তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে আটকের প্রতিবাদে তৃতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন প্রদেশে এ বিক্ষোভ চলাকালে ৩৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, শুক্রবার দেশজুড়ে তৃতীয় দিনের বিক্ষোভ থেকে ৩৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুল ও রাজধানী আঙ্কারাসহ এক ডজনেরও বেশি শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়া ঠেকাতে এসব আটক করা হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ বিশৃঙ্খলা ও উসকানি সহ্য করবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের পর এ বিক্ষোভ শুরু হয়। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণার কয়েকদিন আগে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়।
বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড়েরর আগে শুক্রবার এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, তার সরকার ভাঙচুর বা রাস্তায় সন্ত্রাসের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ারলিকায়াও একইভাবে বিক্ষোভের সমালোচনা করে বিরোধীদের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, অনলাইনে পোস্ট দিয়ে জনগণকে ঘৃণা ও শত্রুতা উসকে দেওয়ার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আরও ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইয়ারলিকায়া আরও জানান, বিক্ষোভে ১৬ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
তবে বিরোধীরা বলছেন, এই গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা জানিয়েছে এবং সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত ইমামোগলু গত বছর ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হন। একই সময়ে তার সিএইচপি পার্টিও ইস্তাম্বুল এবং আঙ্কারার স্থানীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আগামী রোববার সিএইচপির ১.৫ মিলিয়ন সদস্য ভোট দেবেন। সিএইচপির সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন আটক মেয়র একরেম ইমামোগলু।
অপরদিকে গত ২২ বছর ধরে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এরদোয়ানের এটিই সর্বশেষ শাসনকাল। মেয়াদ সীমার কারণে সংবিধান পরিবর্তন না করলে ২০২৮ সালে তিনি আর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। বিশ্লেষকদের ধারণা, নিজের মসনদ পাকাপোক্ত করতেই ইমামোগলুকে বন্দি করেছেন এরদোয়ান।