মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

নরসিংদী

অন্তঃসত্ত্বাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও শিশুকে যৌন হয়রানি, গ্রেপ্তার ২  

আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম

নরসিংদীতে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে তিন দিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার পৃথক অভিযোগে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মাধবদী থানায় ও শিশুর বাবা বাদী হয়ে নরসিংদী সদর থানায় মামলা করেন।

শনিবার বিকালে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ইকবাল হোসেনকে এবং রাত ৮টার দিকে সাইফুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন- ইকবাল নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের আসমান্দীচর এলাকার বাসিন্দা ও সাইফুল ইসলাম (৫০) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মাধবদী থানার পুলিশ তার স্বামীকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করার পর আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী কারাগারে পাঠায়। স্বামী জেলহাজতে থাকা অবস্থায় ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টা তার ব্যবহৃত মোবাইল কল করেন ইকবাল হোসেন। ওই সময় তিনি বলেন, ‘পাপ্পু নামের এক উকিল আছে, তোর স্বামীর জামিন করিয়ে দিতে পারবে। পাঁচদোনা আয়, কথা বলবো।’

তার কথামতো সকাল ৮টার দিকে পাঁচদোনা মোড়ে গেলে ইকবাল তাকে একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে আরও চারজন ছিলেন। তখনই ইকবাল তাকে উকিল পাপ্পুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে তার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিন দিন পালাক্রমে ৫ জন মিলে একাধিকবার ধর্ষণ করে ওই গৃহবধূকে। শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে ইকবাল তাকে বাড়ির সামনে রেখে আসে।

ওই গৃহবধূ জানায়, এই কথা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল ইকবাল। ভয়ে-আতঙ্কে ঘটনা কাউকে জানাননি তিনি। তার স্বামী জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে তার শরীর খারাপের কারণ জানতে চান। ৭ মার্চ ঘটনার বিস্তারিত স্বামীকে জানান তিনি। এরপরই স্বামী এবং স্বজনসহ গতকাল মাধবদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। সকলকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

অন্যদিকে নরসিংদীর গাবতলীতে ৬ বছরের শিশুকে যৌন হয়রানির চেষ্টার অভিযোগে মো. সাইফুল ইসলাম (৫০) নামে মাদরাসার নিরাপত্তা প্রহরীকে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। শনিবার রাত ৮টার দিকে শহরতলীর গাবতলি এলাকার একটি মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ৬ বছর বয়সী ওই কন্যা শিশুকে শনিবার সন্ধ্যায় যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন নিরাপত্তা প্রহরী মো. সাইফুল ইসলাম। এসময় শিশুটি মাদরাসার শিক্ষক সামসুল ইসলামকে এ ঘটনা জানালে স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হয়। এতে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরীকে ধরে গণপিটুনি শুরু করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ উত্তেজিত জনতার হাত থেকে নিরাপত্তা প্রহরীকে উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে নিয়ে আসেন।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আলাদা দুইটি মামলায় হয়েছে। ঘটনা দুইটিতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর আমরা ঘটনাগুলো তদন্ত করছি। তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত