টার্ফ মুর স্টেডিয়ামে শেষ বাঁশি বাজার পরই যেন বাঁধ ভেঙে যায়। প্রিমিয়ার লিগে সরাসরি খেলা নিশ্চিত হওয়ায় উন্মাদনায় মেতে ওঠে বার্নলির সমর্থকেরা। উত্তেজনায় দিশেহারা হয়ে মাঠে নেমে পড়েন অনেকেই। খেলোয়াড়দের সঙ্গে একাকার হয়ে উদ্যাপনে মাতেন স্বাগতিক দর্শক। কিন্তু আনন্দঘন এই মুহূর্তেই ঘটে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা—ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠ ছাড়েন শেফিল্ড ইউনাইটেডের বাংলাদেশি মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী।
চোয়াল শক্ত, চোখে জ্বালা—অস্বাভাবিক রাগান্বিত ভঙ্গিতে মাঠ ছাড়তে দেখা যায় ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারকে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, নিরাপত্তাকর্মীদের হস্তক্ষেপ করতে হয় তাঁকে সামলাতে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিরর জানায়, মাঠে নেমে আসা কিছু দর্শকের আচরণে চরম ক্ষুব্ধ হন লেস্টার সিটি থেকে শেফিল্ডে ধারে খেলা হামজা। স্টেডিয়ামের টানেলের পথে গিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নেয়।
সরাসরি প্রিমিয়ারে খেলার সুযোগ হারিয়ে প্লে-অফে হামজারা‘দ্য সান’-এর প্রতিবেদন বলছে, এক সমর্থক হামজার মুখের সামনে উদ্যাপন করায় তাঁর ক্ষোভ চরমে পৌঁছে যায়। স্কাই স্পোর্টসের ক্যামেরাতেও দেখা গেছে, নিরাপত্তাকর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা করছেন তাঁকে থামাতে। কিন্তু উত্তেজিত হামজা তাঁদের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যান বার্নলির খেলোয়াড় ও সমর্থকদের দিকে। অবশেষে এক স্টাফ সদস্য জোর করেই তাঁকে টানেলের ভেতর নিয়ে যান।
তবে কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার বিষয়টি হালকাভাবেই নিয়েছেন। স্কাই স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে কিছু না। জয় উদ্যাপন করতে মাঠে নেমেছিল তারা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের সমর্থকেরা টানেলের পাশেই ছিল। তাই সবাই ঘটনার মধ্যে জড়িয়ে পড়েছে।’
চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে বার্নলির কাছে ২–১ গোলে হেরে যায় শেফিল্ড ইউনাইটেড। ম্যাচ শুরুর ২৮ মিনিটেই জোশ ব্রাউনহিলের গোলে এগিয়ে যায় বার্নলি। ৩৭ মিনিটে শেফিল্ডের হয়ে সমতায় ফেরান টম ক্যানন। তবে প্রথমার্ধের শেষদিকে, ৪৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আবারও ব্যবধান বাড়ান ব্রাউনহিল। এই জোড়া গোলেই শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করে বার্নলি।
এই জয়ে লিডস ইউনাইটেডকে সঙ্গী করে প্রিমিয়ার লিগে আগামী মৌসুমে জায়গা করে নিয়েছে বার্নলি। শেফিল্ড ইউনাইটেডের জন্য এখন শেষ সুযোগ বাকি—নকআউট প্লে–অফ। দুটি ম্যাচ জিতলেই মিলতে পারে প্রিমিয়ার লিগের টিকিট। এখনো ঠিক হয়নি তাদের প্রতিপক্ষ, তবে আগুনে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়াইল্ডারের দল।
বাংলাদেশেও অনার্স বোর্ড চান মিরাজপুরো ম্যাচে ৯০ মিনিটই খেলেছেন হামজা চৌধুরী। মাঠে দারুণ দায়িত্ব পালন করলেও ম্যাচ শেষে সেই দৃশ্য যেন আরও বড় খবর হয়ে উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, এই ঘটনার পর শেফিল্ড ইউনাইটেড কী অবস্থান নেয়, আর ফেডারেশন থেকে আদৌ কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না।
