
যেকোনো কাজে প্রথমে প্রয়োজন ভালোবাসা। কাজ ভালো না বাসতে পারলে, সহজ কাজ হলেও ঠিকভাবে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা সম্ভব নয়। তাই শুরুতে কাজের প্রতি ভালোবাসা ও আন্তরিক মনোভাব প্রয়োজন। মনোযোগী কর্মীর কাজের প্রতিটি বিষয়ই থাকে নজরে। তাতে কাজে ভুল হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। সাফল্যের দিকে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবেন আপনি।
পরিকল্পনার অভাব : কাজ শুরুর আগে যদি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা যায়, তাহলে বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যায়। সাফল্য পেতে, প্রয়োজন গুছিয়ে কাজ করা। গুছিয়ে কাজের জন্য প্রয়োজন ছকে বাঁধা পরিকল্পনা। যেমন, পরের দিন কী কাজ, কীভাবে করবেন, তা আগে ঠিক করে রাখুন।
দক্ষতা খুঁজে বের করুন : নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগানোই সফলতার পূর্বশর্ত। আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ সে অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা করুন। নিজেকে সে অনুযায়ী গড়ে তুলুন। কষ্ট, সময় লাগলেও হতাশ হওয়া যাবে না। নিজের দক্ষতা, পরিশ্রম এবং কাজের ওপর বিশ্বাস রেখে কাজ করলে, সাফল্য আসবেই।
সৎ থাকুন : কর্মক্ষেত্রে সৎ থাকা এবং দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে সাফল্য আসবেই। এ ধরনের কর্মীর মূল্যায়ন করতে কোনো বস পিছপা হয় না।
নীতি সম্পর্কে অবগত : কোম্পানির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং নীতি সম্পর্কে জানতে হবে। আপনার চিন্তা ও পরিকল্পনার সঙ্গে কোম্পানির লক্ষ্য সমন্বয়ের চেষ্টা করুন। এতে আপনি ও কোম্পানি একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠবেন। কোম্পানির উন্নতির সঙ্গে পেশাজীবনের উন্নতি হবে।
নিয়ম মেনে চলুন : যেকোনো কাজেরই একটি নিয়ম রয়েছে, রয়েছে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় কাজটি সম্পন্ন করার উপায়। কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য নিজের ওপর অর্পিত কাজ বুঝে নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নিয়মের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
ঝুঁকি নিতে শেখা : কর্মক্ষেত্রে যারা ঝুঁকি নিতে পছন্দ করেন তারা তুলনামূলক সাফল্যের দেখা পান। ঝুঁকি নেওয়ার মানে এই না যে, আপনি সব কাজ করতে যাবেন। যে কাজে পারদর্শিতা থাকা সত্ত্বেও নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এমন ক্ষেত্রে ঝুঁকি নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ।
ভুল থেকে শিখুন : ভুল থেকে যদি শিখতে না পারেন তাহলে সাফল্য আপনার থেকে ধীরে ধীরে দূরে চলে যেতে পারে। ভুলকে ভুলে গিয়ে, নতুন শেখার প্রত্যয় নিন। ভুল শোধরানোর বিষয়ে সতর্ক থাকুন।
সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক : কর্মস্থল হলো প্রতিটি কর্মীর ‘সেকেন্ড হোম’। তাই সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা আপনার কাজের অংশ।
চাকরির বাজারে ব্যাংক একটি বিশাল ক্ষেত্র। এ পেশায় যেমন রয়েছে সম্মান তেমনি রয়েছে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা। রয়েছে উপযুক্ত সম্মানী ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ অফিসার ফারজানা ইসলামের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন অরণ্য সৌরভ
স্বাধীনতার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর পালাক্রমে ব্যাংকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বর্তমানে ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৪৩টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৩টি বিশেষায়িত ব্যাংক ও ৯টি বিদেশি ব্যাংকসহ বাংলাদেশে তালিকাভুক্ত ব্যাংক রয়েছে ৬১টি। অনেক প্রাইভেট ব্যাংকের আগমনে এ সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। প্রত্যেক বছরই ব্যাংকগুলো শাখা বাড়াচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। এ সেক্টরে অনেক সুযোগ-সুবিধা, ভালো বেতন আর চাকরির নিরাপত্তা থাকায় বিশ্বায়নের যুগে স্মার্ট ক্যারিয়ারের বিরাট ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ব্যাংক। ব্যাংকার ফারজানা ইসলামের মতে, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর যেকোনো দেশেই ব্যাংকিং পেশাকে হোয়াইট কলার জব ধরা হয়। এই পেশার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। যারা পরিশ্রমী, ক্যারিয়ারের স্বপ্ন, নিজেদের একটা ভালো পজিশনে দেখতে চায়; তাদের জন্য ব্যাংকিং ক্ষেত্র চমৎকার পেশা।’
