বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

‘যুদ্ধবিরতি পেতে’ মার্কিন-ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে হামাস

আপডেট : ১২ মে ২০২৫, ১০:৪১ এএম

গাজায় বন্দি ইসরায়েলি-আমেরিকান নাগরিক ইডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হামাস। যুদ্ধবিরতি চুক্তির লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।

ইডান আলেকজান্ডারকে মুক্তির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

২১ বছর বয়সী আলেকজান্ডার তেল আবিবে জন্ম নিলেও বড় হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে। গাজার সীমান্তে একটি বিশেষ সেনাদলে কর্মরত অবস্থায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় তিনি বন্দি হন।

হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজায় ৭০ দিনের অবরোধে খাদ্য ও ওষুধ সংকট চরমে পৌঁছেছে। এই বন্দিমুক্তি একটি ‘সদিচ্ছার বার্তা’ এবং মানবিক সাহায্য প্রবেশের সুযোগ তৈরিতে সহায়ক হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসছেন। তার আগেই হামাসের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে বিভিন্ন মহল।

হামাসের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বিবিসিকে জানান, কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার সঙ্গে তারা সরাসরি আলোচনা করছে। সোমবার ভোরে ফের আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে ইডানের মুক্তির প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে। এ সময় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক বার্তায় বলেন, ‘এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর, যা সদিচ্ছার নিদর্শন।’

২০২৩ সালের হামলায় হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল। এর মধ্যে ৫৯ জন এখনো গাজায় বন্দি রয়েছেন এবং ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন। আলেকজান্ডার হচ্ছেন একমাত্র জীবিত মার্কিন নাগরিক বন্দি।

এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আলোচনা চলবে ‘অগ্নিকুণ্ডের মাঝেও’।

জিম্মিদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আলেকজান্ডারের মুক্তি যেন একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তির সূচনা হয়, যাতে বাকি বন্দিদেরও মুক্তি নিশ্চিত করা যায়।

হামাস বলেছে, তারা যুদ্ধ সমাপ্তির শর্তেই চূড়ান্ত চুক্তি চায়। তবে নেতানিয়াহু এ দাবি বারবার প্রত্যাখ্যান করেছেন।

মিশর ও কাতার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, আলেকজান্ডারের মুক্তির সিদ্ধান্ত একটি ‘উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ’, যা আলোচনা ফের শুরু করতে সহায়ক হতে পারে।

ইতোমধ্যে ইসরায়েল হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ট্রাম্পের সফরের সময়ের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হলে, তারা গাজায় সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত করবে।

ইসরায়েলের সম্প্রসারিত অভিযানের পরিকল্পনায় রয়েছে গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখল, দক্ষিণে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়া এবং জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব নেওয়া।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫২ হাজার ৮২৯ জন ছাড়িয়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে, বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি শিশুর মধ্যে তীব্র অপুষ্টি দেখা গেছে। খাদ্যের দাম বেড়েছে প্রায় ১ হাজার ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত