চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক বিষয়ে অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ ও পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের উত্তেজনার মধ্যেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার পথে রয়েছে বেইজিং। এই প্রেক্ষাপটেই মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প বলেন, ‘চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্ক আরোপ করেছে, তা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে, তবে পুরোপুরি শূন্য হবে না।’
তিনি বলেন, ‘১৪৫ শতাংশ অনেক বেশি। নতুন শুল্ক ততটা উঁচু হবে না, এমনকি এর ধারে-কাছেও হবে না। এটা উল্লেখযোগ্য হারে কমানো হবে। তবে শূন্যে পৌঁছাবে না।’ পরদিন গতকাল বুধবার সিএনএন এ বক্তব্য প্রকাশ করে।
এর আগে, সকালে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ বাণিজ্য কার্যক্রমে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য কার্যত বন্ধ করে দিতে পারে।’
দ্য ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে,
পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও আলোচনার পথ খোলা রেখেছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প জানান, চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক বর্তমানে অনেকটাই বেশি। তবে আলোচনার মাধ্যমে যদি একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়, তাহলে তা কমিয়ে আনা হবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জাইকুন বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করতে চাই না। পাশাপাশি আমরা যুদ্ধে ভীতও নই।’ তিনি জানান, বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না, বরং দুই পক্ষেরই ক্ষতি হয়।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও বাণিজ্যবিরোধ নিয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। বুধবার আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে বৈঠকে শি বলেন, ‘বাণিজ্যযুদ্ধ বৈধ অধিকার ও স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করে, বহুপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে।’
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার বরাতে জানা যায়, শি বলেন, চীন জাতিসংঘকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে আইনের শাসন, ন্যায্যতা ও বৈধ স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতে চায় এবং এ লক্ষ্যে আজারবাইজানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বেশিরভাগ পণ্যে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যার জবাবে চীন ১২৫ শতাংশ হারে মার্কিন রপ্তানির ওপর শুল্ক বসিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থবিরতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি ২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশ করেছে।