কাজের ক্ষেত্র : ব্যাংকে প্রধানত চারটি উইং রয়েছে। অ অপারেটিং উইং, ইনভেস্টমেন্ট উইং, ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং উইং, ইন্টারনাল কান্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স উইং। এই উইংগুলোর আবার রয়েছে একাধিক বিভাগ।
ফারজানা ইসলামের ভাষায়, ব্যাংকে মূলত চার ধরনের কাজ হয়। ১. ক্যাশ- টাকা জমা ও উত্তোলন, ২. জেনারেল ব্যাংকিং- অ্যাকাউন্ট ওপেনিং, ডিপিএস, ফিক্সড ডিপোজিট, গ্রাহক অনুসন্ধান, চেক নিকাশ ইত্যাদি, ৩. ক্রেডিট- লোন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ, ৪. ফরেন ট্রেড আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ।
ব্যাংকে নিয়োগ : ব্যাংকগুলো সাধারণত বিভাগভিত্তিক নিয়োগ না দিয়ে, কয়েকটি ক্যাটাগরিতে নিয়োগ দিয়ে থাকে। সেগুলো হচ্ছে প্রবেশনারি অফিসার (সিনিয়র অফিসার), সহকারী অফিসার, অফিসার ক্যাশ, ফিল্ড অফিসার ইত্যাদি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেকটি ব্যাংকই এসব পদে জনবল নিয়োগ দিয়ে থাকে।
নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি : ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষাগুলোতে ব্যাংকভেদে কিছুটা ভিন্নতা থাকলেও প্রশ্নের ধরন প্রায় একই হয়ে থাকে। নিয়োগ পরীক্ষায় সাধারণত ১০০ নম্বরের প্রশ্ন হয়। প্রায় সব ব্যাংকেই এমসিকিউ, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হয়ে থাকে। পরীক্ষার সময় ও নাম্বার বণ্টনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংকের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়।
অনেক ব্যাংকে এই পদ্ধতি ৬/৭ ধাপেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক অনলাইন স্ক্রিনিং, আইটি টেস্ট, লিখিত পরীক্ষা এবং একাধিক মৌখিক পরীক্ষাও হতে পারে বলে জানান ফারজানা ইসলাম।
তিনি আরো বলেন, লিখিত পরীক্ষার আদলটা ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন টেস্টের আদলে হয়ে থাকে। বাংলা, অঙ্ক, ইংরেজি, বিশ্লেষণধর্মী বা অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি, সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন হয়ে থাকে। যেন যেকোনো বিষয় থেকে পড়াশোনা করা প্রার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারেন। অন্যদিকে মৌখিক পরীক্ষাতে সাধারণত নিজের পড়াশোনা এবং সেই সম্পর্কিত প্রশ্ন, দেশ এবং অর্থনীতি, সাধারণ জ্ঞান, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে যাবতীয় প্রশ্ন করা হয়।
শিক্ষাগত যোগ্যতা : সাধারণত ব্যাংকের শুরুর পদগুলো হয়ে থাকে প্রবেশনারি অফিসার/ ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার, অফিসার/ জুনিয়র অফিসার/ অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার ইত্যাদি। কিছু পদের জন্য সুনির্দিষ্ট বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটরাই আবেদন করতে পারেন। কমার্স থেকে যারা পাস করেছেন, তাদের সাধারণত নিয়োগ দেওয়া হয় ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশন, ক্রেডিট অ্যাডমিনিস্ট্র্রেশন, ফরেন এক্সচেঞ্জ, রেমিট্যান্স ডিভিশন, জেনারেল ব্যাংকিং, এইচআর ইত্যাদি বিভাগে।
পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ : ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি চালু রয়েছে। ব্যাংকিং অথবা ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট নামে এ বিষয়ে ব্যবসায় অনুষদ থেকে ডিগ্রি নেওয়া যায়। এছাড়া আছে বিভিন্ন ইনস্টিটিউট থেকে বিভিন্ন কোর্স। যেমন: বিআইবিএমের এমবিএম কোর্স, ডিপ্লোমা ইন ব্যাংকিং ইত্যাদি।
যে গুণাবলি থাকা চাই : ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি কম্পিউটার দক্ষতা, সুন্দর ইংরেজিতে কথা বলা এবং উপস্থিত বুদ্ধি থাকতে হবে। ফারজানা ইসলাম বলেন, ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যাংকিং একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। বিচক্ষণতা, পরিশ্রমী, সততা, নিষ্ঠা, সময়ানুবর্তিতা, দৃঢ় মনোবল, বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি গুণাবলি একজন ব্যাংকারের থাকা উচিত।
