারিনি, হেরেছি ষড়যন্ত্রের কাছে। বিশ্বাসঘাতকতার কাছে।’ এ মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে বরিশাল মহানগর ও বরিশাল জেলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলা যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নাসিম বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কৌশল পাল্টে মানুষের কাছে যাব ভোট ভিক্ষা চাইতে, যাতে ভোটাররা বিরক্ত হয়ে বলেন, তোমরা আর এসো না, আমরা নৌকায় ভোট দেব। আমরা ঘরে-বাইরে এক ও অভিন্ন আছি। আমাদের ভেতরে কোনো বিভেদ নেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দেখবেন আমাদের অগ্রগতি, আমাদের কর্মকাণ্ড। আমরা দ্বারে দ্বারে ভোট ভিক্ষা চাইতে যাব। এই মহানগরের নেতাকর্মীরা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট চাওয়া শুরু করেছেন।’
আজ বুধবার সকাল থেকেই বরিশাল মহানগরীর ৩০ ওয়ার্ডের মানুষের কাছে লিফলেট, নির্বাচনী অঙ্গীকার পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাহাউদ্দিন নাসিম বরিশাল আওয়ামী লীগে কোনো দ্বন্দ্ব নেই মন্তব্য করে বলেন, ‘বরিশালের মানুষের কাছে, যুবসমাজের কাছে, ছাত্রমহলের কাছে, মেহনতি মানুষের কাছে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং খোকন সেরনিয়াবাত জনপ্রিয় ব্যক্তি। কিন্তু একটি মহল অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। তারা আমাদের ভেতরে ঐক্য নেই বলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।’
মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখ এবং কষ্টে বলতে হয়, আমি অনেকের সহযোগিতা পাইনি। অনেকের কাছ থেকে বিরুদ্ধাচরণ পেয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং তার আদেশকে আমরা যদি উপেক্ষা করি, তাহলে তা হবে আত্মঘাতী। আমাদের চেষ্টা করা উচিত সাংগঠনিক কার্যকলাপ যেন বিঘ্নিত না হয়।’
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় ও যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. গোলাম কবীর রাব্বানী চিনু, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেন, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুছ ও মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।
মতবিনিময় সভা শেষে বরিশাল শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নৌকা প্রতীকের একটি মিছিল বের হয়।
সারা বিশ্বে নগদ লেনদেনের বিপরীতে ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে। এই যেমন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের জনপ্রিয়তা শুধু দেশেই নয়, সারা বিশে^ই দিনে দিনে বাড়ছে। ২০২২ সালে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন হয়েছে ৪০ দশমিক ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের তুলনায় কার্ডের ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিলসন রিপোর্ট।
বিশ্বে এই মুহূর্তে কার্ডের নেতৃত্বে আছে ভিসা, ইউনিয়ন পে, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, জেসিবি ও ডিনার্স ক্লাব। বিশ^ব্যাপী মার্চেন্ট ও এটিএম গ্রাহকদের মধ্যে সেবা দিয়ে থাকে তারা। বিশ্বে ২০২২ সালেই কার্ডের মাধ্যমে ৬২৫ বিলিয়ন লেনদেন সংঘটিত হয়েছিল। ২০২১ সালের তুলনায় এটি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
বিশ্বে কার্ডের মধ্যে এখন শীর্ষে অবস্থান করছে চীনভিত্তিক কার্ড ইউনিয়ন পে। সারা বিশ্বের কার্ডের লেনদেনের প্রতি ১০০ ডলারের মধ্যে ৪০ ডলারই হয় ইউনিয়ন পের মাধ্যমে। অর্থাৎ ৪০ শতাংশ শেয়ারই তাদের।
বিশ্বের কার্ড কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিসা ব্র্যান্ডের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড। এ কোম্পানি ৩৫ শতাংশ বৈশি^ক শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ২০ শতাংশ নিয়ে মাস্টারকার্ড তৃতীয় সেরা অবস্থানে রয়েছে।
বিশ্বের ১২১টি দেশের জনসংখ্যা ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে র্যাংকিং তৈরি করেছে বৈশ্বিক অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যাটিস্টা’। এর তথ্যমতে, ১২১টি দেশের ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। সেখানে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। ১২১টি দেশের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও প্রাপ্তবয়স্কদের ৪ দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এমনকি নেপালেরও ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে নেপালের অবস্থান ১০৩তম। আর থাইল্যান্ডের ২২ দশমিক ৬১ শতাংশ মানুষের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে সবার শীর্ষে কানাডা। দেশটির প্রাপ্তবয়স্কদের ৮২ দশমিক ৭৪ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এ তালিকায় শীর্ষস্থানে থাকা অন্য দেশগুলোর মধ্যে জাপানের ৬৯ দশমিক ৬৬, সুইজারল্যান্ডের ৬৯ দশমিক ২১, দক্ষিণ কোরিয়ার ৬৮ দশমিক ৪৪, যুক্তরাষ্ট্রের ৬৬ দশমিক ৭ ও যুক্তরাজ্যের ৬৬ দশমিক ১১ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে।
বর্তমানে দেশে ৪০টির মতো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে। প্রায় সব ব্যাংকেরই রয়েছে ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডের কার্ড সেবা। তবে এর বাইরে কয়েকটি ব্যাংক কার্ড সেবায় অভিনবত্ব আনতে অন্য ব্র্যান্ডের কার্ডও নিয়ে এসেছে। যেমন সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স, প্রাইম ব্যাংক জেবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) ডিনার্স ক্লাব, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক নেক্সাস পে ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইউনিয়ন পে ইন্টারন্যাশনাল কার্ড সেবা দিচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা নির্দিষ্ট পরিমাণ কেনাকাটা ও ঋণ নিতে পারেন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এ দেশের কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে বিদেশেও। তাই টাকার পাশাপাশি ডলারেও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে। দেশ-বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে হোটেল বুকিং, থাকা-খাওয়া, ভ্রমণ, বিমানভাড়া, রেস্তোরাঁ ও কেনাকাটার বিল পরিশোধে মিলছে নানা ছাড় এবং পয়েন্ট জেতার সুযোগ। অর্থাৎ কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বেশি। ক্রেডিট কার্ডে নেওয়া ঋণের বিপরীতে ৪৫ দিন পর্যন্ত কোনো সুদ পরিশোধ করতে হয় না।
এখন ১৬ বছরের ঊর্ধ্বের যেকোনো নাগরিক ক্রেডিট কার্ড সেবা নিতে পারেন। তবে তার নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকতে হয়। পরিবারের অন্য কেউ উপার্জনক্ষম হলেও তার বিপরীতে কার্ড দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। আর এ কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়া যায়। কার্ডের ব্যবহার সহজ করতে ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এখন ব্যবহার করা হয় নানা প্রযুক্তি।
বর্তমানে দেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবসায়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে দেশীয় মালিকানাধীন দ্য সিটি ব্যাংক। মূলত দেশের বাজারে আমেরিকান এক্সপ্রেস বা অ্যামেক্স কার্ড প্রচলনের সুবাদেই এগিয়ে গেছে ব্যাংকটি। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ডে ভালো ব্যবসা করছে ব্র্যাক, ইস্টার্ন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইউসিবিএল, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
ধার পেতে মানুষ আগে বন্ধু, সহকর্মী বা আত্মীয়স্বজনের ওপর নির্ভর করত। এসব ধারকর্জ পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তির সাধ্য বা ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল ছিল। বন্ধু, সহকর্মী বা আত্মীয় থেকে যদিও টাকা পেত তাহলেই মিটত প্রয়োজন। কিন্তু দেশে প্রযুক্তির বিকাশের ফলে এখন তাৎক্ষণিক টাকার চাহিদা মেটাচ্ছে ক্রেডিট কার্ড। এই কার্ডে ব্যাংকের বুথ থেকে নগদ টাকা তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পণ্যের কেনাকাটা ও সেবার মূল্য পরিশোধ করা যাচ্ছে। আর কোনো সুদ ছাড়া টাকা পরিশোধে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় মিলছে। এসব কারণে দেশে দিনে দিনে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক বাড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত মার্চ মাসে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে। এই মাসে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিলে দেশের ইতিহাসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল। ওই মাসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। দেশে দিন দিন ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যাও বাড়ছে। গত মার্চে ক্রেডিট কার্ড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ লাখ ৭৮ হাজারটি। গত ডিসেম্বরে এর পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ১৫ হাজার ৮৪১টি। অর্থাৎ ৩ মাসের ব্যবধানে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা বেড়েছে ৬২ হাজার ২০৫টি।
ব্যাংকাররা বলছেন, কার্ডভিত্তিক লেনদেনে গ্রাহক আকৃষ্ট করতে বছরজুড়ে নানা প্রচার চালায় অনেক ব্যাংক। ঈদ বা অন্য উৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়তি আকর্ষণের জন্য কেনাকাটার বিল পরিশোধে মূল্যছাড় বা ক্যাশব্যাক অফার দেওয়া হয়। তবে শুধু শুধু অফার বা প্রচারের কারণে নয়, ব্যাংকের সেবার ধরন এবং সুবিধা বিবেচনায় নিজের পছন্দের ব্যাংক বেছে নেন গ্রাহক।
গত এক বছরে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ২ লাখ ৮৩ হাজার বা ১৫ দশমিক ৪১ শতাংশ বেড়ে ২১ লাখ ১৬ হাজারে ঠেকেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত শীর্ষ ১০ ব্যাংকে রয়েছে ১৪ লাখ ৪২ হাজার কার্ড। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে সিটি ব্যাংক, যাদের ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা হচ্ছে ৩ লাখ ২০ হাজার, যা মোট কার্ডের ১৭ শতাংশ। গত ডিসেম্বর মাসে সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে ২৭১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের ২ লাখ ৩৬ হাজার কার্ডের বিপরীতে লেনদেন ছিল ২৭০ কোটি টাকা। তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রাইম ব্যাংকের ১ লাখ ৬৭ হাজার কার্ডের বিপরীতে লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। চতুর্থ অবস্থানে থাকা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের এক লাখ ২৮ হাজার ৪৬টি কার্ড রয়েছে। মাত্র ৭ শতাংশ কার্ড নিয়ে এই ব্যাংকটি লেনদেন করেছে ২৫৩ কোটি টাকা। আর পঞ্চম অবস্থানে থাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের পরিমাণ এক লাখ ১৮ হাজার ৫৭৮টি। এই ব্যাংকটি লেনদেন করেছে ৯২ কোটি টাকা।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে ইস্টার্ন ব্যাংকের এক লাখ ১৮ হাজার কার্ডে লেনদেন ২০৩ কোটি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এক লাখ চার হাজারের বেশি কার্ড নিয়ে লেনদেন ৩৩৭ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৮৮ হাজার ৩৩৫টি কার্ডে লেনদেন প্রায় ১০ কোটি, সাউথইস্টের ৮৪ হাজার কার্ডে লেনদেন ৪৩ কোটি এবং ব্যাংক এশিয়ার ৭৬ হাজার ৫০২টি কার্ড দিয়ে লেনদেন হয়েছে ৯৯ কোটি টাকা।
দেশে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা প্রায় অধিকাংশ ব্যাংকেরই রয়েছে ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্র্যান্ডের কার্ড সেবা। তবে এর বাইরে কয়েকটি ব্যাংক কার্ড সেবায় নতুনত্ব আনতে অন্য ব্র্যান্ডের কার্ডও নিয়ে এসেছে। যেমন, সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স, প্রাইম ব্যাংক জেবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংকের ডিনার্স ক্লাব, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক নেক্সাস পে ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইউনিয়ন পে ইন্টারন্যাশনাল কার্ড সেবা দিচ্ছে।
দেশের ১৬ বছরের ঊর্ধ্বের যেকোনো নাগরিক ক্রেডিট কার্ড সেবা নিতে পারেন। তবে তার নির্দিষ্ট আয়ের ব্যবস্থা থাকতে হয়। পরিবারের অন্য কেউ উপার্জনক্ষম হলেও তার বিপরীতে কার্ড দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। আর এ কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়। কার্ডের ব্যবহার সহজ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হচ্ছে।
বিশ্বের সব উন্নত দেশে ক্রেডিট কার্ড এখন বহুল প্রচলিত একটি আর্থিক পণ্য। নগদ টাকার বিকল্প হয়ে ওঠায় এটাকে প্লাস্টিক মানিও বলা হয়ে থাকে। প্রতি দেড় মাস পর নির্দিষ্ট দিনে খরচের টাকা পরিশোধ করলে কোনো সুদ দিতে হয় না। সেজন্য পৃথিবীজুড়ে দিন দিন ক্রেডিট কার্ড বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় নগদ টাকার লেনদেন কমে আসছে। কমছে টাকা বহনের ঝুঁকিও।
বিশ্বের ১২১টি দেশের জনসংখ্যা ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে র্যাংকিং তৈরি করেছে বৈশ্বিক অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যাটিস্টা’। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে সবার শীর্ষে কানাডা। দেশটির প্রাপ্তবয়স্কদের ৮২ দশমিক ৭৪ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এ তালিকায় শীর্ষস্থানে থাকা অন্য দেশগুলোর মধ্যে জাপানের ৬৯ দশমিক ৬৬, সুইজারল্যান্ডের ৬৯ দশমিক ২১, দক্ষিণ কোরিয়ার ৬৮ দশমিক ৪৪, যুক্তরাষ্ট্রের ৬৬ দশমিক ৭ ও যুক্তরাজ্যের ৬৬ দশমিক ১১ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। ১২১টি দেশের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও প্রাপ্তবয়স্কদের ৪ দশমিক ৬২ শতাংশের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। এমনকি নেপালেরও এক দশমিক ৮৭ শতাংশ মানুষ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে নেপালের অবস্থান ১০৩তম।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।