বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন সুকৌশলে ফাঁস করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গাজীপুরে প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১ এর সদস্যরা।
পিএসসি, জেএসসি এবং এসএসসিসহ সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োগ এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা অনেক দিন ধরে এই চক্রের শিকার হয়ে আসছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার যোগীরসীট গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম ও শুকুর আলীর ছেলে মো. আকরাম হোসেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে বিভিন্ন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন যোগীরসীট এলাকা থেকে দুই প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান, র্যাব-১ এর কোম্পানির কমান্ডার লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল জানায়, সে গাজীপুরের ভাওয়াল বদলে আলম সরকারি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র পাশাপাশি তার নিজস্ব কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে এবং সেখানে শিক্ষকতা করত। কোচিং সেন্টারের শিক্ষকতা করার নামে ২০১৭ সালে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি খুলে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করে। সে ফেসবুকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিলে ছাত্রছাত্রীরা মেসেজ দিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করত। ২০১৭ সালের পিএসসি, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ৮-১০ টি পরীক্ষার প্রশ্ন বিতরণ করে মোটা অঙ্কের টাকা আয় করে। সে বিভিন্ন লিংক থেকে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করে ফেসবুকে পোস্ট দিত এবং ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তাদের প্রশ্ন বিতরণ করার পরে ফাঁসকৃত প্রশ্নগুলো ফেসবুক থেকে ডিলিট করে দিত।
অপর আসামি মো. আকরাম হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে ২০১৮ সালে এসএসসি পাশ করে। ২০১৮ সালে মো. রফিকুল ইসলাম এর ফেসবুক আইডি থেকে অনলাইনে প্রশ্নফাঁসের কাজে যুক্ত করে। ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় সে ১০ টি পরীক্ষার প্রশ্নের পোস্ট দেয় এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছে উক্ত প্রশ্ন অনলাইনে বিতরণ করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আয় করে।