৩২ বছর আগের হারানো ছেলেকে ফিরিয়ে দিল ফেসিয়াল রিকগনিশন
অনলাইন ডেস্ক | ২০ মে, ২০২০ ০৯:১৭
চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি বা ফেসিয়াল রিগকনিশনের কল্যাণে ৩২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পেয়েছে চীনের একটি পরিবার। তিন দশকের বেশি সময় আগে মাও ইয়িন নামের ওই ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, দুই বছর বয়সের সময় মাও ইয়িনকে মধ্য শানসি প্রদেশের শি'আনের একটি হোটেলের সামনে থেকে অপহরণকারীরা নিয়ে যায়। সেটা ১৯৮৮ সালের কথা। এরপর তাকে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে বিক্রি করা হয়। সিচুয়ান প্রদেশে তাদের কাছেই মানুষ হয়েছেন ইয়িন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইয়িনের ছেলেবেলার ছবিকে ‘বয়স্ক’ বানিয়ে জাতীয় ডেটাবেজের সার্ভারে দেয়া হয়। সেখানে অন্য একটি ছবির সঙ্গে তার চেহারার মিল আসে।
সোমবার ইয়িন তার জন্মদাতা মা-বাবার কাছে ফিরে যান। তাকে ফিরে পেতে এতদিন সন্ধান বন্ধ করেননি পরিবারটির সদস্যরা। তার মা লি জিঙ্গজি নিজের চাকরি পর্যন্ত ছেড়েছেন।
সিসিটিভিকে লি জানান, ছেলে হারিয়ে যাওয়ার পর চাকরি ছেড়ে পথে পথে ১ লাখের বেশি লিফলেট বিলি করেন। কয়েকটি টিভি চ্যানেলে পর্যন্ত গেছেন।
কিন্তু গত এপ্রিলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, ১৯৮০ সালের পরে সিচুয়ান প্রদেশের এক ব্যক্তি শানক্সি থেকে একটি ছেলেকে নিয়ে আসেন। এরপর মাও ইয়িনকে ট্র্যাক করে তার ছেলেবেলার ছবির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।
ইয়িন যাদের কাছে মানুষ হয়েছেন তারা তার নাম রাখেন গু নিঙ্গনিন। এতদিন তাকে বিষয়টি জানানো হয়নি।
শিয়ান পুলিশ ইয়িনকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে দেখা গেছে, কনফারেন্স রুমের একটি দরজা দিয়ে তিনি মা-বাবার দিকে ছুটে যাচ্ছেন।
এসময় তার মাকে বলতে শোনা যায়, ‘আর তাকে হারাতে দিব না। আর কখনো তাকে হারাতে দিব না।’
ফেসিয়াল রিকগনিশন কী: এটি একটি বায়োমেট্রিক পদ্ধতি। চেহারার মাধ্যমে মানুষকে শনাক্ত করতে মূলত এটি কাজ করে। এর কর্মপদ্ধতি বোঝার জন্য ফেইসবুকের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। আপনার বন্ধু তালিকার বাইরে থেকেও কেউ যদি আপনার ছবি পোস্ট দেয়, তাহলে আপনার কাছে একটি নোটিফিকেশন আসে। ছবিতে আপনার মুখের ওপর একটি বক্স আঁকা থাকে।
ফেইসবুকের বাইরে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি চীনে বেশি ব্যবহৃত হয়। লন্ডনের কয়েকটি এলাকায়ও এটি আছে। সেখানকার কিং ক্রস কমপ্লেক্সের গ্রানারি স্কয়ার এলাকায় পা রাখলেই আপনার সব তথ্য প্রশাসন জানতে পারে। সিসিটিভি ক্যামেরায় আপনার ছবি দেখে তাদের সার্ভারের বায়োমেট্রিক ডেটা থেকে কিংবা ফেইসবুক প্রোফাইলের তথ্য বিশ্লেষণ করে চোখের পলকে আপনার বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব।
চীন সরকারের জাতীয় ডেটাবেজে সব নাগরিকের এমন বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষিত আছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২০ মে, ২০২০ ০৯:১৭

চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি বা ফেসিয়াল রিগকনিশনের কল্যাণে ৩২ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পেয়েছে চীনের একটি পরিবার। তিন দশকের বেশি সময় আগে মাও ইয়িন নামের ওই ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, দুই বছর বয়সের সময় মাও ইয়িনকে মধ্য শানসি প্রদেশের শি'আনের একটি হোটেলের সামনে থেকে অপহরণকারীরা নিয়ে যায়। সেটা ১৯৮৮ সালের কথা। এরপর তাকে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে বিক্রি করা হয়। সিচুয়ান প্রদেশে তাদের কাছেই মানুষ হয়েছেন ইয়িন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইয়িনের ছেলেবেলার ছবিকে ‘বয়স্ক’ বানিয়ে জাতীয় ডেটাবেজের সার্ভারে দেয়া হয়। সেখানে অন্য একটি ছবির সঙ্গে তার চেহারার মিল আসে।
সোমবার ইয়িন তার জন্মদাতা মা-বাবার কাছে ফিরে যান। তাকে ফিরে পেতে এতদিন সন্ধান বন্ধ করেননি পরিবারটির সদস্যরা। তার মা লি জিঙ্গজি নিজের চাকরি পর্যন্ত ছেড়েছেন।
সিসিটিভিকে লি জানান, ছেলে হারিয়ে যাওয়ার পর চাকরি ছেড়ে পথে পথে ১ লাখের বেশি লিফলেট বিলি করেন। কয়েকটি টিভি চ্যানেলে পর্যন্ত গেছেন।
কিন্তু গত এপ্রিলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, ১৯৮০ সালের পরে সিচুয়ান প্রদেশের এক ব্যক্তি শানক্সি থেকে একটি ছেলেকে নিয়ে আসেন। এরপর মাও ইয়িনকে ট্র্যাক করে তার ছেলেবেলার ছবির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।
ইয়িন যাদের কাছে মানুষ হয়েছেন তারা তার নাম রাখেন গু নিঙ্গনিন। এতদিন তাকে বিষয়টি জানানো হয়নি।
শিয়ান পুলিশ ইয়িনকে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে দেখা গেছে, কনফারেন্স রুমের একটি দরজা দিয়ে তিনি মা-বাবার দিকে ছুটে যাচ্ছেন।
এসময় তার মাকে বলতে শোনা যায়, ‘আর তাকে হারাতে দিব না। আর কখনো তাকে হারাতে দিব না।’
ফেসিয়াল রিকগনিশন কী: এটি একটি বায়োমেট্রিক পদ্ধতি। চেহারার মাধ্যমে মানুষকে শনাক্ত করতে মূলত এটি কাজ করে। এর কর্মপদ্ধতি বোঝার জন্য ফেইসবুকের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। আপনার বন্ধু তালিকার বাইরে থেকেও কেউ যদি আপনার ছবি পোস্ট দেয়, তাহলে আপনার কাছে একটি নোটিফিকেশন আসে। ছবিতে আপনার মুখের ওপর একটি বক্স আঁকা থাকে।
ফেইসবুকের বাইরে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি চীনে বেশি ব্যবহৃত হয়। লন্ডনের কয়েকটি এলাকায়ও এটি আছে। সেখানকার কিং ক্রস কমপ্লেক্সের গ্রানারি স্কয়ার এলাকায় পা রাখলেই আপনার সব তথ্য প্রশাসন জানতে পারে। সিসিটিভি ক্যামেরায় আপনার ছবি দেখে তাদের সার্ভারের বায়োমেট্রিক ডেটা থেকে কিংবা ফেইসবুক প্রোফাইলের তথ্য বিশ্লেষণ করে চোখের পলকে আপনার বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব।
চীন সরকারের জাতীয় ডেটাবেজে সব নাগরিকের এমন বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষিত আছে।