বেতন কেমন : ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা প্রবেশনারি অফিসার অত্যন্ত লোভনীয় পোস্ট প্রতিটি ব্যাংকে। সেখানে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই একজন প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে আনুমানিক ৪০০০০-৫৫,০০০ টাকা বেতন দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। এছাড়াও জুনিয়র অফিসার বা ক্যাশ অফিসার হিসেবে ১৮০০০-২৫০০০ টাকায় ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন বলে জানান ফারজানা ইসলাম।
সুযোগ-সুবিধা : ব্যাংকে চাকরির ক্ষেত্রে মূল বেতনের পাশাপাশি আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেমন- প্রত্যেক কর্মদিবসে খাবারের জন্য ভাতা, বছরে দুটি আনুষ্ঠানিক ভাতা, লভ্যাংশে বোনাস বছরে প্রায় দুই-তিনটি, চাকরিজীবী ঋণ, কম্পিউটার ঋণ, ঘরবাড়ি তৈরির ঋণ ইত্যাদি।
সারা বিশ্বে পরোক্ষভাবে প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন মানুষ সামাজিক মিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, ফেইসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব, টুইটার, টেলিগ্রাম ইত্যাদির মতো সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে একজন মানুষ গড়ে তিন ঘণ্টা সময় দিচ্ছেন। আর এই তিন ঘণ্টা সময়ের মধ্যে কোনো একটা সময় পণ্যের মার্কেটিং কোনো না কোনোভাবে তার মনোযোগ আকর্ষণ করছে। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সম্বন্ধে জানার পর সবচেয়ে জরুরি হলো যেই সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে মার্কেটিং করা হবে, সে সম্বন্ধে ধারণা থাকা। অনেক সামাজিক মাধ্যম থাকলেও ৬টি মাধ্যমের মার্কেটিং সম্বন্ধে জেনে নিন।
ফেইসবুক : সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পণ্যের প্রচারে লিফলেট, কার্ড, পোস্টার, টিভি থেকে সোশ্যাল মার্কেটিংয়ের দিকেই ঝুঁকছেন সবাই। তাই ফেইসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। যেকোনো ধরনের ছোট বা বড় ব্যবসার উন্নতির জন্য সাম্প্রতিক সময়ের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেইসবুক মার্কেটিং। বাংলাদেশে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন, এর মধ্যে ফেইসবুক ব্যবহারকারী প্রায় ৩ কোটি ৭৫ লাখ। তাই মার্কেটিং ব্যবসার ভেতরে অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ফেইসবুক মার্কেটিং।
ইন্সটাগ্রাম : পৃথিবীর ফেইসবুকের পরই সামাজিক মাধ্যম হচ্ছে ইন্সটাগ্রাম। বিশ্বে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী রয়েছেন। আপনি ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পণ্যের প্রচার করতে পারবেন সহজেই। ইন্সটাগ্রামে ফ্রি ও পেইড উভয় পদ্ধতিতেই প্রচার করা যায়। তবে প্রফেশনাল ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয় বিজ্ঞাপন করার জন্য হয়। বিজ্ঞাপনের সঙ্গে সঙ্গে যেন অনুসরণকারী বৃদ্ধি পায় সেদিকেও নজর দিতে হবে।
ইউটিউব : ইউটিউব মার্কেটিং পণ্য বা ব্যবসা প্রচারণায় তুমুল জনপ্রিয়। যেখানে সংশ্লিষ্ট পণ্য বা ব্যবসার সামঞ্জস্যপূর্ণ ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করে ব্যবহারকারীদের দেখানো হয়। ইউটিউবে থাকা ব্যবহারকারী পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখে ঘরে বসেই পণ্য অর্ডার করতে পারেন। ইউটিউবের মাধ্যমে যে কেউ ইন্টারনেটে তাদের পণ্যের বিভিন্ন প্রচার করে ফেলতে পারবেন ঘরে বসে খুব সহজে। আপনি যদি চান আপনি ঘরে বসে ইউটিউবে নিজের ব্যবসা অন্যান্য যেকোনো পণ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোর ভিডিও আপলোড করতে পারবেন।
টুইটার : টুইটারের মাধ্যমে পণ্যের মার্কেটিং সহজেই অর্ডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। টুইটার বিজ্ঞাপনে টার্গেট কিওয়ার্ড সেট করার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিওয়ার্ড নিয়ে নানা রকম কোর্স ইউটিউবে পাওয়া যায়। যখন আপনি টার্গেট কিওয়ার্ড সেট করে রাখবেন। আপনার দেশের মানুষ খুব সহজেই আপনার প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে পাবেন। টার্গেট শব্দ সেট করার ফলে খুব সহজে টার্গেট ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ : ব্যক্তিগত মেসেঞ্জার হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে যে প্রচার করা সম্ভব এটা অনেকেই ভাবেন না। অনলাইন ব্যবসার প্রচার ও প্রচারণায় হোয়াটসঅ্যাপ। মার্কেটিংয়ে মনোযোগী হতে পারেন। হোয়াটসঅ্যাপের দ্বারা সহজেই আপনি পেয়ে যেতে পারেন কাক্সিক্ষত ও পরিচিত কাস্টমার।
টেলিগ্রাম : টেলিগ্রাম মার্কেটিং এখনো তেমনভাবে চালু হয়নি। তবে পণ্যের প্রচারের জন্য টেলিগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন। টেলিগ্রামের মাধ্যমে, আপনি সম্ভাব্য গ্রাহকদের সঙ্গে আপনার পণ্য এবং পরিষেবাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে বড় ধরনের গ্রুপ সেট আপ করতে পারেন। কেননা টেলিগ্রামে ১০ হাজারের অধিক সদস্য নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করা যায়। এ ছাড়া আপনি নির্দিষ্ট কাজগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করার জন্য টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে বটগুলোকে সংযুক্ত করতে পারেন, যাতে একই সঙ্গে আপনার সময়ও বাঁচে।
পৃথিবীতে বিচিত্র পেশার পেশাজীবী আছে। ঘুম থেকে থেকে ডেকে তোলাও একটা পেশা। এই পেশার নাম নকার আপ। সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠা কষ্টকর অনেকের জন্য। আপনার সেই কঠিন কাজকে সহজ করে দেবে কিছু মানুষ। যাদের কাজই হচ্ছে অন্যদের ঘুম থেকে জাগানো। এজন্য তারা বেতনও নেন মাস শেষে। ব্রিটেনে কিছু মানুষের এটা পেশা ছিল। ৭০ এর দশক পর্যন্ত এই পেশা জনপ্রিয় ছিল। বিশেষ করে যতদিন পর্যন্ত ঘড়িতে অ্যালার্ম যোগ না হয়। এই পেশাজীবীরা সকাল সকাল চলে আসতেন সেই সব বাড়িতে যারা সময়মতো ঘুম থেকে উঠতে চাইতেন না। বাড়িতে এসে তারা প্রথমে লাঠি দিয়ে জানালা বা দরজায় আওয়াজ করতেন, যতক্ষণ না বাড়ির মানুষের ঘুম ভাঙে। নয়তো বাঁশি বাজিয়েই যেতেন। ঘুম ভাঙার পরই তাদের হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যেত। এই কাজ যারা করতেন তারা সবাই বেতন পেতেন।
নকার আপার্সরা মূলত শ্রমিকদের ঘুম ভাঙানোর কাজ করতেন। পরবর্তী সময়ে সাধারণ মানুষও বেতন দিয়ে নকার আপার্স রাখতেন।
ফয়সাল
ঢাকাসহ সারা দেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। দফায় দফায় বিদ্যুৎ থাকছে না বাসা-বাড়ি, অফিস আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে।
বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে একটি মহল পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টায় আছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য এসেছে। আর ওই তথ্য পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তর নড়েচড়ে বসেছে। পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ শীর্ষ কর্তারা বৈঠক করেছেন। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সোমবার পুলিশের সব রেঞ্জ অফিস ও ইউনিট প্রধানদের কাছে বিশেষ নির্দেশনা পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
বিশেষ বার্তা পেয়ে ইউনিট প্রধান, রেঞ্জ ডিআইজি ও ৬৪ জেলার পুলিশ সুপাররা আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিদ্যুতের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি। এরই মধ্যে যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলো নিরাপত্তার আওতায় আনা হচ্ছে। এই জন্য আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সোমবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশের সব ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের কাছে বিদ্যুৎ স্টেশনে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি নজরদারি বাড়াতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একটি মহল লোডশেডিংয়ের অজুহাতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। যেসব এলাকায় বেশি বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তারও একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপার দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছেন, পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর আমরা বিশেষ বৈঠক করছি। এলাকায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে তা সত্য। এ জন্য আমরা বেশ সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ অফিস ও স্টেশনগুলোর বিষয়ে থানার ওসিদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে বলেন, লোডশেডিংয়ের অজুহাত তুলে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে একটি বিশেষ মহল। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়তি পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে থানার ওসিদের নানা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন জেলার পুলিশ সুপাররা। এমনকি বাড়তি ফোর্সও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তা ছাড়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
