চীন সরকার বাংলাদেশকে একটি রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার চালুর জন্য প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবটিক যন্ত্রপাতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকরা।
তারা জানান, বিএমইউতে এই সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে। চালু করতে পারলে এটাই হবে বাংলাদেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার। এই সেন্টারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে।
আজ রবিবার এই সেন্টার চালুর লক্ষ্যে বিএমইউতে শুরু হওয়া প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে চিকিৎসকরা এ তথ্য জানান। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে ১৪ মে পর্যন্ত। এতে চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্টসহ ২১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিচ্ছেন। চীনের ৭ জন বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের সমন্বয়ে গঠিত চীনা টেকনিক্যাল টিম প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে বিএমইউয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই সেন্টারে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে। আহতদের মধ্যে যারা দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় ভুগছেন ও পুনবার্সনের প্রয়োজন তারা এই সেন্টারের মাধ্যমে উপকৃত হবেন। তবে সুনির্দিৃষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে দেশের সাধারণ রোগীদের জন্যও এই সেন্টার উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। চিকিৎসা ব্যয়ও যতটা সম্ভব রোগীদের সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে। সেন্টারটি চালু হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য যে সকল (সংশ্লিষ্ট রোগীরা) রোগীরা বিদেশ যায় তারা এখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন, এতে করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
উপ-উপাচার্য জানান, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর নিযুক্ত জনবলের দরকারি অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা অর্জনের পরই সেন্টারটি চালু করা হবে।
ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান ও চালু হতে যাওয়া রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর বলেন, রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার দক্ষিণ এশিয়াতেই খুব একটা নেই বললেই চলে। এই সেন্টারে রয়েছে ৬২টি রোবট। এরমধ্যে এআই বেসইসড রোবটের সংখ্যা ২২টি। এর মাধ্যমে নিখুঁতভাবে ফিজিওথেরাপিসহ বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন বিশেষ করে যাদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা প্রয়োজন তারা এখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
এ ছাড়া এই সেন্টার থেকে সব ধরনের স্ট্রোকের রোগী, নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার বা স্নায়বিক বৈকল্য, দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা, প্যারালাইসিস জনিত সমস্যা, ফ্রোজেন শোল্ডার, নার্ভের ইনজুরির ফলে দুর্বলতা, অবশজনিত সমস্যা, শরীরের কোথাও শক্ত হয়ে যাওয়া, অ্যাক্সিডেন্ট ও ইনজুরিজনিত দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা- এ রকম অসংখ্য রোগ ও সমস্যায় ভোগা দেশের মানুষও চিকিৎসা নিতে পারবেন বলেও জানান এই চিকিৎসক। তিনি বলেন, এ ধরনের রোগীরা এই সেন্টার থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।