চলে গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক রাঁধুনি মাসতানামমা
অনলাইন ডেস্ক | ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২০:৪৭
এই বৃদ্ধা তরমুজের ভেতরে ডিমের ভুজিয়া, মুরগী, তামিল স্টাইলের কেএফসি চিকেন, কাচ্চি বিরিয়ানি, দম বিরিয়ানি, মাছ, শুটকিসহ অনেক কিছু রান্না করতেন আর রান্নার ফাঁকে ফাঁকে দিতেন টিপস।
ভারতের বিখ্যাত ও বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক রাঁধুনি ও জনপ্রিয় ইউটিউবার কার মাসতানামমা মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ১০৭ বছর। বুধবার বৃদ্ধার নাতির বরাত দিয়ে বিবিসি দক্ষিণ ভারতের এই নারীর মৃত্যু খবর জানিয়েছে।
দেশ ও দেশের বাইরে তুমুল জনপ্রিয় এই বৃদ্ধা তরমুজের ভেতরে ডিমের ভুজিয়া, মুরগী, তামিল স্টাইলের কেএফসি চিকেন, কাচ্চি বিরিয়ানি, দম বিরিয়ানি, মাছ, শুটকিসহ অনেক কিছু রান্না করতেন আর আর রান্নার ফাঁকে ফাঁকে দিতেন টিপস।
তার রান্নার দৃশ্য ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড দিতেন তার নাতি।
খোলা মাঠে বসে মাটির চুলায় সামান্য কয়েকটি মশলা দিয়ে রান্না করার একটি ভিডিও দুই কোটিরও বেশি মানুষ দেখে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয় হয় চ্যানেলটি। কান্ট্রি ফুড নামে মাসতানামমার চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করেছে বিশ লাখের বেশি ব্যবহারকারী।
মাসতানামমা শেষ জীবনের মতো প্রথম জীবন এত আনন্দময় ছিল না। বিবিসি জানায় অন্ধপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম নেওয়া মাসতানামমা বিয়ে হয় মাত্র ১১ বছর বয়সে। ২২ বছর বয়সে পাঁচ সন্তান রেখে স্বামী মারা যান। মৃত্যুর আগে মাসতানামমা তার স্বামীকে বলেছিলেন, ‘এখন আমি কীভাবে থাকব?’
মৃত্যু পথযাত্রী স্বামী উত্তর দিয়েছিলেন, ‘তুমি পারবে। কেননা তুমি বুদ্ধিমতী।’
সে সময় সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য সামান্য বেতনে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর অসুখে একে একে তার চারটি সন্তান মারা যায়।
শেষ বয়সে মাসতানামমা চোখে ছানি ছিল। মুখে ছিল না একটিও দাঁত। সারা জীবন কাটিয়েছেন নারকেলের পাতা দিয়ে তৈরি ছোট্ট কুড়ে ঘরে। এই ঘরে নিজে বসবাসের পাশাপাশি ছাগলও পালতেন।
২০১৬ সালে মাসতানামমা নাতি লক্ষণ ও তার বন্ধু মিলে ‘কান্ট্রি ফুড’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন। সেই চ্যানেলে দাদির রান্নার ভিডিও আপলোড দিতে থাকেন। মাত্র দুই বছরে চ্যানেলটি বিশ লাখ সাবস্ক্রাইবার পেয়ে যায়। আয় করে কোটি কোটি রুপি।
২০১৭ সালে বিবিসিকে জানান তার বয়স ১০৬ বছর। কিন্তু জন্মনিবন্ধন না থাকায় সরকারিভাবে কোনো হিসাব করা হয়নি।
মাসতানামমা নাতি লক্ষণ বলেন, আমার দাদি তার বিপুল জনপ্রিয়তার বিষয়ে জানতেন। এবং তিনি ভক্তদের মন্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।
মাসতানামমা রান্না করতে ভালোবাসতেন, খাওয়াতে ভালোবাসতেন এবং তার ভক্তদের ভালোবাসতেন বলে জানানা নাতি লক্ষণ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২০:৪৭

ভারতের বিখ্যাত ও বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক রাঁধুনি ও জনপ্রিয় ইউটিউবার কার মাসতানামমা মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ১০৭ বছর। বুধবার বৃদ্ধার নাতির বরাত দিয়ে বিবিসি দক্ষিণ ভারতের এই নারীর মৃত্যু খবর জানিয়েছে।
দেশ ও দেশের বাইরে তুমুল জনপ্রিয় এই বৃদ্ধা তরমুজের ভেতরে ডিমের ভুজিয়া, মুরগী, তামিল স্টাইলের কেএফসি চিকেন, কাচ্চি বিরিয়ানি, দম বিরিয়ানি, মাছ, শুটকিসহ অনেক কিছু রান্না করতেন আর আর রান্নার ফাঁকে ফাঁকে দিতেন টিপস।
তার রান্নার দৃশ্য ভিডিও করে ইউটিউবে আপলোড দিতেন তার নাতি।
খোলা মাঠে বসে মাটির চুলায় সামান্য কয়েকটি মশলা দিয়ে রান্না করার একটি ভিডিও দুই কোটিরও বেশি মানুষ দেখে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয় হয় চ্যানেলটি। কান্ট্রি ফুড নামে মাসতানামমার চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করেছে বিশ লাখের বেশি ব্যবহারকারী।
মাসতানামমা শেষ জীবনের মতো প্রথম জীবন এত আনন্দময় ছিল না। বিবিসি জানায় অন্ধপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম নেওয়া মাসতানামমা বিয়ে হয় মাত্র ১১ বছর বয়সে। ২২ বছর বয়সে পাঁচ সন্তান রেখে স্বামী মারা যান। মৃত্যুর আগে মাসতানামমা তার স্বামীকে বলেছিলেন, ‘এখন আমি কীভাবে থাকব?’
মৃত্যু পথযাত্রী স্বামী উত্তর দিয়েছিলেন, ‘তুমি পারবে। কেননা তুমি বুদ্ধিমতী।’
সে সময় সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য সামান্য বেতনে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর অসুখে একে একে তার চারটি সন্তান মারা যায়।
শেষ বয়সে মাসতানামমা চোখে ছানি ছিল। মুখে ছিল না একটিও দাঁত। সারা জীবন কাটিয়েছেন নারকেলের পাতা দিয়ে তৈরি ছোট্ট কুড়ে ঘরে। এই ঘরে নিজে বসবাসের পাশাপাশি ছাগলও পালতেন।
২০১৬ সালে মাসতানামমা নাতি লক্ষণ ও তার বন্ধু মিলে ‘কান্ট্রি ফুড’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন। সেই চ্যানেলে দাদির রান্নার ভিডিও আপলোড দিতে থাকেন। মাত্র দুই বছরে চ্যানেলটি বিশ লাখ সাবস্ক্রাইবার পেয়ে যায়। আয় করে কোটি কোটি রুপি।
২০১৭ সালে বিবিসিকে জানান তার বয়স ১০৬ বছর। কিন্তু জন্মনিবন্ধন না থাকায় সরকারিভাবে কোনো হিসাব করা হয়নি।
মাসতানামমা নাতি লক্ষণ বলেন, আমার দাদি তার বিপুল জনপ্রিয়তার বিষয়ে জানতেন। এবং তিনি ভক্তদের মন্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।
মাসতানামমা রান্না করতে ভালোবাসতেন, খাওয়াতে ভালোবাসতেন এবং তার ভক্তদের ভালোবাসতেন বলে জানানা নাতি লক্ষণ।