করোনা: কারিগরি সহায়তা নিয়ে ৬৪ জেলায় গণপূর্ত
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল | ২২ এপ্রিল, ২০২০ ১৩:৫০
সরকারের ইমারত নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত অধিদপ্তর করোনা মোকাবিলায় ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশে সব জেলাকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে।
দেশের এ দুর্যোগকালে রক্ষণাবেক্ষণের অর্থসহ অন্য সব কাজের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হয়ে শুধুমাত্র করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মাঠে নেমেছে সংস্থাটি।
ইতোমধ্যে আশকোনার হজ ক্যাম্প কোয়ারেন্টাইনের উপযোগী করা, ১৮টি হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ, ৪৭টি হাসপাতালে সাড়ে নয়শ’ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ, ৮টি হাসপাতালে ৮৫০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপন, ১১টি হাসপাতালে ৩৫০ শয্যার করোনা ইউনিট স্থাপন, আইইডিসিআরের নতুন ১০তলা ভবনের নিচতলায় স্যাম্পল কালেকশন কক্ষ ও ক্যানটিন এবং ডিউটি ডাক্তারদের থাকার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের তিনটি কক্ষকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে ২৯ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ এবং করোনা রোগীদের ব্যবহার সামগ্রী পোড়ানোর জন্য ইনসিনারেটর নির্মাণ, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৮০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং ১০ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ করা হয়েছে।
গণপূর্তের প্রকৌশলীরা জানান, কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোতে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ, আইসোলেশন ইউনিট, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, করোনা ইউনিট স্থাপন ছাড়াও এসব স্থাপনাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজটিও নিয়মিত করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা মেডিকেলসহ ১৮টি হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ ৪৭টি হাসপাতালে সাড়ে নয়শ’ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রকৌশলীরা আরও জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের ট্রমা সেন্টারসহ জেলা হাসপাতালগুলোর মধ্যে ৮টি হাসপাতালে ৮৫০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, ১১টি হাসপাতালে ৩৫০ শয্যার করোনা ইউনিট স্থাপনসহ বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ বেড বসানো হয়েছে।
আইইডিসিআরের নতুন ১০ তলা ভবনের নিচতলায় নমুনা সংগ্রহ রুম ও ক্যানটিন এবং দায়িত্বরত ডাক্তারদের থাকার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের তিনটি কক্ষকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে ২৯ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ এবং করোনা রোগীদের ব্যবহারের সামগ্রী পোড়ানোর জন্য ইনসিনারেটর নির্মাণ করা হয়েছে।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৮০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং ১০ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া চীনের উহান থেকে ফিরিয়ে আনা শিক্ষার্থীদের জন্য আশকোনার হজ ক্যাম্প কোয়ারেন্টাইনের উপযোগী করে সেনাবহিনীর কাছে হস্তান্তর করে সংস্থাটি।
এসব বিষয়ে কথা বলতে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও বিসিএস পাবলিক ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী মো. খালেদ হোসাইন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেশের এ দুর্যোগকালীন সময়ে রাজধানীসহ সারাদেশে গণপূর্তের প্রকৌশলীরা করোনা মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছেন। সংস্থার পক্ষ থেকে সুরক্ষা পোশাক নিয়ে তারা হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গণপূর্ত অধিদপ্তরের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ কাজে সব শক্তি দিয়ে সহায়তা করতে ইতোমধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলী নির্দেশ দিয়েছেন।’
এছাড়া সংস্থাটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রকৌশলীদের বৈশাখী ভাতার ৫০ শতাংশ ৬০ লাখ টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান খালেদ হোসাইন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল | ২২ এপ্রিল, ২০২০ ১৩:৫০

সরকারের ইমারত নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত অধিদপ্তর করোনা মোকাবিলায় ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশে সব জেলাকে ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে।
দেশের এ দুর্যোগকালে রক্ষণাবেক্ষণের অর্থসহ অন্য সব কাজের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হয়ে শুধুমাত্র করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মাঠে নেমেছে সংস্থাটি।
ইতোমধ্যে আশকোনার হজ ক্যাম্প কোয়ারেন্টাইনের উপযোগী করা, ১৮টি হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ, ৪৭টি হাসপাতালে সাড়ে নয়শ’ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ, ৮টি হাসপাতালে ৮৫০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার স্থাপন, ১১টি হাসপাতালে ৩৫০ শয্যার করোনা ইউনিট স্থাপন, আইইডিসিআরের নতুন ১০তলা ভবনের নিচতলায় স্যাম্পল কালেকশন কক্ষ ও ক্যানটিন এবং ডিউটি ডাক্তারদের থাকার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের তিনটি কক্ষকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে ২৯ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ এবং করোনা রোগীদের ব্যবহার সামগ্রী পোড়ানোর জন্য ইনসিনারেটর নির্মাণ, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৮০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং ১০ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ করা হয়েছে।
গণপূর্তের প্রকৌশলীরা জানান, কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোতে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ, আইসোলেশন ইউনিট, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, করোনা ইউনিট স্থাপন ছাড়াও এসব স্থাপনাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজটিও নিয়মিত করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, খুলনা মেডিকেলসহ ১৮টি হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবরেটরির অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ ৪৭টি হাসপাতালে সাড়ে নয়শ’ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রকৌশলীরা আরও জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের ট্রমা সেন্টারসহ জেলা হাসপাতালগুলোর মধ্যে ৮টি হাসপাতালে ৮৫০ শয্যার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার, ১১টি হাসপাতালে ৩৫০ শয্যার করোনা ইউনিট স্থাপনসহ বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ বেড বসানো হয়েছে।
আইইডিসিআরের নতুন ১০ তলা ভবনের নিচতলায় নমুনা সংগ্রহ রুম ও ক্যানটিন এবং দায়িত্বরত ডাক্তারদের থাকার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের তিনটি কক্ষকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে ২৯ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ এবং করোনা রোগীদের ব্যবহারের সামগ্রী পোড়ানোর জন্য ইনসিনারেটর নির্মাণ করা হয়েছে।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ১৮০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং ১০ শয্যার আইসিইউ নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া চীনের উহান থেকে ফিরিয়ে আনা শিক্ষার্থীদের জন্য আশকোনার হজ ক্যাম্প কোয়ারেন্টাইনের উপযোগী করে সেনাবহিনীর কাছে হস্তান্তর করে সংস্থাটি।
এসব বিষয়ে কথা বলতে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
সংস্থাটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও বিসিএস পাবলিক ওয়ার্কস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী মো. খালেদ হোসাইন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেশের এ দুর্যোগকালীন সময়ে রাজধানীসহ সারাদেশে গণপূর্তের প্রকৌশলীরা করোনা মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছেন। সংস্থার পক্ষ থেকে সুরক্ষা পোশাক নিয়ে তারা হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গণপূর্ত অধিদপ্তরের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এ কাজে সব শক্তি দিয়ে সহায়তা করতে ইতোমধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলী নির্দেশ দিয়েছেন।’
এছাড়া সংস্থাটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রকৌশলীদের বৈশাখী ভাতার ৫০ শতাংশ ৬০ লাখ টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানান খালেদ হোসাইন।