বিদ্যুৎ অফিসের পাশাপাশি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলতে ৫০ থানার ওসিদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
খন্দকার গোলাম ফারুক দেশ রূপান্তরকে জানান, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে যাতে কেউ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে জন্য আমরা সতর্ক আছি। বিদ্যুৎ স্টেশনগুলোর পাশাপাশি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো বাড়তি নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে সবাইকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎসহ যেকোনো সমস্যা নিয়ে কোন মহল যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। আশা করি বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটবে না। তারপরও পুলিশ সতর্ক আছে।
সূত্র জানায়, লোডশেডিংকে পুঁজি করে কেউ যাতে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশনার পর সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, বিদ্যুৎ অফিস, সাবস্টেশনসহ কেপিআই স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম ও পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা সমিতি বা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকেও পুলিশকে চিঠি দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তাও চাওয়া হয়েছে।
বছরে ৪০ কোটি ডলার পারিশ্রমিকের প্রস্তাব নিয়ে লিওনেল মেসির সংগে যোগাযোগ করছে আলো হিলাল। তারা মংগলবার চুক্তির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে বলে জানিয়ে রেখেছে। কিন্তু মেসি তাদেরকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রস্তাবটা পিছিয়ে দিতে বলেছেন বলে খবর দিয়েছে ফুটবল বিষয়ক ওয়েব পোর্টাল গোল ডটকম।
তবে সৌদি ক্লাব এ-ই প্রস্তাব এখনই গ্রহন না করলে আগামী বছর তা একই রকম থাকবে না বলে জানিয়েছে।
মেসি আসলে তার শৈশবের ক্লাবে আরো অন্তত এক বছর খেলতে চান। তাতে তার পারিশ্রমিক সৌদি ক্লাবের প্রস্তাবের ধারে কাছে না হলেও ক্ষতি নেই। জানা গেছে, বার্সা তাকে এক বছরে ১৩ মিলিয়েন ডলার পারিশ্রমিক প্রস্তাব করতে যাচ্ছে।
লা লিগা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ায় মেসিকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেবে বার্সা। ধারনা করা হচ্ছে বুধ-বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ ব্যাপারে একটা স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১৩ ধরনের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর থেকে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করেছে সরকার। অন্যদিকে উৎপাদন পর্যায়ে তরল করা পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল আমদানিতে প্রতি লিটারে ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা করে শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ ছাড়া অন্যান্য জ্বালানি জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েল, লুব বেইজ অয়েল, কেরোসিনের ক্ষেত্রে প্রতি টনে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এত দিন এসব জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ছিল।
আমদানি করা পণ্যের যথাযথ মূল্য নির্ধারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্যের ট্যারিফ মূল্য ও ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাত দুটি হেডিংয়ের আওতায় ১২টি এইচএস কোডের বিপরীতে ট্যারিফ মূল্য এবং একটি হেডিংয়ের আওতায় একটি এইচএস কোডের বিপরীতে ন্যূনতম মূল্য বহাল আছে।
পেট্রোলিয়াম ও এর উপজাতগুলোর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত ওঠানামা করার কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ সুপারিশ করা হয়েছে।
এলপিজি সিলিন্ডারের বিষয়ে বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) ও ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এলপিজি সিলিন্ডার উৎপাদনকারীরা কাঁচামালে শুল্ককর ছাড় ১২ বছর ধরে ভোগ করে আসছে। তাই রাজস্ব আহরণের স্বার্থে শুধু দুটি উপকরণে ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে অন্যান্য করছাড়ের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে।
পেট্রোলিয়াম তেল এবং বিটুমিনাস খনিজ থেকে প্রাপ্ত তেলের ওপর বিদ্যমান শুল্ক ৫ শতাংশ। নতুন বাজেট অনুযায়ী এসবের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ হাজার ১১৭ টাকা (লিটার প্রতি ৭.০২ টাকা) হতে পারে। প্রতি টন ফার্নেস অয়েলের সুনির্দিষ্ট শুল্ক ৯ হাজার ১০৮ টাকা (লিটার প্রতি ৯.১০ টাকা) করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের জন্য নতুন অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে ৩৩ হাজার ৮২৫ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং জ্বালানি খাতে ৯৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা নতুন বাজেটে এই বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ ছিল ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বাজেটে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৭ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বাজেট বক্তৃতায় বলেন, উৎপাদন ও বিতরণ সক্ষমতা সম্প্রসারণের ফলে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২০০৯ সালে ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। জ্বালানির ব্যবহার বহুমুখীকরণের জন্য গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি কয়লা, তরল জ্বালানি, দ্বৈত জ্বালানি, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, রামপালে কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ও পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। মাতারবাড়ীতে ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে মোট ১২ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন এবং ২ হাজার ৪১৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া, ১০ হাজার ৪৪৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে পাশর্^বর্তী দেশগুলো থেকে প্রায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি ঝাড়খ-ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। নেপালের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে শিগগিরই। তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব বলে আশা করছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে সংগ্রহ করতে চাই। এরসঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, ৬০ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে অফ গ্রিড এলাকায় বসবাসকারী জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ডিজেলচালিত পাম্পের জায়গায় সৌরচালিত পাম্প স্থাপন করার অংশ হিসেবে সেচকাজে ইতিমধ্যে ২ হাজার ৫৭০টি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৮৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। সর্বোপরি, রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।’
উৎপাদিত বিদ্যুৎ জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে গত ১৪ বছরে ৬ হাজার ৬৪৪ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সঞ্চালন লাইন ১৪ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া বিতরণ লাইন ৩ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ৬ লাখ ৬৯ হাজার কিলোমিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিদ্যুতের সিস্টেমলস ১৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশে। ২০৩০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২৮ হাজার কিলোমিটারে সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের অপব্যবহার রোধের লক্ষ্যে গত ৫ বছরে প্রায় ৫৩ লাখ প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ২০০৯ সালের তুলনায়, জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ৮ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি করে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৬০ হাজার