শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

শশী থারুর

বাংলাদেশে শত্রুভাবাপন্ন সরকার ক্ষমতায় গেলে হুমকিতে পড়বে ভারত

আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৫ পিএম

‘নিবিড়ভাবে ও সতর্কতার সঙ্গে’ বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। ভারত সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের জন্য দুর্বল স্থান হতে পারে। যদি সেখানে একটি শত্রুভাবাপন্ন সরকার ক্ষমতায় আসে, তবে ভারত খুবই ঝুঁকিতে পড়তে পারে।’

তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে শত্রুভাবাপন্ন মনে করেন না থারুর। তবে একইসঙ্গে সতর্কতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের পর গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

শশী থারুর বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা কোনো সম্প্রদায় সম্পর্কে বেশি উদ্বিগ্ন এমন ধারণার পরিবর্তে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ— বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের এই ইঙ্গিত দেওয়া উচিত।’

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং তখন থেকেই তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনার আশ্রয়ে ভারত সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কংগ্রেসের এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশে যা ঘটছে তা আমাদের নিবিড়ভাবে এবং সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কারণ, তারা আমাদের পাশেই রয়েছে। এবং সেখানে যা কিছু ঘটবে, তার তাৎপর্য রয়েছে...।’

ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত পাওয়ার বিষয়েও তাকে জিজ্ঞাসা করেন সাংবাদিকরা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাপারে আমি আগেই বলেছি— দুটো দিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং আমি এটাও বলেছি, গুরুতর কিছু ভুল হলে ভুলে যাবেন না... বাংলাদেশ আমাদের জন্য দুর্বল স্থান হতে পারে। এটি এমন একটি জায়গা যা ভারতের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এটি নিয়ন্ত্রণে নেই। যেহেতু এটি একটি আলাদা রাষ্ট্র, অনেক ক্ষতি হতে পারে।

‘তাই মনোযোগী হতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। সত্যি বলতে ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন তার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে,’ বলেন শশী থারুর।

তবে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক মন্তব্য পরিস্থিতিকে ‘জটিল’ করে তুলেছে বলে স্বীকার করেন তিনি। থারুর বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিবৃতির কারণে নিয়ে আমরা কিছুটা ফাটা লাঠিতে পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছি।’ 

এই রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে দুটি ‘মূল মাপকাঠি’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি দুটো বিষয়ের ওপর জোর দেবো। আমাদের এমন কিছু প্রকাশ্যে বা গোপনে করা উচিত নয় যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়।’

‘দ্বিতীয়ত, আমরা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল বা বিশেষ সম্প্রদায়কে নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন, এমন ধারণা না দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ, জনগণের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের উচিত সবপর্যায়ে এই সংকেত দেওয়া।’

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত