জনসম্মুখে নারীদের হিজাব পরা ও পোশাকবিধি বাস্তবায়নে বরাবরই কঠোর ইরান সরকার। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নজিরও রয়েছে দেশটির। এবার নারীদের পোশাকের ব্যবহারের ওপর নজরাদারিতে ইরানে অভিনব পদ্ধতি অবলম্বনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে— ইরান এখন হিজাব আইন প্রয়োগে ড্রোন, ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম এবং মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করছে।
তদন্তকারীদের বরাতে সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, নারীদের পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে বিশেষ অ্যাপ ব্যবহারে জনগণকে উৎসাহিত করছে ইরান সরকার। এই অ্যাপের মাধ্যমেই ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নজরদারি’ কৌশল ব্যবহার করছেন ইরানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
প্রতিবেদনে তেহরান ও দক্ষিণ ইরানে হিজাব মেনে চলা পর্যবেক্ষণের জন্য ড্রোন এবং নিরাপত্তা ক্যামেরার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মাহশা আমিনির মৃত্যুতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার আড়াই বছর পরেও ইরানে নারী ও মেয়েরা নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্যের মুখোমুখি হচ্ছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তেহরানের আমিরকবির বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তাদের প্রবেশ গেটে ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার স্থাপন করেছে, যাতে দেখা যায় নারীরা হিজাব পরিধান করেন না। ইরানের প্রধান সড়কগুলোতে অনাবৃত নারীদের খোঁজে নজরদারি ক্যামেরাও ব্যবহার করা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা আরও বলেছেন, তারা ইরানি পুলিশের দেওয়া ‘নাজার’ মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশনটি পেয়েছেন। এটি জনসাধারণ এবং পুলিশকে অ্যাম্বুলেন্স, বাস, মেট্রো গাড়ি এবং ট্যাক্সিসহ যানবাহনে অনাবৃত নারীদের সম্পর্কে রিপোর্ট করার অনুমতি দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যবহারকারীরা যে গাড়িতে বাধ্যতামূলক হিজাব লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে সেই গাড়ির অবস্থান, তারিখ, সময় এবং লাইসেন্স প্লেট নম্বর যুক্ত করতে পারেন। যা পরে অনলাইনে গাড়িটিকে চিহ্নিত করে পুলিশকে সতর্ক করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এরপর গাড়ির নিবন্ধিত মালিকের কাছে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠানো হয়, যাতে তাদের সতর্ক করা হয় যে তারা বাধ্যতামূলক হিজাব আইন লঙ্ঘন করেছে। সতর্কতা উপেক্ষা করায় যানবাহন জব্দ করা হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।