বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

'নবজাতকের পায়ের গোড়ালির রক্ত পরীক্ষায় ভবিষ্যত রোগ নির্ধারণ সম্ভব'

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩১ এএম

নবজাতকের পায়ের গোড়ালির রক্ত পরীক্ষা করে ভবিষ্যৎ রোগ নির্ধারণ ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলেছেন, বিদেশে এ ধরনের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে নবজাতকের অন্যান্য রোগ নির্ণয় করা যায়। পরে প্রাথমিক অবস্থাতেই সেই রোগের চিকিৎসা করা গেলে নবজাতকদের ভবিষ্যত রোগ থেকে রক্ষা করা যাবে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীতে শুরু হওয়া বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরামের (বিএনএফ) ৭ম ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চিকিৎসকরা এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের নবজাতক রোগ বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, চিকিৎসক ও গবেষকরা অংশ নেন।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জাতীয় অধ্যাপক ডা. এমকিউকে তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিসেফের ডেপুটি বাংলাদেশ প্রতিনিধি এমা ব্রিগ্রাম ও বিএনএফ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুন নাহার। সভাপতিত্ব করেন বিএনএফ সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনির হোসেন।

সম্মেলনে ‘নবজাতকের পায়ের গোড়ালির রক্ত পরীক্ষা করে ভবিষ্যৎ রোগ নির্ধারণে বাংলাদেশের অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক পলিসি সেশনে মুল প্রবন্ধ উপাস্থাপন করেন বিএনএফ মহাসচিব ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের  নবজাতক বিভাগের  অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কুমার দে।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কুমার দে বলেন, ফিলিপাইন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে এই পরীক্ষা হয়। এটি ডায়াবেটিসের সুগার চেক করার মতো পরীক্ষা। পায়ের গোড়ালি থেকে অল্প একটু রক্ত ফিল্টার পেপারে নিতে হয়। নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিভাগে সেই রক্ত পরীক্ষা করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেও যে কেউ নমুনা প্যাকেটের করে পাঠাতে পারে। ঢাকায় এসে পরীক্ষা করা হবে। এটাকে স্ক্রিনিং বলা হয়। স্ক্রিনিংয়ে আসা নেগেটিভ ও পজেটিভ রিপোর্ট থেকে জানা যায় ওই নবজাতক কোনও রোগে আক্রান্ত কি না, বা ভবিষ্যতে সে কোনও ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আরও বলেন, এটি সাশ্রয়ী ও আর্লি ইন্টারভেনশন। খুব আরলি শনাক্ত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা গেলে ওই নবজাতকের বিকাশের সমস্যা হবে না। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীসহ জেনেটিক সমস্যা সংক্রান্ত অনেক রোগ আর্লি শনাক্ত করে আর্লি চিকিৎসা দেওয়া গেলে হাবাগোবা হওয়া থেকে প্রতিরোধ করা যায়।

সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, নবজাতকের পায়ের গোড়ালির রক্ত পরীক্ষা করে ভবিষ্যৎ রোগ নির্ধারণ করার বিষয়টি বাংলাদেশে চালু করা গেলে নবজাতকদের অনেক রোগ থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য রোগ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি জানা থাকলে সে অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা যাবে। এতে নবজাতকদের দুর্ভোগ লাঘবসহ পরিবারের আর্থিক দিকও সাশ্রয় হবে। নবজাতকদের সুন্দর স্বাস্থ্যবান সুখকর জীবন নিশ্চিত হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত