রোহিঙ্গাদের জন্য করোনা সংক্রমণ রোধে ৪০ লাখ ডলার বিশেষ তহবিল বরাদ্দের শর্ত সংশোধেনে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে সিসিএনএফ। সিসিএনএফ কক্সবাজারে কর্মরত ৫০টিরও বেশি স্থানীয় ও জাতীয় এনজিওর নেটওয়ার্ক।
সিসিএনএফ মনে করে, শর্ত পরিবর্তন করলে এই তহবিল প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় স্থানীয় বেসরকারি সংস্থাগুলি অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় পরিচালিত বিভিন্ন মানবিক কর্মসূচিতে তারা অংশ নিতে পারবে।
৩০ জুন ইন্টার সেক্টোরাল কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি) এবং আইওএম জাতিসংঘের আবাসিক সমস্বয়কারীর (ইউএনআরসি) পক্ষে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যাতে বলা হয়, উল্লেখিত তহবিলের জন্য এনজিওগুলিকে ২ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এই তহবিল পরিচালিত হবে আইওএম-এর মাধ্যমে।
সিসিএনএফ উল্লেখ করে, গ্র্যান্ড বার্গেইনের প্রতিশ্রুতি এবং বিভিন্ন দলিলে জাতিসংঘ অঙ্গসংস্থাসমূহ ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো স্থানীয়করণ বান্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে, কিন্তু আগস্ট ২০১৭ এ নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট তৈরির হওয়ার পর ইতিমধ্যে ৩৪ মাস পেরিয়ে গেলেও, স্থানীয়করণ বাস্তবায়নে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বিলম্বিত করা হচ্ছে এবং নানাভাবে স্থানীয়করণের চেতনাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।
পালস’র নির্বাহী পরিচালক এবং সিসিএনএফ এর কো-চেয়ার আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, এই তহবিলের জন্য আবেদনের শর্ত হলো এনজিওগুলির নিজস্ব স্বতন্ত্র প্রকল্প থাকতে হবে এবং আইএসসিজি কর্তৃক প্রস্তুত যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা বা জেআরপি’র অংশ হতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোনো স্থানীয় এনজিও কীভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নিজস্ব তহবিল জোগাড় করবে। যেহেতু আইএসসিজি জাতিসংঘ এবং কয়েকটি আইএনজিও দ্বারা সম্পূর্ণরূপে পরিচালিত ও স্থানীয় এনজিওগুলিকে সেখানে কোনো প্রবেশাধিকার দেওয়া হয় না, তাহলে স্থানীয় এনজিও কীভাবে জেআরপি প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে? আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর জন্য বিশ্বব্যাপী তহবিল সংগ্রহের অনেক সুযোগ রয়েছে, তাই জাতিসংঘ অঙ্গসংস্থাগুলোর উচিৎ কেবল স্থানীয় এনজিওগুলিকে তহবিল দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া।
মুক্তি কক্সবাজার’র নির্বাহী পরিচালক এবং সিসিএনএফ’র কো-চেয়ার বিমল চন্দ্র দে বলেন, দেশীয় এনজিওগুলিকে সাব-কন্ট্রাক্টর হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং স্থানীয়করণের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর অর্থ আসলে পরিস্থিতি এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যাতে স্থানীয় ও জাতীয় এনজিওগুলির স্বাধীন ভূমিকা হ্রাস করা যায় এবং বিদেশি এনজিওগুলোর নিয়ন্ত্রণ আরও পাকাপোক্ত করা যায়।
কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক এবং সিসিএনএফ’র কো-চেয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বিজ্ঞপ্তিটি গ্র্যান্ড বার্গেইনের প্রতিশ্রুতিমালা থেকে একটি স্পষ্ট বিচ্যুতি এবং এটি কভিড-১৯ নিয়ে স্থানীয়করণ বিষয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ কমিটি ইন্টার এজেন্সি স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্দেশনারও ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। এই নির্দেশনায় কভিড-১৯ মহামারীর সময় স্থানীয়, জাতীয় সংস্থা এবং স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার কথা বলা আছে।