রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ মামলার আসামি গোলাম মোস্তফাকে পুলিশের কাছ থেকে ‘মব সৃষ্টি’ করে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি-ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শরীফুল বলেন, ‘বেলা ১১টায় বেশ কয়েকজন অফিসারসহ পুলিশের একটি টিম রাস্তা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আশপাশে থাকা ৮-১০ সিকিউরিটি গার্ড ও আশপাশে কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তাদের ওপর হামলার পরও তারা ওই লোককে হাতকড়া পরায়। তখন পুলিশ দেখলাম ফোনে কার সঙ্গে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দিয়েছে। পরে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারলাম, ওই লোকের নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের হত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে। মনে হয়েছে সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন মিলে পুলিশকে মেরে ফেলবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে তারা।’
পুলিশের কাছে থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া সিকিউরিটি গার্ডদের মধ্যে একজন হলেন দেলোয়ার। তিনি বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে এভোরেজ স্কুলের মালিক আমাদের স্যার গোলাম মোস্তফা স্কুল থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠছিলেন। এ সময় পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করতে চেয়েছিল। ওই সময় তার এক হাতে হাতকড়াও লাগায়। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যারা ছিলাম সবাই পুলিশকে ঘেরাও করে ধরে তাকে ভিতরে নিয়ে যাই। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে আমাদের লোকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়। তখন মোবাইলে আমাদের কর্তৃপক্ষ থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে পুলিশ তার হাতকড়া খুলে দিয়ে চলে যায়।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের অভিযোগ মোহাম্মদপুর থানার ওসির সঙ্গে যোগসাজসে এই হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তারের পরেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এই অভিযোগ ও সার্বিক বিষয়ে জানতে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আলী ইফতেখার হাসানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেন নাই। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে এ বিষয়ে ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের একটা টিম একজন আসামিকে ধরতে গেলে সেখানকার সিকিউরিটি গার্ডরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি বুঝে সেখান থেকে আমাদের টিম চলে আসে। আমরা পুরো বিষয়টা খতিয়ে দেখছি। কেন তারা (পুলিশ) এত অল্প লোকবল নিয়ে নিয়ে গেল। আরও লোক নিয়ে যাওয়া দরকার ছিলো কী-না। সেই সঙ্গে পুলিশের ওপর চড়াও হওয়া সিকিউরিটি গার্ডদের বিষয়টাও খতিয়ে দেখা হবে। এজন্য একজন অতিরিক্ত উপকমিশনারকে দায়িত্ব (তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে) দেওয়া হবে।’
ঘটনার সময় ওসির ফোন পেয়ে ওই আসামিকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং এটার সঙ্গে তার যোগসাজস আছে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ওসির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনা আসলে কী ঘটেছিল সেটা তো ওসিই ভালো বলতে পারবেন। সেই সময় পরিস্থিতি বিবেচনায় টিমের অন্য সদস্যদের সেখান থেকে চলে আসতেও বলতে পারেন।’