পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের মেয়াদ ব্যয় ব্যতিরেকে আরও এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুবিভাগ গতকাল বুধবার পরিকল্পনা কমিশনে এই সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পাঠায়। এই প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশন বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে। পরিকল্পনা কমিশন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় আরও এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন প্রস্তাবের ভিত্তিতে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানায়, বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি ৯০ শতাংশ ছাড়িয়েছে, তবে কিছু কাজ বাকি রয়েছে। ২০২৪ সালের ৪ মে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। বিগত বছরগুলোতে প্রকল্প সহায়তা থেকে ব্যয়ের হার বিবেচনায় দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ের আগে আগামী ১০ মাসের মধ্যে ২ হাজার ৯ কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেক্ষেত্রে ঋণ প্রাপ্যতার সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৯১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার প্রকল্প সহায়তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যয় হবে না। তাই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ঋণ প্রাপ্যতার মেয়াদ বাড়ানো না হলে, অবশিষ্ট কাজের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা-মাওয়া ও ভাঙ্গা-যশোর সেকশনে জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব এবং ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তর। এ ছাড়া তুলারামপুর ও টিটিপাড়া পয়েন্টে লেভেল ক্রসিংয়ের পরিবর্তে রেলওয়ে আন্ডারপাস নির্মাণের মতো পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্রকল্পের অগ্রগতিসংক্রান্ত প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন করা হয়। সে সময় এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি ৪ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে চীনের এক্সিম ব্যাংক।
প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এই মেয়াদে কিছু কাজ বাকি আছে সেগুলো সমাপ্ত হবে। ভাঙা রেলজংসনের কাজ বাকি আছে। এ ছাড়া টিটিপাড়া আন্ডারপাসের কাজও কিছু বাকি আছে। তবে মেয়াদ বাড়লেও প্রকল্পের ব্যয় বাড়বে না। আগের মতোই এই রুটে চলবে ট্রেন।