টন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এই মজুদ ক্ষমতা ৩০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনে বাড়ানোর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি উদ্বোধন করা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করা জ্বালানি তেল (ডিজেল) দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় এবং সৈয়দপুরে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ‘একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লাখ টন থেকে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকায় একটি বৃহৎ সমন্বিত তেল শোধনাগার স্টোরেজ ট্যাংক নির্মাণের সিদ্ধান্ত আছে। সম্প্রতি ভোলার ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় প্রতিদিন গ্যাসের উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট, যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়ানোর পর দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ৯৮৪ মিলিয়ন ঘনফুট বেড়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে আরও ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এতে অতিরিক্ত ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হওয়ায় আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটাতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি এবং স্পট মার্কেট থেকেও কেনা হচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে প্রতিদিন ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
বাজেট বক্তৃতায় আরও বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৫৮ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চল ও অন্যান্য এলাকায় ২১৪ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২৬ সালের মধ্যে পায়রা ও ভোলা থেকে গ্যাস সঞ্চালনের জন্য আরও ৪২৫ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি অপচয় রোধে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজও চলছে।
চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের সামগ্রিক বাজেট আকারে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড় হলেও আগামী বছরের শিক্ষা-বাজেট দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। তবে টাকার অঙ্কে শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ৬ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শুধু শিক্ষা খাত হিসাব করলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষায় বরাদ্দ ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। টাকার অঙ্কে তা ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ০১ শতাংশ বা ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা।
ইউনেস্কো, শিক্ষাবিদ বা অংশীজনরা অনেক দিন ধরেই শিক্ষায় জিডিপির কমপক্ষে ৪ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলছেন। এটাকে তারা বরাদ্দ হিসেবে না দেখে আগামী দিনের বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে বলছেন। গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষায় বরাদ্দ ১২ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল। জিডিপির হিসাবে তা ছিল ২ শতাংশের কাছাকাছি। চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামী বাজেটে যে লক্ষ্য ধরা হয়েছে, তার সঙ্গে শিক্ষায় বরাদ্দের সংগতি নেই। বাজেটে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। এজন্য দক্ষ ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী প্রয়োজন। কিন্তু এ জনগোষ্ঠী তৈরির জন্য প্রয়োজন শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ। বরাবরের মতো এবারও শুভংকরের ফাঁকি লক্ষ করছি। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি মিলিয়ে আকার বড় করা হলেও চলতি অর্থবছরের চেয়েও বরাদ্দ কমেছে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও বাজেটে দিকনির্দেশনা দেখছি না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘শিক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশের নিচে বরাদ্দ কাক্সিক্ষত নয়। আগামী অর্থবছরে অন্তত ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ দিলে ভালো হতো। কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষায় আরও বেশি নজর দেওয়া উচিত ছিল। সেটা আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের বাজেটে মিড ডে মিলের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে, যা খুবই ভালো। যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণে জোর দিতে হবে। শিক্ষায় বরাদ্দের সঠিক ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’
আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে তা ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার।
বাজেট ঘিরে প্রতি বছরই বেসরকারি শিক্ষকদের অন্যতম দাবি থাকে শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া ও শতভাগ উৎসব-ভাতা প্রদান। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের প্রক্রিয়া চলমান রাখাও তাদের অন্যতম দাবি। কিন্তু সেসব বিষয়ে বাজেটে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই। তবে এমপিওভুক্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে আগামী অর্থবছরে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
স্বাস্থ্য খাতে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে এবার বরাদ্দ ১ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়লেও মোট বাজেটের তুলনায় তা কমেছে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে খাতটিতে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। আগামী বাজেটে তা ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১৫০ কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ১৭ হাজার ২২১ কোটি টাকা ও উন্নয়ন ব্যয় ১২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ৮ হাজার ৬২১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দ থেকেই নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এবার টাকার অঙ্কে গত বছরের তুলনায় (বর্তমান ২০২২-২৩ অর্থবছর) ১ হাজার একশ কোটির মতো বেড়েছে। কিন্তু বাজেট শেয়ারে সেটা কমেছে। সামগ্রিক বাজেটের গ্রোথ বা বৃদ্ধি ১২ শতাংশ, কিন্তু স্বাস্থ্যের বাজেটের বৃদ্ধি ৩ শতাংশ। তারমানে রাষ্ট্রীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব কমেছে। সেই কারণে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ বলেন, এবার কমার যৌক্তিক কারণ আছে। সেটা হলো স্বাস্থ্য বিভাগের সেক্টর প্রোগ্রামে উন্নয়ন বাজেট থেকে অর্থ আসে। সেই সেক্টর প্রোগ্রাম এই অর্থবছরে শেষ হয়ে প্রস্তাবিত অর্থবছর থেকে নতুন সেক্টর প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলমান সেক্টর প্রোগ্রাম সময়মতো বাস্তবায়ন করতে না পারায় সেটার সময় আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই এক বছরের জন্য নতুন বাজেট থাকে না, পুরনো বাজেট থেকেই ব্যয় করতে হয়। ফলে বরাদ্দ না বাড়িয়ে পাঁচ বছরের বাজেট যদি ছয় বছরে গিয়ে ঠেকে, তাহলে প্রতি বছর টাকা কমে যায়। মূলত এ কারণে এবার টাকা কমে গেছে।
সরকার স্বাস্থ্য খাতে এবারও কিছু থোক বরাদ্দ রাখতে পারত বলে মনে করেন স্বাস্থ্য অর্থনীতির এই শিক্ষক। তিনি বলেন, কভিড ছাড়াও আমাদের অনেক জরুরি খাত আছে। এখন ডেঙ্গু চলছে। এটি ইমার্জেন্সি হয়ে যাবে। ফলে এটার জন্য যে ফান্ড দেওয়া আছে হাসপাতালে, রোগী বাড়লে সেটা দিয়ে হবে না। এরকম ইমার্জেন্সি আরও আসতে পারে। এরকম একটা থোক বরাদ্দ রাখলে স্বাস্থ্যের ইমার্জেন্সিতে সেখান থেকে ব্যয় করা যেত। কিন্তু সেটাও নেই। তার মানে কভিডের শিক্ষা থেকে আমরা কিছুই শিখিনি। প্রস্তাবিত বাজেটে সেটার প্রতিফলন নেই।
সামগ্রিকভাবে বাজেটে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার খরচ বেড়ে যাবে বলেও মনে করছেন এই স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, এতে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধসহ সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
যদিও এবারের বাজেটে ওষুধ, চিকিৎসাসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা আরও সুলভ করার জন্য ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, আইভি ক্যানুলা উৎপাদনের অন্যতম প্রধান উপাদান সিলিকন টিউবসহ আরও কিছু বিদ্যমান ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তামাক জাতীয় পণ্য যেমন তরল নিকোটিন, ট্রান্সডারমাল ইউস নিকোটিন পণ্যের বিপরীতে ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।