বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ইরান বলছে ‘কিছু ছিল না ভেতরে’

আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, ০৮:৩০ এএম

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে তেহরান। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান হামলায় ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হামলার আগেই ওই কেন্দ্রগুলো থেকে পারমাণবিক উপাদান সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছে ইরান। খবর: বিবিসি।

আজ রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান—এই তিনটি পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে জানান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে তিনি লেখেন, “আমরা ইরানে পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে। মাটির ২৬২ ফুট গভীরে থাকা ফোরদো কেন্দ্রে ভারি বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং অভিযানে ব্যবহৃত বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসেছে।”

হামলার বিষয়ে প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরান। দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম কোম প্রদেশের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে বিমান হামলায় ক্ষতি হয়েছে। প্রদেশটির ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট হেডকোয়ার্টারের মুখপাত্র মোর্তেজা হায়দারি বলেন, “কয়েক ঘণ্টা আগে আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে শত্রু লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করে এবং ফোরদোর কিছু অংশ শত্রু বিমান হামলায় আক্রান্ত হয়।”

তবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি স্বীকার করলেও ইরান বলছে, হামলার আগেই তারা পরমাণু উপাদান সরিয়ে ফেলেছিল। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থার এক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, “যেসব স্থাপনায় হামলার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছিল না।”

এই বক্তব্যকে আরো খোলাসা করে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের উপ-রাজনৈতিক পরিচালক হাসান আবেদিনি এক সরাসরি সম্প্রচারে বলেন, “আমরা আগেই তিনটি পরমাণু কেন্দ্র খালি করে ফেলেছিলাম। যদি ট্রাম্পের বক্তব্য সত্যিও হয়, তবুও বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। কারণ পারমাণবিক উপকরণ ছিল না।”

যুক্তরাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহল থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি। তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এই ঘটনার ওপর নিবিড় নজর রাখছে বলে জানা গেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরান যদি সত্যিই আগে থেকে ইউরেনিয়াম বা অন্যান্য তেজস্ক্রিয় উপাদান সরিয়ে ফেলে থাকে, তাহলে এই হামলা শুধু কৌশলগত নয়, মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও এক নতুন সংঘাতের বার্তা দিচ্ছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত