বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সারজিসের ওপর হামলায় ছাত্রদলের সম্পৃক্ততা নেই 

আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের জড়িত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। বরং এই হামলার সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ছাত্রদল সভাপতি।

নতুন সংগঠনে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন হচ্ছে উল্লেখ করে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, দেশের যেকোনো জায়গায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রদলের নাম জড়ানোর একটি দুরভিসন্ধিমূলক প্রবণতা লক্ষ্য করছি। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সেদিন সেখানে ছাত্রদলের কোনো কর্মসূচি ছিলো না। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সারজিস আলমের সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো বিরোধও হয়নি। উল্টো সারজিস আলমের শোডাউনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও জুলাই-আগস্টের গণহত্যার আসামিদের দেখা গেছে। এভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি ও তাদের ছাত্রসংগঠনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসন হচ্ছে।

তিনি বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সারজিস আলমের বিরোধের মধ্যে কোনো ছাত্রদল নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল কি-না আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার কাজ চলছে। একইসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার দায় ছাত্রদলের ওপর চাপানোর কৌশলের বিরুদ্ধে আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ছাত্রদল নয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সারজিস আলমের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে দাবি করে রাকিবুল ইসলাম বলেন, সারজিস আলমের সঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরোধের সূত্রপাত নাগরিক পার্টি ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মধ্যকার ঢাবি বনাম প্রাই়ভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে। পূর্বের রেষারেষির জের ধরে সারজিস আলম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এ সময় তার সঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সারজিস এই ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। তার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত।

ছাত্রদল সভাপতি আরও বলেন, সারজিস আলম তার পোস্টে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী, দুষ্কৃতকারী ও টোকাই’ হিসেবে উল্লেখ করে নর্থ সাউথসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অপমান করেছেন। আমরা তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। সারজিস আলমের বক্তব্যে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন ত্যাগকে মর্যাদাহানি করা হয়েছে। আমরা তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সারজিস আলমের সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, এর সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো সম্পর্ক নেই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাত্রদলকে এ ঘটনায় জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলে নতুন যে রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে, সেখানে আমরা আসলে কোনো নতুনত্ব দেখতে পাইনি। কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সেখানে নেতৃত্ব নির্বাচন হয়নি। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয়।

এদিকে রমজানে শিবিরের গণ-ইফতার কর্মসূচির অর্থায়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যমে ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারিকে বলতে শুনেছি তারা প্রতিদিন গণ-ইফতার কর্মসূচিতে ৩ লাখ টাকা ব্যয় করছেন। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, তারা এত টাকা কীভাবে উপার্জন করছেন। তাদের আয়ের উৎস কী? একটি সাধারণ ছাত্র সংগঠন মাসে ৯০ লাখ টাকা কোথায় পাচ্ছে এই আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে শিবিরের কাছে জানতে চাই।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত